হাশরের ময়দানে নেতাদের বিরুদ্ধে কর্মীদের অভিযোগ
তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের আনুগত্য করেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।(সুরা আহযাব আয়াত ৬৭-৬৮ )
জাহান্নামের দুঃসহনীয় শাস্তি দেখার পর পাপী ব্যক্তিরা তাদের পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অভিশাপ দিতে থাকবে; যদিও এ বক্তব্য তাদের কোনো উপকারে আসবে না। কারণ, পার্থিব জীবনে তারা তাদের নেতাদের আনুগত্য না করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতে পারত। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এসব অপরাধী ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তাদের নেতাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি ও মহা অভিসম্পাত কামনা করবে। অথচ সে আবেদন মঞ্জুর হলেও তাদের দুই দলকেই দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। কারণ, যারা কিয়ামতের দিন নেতাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি কামনা করবে তাদের উদ্দেশ করে আল্লাহ তায়ালা সূরা আরাফের ৩৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন: এই দুই ধরনের ব্যক্তিদের জন্যই শাস্তি হবে দ্বিগুণ। কাফের ও জালিম নেতাদের শাস্তি দেয়া হবে সাধারণ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ শাস্তি পাবে এ ধরনের নেতাদের আনুগত্য করার জন্য; কারণ, তারা আনুগত্য না করলে এসব নেতা কুফর ও জুলুম করার অবকাশ পেত না।
এই দুই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো-
১. কিয়ামতের দিন পাপী ব্যক্তিরা তাদের অপরাধের ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর এবং অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না।
২. নেতাদের অন্ধ অনুসরণ করা শরিয়ত এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে গ্রহণযোগ্য নয়। এর ফলে অনুতাপ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না।
৩. যারা ভুল ও অন্যায় সংস্কৃতি তৈরি করে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে তাদের ওপর এই ভুল ও অন্যায়ের ফলাফলের গোনাহ চাপিয়ে দেয়া হয়। মৃত্যুর পরও এই ধারা চলতে থাকে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন