আলেমদেরকে গালি দেওয়া !
যেকোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া, বিদ্বেষী মনোভাব, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা নাজায়েজ ও ফাসেকি কাজ। সুতরাং উম্মতের শ্রেষ্ঠ সম্প্রদায় উলামায়ে কেরামকে গালি দেওয়া, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা আরো জঘন্যতম কাজ তা বলাই বাহুল্য। আলেমের সঙ্গে দুশমনি ও গালি দেওয়ার কারণ দুটি হতে পারে। যথা—১. ব্যক্তিগত কোনো কারণে। ২. আলেম হওয়ার কারণে। কোনো আলেমকে আলেম হওয়ার কারণে গালি দেওয়া, তাঁর সঙ্গে শত্রুতা বা বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করা একটি কুফরি কাজ। এটি খুবই ভয়াবহ মানসিকতা। এমন মানসিকতা লালনকারী ব্যক্তি তাওবা না করলে ঈমানের সঙ্গে তার মৃত্যু হবে কি না ঘোর সন্দেহ আছে।
আল্লামা জাইনুদ্দিন ইবনে নুজাইম মিসরি (রহ.) (৯৭০ হি.) বলেন, যদি কেউ কোনো আলেম বা ফকিহকে ব্যক্তিগত কোনো কারণ ছাড়া (আলেম হওয়ার কারণে) গালি দেয়, তাহলে সে কাফির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ (আল-বাহরুর রায়েক : ৫/১৩২)
ইমাম তাহাবি (রহ.) বলেন, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকিদা হলো, পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরাম, তাবেয়িন এবং তাঁদের পরে আগত মুহাদ্দিসিনে কেরামের যথাযথ মর্যাদা বজায় রাখা। যে তাঁদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবে এবং সমালোচনা করবে সে ভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে। (আকিদাতুত তাহাবি : ৩০)
হাফেজ আবুল কাসেম ইবনে আসাকির (রহ.) বলেন, হে ভাই জেনে রাখো, উলামায়ে কেরামের গোস্ত (দোষ চর্চা করা) বিষাক্ত জিনিস। আল্লাহ তাআলার অভ্যাস হলো উলামায়ে কেরামের কুৎসা রটনাকারীকে তিনি লজ্জিত করেন (এটা কারো অজানা নয়)। যে ব্যক্তি উলামায়ে কেরামের সমালোচনা করবে আল্লাহ তার মৃত্যুর আগে তার অন্তরকে মৃত বানিয়ে দেবেন। (আত-তিবয়ান ফি আদাবে হামালাতিল কোরআন : ২৭-২৯)
যারা কোরআন-সুন্নাহ ও ইসলামের বিধি-বিধানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে তাদের বেশির ভাগের সূচনা হয়েছে কোরআন-সুন্নাহর ধারক-বাহক উলামায়ে কেরামের সমালোচনা করা এবং অবজ্ঞা দিয়ে। কেননা কোরআন-সুন্নাহর ধারক-বাহকদের নিয়ে হাসিঠাট্টা ও অবজ্ঞা করতে করতে তাদের অন্তর থেকে মূল কোরআন-সুন্নাহ ও ইসলামের প্রতি প্রকৃত মূল্যবোধ দূর হয়ে যায়।
উলামায়ে কেরাম হলেন আম্বিয়া কেরামের ওয়ারিশ ও তাঁদের প্রতিনিধি। আল্লাহর তাআলা তাঁদের মনোনীত করেছেন দ্বিনের জন্য। তাই আলেমদের সঙ্গে বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করা, তাঁদের গালি দেওয়া পরোক্ষভাবে ইসলামের নিদর্শন অসম্মান করার অন্তর্ভুক্ত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন