পোস্টগুলি

পৃথিবী চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যের চারদিকে আবর্তিত

প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, মহাবিশ্বের সব কিছুই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে। কিন্তু “পৃথিবী স্থির।” এ ধারণাটা পরবর্তী বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে ভুল প্রমাণিত হয়।পৃথিবী চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যের চারদিকে আবর্তিত হয় ঘণ্টায় ৬,০০০ মাইল বেগে এবং সূর্যের চারদিকে একটি আবর্তন সমাপ্ত করতে সময় নেয় প্রায় ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা, ৪৬ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড। এবং বছরে বিভিন্ন ঋতুর পরিবর্তন ঘটায়। যখন কুরআনে মাজিদ অবতীর্ণ হয়, তখন বিশ্বাস করা হত, সূর্যই ঘোরে, পৃথিবী স্থির। গণিতবিদ টলেমি বলেছেন, আদিম যুগ থেকে মানুষের মনে একটি ধারণা ছিল যে, পৃথিবী স্থির একটি গ্রহ। মহাবিশ্বের সকল কিছু পৃথিবী কে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খায়। পিটারসনের পিথাগোরাস পৃথিবীর ঘূর্ণয়নের কথা বললেও তিনি এ মতবাদ প্রমাণ করতে সক্ষম হননি। ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষে সপ্তম শতাব্দীর শুরুর দিকে গ্যালিলীও পৃথিবীর ঘূর্ণয়নের ব্যাপারে প্রমাণ করতে দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। পোল্যান্ডের একজন জ্যোতিবিজ্ঞানী যার নাম “কোপানিকাস” (১৪৭৩-১৫৪৩) প্রথম বলেন, পৃথিবীও ঘোরে। কিন্তু কেউই তার উক্তিটি বিশ্বাস করেনি। অথচ কুরআন মাজিদে এই সত্য অবতীর্ণ হয়েছে, বিজ্ঞানযুগের অনেক প

ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম

  পৃথিবীতে আল্লাহ পাক অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। অন্যদিকে কামেল পীর, অলি, দরবেশ, ফকির যে কত এসেছেন তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু সব পীর, ফকির, দরবেশ, অলির সেরা ছিলেন হজরত আবদুল কাদের জিলানী রহ.। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর ওফাতের প্রায় ৫০০ বছর পর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তখন ইসলাম ধর্ম এক নাজুক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছিল।পবিত্র কুরআন ও আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদ সা.-এর আদর্শ ভুলে মানুষ বিপথে পা বাড়িয়েছিল, ঠিক এমনি সময় হজরত বড়পীর ইসলামের পথে মানুষকে ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া অসংখ্য কাহিনী জানা যায়। তন্মধ্যে একটি হলো - তৎকালীন সময়ে ইরাকে ভালো পড়াশুনা ও ব্যবসার সুযোগ ছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পড়াশুনা ও ব্যবসার জন্য মানুষ বাগদাদ আসত। পড়াশুনার উদ্দেশ্যে হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) ব্যবসায়িক কাফেলার সাথে বাগদাদ যাওয়ার পথে ডাকাতের কবলে পড়েন। হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)কে ডাকাত সর্দার জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার সাথে কি আছে? তিনি বললেন, আমার নিকট ৪০টি স্বর্ণ মুদ্রা আছে। ডাকাত সর্দার আশ্চার্যন্বিত হয়ে পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন হে যুবক! তুমি তো মিথ্যা কথা বলে আমার নিকট থেকে স্বর্ণ মুদ্রা লুকাতে পারত

কাফের ফতোয়ার ডিলারশিপ

  আজকাল ওয়াজ মাহফিল কিংবা বিভিন্ন আলোচনা সভায় কতিপয় আলেম ওলামা একজন অপর জনকে হরহামেশাই কাফের ফতোয়া দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।এই জনপদে কয়েক বছর ধরে কাউকে কাফের ফতোয়া দেওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। যে ব্যক্তি নিজেকে মুমিন বা বিশ্বাসী বলে দাবি করছেন তাকে অবিশ্বাসী বা কাফির বলে আখ্যা দেওয়াকে সাধারণভাবে ‘‘তাকফীর’’ বলা হয়।মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রকাশিত প্রথম বিভ্রান্তিগুলোর অন্যতম ছিল ‘‘তাকফীর’’ বা মুসলিমকে কাফির বলা। দ্বিতীয় হিজরী শতকে বিদ্যমান বিভ্রান্ত ফিরকাগুলোর মধ্যে একটি বিষয়ে মিল ছিল, তা হলো, নিজেদের ছাড়া অন্যান্য মুসলিমকে কাফির বলে গণ্য করা। এদের মধ্যে ‘‘খারিজী’’ ফিরকার আকীদার মূল ভিত্তিই ছিল ‘‘তাকফীর’’। অন্যান্য ফিরকাও পাপের কারণে বা মতভেদীয় বিষয়ে ভিন্নমতের কারণে মুসলিমদেরকে ঢালাওভাবে কাফির বলতে থাকে। 'আলেমগণ’ ও চার মাজহাবের ইমামগণ একমত যে, নিছক মতপার্থক্যের কারণে কাউকে অবিশ্বাসী বা কাফের বলা জায়েজ বা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে নাম উল্লেখ করে কাফের ঘোষণা করা যাবে না। আল বাহনাসাবি এ প্রসঙ্গে যথার্থই বলেছেন, ‘কারণ এ বিষয়টি নির্ধারণ করা একান্তভাবে একজন উপযুক্ত বিচারকের কা

আল্লামা ইকবাল ও কর্ডোভা মসজিদ

ছবি
  আল্লামা ইকবাল একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও মনীষী। আধুনিক বিশ্বে ইসলামের মর্মবাণীর সার্থক ব্যাখ্যাদাতা হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। সমাজ, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান, ধর্ম, শিল্পবিজ্ঞানসহ নানা ক্ষেত্রে তার রয়েছে অবদান। এসব ক্ষেত্রে নিজস্ব চিন্তা উপদেশ ও দর্শন ছিল এই মহাকবির, যেগুলো তাকে নিয়ে গেছে খ্যাতির আসনে। দিয়েছে অনন্য সম্মান।১৮৭৭ সারের ৯ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম হয় আল্লামা মোহাম্মদ ইকবালের। ধর্ম নিয়ে ইকবালের দর্শন হচ্ছে- ‘ধর্ম কোনো মতবাদ নয়, কোনো পৌরহিত্য নয়, কোনো অনুষ্ঠান নয়, বরং ধর্ম এমন একটি জীবনবিধান যা মানুষকে বিজ্ঞানের যুগেও তার দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত করে এবং তার প্রতীতিকে দৃঢ় সক্ষম করে দেয়, যার ফলে সে সত্যোপলব্ধিতে সক্ষম হয়ে উঠে।’ তিনি আরও বলেন, ধর্ম পদার্থ বিদ্যাও নয়, রসায়ন শাস্ত্রেও নয় যে, ল্যবরেটরীতে তাকে Experiment ও পরীক্ষা করে বুঝতে হবে। প্রায় সাত'শ বছর স্পেন শাসন করে মুসলমানরা। সেখানে মুসলমানদের অস্তিত্ব বিলীন হলেও তাদের কীর্তি অমর হয়ে ভাস্বর। ১২৩৬ সালে ক্যাসলের রাজা তৃতীয় ফার্ডিনান্দ

