নদীতে বাঁধ দিলে যেমন শ্যাওলা জমে, নদীর পানি প্রবাহিত হতে বিকল্প পথ খুঁজে। তেমনি মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিলে এক শ্রেণীর মানুষ বিকল্প পথে নিজেদের অভিমত ও শক্তি জানান দিতে তৎপর থাকে। এই সুযোগে উগ্রতা, বিচ্ছিন্নতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। এসব নিয়ন্ত্রণে চাপ প্রয়োগে দমনের পন্থা হিতে বিপরীত হতে পারে। উগ্রবাদ কখন ছড়িয়ে পড়ে? এক প্রকার জুলুম নির্যাতন থেকেই উগ্রবাদের বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে।দেশের কওমী মাদ্রাসা গুলো প্রচন্ডভাবে অবহেলিত, নেই সরকারি অনুদান ও নির্দেশনা। সরকারি প্রভাব ও হস্তক্ষেপ মুক্ত হয়ে থাকতেই তারা পছন্দ করেন। এর পেছনে মূল কারণ হলো অনুদান গ্রহণের পর সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রিত হবার ভয়। উগ্রবাদ ছড়ানোর পেছনে আরো কয়েকটি কারণ হলো কোনো জাতিগোষ্ঠীর প্রতি অবহেলা, নির্যাতন, বঞ্চনা, নিরবিচ্ছিন্নভাবে ধর্ম পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরী। ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা,মোটাদাগে দুটি কারণকে অনেকে প্রধানতম কারণ বলেন। এরমধ্যে একটা হচ্ছে- হতাশা -প্রতিশোধস্পৃহা । আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে সঠিক শিক্ষার অভাব । উত্থিত এসব সমস্যার সমাধান না করলে জাতির বিভাজন ও উগ্র মানসিকতার মূলোৎপাটন অসম্ভব।বলে রাখা প্রয়োজন ইসলাম শান্তি, উদার, অসাম্প্রদায়িক ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। ইসলামে উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই।

ইসলাম মানুষকে প্রকৃত মানুষ বানানোর শিক্ষা দেয়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বে শান্তি, কল্যাণ ও মানবতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। দ্বীনী দাওয়াত প্রদানের মাধ্যমে রাসূলে কারীম (সা.) ইসলাম প্রচার করেছিলেন। অতুলনীয় চরিত্র মাধুর্য, অনুপম শিক্ষা ও আদর্শ, আমল ও আখলাক দ্বারা তিনি মানুষকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়েছিলেন। চরম গোষ্ঠীগত মতানৈক্য ও সংঘাতের মধ্যে সকল গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করা যায় মহানবী (সা.)-এর সোনার মদীনাকে তার একটি অতুলনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। দাঙ্গা, উগ্রতা, নির্যাতন ইত্যাদি ধরনের কাজকে ইসলামে ফিতনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফিতনা একটি জঘন্য অপরাধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ফিতনা হত্যার চেয়েও ভয়াবহ’ (সূরা বাকারা, আয়াত-১৯১)।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল