পোস্টগুলি

অক্টোবর ১৫, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ব্যভিচারের শাস্তি ও প্রচলিত আইন কী বলে?

  যিনা (ব্যভিচার) একটা চরম অপরাধ। অনেক অপরাধের সমষ্টি। মানবসভ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি। নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার চূড়ান্ত রূপ। এতে আত্মিক, মানসিক, শারীরিক, চারিত্রিক, সামাজিক বহু রকমের বিপর্যয় ঘটে। এর কুফল কখনো কখনো গোটা সমাজকে আচ্ছন্ন করে ফেলে।ইসলাম যিনার কাছে যেতেও নিষেধ করে- তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় তা অশ্লীলতা ও বিপথগামিতা। (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত। - ১৭) যিনা কত নিকৃষ্ট তা বোঝার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। এখানে ‘যিনা করো না’ এ কথা বলা হয়নি; বরং এর কাছে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। এ থেকে অনুমান করা যায়, এটা কত জঘন্য অপরাধ। ইসলামে শুধু অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের চূড়ান্ত রূপটাই যিনা নয়। বরং যেসব কাজ যিনার প্ররোচনা দেয় সেগুলোও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং তাও যিনা বলে গণ্য।এক হাদীসে আছে-চোখের ব্যভিচার হল দেখা। কানের ব্যভিচার শোনা। জিহ্বার ব্যভিচার বলা। হাতের ব্যভিচার ধরা। পায়ের ব্যভিচার হাঁটা। মন কামনা করে আর লজ্জাস্থান তা সত্য বা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস - ২৬৫৭) ধর্ষণের ক্ষেত্রে একপক্ষে ব্যভিচার সংগঠিত হয়। আর অন্যপক্ষ হয় নির্যাতিত। তাই নির্যাতিতের কোনো শাস্তি নেই।

বাড়তি মোহরানা বিলম্বিত বিবাহ ও বিবাহ ঋণ

ছবি
মো. আবু রায়হান বর্তমান সময়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কে কার চেয়ে বেশি মোহরানা দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করবে- এ নিয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে কনেপক্ষ। বরের সামর্থ্য বিবেচনা না করে বরের ওপর অযৌক্তিকভাবে ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, যা ইসলাম কখনও সমর্থন করে না। অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামের চিকিৎসক দম্পতি আকাশ-মিতুর নির্মম বিচ্ছেদের জন্য দেনমোহরকে প্রধান উপজীব্য বলে মনে হয়। বেচারা আকাশ ৩৫ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে আত্মঘাতি হতে বাধ্য হন। ইদানীং অভিযোগ উঠেছে, একশ্রেণির নারী বিয়ের দেনমোহরকে ব্যবসায়ে পরিণত করেছে। বিয়ের কিছুদিন পর পরকীয়া কিংবা তুচ্ছ অজুহাতে বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। এতে করে দেনমোহরের পুরো টাকা বরকে বহন করতে হয়।অনেকেই মনে করেন, দেনমোহরের টাকা স্ত্রীকে দিতে হয় শুধু বিয়ের বিচ্ছেদ ঘটলে। এটা অজ্ঞতা ও চরম ভুল ধারণা। বিয়েবিচ্ছেদ না হলেও দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করা আবশ্যক। মহর শব্দটি আরবি, এর বাংলা উচ্চারণ মাহর, মুহর, মোহর। মহর শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো দান-অনুদান। সোনার তৈরি মুদ্রাবিশেষ বা স্বর্ণমুদ্রাকেও মহর বলা হয়। নামের সিল বা ছাপও মহর নামে পর

ভাবনা

একটু ফুরসত পেলেই প্রতিদিন সন্ধ্যায় জানালার পাশে বসে এই শহরকে নিয়ে ভাবি। যে শহরের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত অন্ধকারাচ্ছন্ন। তারপরও এ শহরে মানুষের আনাগোনা থেমে নেই। চারশ বছরের পুরনো এই রাজধানী গরীবের সুন্দরী বউ সবার ভাবির ভূমিকায়। জোড়াতালি দিয়ে দিব্যি চলছে সব। আগামীর পরিণতি নিয়ে কারো কোন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নেই। আমার এতো উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কেন? দুশ্চিন্তা এসব নিয়ে - রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে আর তার কেন্দ্র ঢাকার চারপাশের এলাকা হলে রাজধানীর ৭২ হাজার ভবন পুরোপুরি ধসে পড়বে, ধারণা বিশেষজ্ঞদের৷ তাঁদের মতে, এমন ঝঁকি থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি মেকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই৷বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই ১২টি ভূমিকম্প ফাটল আছে৷ এ সব জায়গায় ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে৷ ঢাকার অদূরে মধুপুর ফাটল খুব বিপজ্জনক৷ প্রতি ১০০ বছর পর পর ফাটল থেকে বড় আকারের ভূমিকম্প হয়৷ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হয়েছে৷ তাই আরেকটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে আছি আমরা৷২০০৯ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে ভবনগুলো নিয়ে জরিপ করা হয়৷ তাতে দেখা যায় যে, আগামীতে যদি ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে তিন লাখ ২৬ হাজার ভবনের মধ্যে ৭২

তোষামোদ

ফরাসী সম্রাট নেপোলিয়ন একবার তাঁর এক সহযোগীকে বলেছিলেন, ‘ আমাকে কেউ ফ্ল্যাটারি (তোষামোদ) করতে পারবেনা’। তদুত্তরে সহযোগী বললেন, ‘ আমি আগামীকাল সকালে এসে এর জবাব দেব’।পরদিন সকালে এসেই তিনি বললেন, ‘ স্যার, আমি কাল সারা রাত বসে বসে চিন্তা করেছি- সত্যিই আপনার মতো ব্যক্তিকে কেউ ফ্ল্যাটারি করতে পারবেনা’।নেপোলিয়ন তখন হেসে ফেলে বললেন, ‘ নাউ আই অ্যাম ফ্ল্যাটারড; আমাকে এখন তোষামোদ করা হলো’ আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তোষামোদ নিয়ে ‘সাহেব ও মোসাহেব’ নামে একটি কবিতা লিখেছেন যাতে তোষামোদকারী ও তোষামোদ গ্রহীতার বিভিন্ন বৈশিষ্ট ফুটে উঠেছে। এখানে প্রথম দু‘টি প্যারা তুলে ধরছি— সাহেব কহেন, ‘‘ চমৎকার! সে চমৎকার! মোসাহেব বলে, ‘‘ চমৎকার সে হতেই হবে যে! হুজুরের মতে অমত কার?” সাহেব কহেন, “ কি চমৎকার, বলতে দাও, আহা হা!” মোসাহেব বলে, “ হুজুরের কথা শুনেই বুঝেছি, বাহাহা বাহাহা বাহাহা”! যারা আপনাকে তোষামোদ করে, তাদের দিকে ঘনিষ্ঠভাবে তাকান। অর্ধেক অনুভূতিহীন, অর্ধেক অসচেতন। – জোহান উলফগাং চাটুকার চুইংগামের মতো। এটি উপভোগ করুন কিন্তু এটি গ্রাস করবেন না। – হ্যাঙ্ক কেচাম

পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা

  পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা আজ। আখেরি চাহার শোম্বা মূলত আরবি ও ফার্সির যুগল শব্দ। আখেরি অর্থ শেষ। চাহার অর্থ সফর মাস এবং শোম্বা অর্থ বুধবার। অর্থাৎ সফর মাসের শেষ বুধবার হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর সাময়িক সুস্থতাকে স্মরণ করে মুসলমানরা যে ইবাদত করেন, তাই আখেরি চাহার শোম্বা। রোগ-শোক মানব জীবনের স্বাভাবিক ব্যাপার, এতে মানুষের পরীক্ষা নিহিত থাকে। তবে কিছু কিছু রোগ-পীড়া এমনও আছে, যা কখনও বিস্মৃত হওয়া যায় না। প্রাণপ্রিয় নবী হযরত রসুলুল্লাহ (সা.) এর পীড়া এমন ছিল না যা সহজে বিস্মৃত হওয়া যায়। তিনি পীড়িত হয়ে পড়লে তখনকার মুসলমানগণ কি নিদারুণভাবে উৎকণ্ঠা ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন তার বিবরণ ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ইন্তেকালের পূর্বে কোন তারিখে তাঁর পীড়ার সূত্রপাত হয়েছিল তা একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এ সম্পর্কে ইসলামী বিশ্বকোষে বলা হয়েছে : ‘অধিকাংশ বর্ণনানুযায়ী পীড়ার মোট সময় ১৮ সফর বুধবার হতে শুরু করে ১৩ দিন হয়’ (ইবন হিশাম, পৃ. ৯৯৯)। আখেরী চাহার সোম্বা সম্বন্ধে বলা হয় যে, নবী (সা.) এই দিনে তাঁহার পীড়ায় কিছুটা উপশম বোধ করেছিলেন এবং গোসল করেছিলেন। এইদিনের পর আর তিনি গোসল করতে পারেননি। কারণ তৎপর তাঁর প

অভিনন্দন আব্দুলরাজ্জাক সাহিত্যে নোবেল জয়ী

ছবি
এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন তাঞ্জানিয়ার লেখক আব্দুলরাজ্জাক গুরনাহ। সুইডিশ অ্যাকাডেমি আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটায় ২০২১ সালের পুরস্কার জয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে। গুরনাহ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১১৮তম লেখক। প্যারাডাইস নামে চতুর্থ উপন্যাসের জন্য সাহিত্যে নোবল পেয়েছেন আব্দুলরাজ্জাক গুরনাগ। ১৯৪৮ সালে গুরনাহ জন্মগ্রহণ করেন। ভারত মহাসাগরের জানজিবার দ্বীপে তিনি বেড়ে ওঠেন। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে ইংল্যান্ডে আসেন শরণার্থী হয়ে।১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয় জানজিবার। প্রেসিডেন্ট আবেইদ কারুমের শাসনে সেখানে আরব বংশোদ্ভূত নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে স্কুল শেষ করে আট বছর বয়সে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।১৯৮৪ সালে আগে তিনি জানজিবারে ফিরতে পারেননি। কেবল বাবার মৃত্যুর আগে তার একবার দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের ইংরেজি ও ঔপনিবেশিক-উত্তর সাহিত্যের অধ্যাপনা থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন।। সুইডিশ অ্যাকাডেমি বলছে, ঔপনিবেশিকতার প্রভাব নিয়ে তার আপসহীন ও সহানুভূতিশীল লেখনির জন্য তাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি ও মহাদে

কবিরা গুনাহ ও শিরক

  শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, কবিরা গুনাহ হলো, যেসব গুনাহের কারণে দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক শাস্তির বিধান আছে এবং আখিরাতে শাস্তির ধমক দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেসব গুনাহের কারণে কোরআন ও হাদিসে ঈমান চলে যাওয়ার হুমকি বা অভিশাপ ইত্যাদি এসেছে, তাকেও কবিরা গুনাহ বলে।হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, কবীরা গোনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা ও মিথ্যা শপথ করা। (বুখারী) শিরক হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার মানা, আল্লাহর অস্তিত্ব ও গুণরাজিকে কাউকে শরীক করে নেয়া। প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ বিভিন্নভাবে খোদার খোদায়ীত্বে শরীক বানিয়েছে। মানুষ কখনও একাধিক খোদা বানিয়েছে। কখনও খোদাকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে। আবার কখনও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও বস্তুকে খোদা বানিয়েছে। কখনও নিজেরাই মূর্তি তৈরি করে তার পূঁজা করেছে। আবার কখনও কখনও শক্তিশালী মানুষকে খোদার মর্যাদা দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে মুশরিকদেরও কাফির বলে সম্বোধন করা হয়েছে। যেমন ‘(হে রাসুল সা.!) আপনি বলুন “হে কাফিরেরা! আমি ইবাদত করি না ওই সব উপাস্য

মুসলিম বিশ্বের অহঙ্কার আবদুল কাদির খান

ছবি
মো. আবু রায়হান- আবদুল কাদির খান ছিলেন পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক ও একজন ধাতুবিদ্যা প্রকৌশলী। পাকিস্তানের সমন্বিত পারমাণবিক বোমা প্রকল্পের জন্য এইচইইউ ভিত্তিক গ্যাস-সেন্ট্রিফিউস ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে গণ্য করা হয়। আবদুল কাদির খানের জন্ম ভারতের ভুপালে, ১৯৩৬ সালের ১ এপ্রিল। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের তিক্ত স্মৃতি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে পাকিস্তানে পাড়ি জমান তিনি। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন কাদির খান। ১৯৬০ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে পাড়ি জমান ইউরোপে। জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর পড়াশোনা শেষে অ্যাংলো-ডাচ-জার্মান পারমাণবিক প্রকৌশল কনসোর্টিয়াম ইউরেনকোতে কাজ করেন। মূলত সেখান থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রক্রিয়ার খুটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন পাকিস্তানি এই বিজ্ঞানী। আবদুল কাদির খানকে পাকিস্তানিরা ‘একিউকে’ বলেন। পাকিস্তানে দলমত-নির্বিশেষে তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। ভালোবেসে তাঁকে ‘মহসিন-ই-পাকিস্তান’ বলা হয়। অর্থাৎ, তিনি হলেন ‘পাকিস্তানের কল্যাণকারী। দেশের প্রতি অবদানের জন্য পাকিস্তানের সর্বোচ্চ খেতাব ন