পোস্টগুলি

ডিসেম্বর ১৫, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মজলিস উস শুরা / পরামর্শ সভা

ছবি
#মো.আবু রায়হান ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় শুরার গুরুত্ব অনেক বেশি। শুরা আরবি শব্দ ।এর আভিধানিক অর্থ পরামর্শ, consultation ।মজলিস অর্থ আসর; সভা; সমিতি, council or legislature. মজলিস উস শুরার সম্মিলিত অর্থ পরামর্শ সভা, উপদেষ্টা পরিষদ । আধুনিক যুগের পার্লামেন্টের সঙ্গে মজলিস উস শুরার তুলনা চলে।মুসলিম দেশগুলোতে শুরা বর্তমানে খুব স্বাভাবিক একটি নিয়ম হিসেবে চালু আছে। যেসব মুসলিম দেশে একনায়কতন্ত্র, রাজতন্ত্র বা সামরিক স্বৈরশাসন চলছে, সেখানেও ‘শুরা কমিটি’, ‘শুরা কাউন্সিল’ বা ‘মজলিসে শুরা’ নামমাত্র চালু আছে।রাসুল (সা) প্রাক ইসলামি যুগের দারুন নাদওয়ার আদলে মজলিসে শুরা’গঠন করেন।খেলাফত বা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শ নেওয়ার জন্য খলিফারা নির্দিষ্টসংখ্যক লোকের সমন্বয়ে ‘মজলিসে শুরা’ গঠন করতেন। কেননা আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের গুণাবলির কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘এবং তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের ভিত্তিতে কর্ম সম্পাদন করে।’ (সুরা শুরা, আয়াত ৩৮) সূরা আলে ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে : ‘আল্লাহর দয়ায় তুমি তাদের প্রতি কোমলহৃদয় হয়েছিলে, যদি তুমি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতে তবে তারা তোমার আশপাশ থেক

বায়তুল মাল ইসলামি কোষাগার

ছবি
  #মো.আবু রায়হান বায়তুল মাল একটি আরবি শব্দ যার অর্থ- অর্থের ঘর , ধন ভাণ্ডার, কোষাগার,ধনাগার House of money, House of Wealth ।ইসলামি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে বলা হয় বায়তুল মাল। কিন্তু এর দ্বারা শুধু সে ইমরাতকেই বোঝায় না, যেখানে সরকারি ধনসম্পত্তির কাজকারবার পরিচালনা করা হয়; বরং ইসলামী রাষ্ট্রের যে বিভাগটি রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের খাতগুলোর নির্বাহ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে, ব্যাপক অর্থে তাকে ‘বায়তুল মাল’ বলা হয়। বায়তুলমাল বলতে সরকারের অর্থ সম্বন্ধীয় কর্মকাণ্ড বুঝায় না। বরং বিভিন্ন উৎস হতে অর্জিত ও রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত ধন-সম্পদকেই বায়তুল মাল বলা হয়। মদিনা নগরীতে মহানবী সা:-এর পবিত্র হাতে প্রথম যেদিন ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়, মূলত সেদিন থেকেই বায়তুল মালের সূচনা হয়। এর মূল নাম ছিল ‘বাইতু মালিল মুসলিমিন’ বা ‘বাইতু মালিল্লাহ’। পরবর্তীতে মুসলিমিন শব্দটি বাদ দিয়ে এটিকে কেবল ‘বায়তুল মাল’ নাম রাখা হয়। তখন এই কোষাগারে কোনোরূপ ধনসম্পদ সঞ্চয় করে রাখা হতো না। তার সুযোগও তখন ছিল না। কারণ তখন সাধারণ নাগরিক ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আয় ছিল অতি সামান্য। ফলে রাসূলুল্লাহ সা:-এর হাতে কো

হিলফুল ফুজুল পৃথিবীর প্রথম শান্তি সংঘ

ছবি
#মো আবু রায়হান মহানবী (সা.)-এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে 'হিলফুল ফুজুল' প্রতিষ্ঠা। 'হিলফুল ফুজুল' অর্থ শান্তিসংঘ। নবুয়তপ্রাপ্তির ১৫ বছর আগে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি আরব সমাজের সব অন্যায়, অবিচার, শোষণ ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে তাঁর সমবয়সী কিছু যুবককে নিয়ে এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহানবী (সা.) এমন একটি সময় আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যখন আরব সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বিরাজ করছিল। এ সমাজে ছিল না কোনো নিয়মনীতি ও আইনের শাসন। গোত্রীয় কলহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, সামাজিক শ্রেণিভেদ, নারী নির্যাতন, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া প্রভৃতি সমাজকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করেছিল। ঐতিহাসিকরা আরবের এই সময়কে 'আইয়ামে জাহেলিয়া' বা 'অন্ধকার যুগ' বলে অভিহিত করেছেন। জাহেলিয়া যুগের এই রক্তপাত, অন্যায় ও অনাচার বালক মুহাম্মদ (সা.)-এর মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি সমাজের সব অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার জন্য সর্বদা চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। অবশেষে তাঁর মনে একটি অভিনব চিন্তার উদয় হলো। তিনি তাঁর সমবয়সী কতিপয় যুবককে নিয়ে 'হিলফুল ফুজুল' নামে একটি সংঘ গড়

হাজরে আসওয়াদ

ছবি
#মো. আবু রায়হান হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর । আরবি হাজর শব্দের অর্থ পাথর আর আসওয়াদ শব্দের অর্থ কালো। অর্থাৎ কালো পাথর। ‘হাজরে আসওয়াদ’ বেহেশতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর।এটি আদম ও হাওয়ার সময় বেহেশত থেকে পৃথিবীতে এসে পড়ে। এটিকে একটি উল্কা বলা হলেও এর সত্যতা নিশ্চিত না।হাদিসের গ্রন্থগুলোতে হাজরে আসওয়াদের সম্পর্কে প্রচুর আলোচনা এসেছে। হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন, ‘হাজরে আসওয়াদ’ প্রথমে দুধ বা বরফের চেয়েও সাদা ও মসৃণ অবস্থায় জান্নাত থেকে অবতীর্ণ করা হয়। অতঃপর আদম সন্তানের পাপে তা কলো হয়ে যায়।’ (তিরমিজি, মিশকাত)।অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাতেরই একটি অংশ। ’ (ইবনে খুজায়মা, খণ্ড: ০৪, পৃষ্ঠা: ২২০)হাজরে আসওয়াদ কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ থেকে দেড় মিটার(চার ফুট) উঁচুতে অবস্থিত।এই পবিত্র পাথরের দৈর্ঘ্য ৮ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৭ ইঞ্চি। বর্তমানে এটি আট টুকরো। আগে হাজরে আসওয়াদ ছিল আস্ত একটি পাথর। হযরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে আগুন লাগলে হাজরে আসওয়াদ কয়েক টুকরা হয়ে যায়। আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের পরে ভাঙা টুকরাগুলো

বিদায় হজের ভাষণ

ছবি
#মো. আবু রায়হান পবিত্র হজ ফরজ হওয়ার পর রাসুল (সা.) দশম হিজরি সনের নবম জিলহজ -এ আরাফার ময়দানে জীবনের প্রথম ও শেষ হজে প্রায় সোয়া লাখ মানুষের সমাবেশে ভাষণ দেন।(বিদায় হজে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে গমনকারী সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা কত ছিল এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৪ হাজার, কারো মতে এক লাখ ৪৪ হাজার। ) ইসলামের ইতিহাসে তা-ই ‘হাজ্জাতুল বিদা’ বা ‘বিদায় হজ’ নামে পরিচিত। এ ছাড়া এই ভাষণকে 'হাজ্জাতুল বালাগ' ও 'হাজ্জাতুত তামাম' বা পূর্ণতার হজ নামেও অভিহিত করা হয়। মূলত বিদায় হজে রাসুল (সা.) তিনটি ভাষণ প্রদান করেছিলেন। এক. আরাফার ময়দানে। দুই. কোরবানির দিন, মিনায়। তিন. 'আয়্যাম-ই-তাশরিকে'র মধ্যবর্তী স্থানে, মিনায়।ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে এই ভাষণে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ছিলো। ভাষণটি পূর্ণাঙ্গরূপে সংরক্ষিত হয়নি। বিভিন্ন হাদিস, তাফসির, ইতিহাস ও জীবনীগ্রন্থে আংশিক এবং খণ্ড খণ্ড আকারে তা মুদ্রিত হয়েছে। সকল হাদীসে বিদায় খুৎবার উদ্ধৃতি অন্তর্ভূত আছে। বুখারী শরীফের ১৬২৩, ১৬২৬ এবং ৬৩৬১ নম্বর হাদিসে ভাষণের বিভিন্ন অংশ