পোস্টগুলি

এপ্রিল ২৬, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রোজার শারীরিক উপকার

  রমজানের রোজার ধর্মীয় গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। ধর্মীয় গুরুত্ব বাদেও শারীরিক ক্ষেত্রে রোজার রয়েছে বেশ প্রভাব ও উপকার। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, দীর্ঘজীবন লাভের জন্য খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন বেশি নয়; বরং পরিমিত খাওয়াটাই দীর্ঘজীবন লাভের চাবিকাঠি।বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি ও গবেষণার যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলেছেন, মানুষের সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে রোজার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।বছরে এক মাস রোজা রাখার ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। এটা অনেকটা শিল্পকারখানার মতো। আধুনিক পৃথিবীতে রোজার প্রতি চেতনা সৃষ্টি করার পেছনে ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত একটি বই অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। বিখ্যাত জার্মান চিকিৎসাবিদ Hellmut Luetzner এর The secret of successful fasting অর্থাৎ ‘উপবাসের গোপন রহস্য’ বইটি। বইটিতে লেখক মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন ও কার্যপ্রণালি বিশ্লেষণ করে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে বছরে কতিপয় দিন উপবাসের অভ্যাসের কথা বলেছেন। তার মতে, উপবাস খাবারের উপাদান থেকে সারা বছর শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন), চর্বি ও আবর্জনা থেকে মুক্তি দান করে।শরীরের জমে থাকা বিষগুলো রমজানে নির্গত হয়

হিজরি সন থেকে যেভাবে বাংলা সনের উৎপত্তি হলো এবং কিভাবে ইংরেজি থেকে বাংলা সন বের করবেন?

  সন আরবি শব্দ। অর্থ হলো অব্দ বা বর্ষ বা বর্ষপুঞ্জ। আবার সনকে সাল বলা হয়। সাল ফার্সি শব্দ। ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট ছিলেন আকবর। তিনি প্রায় অর্ধ শতাব্দী ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেন।উল্লেখ্য, আকবরের রাজত্বকাল ছিল ১৫৫৬-১৬০৫ সাল পর্যন্ত। সম্রাট আকবর বাংলাসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশ থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে কতিপয় ‘ফসলি সাল’ প্রবর্তন করেন। বাংলা বর্ষ সম্রাট আকবর প্রবর্তিত সেই সব ফসলি সালের একটি। সেই সময় থেকে এ দেশের মানুষ চাষাবাদ, খাজনা পরিশোধ, সংবছরের হিসাব-নিকাশ সব কিছুতেই বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে থাকে, যেটা মুঘল শাসন আমল সম্রাট বাবর থেকে শুরু করে বাহাদুর শাহ জাফর তারপর ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তান শাসনামল পার হয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে বাংলা সন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:)-এর ইন্তেকালের পর ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা:)-এর সময়কালে হজরত আলী (রা:)-এর প্রস্তাবে মহানবী (সা:)-এর হিজরতের দিন থেকে হিজরি সন গণনা শুরু হয়। সেটি ছিল ৬২২ সালের ১৬ জুলাই। হজরত ওমর (রা) ৬৩৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজরি সনের প্রবর্তন করেন। বছরটি ছিল ১৭ হিজরি।হিজরি সন থেকেই সূচনা হয় বাংলা সনের। এর আগ

সেদিন অনুশোচনা কোনো কাজে দেবে না!

  হায়! আমরা যদি আরেকবার (দুনিয়ায়) ফিরে যেতে পারতাম এবং মুমিনদের অন্তর্ভূক্ত হতাম! (সুরা শুআরা আয়াত -১০২) কিয়ামতের দিন জাহান্নামবাসী ব্যক্তিরা এই পৃথিবীতে গোনাহগার ও অপরাধী ব্যক্তিদের অনুসরণের জন্য অনুতাপ করবে এবং জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করবে। জাহান্নামীরা প্রচণ্ড অনুশোচনায় আরেকবার পৃথিবীতে ফিরে আসার আকুতি জানাবে। তারা বলবে, আরেকবার দুনিয়ায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হলে তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। তারা বলবে, আজ আমরা উপলব্ধি করছি যে, দুনিয়াতে আমরা ভুল করেছিলাম যার কারণে আজ এই দুর্বিষহ পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেদিন এই অনুশোচনা কোনো কাজে আসবে না। কারণ, মৃত্যুর পর আর এই দুনিয়ায় ফিরে আসার কোনো সুযোগ থাকবে না। পবিত্র কুরআনে তাদের এই আকুতির জবাবে বলা হচ্ছে: পৃথিবীতে তাদের সৎপথে ফিরে আসার জন্য বহু নিদর্শন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে হেদায়েত পাওয়ার চেষ্টা করেনি। মহান আল্লাহ তাদেরকে ভ্রান্ত পথ থেকে সিরাতুল মুস্তাকিমে আসার জন্য গোটা জীবন সময় দিয়েছেন। কিন্তু সেই সুযোগ ও সময়ের অপব্যবহার করে তারা তাদের ভ্রান্ত পথে চলা অব্যাহত রেখেছে। কাজেই তারা আজ অনুতাপের য

জাস্টিন ট্রুডোর ইসলাম নিয়ে বক্তব্য রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

প্রিয়নবী (স) তাঁর সমসাময়িক সর্বাধিক প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পত্র দেন। তাঁর (স) পবিত্র পত্রটি সুদর্শন সাহাবি দিহইয়াতুল কালবি (রা.)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের কাছে প্রেরণ করেছিলেন। পত্রের বিষয়বস্তু ছিল - ‘বিসমিল্লাহির রামমানির রাহিম। আল্লাহর বান্দা ও রাসুল মুহাম্মদের পক্ষ থেকে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস বরাবর। ন্যায়ের পথের অনুসারীদের প্রতি সালাম। অতঃপর আমি আপনাকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যদি শান্তি লাভ করতে চান, তবে ইসলামে দীক্ষিত হোন। যদি আপনি ইসলাম গ্রহণ করেন; তবে আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিফল দেবেন। আর যদি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনার সব প্রজা-সাধারণের ভ্রষ্টতার দায় আপনার ওপর বর্তাবে। হে আহলে কিতাবগণ। বিতর্কিত সব বিষয় স্থগিত রেখে এসো আমরা এমন এক বিষয়ে (তাওহিদ) ঐকমত্যে পৌঁছি যাতে তোমাদের ও আমাদের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই। আর তা হচ্ছে- আমরা এক আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো ইবাদত করবো না... যদি এ বিষয়গুলো আপনি অস্বীকার করেন, তবে শুনে রাখুন যে, সব অবস্থায় আমরা আল্লাহ্র একাত্মের বিশ্বাসে অবিচল থাকবো। —মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্’ (বুখ

হাশরের ময়দানে নেতাদের বিরুদ্ধে কর্মীদের অভিযোগ

  তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের আনুগত্য করেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।(সুরা আহযাব আয়াত ৬৭-৬৮ ) জাহান্নামের দুঃসহনীয় শাস্তি দেখার পর পাপী ব্যক্তিরা তাদের পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অভিশাপ দিতে থাকবে; যদিও এ বক্তব্য তাদের কোনো উপকারে আসবে না। কারণ, পার্থিব জীবনে তারা তাদের নেতাদের আনুগত্য না করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতে পারত। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এসব অপরাধী ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তাদের নেতাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি ও মহা অভিসম্পাত কামনা করবে। অথচ সে আবেদন মঞ্জুর হলেও তাদের দুই দলকেই দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। কারণ, যারা কিয়ামতের দিন নেতাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি কামনা করবে তাদের উদ্দেশ করে আল্লাহ তায়ালা সূরা আরাফের ৩৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন: এই দুই ধরনের ব্যক্তিদের জন্যই শাস্তি হবে দ্বিগুণ। কাফের ও জালিম নেতাদের শাস্তি দেয়া হবে সাধারণ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ শাস্তি পাবে এ ধরনের নেতাদের আনুগত্য করার জন্য; কারণ, তারা আনুগত্য না করল

তারাবিহ নামাজ ও চিকিৎসা বিজ্ঞান

  তারাবির ফজিলত সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকীর আশায় কিয়ামুল লাইল তথা তারাবিহ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করা হবে।(বুখারি শরীফ) রমজানের এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত তারাবিহ নিয়েও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা থেমে নেই। রমজানে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে ২০ রাকাত( কমবেশি) তারাবিহ নামাজ আদায় করা হয় । মিসরের শিক্ষিকা ডাক্তার সালওয়া রুশদি ৬০ বছর বয়সের বেশি নারী-পুরুষের ওপর চার বছরব্যাপী এক মাস করে গবেষণা করে দেখেন, তারাবি নামাজ হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও শরীরের পেশি মজবুত করে। মেরুদণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য সংযোগস্থল নমনীয় করে ও রক্তপ্রবাহকে অধিক ক্রিয়াশীল করে। তারাবিতে বেশি রুকু ও সিজদার ফলে রক্ত চলাচল ও শ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়ার উন্নতি হয়। গবেষকরা আরও বলেন-পিঠে, জয়েন্টে ও মাংসপেশিতে যত ব্যথাই থাকুক না কেন; তার উচিত তারাবিহ পড়া।

ইফতারে খেজুর ও খেজুরের পুষ্টি উপাদান

ছবি
খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। সারাদিন রোজা থেকে ইফতারে খেজুর আপনার সারাদিনের ক্লান্তিভাব দূর করতে সদা সচেষ্ট। আজ হতে সাড়ে চৌদ্দশ বছর আগে রাসুলুল্লাহ (সা) ইফতারে খেজুর খেয়েছেন এবং তা খেতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন। হজরত সালমান ইবনে আমের আদ-দাব্বি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইফতার করে তখন তার খুরমা খেজুর দিয়ে ইফতার করা উচিত। তবে যদি সে খুরমা খেজুর না পায়, তাহলে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, পানি পবিত্র। (আবু দাউদ, তিরমিজি) হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) নামাজের আগে ইফতার করতেন কয়েকটি টাটকা খেজুর দিয়ে। যদি তিনি টাটকা খেজুর না পেতেন তাহলে শুকনা খেজুর (খুরমা) দিয়ে ইফতার করতেন। আর তাও যদি না পেতেন, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন। (আবু দাউদ, তিরমিজি) খেজুরের পুষ্

আফগানিস্তানে কে জিতল?

