পোস্টগুলি

কেন বিপদে হতাশ হব না!

এক হজরত আইয়ুব (আ) ছিলেন রোমের অধিবাসী এবং মহান আল্লাহর নবী হজরত ইব্রাহিম (আ) এর বংশধর। হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র হজরত ইসহাক (আ)। হজরত ইসহাক (আ.) এর পুত্রের বংশধর হজরত আইয়ুব (আ.)। হজরত আইয়ুব (আ.) যেখানে বসবাস করতেন তাওরাতে তা বোসরা নামে উল্লেখ করা আছে। হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন সে সময়ে বিশাল ধন সম্পদের মালিক। যাবতীয় সকল ধরনের সম্পত্তি তার কাছে ছিল। বিশাল পরিমান জমি-জমা, গৃহ-পালিত পশু এবং দাস-দাসী ছিল। সম্পদ ছাড়াও পরিবার পরিজন ও প্রচুর সন্তান নিয়ে সুখে ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনের ৭০ বছর বয়সে এসে মহান আল্লাহর কঠিন পরীক্ষায় একে একে তিনি সব হারাতে শুরু করেন। তিনি এক কঠিন চর্মরোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে এই রোগ তাঁর সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের তীব্রতা এত প্রকট ছিল যে, তাঁর শরীরে পচন ধরে এবং পোকা জন্মায়। এ ছাড়াও পচা অংশ এবং পুঁজ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এর ফলে একে একে তাঁর ধনসম্পত্তি, জমি, টাকা-পয়সা, পশু, দাস-দাসী সবই হারিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শহরের বাইরে একটি আস্তাকুড়ের পাশে আইয়ুব (আ) কে আশ্রয় নিতে হয়। তার এই বিপদে শুধু মাত্র একজন তাকে ছেড়ে যায় নি, তিনি মহান আল্লাহর প্রিয় বান্দা হজরত আইয়ুব (আ) এর

যুগেযুগে অপবাদ অপনোদন

  যুগেযুগে নবী রাসুল ও তাদের অনুসারীরের বিরুদ্ধে মুশরিক, মুনাফেক ও কাফেরদের অপবাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র ছিল, আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু দিনশেষে সত্যের বিজয় অত্যাসন্ন। হজরত ইউসুফ (আ) বৈমাত্রেয় ভাইদের চক্রান্তে কূপে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর মিশরগামী ব্যবসায়ী কাফেলার মাধ্যমে কূপ থেকে উদ্ধার পান। অতঃপর ভাইয়েরা কাফেলার নিকট গোলাম হিসেবে ১৮ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। উক্ত কাফেলা ইউসুফ (আ)কে মিশরের উজিরের নিকট বিক্রয় করে দেয়। মিশরের উজিরের নিকট তিনি লালিতপালিত হন ।যখন ইউসুফ (আ) যৌবনে পদার্পণ করেন, তখন তার স্ত্রী জুলেখা তাকে ফুসলাইতে থাকেন। একদিন জুলেখা ঘরের সাতটি দরজা বন্ধ করে কুপ্রস্তাব দেন। হযরত ইউসুফ (আ) জুলেখার কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দৌড় দিলে এক এক করে সাতটি বন্ধ দরজা খুলে যায়। সর্বশেষ দরজা খোলার পূর্বে জুলেখা ইউসুফ (আ)-এর পিছন থেকে তার জামা টেনে ধরলে সেই জামা ছিঁড়ে যায়। দরজা খুলেই জুলেখার স্বামীকে দণ্ডায়মান দেখতে পায়। তখন জুলেখা হযরত ইউসুফ (আ) সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ দেয়। পরবর্তী সময়ে উজির ইউসুফ (আ)কে জেলে দেন।ইউসুফ (আ.) ছিলেন ইমান ও নবুয়তের আলোয় আলোকিত। তাঁর বিবেক ছিল স্বচ্ছ। অন্তর ছিল পব

দায়িত্ব পালনে বাড়াবাড়ি না করি

  হযরত ওমর(রা) তখন মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা। তিনি প্রায় রাতে ছদ্মবেশে বের হতেন। জনগণের সুখ দুঃখ দেখার জন্য। এমনই এক রাতে বের হয়ে সুরেলা আওয়াজ শুনতে পেলেন। একটি লোক গান গাইছিল।তাঁর সন্দেহ হলো। তিনি প্রাচীরে উঠে দেখলেন, পাশের ঘরে এক পুরুষ বসে আছে। তার পাশে মদ ভর্তি একটি পাত্র ও গ্লাস। অদূরে এক মহিলাও সঙ্গে রয়েছে।খলিফা চিৎকার করে বললেন, ওরে আল্লাহর দুশমন! তুই কি মনে করেছিস যে, তুই আল্লাহর নাফরমানী করবি, আর তিনি তোর গোপন অভিসারের কথা ফাঁস করবেন না? জবাবে সে বললো, “আমিরুল মোমেনীন, তাড়াহুড়ো করবেন না। আমি যদি একটি গুনাহও করে থাকি, তবে আপনি করেছেন তিনটি গুনাহ। প্রথমত: আল্লাহ তায়ালা মানুষের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াতে নিষেধ করেছেন কিন্তু আপনি দোষ ত্রুটি খুঁজছেন। দ্বিতীয়ত:আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন কারো বাড়িতে ঢুকলে দরজা দিয়ে ঢুকতে, কিন্তু আপনি প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছেন। তৃতীয়ত:আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, নিজের বাড়ি ছাড়া অন্যের বাড়িতে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে।কিন্তু আপনি আমার অনুমতি ছাড়াই আমার বাড়িতে প্রবেশ করেছেন।” এ জবাব শুনে হযরত ওমর(রা) নিজের ভুল স্বীকার করলেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্র

একজন রাখালের আল্লাহ ভীতি

  একবার হযরত উমর ফারুক ( রা. ) সফরে ছিলেন। সফরের যা খাবার ছিল তা ফুরিয়ে গেল। সামনে দেখলেন এক রাখাল জঙ্গলে ছাগলের পাল চরে বেড়াচ্ছে। আরববাসীদের মধ্যে এ নিয়ম ছিল যে, তারা মেহমানদারী হিসেবে মূল্য ব্যতীত দুধ পান করাত। তাই ওমর (রা) পালের রাখালের নিকট গিয়ে বললেন, আমি একজন মুসাফির। আমার সফরের সব খাবার শেষ হয়ে গেছে। তুমি একটি বকরীর দুধ দোহন করে আমাকে দাও, আমি পান করব। রাখাল উত্তর দিল, আপনি একজন মুসাফির, আপনাকে দেওয়ার জন্য আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। কিন্তু সমস্যা হল, এ সমস্ত বকরীর মালিক আমি নই। এগুলোর মালিক অন্য একজন। আমার শুধু এগুলো চড়ানোর দায়িত্ব। এগুলো আমার নিকট আমানত স্বরূপ। তাই শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আপনাকে এগুলোর দুধ পান করানো বৈধ মনে করি না। এরপর হযরত ওমর ফারুক ( রা.) রাখালকে আরো কঠিনভাবে পরীক্ষা করতে গিয়ে বললেন, দেখ ভাই! আমি তোমাকে একটি লাভের কথা বলছি। যার ভেতরে তোমারও লাভ রয়েছে, আমারও লাভ রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে যে, তুমি বকরীর পাল হতে একটি বকরী আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তুমি টাকাগুলো পেয়ে গেলে, আর আমি বকরী পেয়ে গেলাম। পথে যেখানেই দরকার হবে, সেখানেই বকরীর দুধ পান করে নেব। বাকী

অনুপম চরিত্রের অধিকারী ইমাম বুখারী

ইমাম বুখারী (জন্ম ১৯৪ হি.-মৃত্যু ২৫৬ হি. ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরো নাম হলো মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি বুখারী শরীফ নামে হাদীসের সংকলন করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়। তাঁর জীবনের অসংখ্য ঘটনার মধ্যে একটি হলো - ইমাম বুখারী একবার একটি থলের ভিতর একহাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে হাদীস সন্ধানের জন্য সফরে বের হলেন। সফর অবস্থায় কোন এক চোর এই স্বর্ণমুদ্রাগুলো দেখে ফেলে এবং তা চুরি করার জন্য ইমাম বুখারীর পিছু নেয়। কিন্তু চোর তা চুরি করার সকল প্রকার চেষ্টা করা সত্ত্বেও ব্যর্থ হয়। পথিমধ্যে ইমাম বুখারী পানি পথে ভ্রমণের জন্য জাহাজে আরোহণ করলে চোরও তার সাথে যাত্রা শুরু করে। সেখানেও সে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরিশেষে চোর মুদ্রাগুলো চুরি করার নতুন এক কৌশল অবলম্বন করে। সে এই বলে চিৎকার করতে থাকে যে, এই জাহাজে উঠার পর আমার একহাজার স্বর্ণমুদ্রা চুরি হয়ে গেছে। মুদ্রাগুলো একটি থলের ভিতর ছিল। সে থলেটির ধরনও বর্ণনা করল, যা সে ইতিপূর্বে ইমামের কাছে দেখেছিল।

অস্ত্রোপচারের নানা যন্ত্র আবিষ্কারে মুসলিম বিজ্ঞানী

ছবি
#মো.আবু রায়হান অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্র আবিষ্কারে মুসলিম বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। দশম শতাব্দীর মুসলিম সার্জন আল- জাহরাউয়ি আধুনিক যুগে ব্যবহৃত হয় এমন অনেক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। আবুল কাসিম খালাফ ইবনে আল আব্বাস আল জাহরাউয়ি (৯৩৬–১০১৩ ‎‎) ছিলেন একজন আরব মুসলিম চিকিৎসক। জাহরাউয়ির জন্ম ৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের আন্দালুসিয়ার আজহারা শহরে। পশ্চিমা বিশ্বে তিনি অ্যালবুকাসিস নামে পরিচিত।তাকে মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে মহৎ শল্যবিদ এবং তাকে আধুনিক শল্যচিকিৎসার জনক বলে গণ্য করা হয়।চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে তার লেখা বইয়ের নাম ‘কিতাব আল তাসরিফ’। এটি চিকিৎসা সংক্রান্ত ৩০ খণ্ডের বিশ্বকোষ। অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে মেডিসিন, অর্থোপেডিকস, প্যাথলজি, দন্তবিজ্ঞান, শিশু চিকিৎসাসহ চিকিৎসাবিজ্ঞানের নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল এই গ্রন্থে। বলা যায় এই গ্রন্থের পেছনেই তিনি তার সারা জীবন দিয়েছেন। বইটিতে খুঁটিনাটি নানা বিষয় সংযোজন করতে তার লেগেছিল ৫০ বছরেরও বেশি সময়। এই গ্রন্থের সব থেকে বড় খণ্ড ‘অন সার্জারি অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টস’ লেখা হয়েছে শল্যচিকিৎসা নিয়ে। এই বইটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হওয়ার কারণ

ইবনুল হাইসাম সর্বপ্রথম ক্যামেরা উদ্ভাবনের ধারণা দেন

ছবি
#মো.আবু রায়হান ক্যামেরা বা আলোকচিত্র গ্রহণ ও ধারণের যন্ত্র আবিষ্কারেও রয়েছে মুসলিম অবদান। দৃশ্যমান স্থির বা গতিশীল ঘটনা ধরে রাখার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। আধুনিক আবিষ্কারগুলোর মধ্যে ক্যামেরা বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয়। মোবাইল ফোনের কল্যাণে তা এখন মানুষের হাতে হাতে। মুসলিম বিজ্ঞানী নাম ইবনুল হাইসাম সর্বপ্রথম ক্যামেরা উদ্ভাবনের ধারণা দেন। ইবনুল হাইসাম ৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে বুইদ আমিরাতের রাজধানী বর্তমান ইরাক এর বসরায় এক আরব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পূর্ণ নাম আবু আলি আল-হাসান ইবনে আল হাসান ইবন আল হাইসাম পশ্চিমা বিশ্বে তিনি তার ল্যাটিনকৃত নাম আল-হাজেন(Al hazen) হিসেবেও পরিচিত।ইবনুল হাইসাম একজন ইসলামি স্বর্ণযুগের একজন আরব গনিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি প্রায়শই আলোকবিজ্ঞানের জনক হিসেবে উল্লেখিত হন। ইবনুল হাইসাম বসরায় জন্মগ্রহণ করলেও তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ কাটিয়েছেন ফাতেমীয় খিলাফতের রাজধানী কায়রোতে। সেখানে তিনি শিক্ষকতা ও গবেষণা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাকে তার জন্মস্থান বসরার নামে আল-বসরি উপনামেও ডাকা হয়ে থাকে। ফার্সি ইতিহাসবিদ আবুল হাসান বায়হাকি তাকে দ্বিতীয় টলেমি বলে উল্ল

অন্যের প্রতি কেমন আচরণ হওয়া উচিত

  মানুষের আচার-আচরণ মার্জিত, শালীন ও ভদ্রোচিত হওয়ার প্রতি ইসলাম জোরালো তাগিদ প্রদান করেছে। মানুষের আচার-ব্যবহার ও চলাচলের যেসব বিষয় থেকে গর্ব ও অহংকার ফুটে ওঠে, সেগুলো বৈধ কাজ নয়। অহংকার প্রকৃত পক্ষে মানুষের অন্তরের একটি কবিরা গুনাহ। বিনয় ও কোমলতা নবীদের গুণ। অন্যদিকে অহঙ্কার ও কঠোরতা হলো শয়তানের বৈশিষ্ট্য। পৃথিবীর প্রথম মানব আদম (আ.) আল্লাহর নির্দেশ ভঙ্গ করার পর আল্লাহর প্রশ্নের মুখে তিনি অহঙ্কার না করে বরং পুরোপুরি বিনয় ভাব নিয়ে আল্লাহর কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে বলেছেন, হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি, আপনি ক্ষমা ও দয়া না করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো (সুরা আ'রাফ)। বিপরীতে ইবলিস আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে নিজের পক্ষে অহঙ্কারমূলক যুক্তি প্রদর্শন করে বলেছে, আমি তার চেয়ে উত্তম; আমাকে আপনি আগুন দ্বারা তৈরি করেছেন, আর তাকে বানিয়েছেন মাটি দ্বারা। রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষকে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত করে বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা অহির মাধ্যমে আমার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন যে বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করো। কেউ যেন অন্যের ওপর গর্ব ও অহংকারের পথ অবলম্বন না করে এবং কেউ যেন কারও ওপর জুলুম বা

গুজবে গজব

  আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'হে মুমিনগণ, যদি কোনো পাপাচারী তোমাদের কাছে কোনো বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে। যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি সাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে যাতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদের অনুতপ্ত হতে না হয়'- (সুরা হুজরাত আয়াত -৬)।মহানবী (সা.) বলেছেন, 'যা শুনবে, তা-ই (যাচাই করা ছাড়া) বর্ণনা করা মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট- (মুসলিম শরিফ)।রাসুল (সা.) বলেন, 'আমি কি তোমাদের কবিরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না?' কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, 'হে আল্লহর রাসুল! হ্যাঁ, অবশ্যই।' তিনি বললেন, 'আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা এবং মা-বাবার অবাধ্য হওয়া।' এরপর হেলান দেওয়া থেকে সোজা হয়ে বসে রাসুল (সা.) বললেন, 'মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ও মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা'- (বোখারি)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো মানুষ মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শুনে (সত্যাসত্য যাচাই না করে) তাই বলতে বা প্রচার করতে থাকে’ (বুখারি)

মানুষকে মূল্যায়ন

  মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব সুতরাং তারা মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকৃত।আল্লাহ তায়ালা বলেন, " অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি-আদমকে সেজদা কর তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করল? সে বললঃ আমি তার চাইতে শ্রেষ্ট। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা। বললেন তুই এখান থেকে যা। এখানে অহংকার করার কোন অধিকার তোর নাই। অতএব তুই বের হয়ে যা। তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত। "( সুরা আরাফ) মর্যাদা ও সম্মানের সঠিক মাপকাঠি হলো ব্যক্তির উচ্চমানের নৈতিক গুণাবলী এবং স্রষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি তার কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান; যে অধিক মুত্তাকি বা আল্লাহ ভীরু।’ (সুরা হুজরাত আয়াত ১৩) আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মানবজাতিকে সম্মানিত করেছি, তাকে কর্তৃত্ব দিয়েছি স্থলে ও জলে, তাদেরকে দিয়েছি উত্তম জীবিকা এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি আমার সৃষ্টিজগতের অনেকের ওপর।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত -৭০) বিশ্ব মানব একটি পর
  নদীতে বাঁধ দিলে যেমন শ্যাওলা জমে, নদীর পানি প্রবাহিত হতে বিকল্প পথ খুঁজে। তেমনি মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিলে এক শ্রেণীর মানুষ বিকল্প পথে নিজেদের অভিমত ও শক্তি জানান দিতে তৎপর থাকে। এই সুযোগে উগ্রতা, বিচ্ছিন্নতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। এসব নিয়ন্ত্রণে চাপ প্রয়োগে দমনের পন্থা হিতে বিপরীত হতে পারে। উগ্রবাদ কখন ছড়িয়ে পড়ে? এক প্রকার জুলুম নির্যাতন থেকেই উগ্রবাদের বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে।দেশের কওমী মাদ্রাসা গুলো প্রচন্ডভাবে অবহেলিত, নেই সরকারি অনুদান ও নির্দেশনা। সরকারি প্রভাব ও হস্তক্ষেপ মুক্ত হয়ে থাকতেই তারা পছন্দ করেন। এর পেছনে মূল কারণ হলো অনুদান গ্রহণের পর সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রিত হবার ভয়। উগ্রবাদ ছড়ানোর পেছনে আরো কয়েকটি কারণ হলো কোনো জাতিগোষ্ঠীর প্রতি অবহেলা, নির্যাতন, বঞ্চনা, নিরবিচ্ছিন্নভাবে ধর্ম পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরী। ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা,মোটাদাগে দুটি কারণকে অনেকে প্রধানতম কারণ বলেন। এরমধ্যে একটা হচ্ছে- হতাশা -প্রতিশোধস্পৃহা । আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে সঠিক শিক্ষার অভাব । উত্থিত এসব সমস্যার সমাধান না করলে জাতির বিভাজন ও উগ্র মানসিকতার মূলোৎপাটন অসম্ভব।বলে রাখা প্

নারীর প্রতি অপবাদ

  অপরের নামে অপবাদ দেওয়া সমাজভুক্ত মানুষের সুসম্পর্ক নষ্ট করে। সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অনৈক্য সৃষ্টির মদদ জোগায় এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রবণতা। জাহেলি যুগের আরব অধিবাসীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অপবাদ সৃষ্টি এবং সংঘাতে মদদ জুগিয়ে আনন্দ পেত।আল্লাহ তায়ালা বলেন ,‘‘তোমরা ব্যাপারটিকে তুচ্ছ মনে করছো; অথচ তা আল্লাহ্ তায়ালার নিকট খুবই গুরুতর অপরাধ’’। (সুরা নূর আায়তা ১৫) নারীর প্রতি অপবাদের যে কোনো প্রবণতার বিরুদ্ধে ইসলাম কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছে। কেউ যাতে তাদের বিরুদ্ধে অপবাদ রটনায় সাহসী না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করতে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, 'যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ মুমিন নারীদের বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহলোক ও পরলোকে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে গুরুতর শাস্তি।'(সূরা আন নূর আয়াত -২৩) সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'তোমরা সাতটি গুরুতর ক্ষতিকর কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাক। উলি্লখিত সাতটি গুনাহর অন্যতম হচ্ছে সতী-সাধ্বী ও নিরীহ মুমিন নারীর ওপর ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করা।' যারা সতী-সাধ্বী কোন মহিলাকে ব্যভিচারের অপবাদ দিলো; অথচ চারজন সাক্ষীর মাধ্যমে তা

ব্যাঙের প্রতিবাদ

নমরুদ ইবরাহিম (আ.)-এর সময়ে পৃথিবীর বাদশাহ ছিল। সে ছিল পৃথিবীর চারজন বড় বড় শাসকের অন্যতম। নমরুদ প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। সে পৃথিবীর প্রথম স্বৈরশাসক।পবিত্র কোরআনে তার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। পৃথিবীতে সে-ই সর্বপ্রথম রাজমুকুট পরিধান করেছে এবং নিজেকে খোদা দাবি করেছে।অত্যাচারী নমরুদ , ইব্রাহীম (আ) কে বিশাল এক অগ্নিপিণ্ডের ফেলে দিয়েছে কিন্তু আগুন তাকে স্পর্শ করতে পারছে না।মহান আল্লাহ আগুনকে নির্দেশ দেন—‘হে অগ্নি, তুমি হযরত ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত -৬৯)হযরত ইবরাহিম (আ.) ৪০ দিন পর্যন্ত অগ্নিকুণ্ডে ছিলেন। সেদিন একটি ব্যাঙ দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল। সে তা সহ্য করতে পারছিল না, তার প্রিয় নবীকে আগুনে ফেলা হয়েছে । তাই সে লাফাতে লাফাতে আগুনের কাছে এসে প্রস্রাব করতে লাগলো। জিব্রাইল (আ) ব্যাঙকে জিজ্ঞেস করলেন, 'হে ব্যাঙ তুমি কেন আগুনের উপর প্রস্রাব করছ? ব্যাঙ উত্তর দিল, 'জনাব আমি আগুন নেভাতে চেষ্টা করছি। জিব্রাইল (আ) আবার বললেন, 'তোমার এই সামান্য প্রস্রাবে কী এই বিশাল অগ্নিপিণ্ড নিভবে ? ব্যাঙ আবার দৃঢ়তার সাথে উত্তর দিল। 'আমি জানি আমার এই সামান্য প্রস্রা

মুনাফিক দেখতে কেমন ?

আমাদের সমাজে মানুষের মতো দেখতে এমন কিছু প্রাণী আছে, যারা সব মহলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিরগিটির মতো ঘনঘন রং বদলায়। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো এই মানুষগুলোকে আমরা মুনাফিক বলে থাকি। প্রথমত, মুনাফিক শব্দটি 'নিফাক' শব্দমূল থেকে এসেছে, যার অর্থ কোনো কিছুকে গোপন রেখে এর বিপরীত কথা বা কাজ প্রকাশ করা।দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। 1 : a person who puts on a false appearance of virtue or religion. 2 : a person who acts in contradiction to his or her stated beliefs or feelings.মুনাফিকের সংজ্ঞায় সাইয়্যেদ মুফতি আমিনুল ইহসান বলেছেন, মুনাফিক হলো এমন ব্যক্তি যে ইসলামকে মুখে প্রকাশ করে এবং অন্তরে কুফরিকে লালন করে। অর্থাৎ মুনাফিক বলা হয় ওই ব্যক্তিকে, যে অন্তরে কুফরি ও ইসলামবিরোধিতা রেখে মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে এবং মুসলমান হওয়