ছবি
  ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল। এ হামলায় আল কায়েদার ওসামা বিন লাদেন জড়িত অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে নামে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে সেই সন্ত্রাসী হামলা নাইন–ইলেভেন নামে পরিচিত। আফগানিস্তানে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে অনেক মাশুল দিয়েছে।২০ বছরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় আড়াই হাজার সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি। আফগানিস্তানে থাকা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনাইটেড নেশন অ্যাসিসটেন্স মিশন ইন আফগানিস্তান বা উনামা বলছে, ২০০৯ সালে তারা হিসাব শুরু করার পর গত বছরের মার্চ পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি আফগান বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে।প্রেসিডেন্ট ঘানি ২০১৯ সালে বলেন, ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৫ হাজারের বেশি সদস্য নিহত হয়েছে।এযুদ্ধে আমেরিকার ডলার খরচ হয়েছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন। আফগানিস্তানে বর্তমানে ন্যাটো-আফগান মিশনে সেনা রয়েছে ৯ হাজার ৬০০ জন। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অন্তত আড়াই হাজার।প্রায় দুই দশক ধরে চলা এই যুদ্ধে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন হয়েছে ঠিকই;

ইফতারে এক গ্লাস দুধ

ছবি
দুধকে বলা হয় সুপার ফুড বা সর্বগুণ সম্পন্ন খাবার। গৃহপালিত গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও উট থেকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এসব দুধ পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন-‘আর গবাদিপশুর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। তার উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু।’ (সুরা নাহল আয়াত -৬৬) বর্তমানে মানুষ পানীয় হিসেবে অনেক জিনিস গ্রহণ করে। অথচ পানীয় হিসেবে প্রিয় নবি (সা)'র অন্যতম পছন্দ ছিল দুধ। এ দুধ পান করা সম্পর্কে প্রিয় নবি (সা)'র তিনটি সুন্নাত রয়েছে, যা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। তাহলো-পানীয় হিসেবে দুধ গ্রহণ করা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় দুধ রাখা। কেউ দুধ পান করতে দিলে বা উপহার হিসেবে দিলে তা ফেরত না দেয়া। হাদিসে এসেছে-হজরত ইবনে ওমর (রা) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা) বলেছেন, তিনটি বস্তু ফিরিয়ে দেয়া যায় না- বালিশ, সুগন্ধি তেল বা সুগন্ধি দ্রব্য এবং দুধ।’ (তিরমিজি) রমজান মাসে ইফতারে দুধ পান করা নিয়ে হাদিস বর্ণিত আছে। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা সমপরিমাণ সওয়াব ওই ব্যক্তিকে প্রদান করবেন যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে সামান্য দুধ দিয়ে কিংবা খেজুর দিয়

শারীরিক সুস্থতার জন্য রোজা

রোজা রাখার উপকারিতা নিয়ে আজ পর্যন্ত কম গবেষণা হয়নি। এখনো চলছে। মুসলিম অমুসলিম বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে রোজার উপকারী দিক নিয়ে গবেষণা করে প্রকৃত চিত্র উদঘাটন করেছেন। রোজা বিষয়ে জাপানি বিজ্ঞানী ওশিওমি ওহসুমি (Yushiomi Ohsumi) অটোফেজি (Autophasy) -এর প্রক্রিয়া আবিষ্কার করে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার এই আবিষ্কার চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী ও মানুষের অনেক রোগব্যাধির প্রতিষেধক হিসেবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই মৌলিক আবিষ্কারের জন্য ২০১৬ সালে ওশিওমি ওহসুমি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৭৬৯ সালে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ পিটার ভেনিয়ামিনভ রোজা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। সেই রিপোর্টে তিনি মানুষকে রোজা রাখার উপদেশ দেন। তার যুক্তি ছিল রোজার কারণে পরিপাকতন্ত্র একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশ্রাম পায়। ফলে সুস্থ হবার পর তা ঠিক মত নিজের কাজ চালাতে পারে। ইতালির বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল এঞ্জেলা (মার্চ ৬, ১৪৭৫ - ফেব্রুয়ারি ১৮, ১৫৬৪) ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। ৯০ বছর বয়সেও তিনি কর্মক্ষম ও কর্মঠ ছিলেন। এর রহস্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'আমি বহু বছর আগে থেকে মাঝে

মানবিক সংসার

ছবি
দশ বছর হয়েছে শিমুর বিয়ের। ঘর আলোকিত করে ফুটফুটে একটি সন্তানের আগমনের ব্যাকুলতায় সে ছিল অস্থির। কিন্তু তার সেই ব্যাকুলতা কখনো আলোর মুখ দেখেনি। বিষন্নতা আর হতাশায় তার মনের কার্নিশে ভারি মেঘ জমে আছে। স্বামী, বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ি নিয়ে তার অপূর্ণ সংসার। অপূর্ণ মানে একটি সন্তানের অভাব বোধ আরকি। উচ্চ শিক্ষিত শিমু একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। চাকরিটা জোটে শ্বশুরের একান্ত চাওয়ায়। স্বামী সোহান একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে জব করে। সেই সুবাদে সেখানেই তার থাকা। কখনো সখনো বাসায় যাওয়া হয়। তবে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে বাসাতেই সময় কাটে সোহানের। সংসার স্ত্রীর প্রতি কর্তব্য পালনে সোহান বড্ড বেখেয়াল।এদিকে শিমুও তার চেপে রাখা কষ্ট গুলো শেয়ার করার জন্য মরিয়া।নিসঙ্গ জীবনে একটু সঙ্গের আশায় কখনো অমিত,ক্লাসমেট দীপন, কখনো রোহান তার টাইম পাসের বন্ধু। দিনরাত ফোনে কথা চলছে। ননস্টপ কথা না বললে যেন শিমুর পেটের ভাত হজমই হতো না। এরমধ্যে দীপনের সঙ্গে রিলেশনে জড়িয়ে পড়ে শিমু। রাত বিরাতে দুজনের কথা, মিট করা, আড্ডা সমানতালে চলছে। সোহান এসব দেখেও কেয়ারলেস।তার আবেগ অনুভূতি যেন ভোঁতা হয়ে গেছে। এরমধ্যে শিমু সোহানকে ডিভোর্স দিতে

কাঠমিস্ত্রির স্বপ্ন পূরণে সালাহউদ্দিন আইয়ুবী

ছবি
  ১০৯৯ সালের কোনো এক সময়ের একটি ঘটনা। বায়তুল মুকাদ্দাস তখন খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের দখলে। সেময় বাগদাদ শহরের এক কাঠমিস্ত্রি বসবাস করতেন। এ কাঠমিস্ত্রি মনের ভালোবাসা দিয়ে কারুকার্যমণ্ডিত একটি মিম্বার তৈরি করেন।মিম্বারটি সৌন্দর্যের কথা লোক মুখে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আর তা দেখতে মানুষ দলে দলে কাঠমিস্ত্রির বাড়িতে আসতে শুরু করে। অনেকেই মিম্বারটি কিনতে চায়। কিন্তু কাঠমিস্ত্রি তা বিক্রি করতে রাজি হয়নি। তার একই জবাব-‘এ মিম্বার বিক্রির জন্য নয়; বরং এটি বানিয়েছি মসজিদে আল আকসার জন্য‘ কাঠ মিস্ত্রির কথা শুনে সবাই হাসতো। অনেকে তাকে পাগল বলে সম্বোধন করতো। কিন্তু কাঠমিস্ত্রি তার সিদ্ধান্তে ছিলেন অটল-অবিচল। অনেকদিন পর...একদিন এক ছোট্ট ছেলে তার বাবার হাত ধরে মিম্বারটি দেখতে এসেছিল। কাঠমিস্ত্রির কাছে তার স্বপ্নে কথাও জেনেছিল। সেদিনই ওই ছোট্ট ছেলেটি প্রতিজ্ঞা করেছিল- সে কাঠমিস্ত্রির স্বপ্ন পূরণ করবে। সেই ছেলেটি আর কেউ নন; তিনি হলেন- বীর সেনাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী।১১৮৭ সালে মুসলিম বীর সিপাহসালার সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর হাত ধরেই পুনরায় জেরুজালেম শহর মুসলমানদের অধিকারে আসে। আর তিনি বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়ের

সালাউদ্দীন আইয়ুবীর মহানুভবতা

  সালাহউদ্দিন আইয়ুবী(১১৩৭– ১১৯৩) বর্তমানের ইরাকের তিকরিতে জন্মগ্রহণ করেন।তার পুরো নাম আবু-নাসির সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব। তার ব্যক্তিগত নাম ইউসুফ, সালাহউদ্দিন হল লকব যার অর্থ “বিশ্বাসের ন্যায়পরায়ণ”।পাশ্চাত্যে তিনি সালাদিন নামে পরিচিত। তাঁর পরিবার কুর্দি বংশোদ্ভূত এবং মধ্যযুগীয় আর্মেনিয়ার ডিভিন শহর থেকে আগত।নুরউদ্দিন জংগি ছিলেন তার নানা।সালাহউদ্দিন আইয়ুবী ছিলেন মিশর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার তিনি অধিপতি হয়েছিলেন। লেভান্টে ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দীন মুসলিম প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেন। শুধু মুসলিম ইতিহাস নয়, শত্রুর কাছেও তিনি ছিলেন সম্মানিত এক বীর। তৃতীয় ক্রুসেডের যুদ্ধ চলাকালে ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ড এক বিশাল বাহিনী নিয়ে জেরুজালেমের একরি নামক শহর কয়েক মাস অবরোধ করে রাখলে সেখানকার মুসলমানরা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। পরে রাজা রিচার্ডের বাহিনী একরিতে বসবাসকারী অবরুদ্ধ অসহায় মুসলমানদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। রাজা রিচার্ডের এই জঘন্য কাজে সুলতান সালাউদ্দিন অত্যন্ত ক্র