কফির উদ্ভাবক একজন মুসলিম

ছবি
সারা বিশ্বে কফি জনপ্রিয় একটি পানীয়।বিবিসির একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ২০০ কোটি কাপ কফি পান হয় পৃথিবীতে। জনপ্রিয় এই পানীয় আবিষ্কারক একজন মুসলিম। তার নাম খালেদি। তিনি কোনো বিজ্ঞানী নন, সাধারণ এক মুসলিম রাখাল। আরব-ইথিওপীয় খালেদি নবম শতকে জনপ্রিয় এই পানীয়র ব্যবহার শুরু করেন। খালেদির মেষগুলো প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে যেত। হঠাৎ একদিন তিনি দেখলেন, মেষগুলোর ক্লান্তিভাব দূর হয়ে গেছে। উদ্যম ও চঞ্চলতায় ভরে উঠেছে সেগুলো। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি লক্ষ করলেন, মেষগুলো লাল জামের মতো মতো কী যেন খাচ্ছে। ধর্মপ্রাণ খালেদি গাছ থেকে কয়েকটি ফল নিয়ে দ্রুত হাজির হলেন স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে। ফলগুলো কাঁচা খাওয়া সম্ভব হবে না ভেবে ইমাম পাশে রাখা জ্বলন্ত আগুনে ফেললেন। দেখলেন আগুনের ভেতর থেকে দারুণ সুঘ্রাণ বের হচ্ছে। পরে ইমামের শিষ্যরা ফলগুলো সিদ্ধ করে গরম পানিসহ পান করলেন। এভাবেই পৃথিবীর পানীয় হিসেবে কফির ব্যবহার শুরু হয়। এই পানীয়টি খেয়ে তারা রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা জেগে থাকতে পারছেন। প্রার্থনার জন্য ব্যাপারটি বেশ কার্যকরী মনে হলো তাদের। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়লো গরম পানীয়টির সুনাম।কেউ কেউ বলেন, ইয়েমেনের

মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলে কাদের গালি দেন? জানুন সঠিক ইতিহাস

ছবি
#মো.আবু রায়হান সহিংস ও বিভীষিকাময় কোনো ঘটনা ঘটলেই অনেকে একে মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলে চালিয়ে দেন। অনেকে না বুঝে আবার কেউ নিজেকে অধিক প্রগতিশীল হিসেবে পরিচয় দিতে এই শব্দ গুচ্ছ ব্যবহার করেন। আসলেই মধ্যযুগ কি এতোটাই নৃশংস ছিল জ্ঞানবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ ছিল মধ্যযুগ, এই যুগ ছিল মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার দিয়ে বিশ্বকে আলোকিত করার যুগ। কিন্তু আধুনিক ইতিহাসবেত্তাগন মধ্যযুগকে অসভ্য বর্বর বলে মুসলমানদের আবিষ্কার গুলোকে জনসম্মুখ থেকে লুকিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদেরকে অতীত ইতিহাস থেকে জানতে হবে, আমাদের কী গর্ব অহংকারের কোন আবিষ্কার নেই? তাহলে জেনে আসি মূল ঘটনা। মধ্যযুগ কালবিভাজন অনুযায়ী ৬০০ সাল থেকে ১৩০০ সাল। সপ্তম শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত ইসলামের ইতিহাসে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিকভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার সময়কালকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয়। ৬২২ সালে মদিনায় প্রথম ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ইসলামি শক্তির উত্থানের সময় থেকে শুরু হয় এ যুগের। ১২৫৮ সালে মঙ্গলদের দ্বারা বাগদাদ অবরোধের সময়কে এর সমাপ্তিকাল ধরা হয়।অনেকে ১৪৯২ সালে ইবেরিয়ান উপদ্বীপের আন্দালুসে খ্রিষ্টান রিকনকোয়েস্টার ফলে গ

আমরা কেন মডারেট মুসলিম হতে পারি না

ছবি
#মো. আবু রায়হান ইংরেজি মডারেট ( Moderate) শব্দের বাংলা অর্থ মধ্যপন্থী । Make or become less extreme, intense, rigorous, or violent.(Oxford Dictionary) অর্থাৎ চরম নয় এমন, মাঝারি ধরনের মধ্যপন্থী। সে হিসেবে ‘মডারেট মুসলিম’-এর অর্থ ‘মধ্যপন্থী মুসলিম’ করলে হয়তো অতি সরলীকরণ করা হবে। কেননা পরিভাষাটির উদ্ভাবক পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ অর্থেই তা ব্যবহার করে।মডারেট মুসলিম বা মডার্নিস্ট মুসলিম অর্থাৎ আধুনিকতাবাদী মুসলিম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মুসলিম দেশগুলো ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয়। কিন্তু তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় পুঁজিবাদী গণতন্ত্র। আবার কোথাও পশ্চিমাদের প্রশ্রয়ে দীর্ঘায়িত হয় স্বৈরাচারী সামরিক শাসন। এই দুই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই আশির দশকের শেষভাগে মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ ও জাগরণের সৃষ্টি হয়। পরিবর্তনকামী মুসলিমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ গণ-আন্দোলন এবং বৈপ্লবিক কমিউনিস্টদের মতো সশস্ত্র বিপ্লবের পথ—দুটিই অনুসরণ করে। তবে উভয় পদ্ধতি পশ্চিমা স্বার্থ ও অর্থনৈতিক উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায় হয়। তাই এই মুসলিমদের বিপরীতে ইউরোপবান্ধব একটি মুসলিম গোষ্ঠী সৃষ্টি করার জোর তাগিদ অনুভব করে ইউরোপ। মুসল

নিঃসন্তান ও তালাক

ছবি
#মো.আবু রায়হান অর্থবৈভব ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা-আভা। সঠিক ও যথাযথ এগুলোর ব্যবহার হলে পরকালে কল্যাণ ও পুরস্কার লাভ হবে। না হয় এগুলোই ডেকে নিয়ে আসবে চূড়ান্ত বিপদ।আল্লাহ তায়ালা বলেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের রূপ-সৌন্দর্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। ‘স্থায়ী সৎকর্ম’ তোমার রবের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত - ৪৬) হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১. সদকায়ে জারিয়া, ২. এমন জ্ঞান (ইলম)- যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ও ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দোয়া করে। – সহিহ মুসলিম - ৪৩১০) সন্তান আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে খুশি তাকে সন্তান দান করেন এবং যাকে খুশি দান করেন না। সন্তান হওয়া একধরনের পরীক্ষা এবং সন্তান না হওয়া একধরনের পরীক্ষা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দেন। আবা
  শ হিদ আরবি শব্দ। শ হিদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে শাহাদত শব্দ থেকে। ‘শাহাদত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে- সনদ , সাক্ষ্য , প্রত্যয়নপত্র , সার্টিফিকেট ইত্যাদি।   শ হিদ   শব্দটির ভাবার্থ হলো- ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে জীবন কোরবানীর মাধ্যমে ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য , সনদ , সার্টিফিকেট বা প্রত্যয়ন প্রদান।’ আরবি ডিকশনারীতে ‘মু’জাম আল-অসীত’-এ ‘শহীদ’ শব্দের অর্থ দেয়া আছে: ‘যিনি আল্লাহর পথে নিহত হওয়ার জন্য নিজকে পেশ করলেন।’   মানব জাতিকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহর ইবাদত করা , সেই ‘ইবাদত’ প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যে মৃত্যুবরণ করলো , ইসলামী পরিভাষায় তাকে ‘শহীদ’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। শহীদি মৃত্যু দুই প্রকার। এক প্রকার হলো প্রকৃত শহীদ। তা হলো , দ্বিন কায়েমের জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন দেওয়া। এ ধরনের শহীদের মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন , ‘ আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয় , তাদের মৃত বলো না ; বরং তারা জীবিত , কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’ (সুরা আল-বাকারা : ১৫৪) আরেক প্রকারের শহীদ হলো , হুকুমি। অর্থাৎ তারা শহীদের সাওয়াবপ্রাপ