মুসলিমের বিপদে

ছবি
একদিন মদীনার দুই ব্যক্তি একজন যুবককে টেনে হিছড়ে, অর্ধপৃথিবীর শাসক খলীফা হযরত উমর (রা) এর দরবারে হাজির করল। এবং তারা বিচার দাখিল করল যে, এই যুবক আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই। আমিরুল মো’মিনীন খলীফা হযরত উমর (রা) সেই যুবককে জিজ্ঞেস করলেন, তার বিপক্ষে করা দাবী সম্পর্কে। সেই যুবক উত্তরে বললেন, তাদের দাবী সম্পুর্ণ সত্য। এই বলে যুবকটি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘঠনাটি বর্ণনা করতে লাগলেন। তিনি বললেন, আমি ক্লান্ত হয়ে যাবার কারণে বিশ্রামের জন্য এক খেজুর গাছের ছায়ায় বসলাম। ক্লান্ত শরীরে অল্প সময়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার একমাত্র পছন্দের বাহন উটটি পাশে নেই। খুঁজতে খুঁজতে কিছু দূর গিয়ে পেলাম, তবে তা ছিল মৃত। পাশেই ছিল ওদের বাবা। যে আমার উটকে তার বাগানে প্রবেশের অপরাধে পাথর মেরে হত্যা করেছে। এই কারণে আমি হঠাৎ করে রাগান্বিত হয়ে পড়ি এবং তাদের বাবার সাথে তর্কাতর্কি করতে করতে এক পর্যায়ে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে ফেলি, ফলে সে সেইখানেই মারা যায়। যা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে গেছে। যার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। বাদী’রা জানালেন- আমরা এর মৃত্যুদণ্ড চাই। হযরত উমর (রা) সব শোন

কমিউনিস্ট আমলে রাশিয়ায় যেভাবে কুরআন শেখানো হতো

ছবি
  কম্যুনিজমের কঠিন দিনগুলোতেও ধর্মদ্রোহিতার নিগড়ে আবদ্ধ রাশিয়ার মানুষের মাঝে সেখানকার ওলামায়ে কেরাম কিভাবে কুরআন সংরক্ষণ এবং তার প্রশিক্ষণ দিতেন, কয়েক বছর আগে তার এক প্রেরণাদায়ক বিবরণ উঠে এসেছে ৯৫ বছর বয়সী এক রাশিয়ান মুসলিম বৃদ্ধের যবানীতে। রাশিয়ান মুসলমানদের উপর কম্যুনিস্ট নির্যাতনের শুরুকালে তার বয়স ছিল ২৫ বছর। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাসাগুলো বেশ বড় করে তৈরী করতাম এবং চারদিকের কক্ষগুলোর ঠিক মাঝখানে একটি ছোট খোলা জায়গা থাকত। এই খোলা জায়গা বা হলটির চারপাশে সাউন্ড-প্রুফ কিছু ছোট ছোট চেম্বার তৈরী করা হ’ত। হলের একটি গোপন দরজা থাকতো যা দিয়ে এইসব চেম্বারে যাতায়াত করা হ’ত। এই দরজাটি ছিল মূলত একটি শো-কেস, যেখানে আমরা মদ ও অন্যান্য পানীয় সাজিয়ে রাখতাম। এছাড়া এই গোপন দরজার আশেপাশে আমরা লেনিনের ছবি, টেলিভিশন এবং এধরনের আরও কিছু দৃষ্টিকটু জিনিস সাজিয়ে রাখতাম। যখনই বাসা-বাড়ী সার্চ করবার জন্য পুলিশ আসতো, তারা সেখানে সন্দেহ করবার মত কিছুই দেখতে পেত না। মদের বোতল ও ছবিগুলো দেখে ভেবে নিত যে এই লোকদের আদর্শ ঠিকই আছে। তারা ঘুর্ণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেনি যে, ঐ মদের শো-কেসের পেছনে মাত্র কয়েক হাত ভিতরেই

শক্তি না যোগ্যতা কোনটি বড়?

ছবি
আজকাল জ্ঞান গরীমা যোগ্যতার চেয়ে শক্তিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। হোক না সেটা পেশি শক্তি কিংবা রাজনৈতিক শক্তি। ভারতে এমন একজন লোকও বোধহয় নেই যে গামা পালোয়ানের নাম জানে না।গোলাম মুহাম্মদের পাঞ্জাবি ডাকনাম ছিল গামা। একটি মুসলিম পরিবারে তিনি জন্ম নেন।৫০ বছরের কর্মজীবনে তিনি অপরাজেয় হিসেবে টিকে ছিলেন। তাকে তার সময়ের শ্রেষ্ঠ পালোয়ান হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান চলে যান। আজ থেকে বহু বছর আগে বিশ্বের সকল পালোয়ানকে হারিয়ে তিনি ‘রুস্তমে জহ’ বা বিশ্বজয়ী পালোয়ান খেতাবটি জয় করেছিল।এই উপাধি লাভের পূর্বে তিনি ‘রুস্তমে হিন্দ’খেতাব পেয়েছিলেন ভারতের তাবড় বড়ো পালোয়ানদের পরাস্ত করে।বিশ্ববিখ্যাত কুস্তিগির গামা পালোয়ান আর জগত বিখ্যাত কবি আল্লামা ইকবাল ছিলেন একই এলাকার অধিবাসী। তাদের উভয়ের মধ্যে ছিল গভীর বন্ধুত্ব ও ভালো সম্পর্ক।তাদের মধ্যে প্রায় বিতর্ক হতো যোগ্যতা, জ্ঞান বড় না শক্তি বড় ইত্যাদি নিয়ে? তো ভারতে খেলাফত আন্দোলনের সময় এক সমাবেশে তারা দুজনেই উপস্থিত হলেন। হঠাৎ করে কবি ইকবাল বলে উঠলেন, এইবার গামা সাহেব,বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের মাঝে কিছু বলবে

হযরত ওমরের জেরুজালেম গমন ও ওমর মসজিদ

ছবি
ওমর মসজিদ জেরুজালেমের চার্চ অব দ্য হলি সেপালচারের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মুসলিম সৈন্যরা জেরুজালেমের কাছাকাছি চলে আসে। তখন জেরুজালেমের দায়িত্বে ছিলেন বাইজেন্টাইন সরকারের প্রতিনিধি ও স্থানীয় খ্রিস্টান গীর্জার প্রধান যাজক সোফ্রোনিয়াস। জেরুজালেম দখলের ঘটনাটি ছিল এরূপ- হযরত ওমর (রা)-এর আদেশে সাহাবী আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা) জেরুজালেম অধিকার করবার জন্য এগিয়ে যান মুসলিম বাহিনীকে নিয়ে। সামনে সামনে ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা)। নভেম্বরে জেরুজালেমে এসে পৌঁছায় মুসলিম বাহিনী। ছয় মাস অবরোধ করে রাখার পর নগরকর্তা সোফ্রোনিয়াস আত্মসমর্পণ করতে রাজি হন। তবে শর্ত একটাই, হযরত ওমর (রা)-কে নিজে আসতে হবে, তাঁর হাতেই সমর্পণ করবেন।এই পরিস্থিতিতে হযরত ওমর (রা) তার এক গোলামকে সঙ্গে নিয়ে জেরুজালেমের পথে রওনা দেন। দুইজনের যানবাহন ছিল একটিমাত্র উট। তাই পালা করে ওমর (রা) এবং গোলাম উটে চড়তেন। ওমর (রা) যখন উটে চড়তেন, তখন গোলামটির হাতে থাকত উটের রশি আর গোলামটি যখন উটে চড়ত, তখন ওমর (রা) এর হাতে থাকত উটের রশি। এভাবেই তারা জেরুজালেমের কাছে পৌঁছেন। অবস্থা এমন হলো যে, ওমর (রা) জেরুজালেম শহরে প্র

কমিউনিস্ট রাশিয়ায় ইসলাম ও মুসলমান

ছবি
রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে।দেশটির ইতিহাস শুরু হয় ৩য় ও ৮ম খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে পূর্ব স্লাভদের মাধ্যমে যারা ইউরোপের একটি স্বীকৃত জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ভারাঞ্জিয়ান যোদ্ধা ও তাদের বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শাসিত হয় এবং নবম শতকে দেশটির উত্থান শুরু হয়। ৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকে গোঁড়া খ্রিস্টান রীতি গৃহীত হয়। ইসলাম প্রথম রাশিয়ে প্রবেশ করে ৮ম শতাব্দীতে দাগেস্তান হয়ে। এরপর ৯২২ সালে রাশিয়ার ভলগা-বুলগেরিয়ায় প্রথম ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত।পরবর্তীতে চেঙ্গিস খানের নাতি বাতু খান ১২৩০-এর দশকে রাশিয়া জয় করে। পরে মোঙ্গলরা (তাতার) ইসলাম গ্রহণ করলে রাশিয়ায় ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১২৩৬ থেকে ১২৩৭ সালের মধ্যে মোঙ্গলরা ভোলগা বুলগার রাষ্ট্র ধ্বংস করে দেয় এবং এরপর সমগ্র রুশ ভূমিকে পদানত করে। ১৩২৭ সালে গোল্ডেন হোর্ডের শাসক উজবেক খান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এর ফলে এক শতা

দুনিয়াদার আলেম / নিকৃষ্ট আলেম কারা

  আলেম সমাজের মধ্যে এক শ্রেণীর আলেম আছে, যারা স্বীয় এলেম দ্বারা দুনিয়াকে অন্বেষণ করে; দুনিয়ার মান-সম্মান, ইজ্জত, ধন-সম্পদ, শান-শওকত, ও প্রভাব-প্রতিপত্তি অর্জনে স্বীয় এলেমকে মূলধন হিসেবে কাজে লাগায়। এই সকল আলেমদেরকেই দুনিয়াদার আলেম বা নাফসপরাস্ত আলেম বলা হয়। এরা মানবজাতির কলংক। এরা নিকৃষ্ট আলেম হিসেবে আখ্যায়িত। এদের উদ্দেশ্য অভিশপ্ত দুনিয়া অর্জন। আলেমদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা)'র একটি হাদীস তরীকায়ে মোহাম্মাদিয়া গ্রন্থে হযরত আনাস (রা)'র বাচন ভঙ্গিতে এভাবে উদ্ধৃত হয়েছে, হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন যে, শেষ যামানায় (কিছু সংখ্যক) মূর্খ ইবাদাতকারী এবং ফাসেক আলেম বের হবে। এ সম্পর্কে হযরত মুজাদ্দেদ আলফে সানী মাকতুবাত গ্রন্থে লিখেছেন যে, জনৈক বুযুর্গ ব্যক্তি একবার অভিশপ্ত ইবলিসকে দেখতে পায় যে, সে একেবারে খোশ মেজাজে ও বেকার বসে আছে। ঐ বুযুর্গ ব্যক্তি ইবলিসকে তার এহেন বেকার বসে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে প্রত্যুত্তরে সে বলে যে, বর্তমান সময়ের আলেম সমাজ আমাদের কাজ সমাধা করছে, জনগণকে পথভ্রষ্ট করার জন্য তারাই যথেষ্ট। তিনি তার মাকতুবাত গ্রন্থে আরো লি

হক্কানি আলেম কিভাবে চিনবেন ও তাঁদের মর্যাদা

যারা প্রকৃত আলেম তাদের মর্যাদা আল্লাহর দরবারে অতি উচ্চে। সাধারণ মানুষের মাঝে আলেমরা হলেন নক্ষত্ররাজিতুল্য। যাদেরকে অনুসরণ করার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের সন্ধ্যান লাভ করে থাকে। মহানবী (সা) বলেছেন, “পৃথিবীতে আলেমদের উদাহরণ হলো নক্ষত্ররাজির মতো। এদের সাহায্যে জল ও স্থলের অন্ধকারে পথের দিশা পাওয়া যায়। আর যদি তারকারাজি নির্মিলিত হয়ে যায়, তবে পথিকদের পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। (মুসনাদে আহমাদ ও জামিউস সগীর) একজন সাধারণ দ্বীনদার ব্যক্তিদের জন্য হক্কানী আলেম চিনার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল,যে আলেমের চেহারা ও পোশাকে সুন্নতের ছাপ রয়েছে,কথায় আচরণে তাকওয়া পরহেযগারী,দাওয়াত ও তাবলীগের প্রতি মোহাব্বত রাখে, হক তাসাউফের প্রতি বিশ্বাস রাখে, বিদআতের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে, সুন্নতের প্রতি থাকে সদা আগ্রহী। হযরত সুফিয়ান ছাওরী (রহ) হতে বর্ণিত যে, একদা ওমর (রা) আকাবিরে তাবেয়ীনদের অন্যতম কাবে আহবার (রহ) কে জিজ্ঞেস করলেন-সাহেবে ইলম বা প্রকৃত আলেম কারা? প্রত্যুত্তরে কা’ব (রহ) বললেন-সাহেবে ইলেম বা প্রকৃত আলেম তারা যারা স্ব-স্ব উপার্জিত ইলম অনুযায়ী আমলও করেন। পুনরায় ওমর (রা) জিজ্ঞেস করলেন-কোন বস্তু আলেমদের অন্তর

আজারবাইজানে হিজাব নিষিদ্ধ, আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের প্রতিদান!

ছবি
আজারবাইজানে পবিত্র রমজান মাসে নারীদের ইসলামি শালিন পোশাক বা হিজাব নিষিদ্ধের ঘটনা দক্ষিণ ককেশিয় অঞ্চলের এই মুসলিম দেশের ধর্মপরায়ণ মানুষের মর্মবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজারবাইজানের জনগণ এবার এমন সময় রোজা পালন করছে যখন বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও সেদেশের সরকার মসজিদগুলো বন্ধ রেখেছে এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ওপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাপ ও বিধিনিষেধ অব্যাহত রেখেছে।এ বিষয়ে রুশ বিশেষজ্ঞ সের্গেই জেন্ট মার্কুস বলেন, মুসলিম দেশ হিসেবে আজারবাইজানে হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এ ধরণের পদক্ষেপ দেশটির জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে সম্প্রতি আর্মেনিয়ার সঙ্গে নগর্নকারাবাখ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ৪৪ দিনের যুদ্ধে আজারবাইজানের জনগণও সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে এবং প্রচণ্ড ওই যুদ্ধে আজারবাইজান বিজয়ী হয়। এ বিজয়ের পর দেশটির ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ভেবেছিলেন তাদের মসজিদগুলো খুলে দেয়া হবে এবং তারা স্বাধীনভাবে ধর্ম প্রচারের কাজ করতে পারবে। কিন্তু তাদের সে প্রত্যাশা আজো পূরণ হয়নি। তাই অনেকের কাছেই প্রশ্ন তাহলে কি এটা জনগণের ওই আত্মত্যাগের পুরস্কার আজারবাইজানের মোট জনসংখ্যার ৯৮

আলেমদেরকে গালি দেওয়া !

  যেকোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া, বিদ্বেষী মনোভাব, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা নাজায়েজ ও ফাসেকি কাজ। সুতরাং উম্মতের শ্রেষ্ঠ সম্প্রদায় উলামায়ে কেরামকে গালি দেওয়া, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা আরো জঘন্যতম কাজ তা বলাই বাহুল্য। আলেমের সঙ্গে দুশমনি ও গালি দেওয়ার কারণ দুটি হতে পারে। যথা—১. ব্যক্তিগত কোনো কারণে। ২. আলেম হওয়ার কারণে। কোনো আলেমকে আলেম হওয়ার কারণে গালি দেওয়া, তাঁর সঙ্গে শত্রুতা বা বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করা একটি কুফরি কাজ। এটি খুবই ভয়াবহ মানসিকতা। এমন মানসিকতা লালনকারী ব্যক্তি তাওবা না করলে ঈমানের সঙ্গে তার মৃত্যু হবে কি না ঘোর সন্দেহ আছে। আল্লামা জাইনুদ্দিন ইবনে নুজাইম মিসরি (রহ.) (৯৭০ হি.) বলেন, যদি কেউ কোনো আলেম বা ফকিহকে ব্যক্তিগত কোনো কারণ ছাড়া (আলেম হওয়ার কারণে) গালি দেয়, তাহলে সে কাফির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ (আল-বাহরুর রায়েক : ৫/১৩২) ইমাম তাহাবি (রহ.) বলেন, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকিদা হলো, পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরাম, তাবেয়িন এবং তাঁদের পরে আগত মুহাদ্দিসিনে কেরামের যথাযথ মর্যাদা বজায় রাখা। যে তাঁদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবে এবং সমালোচনা করবে সে ভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে। (আকিদাতুত তাহাবি : ৩০) হাফ

রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত

  রমজান মাসে রোজাদারকে ইফতার করানো হলো মুমিনের বিশেষ আমল। এ বিশেষ আমলের বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। এ ছাড়াও রয়েছে অনেক সাওয়াব ও ফজিলত।হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে, ওই রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াবে কোনো কম করা হবে না। সাহাবায়ে কেরাম এ কথা শুনে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের অনেকেরই রোজাদারকে ইফতার করানোর সামর্থ্য নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, পানিমিশ্রিত এক কাপ দুধ বা একটি শুকনো খেজুর অথবা এক ঢোক পানি দিয়েও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তাতেও আল্লাহ তাকে সেই পরিমাণ সওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহ তাআলা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।(সহিহ ইবনে খুজাইমা ১৮৮৭, বায়হাকি, শুআবুল ইমান : ৩৩৩৬, আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব : ১৭৫৩) ইফতারের দাওয়াত গ্রহণ করা বৈধ ও কল্যাণের কাজ। কোনো অজুহাতে বা

রমজানে বিশেষভাবে করণীয়

কুরআন তিলাওয়াতে যত্ম নেয়া: রমজান হলো কুরআনের মাস। এ মাসে হযরত জিব্রাইল (আ.) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পূর্ণ কুরআন উপস্থাপন করতেন। সাহাবায়ে কেরাম রমজান মাসে কুরআন নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তেন। অনেক সাহাবী রমজানের প্রতিদিন কুরআন খতম করতেন। বহু পূর্বসুরী রমজান মাসে প্রতি তিন দিনে কুরআন খতম করতেন। তাই কুরআন তেলাওয়াতে বিশেষভাবে যত্ম নেয়া উচিত। তারাবীহসহ আল্লাহ তায়ালার ইবাদাতে রাত্রি জাগরণ: হযরত উমর (রা.) রমজানের মধ্যরাতের পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিয়ে ‘নামাজ’ ‘নামাজ’ বলে উৎসাহ দিতেন। হযরত উসমান (রা.) রমজানের রাত্রে এমন দীর্ঘ নামায পড়তেন যে অনেক সময় এক রাকাতে পুরো কুরআন পড়ে ফেলতেন। দান-সদকা করা: রমজান মাসে তাক্বওয়া অর্জনের আরেকটি মাধ্যম হলো সদকা। নিজের কষ্টার্জিত সম্পদ থেকে স্বত্ব ত্যাগ করে গরীব-দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দেয়াকে সদকা বলে। রাসূল (সা) ছিলেন সবচে’ বড় দানবীর। আর রমজান মাসে তিনি সর্বাধিক দান-সদকা করতেন। তিনি বলেন- সর্বোৎকৃষ্ট সদকা হলো রমজানের সদকা। রোজাদারকে ইফতার করানো: হযরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে- রাসূল (সা) ইরশাদ করেন- ‘যে রমজান মাসে কোন রোজাদারের ইফতারের ব্যব