একজন সমাজসেবক ও ধর্ম প্রচারক ইবিট লিও

ছবি
  একজন সমাজসেবক ও ধর্ম প্রচারক সৎ, ন্যায়-নীতিবান, উদার সমাজ সংস্কারক মালয়েশিয়ায় সর্বপরিচিত। দেশটির সুশীল সমাজ, তরুণ-নবীন, যুব-প্রবীণ সমাজে রয়েছে তার যথেষ্ট সুনাম। তিনি হলেন ইবিট লিও। তিনি একজন মালয়েশিয়ান চাইনিজ মুসলিম। তিনি মালয়েশিয়ার ইসলামি উদ্যোক্তা এবং ধর্ম প্রচারক হিসেবে সব মহলে এবিট লিও নামে পরিচিত। তার পুরো নাম-ইবিট ইরাওয়ান বিন ইব্রাহিম লিও। ১৯৮৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার পাহাং রাজ্যে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। তার পিতার নাম মুয়াডজম শাহে লিউ ইউ পাউ। ১১ জন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। দ্বীনকে অনুসরণ করে ১২ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি স্কুল (সেকোলাহ) কেবাংসান বুকিত রিদান, সেকোলাহ মেননগাহ কেবাংসান মুয়াডজম শাহ, পাহাং সেকোলাহ মেননগাহ টেকনিক জহুর বারু, এবং সেকোলা মেননগাহ কেবাংসান আবদুল রহমান তালিব, পাহাং থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। মালয়েশিয়ার সাধারণ মানুষের কাছে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ ওস্তাদ ইবিট লিও। নিজের কাজের মাধ্যমে ইবিট লিও ইতিমধ্যে জনগণের কাছে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। যেকোনো বিপদে-আপদে

আছে বিশ্ব ভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনের হাফেজ

করবে কেমন করে কুরআন ধ্বংস আগুনেরও তেজ আছে বিশ্ব ভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনের হাফেজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয় আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর অবশ্যই আমি তার সংরক্ষক।( সুরা হিজর আয়াত ৯) প্রতি যুগেই লাখো লাখো বরং কোটি কোটি মুসলিম যুবক-বৃদ্ধ এবং বালক ও বালিকা এমন বিদ্যমান থাকা, যাদের বক্ষ-পাজরে আগাগোড়া কুরআন সংরক্ষিত রয়েছে। কোন বড় থেকে বড় আলেমের সাধ্য নেই যে, এক অক্ষর ভুল পাঠ করে। তৎক্ষনাৎ বালক-বৃদ্ধ নির্বিশেষে অনেক লোক তার ভুল ধরে ফেলবে। প্রায় ১৪ শত বছর আগের তুলির সাহায্যে লেখা আর বর্তমান কম্পিউটার যুগের কোরআনের মধ্যে বিন্দুমাত্র ফারাক নেই। এমন উদাহরণ আর কী আছে? নিশ্চয়ই নেই।এর কারণ হচ্ছে, কোরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এর সংরক্ষক আল্লাহতায়ালা স্বয়ং। পবিত্র কোরআনের মতো এমন অলৌকিক নজির আর কোথাও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। হাফেজ বলতে বুঝানো হয়, যার সমস্ত কোরআন মুখস্থ আছে। সারাবিশ্বে হাফেজে কোরআনদের বেশ সম্মানের চোখে দেখা হয়, সম্মান করা হয়। কোরআন ব্যাতীত পৃথিবীতে আর কোনো বই কী আছে, যার শুরু থেকে শেষ অবধি কেউ মুখস্থ করেছেন? মনে হয় নেই, কারণ তা সম্ভব নয়। কিন্তু বিশ্বে পবিত্র কোরআনের সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি সংখ্যক হা

শেষ মুঘল সম্রাট

মনে আছে অখন্ড ভারতে মুঘল শাসনের কথা! ১৫২৬ সালে পানি পথের প্রথম যুদ্ধে জয়ী হয়ে সম্রাট বাবর যে সাম্রাজ্যের সূচনা করেছিলেন। যা স্থায়ী হয়েছিল কয়েক'শ বছর। ফতেহপুর সিক্রি, লালকেল্লা, আগ্রা দুর্গ ও লাহোর দুর্গ। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের অনেক অঞ্চল যেমন আগ্রা, আওরঙ্গবাদ, দিল্লি, ঢাকা, ফতেহপুর সিক্রি, জয়পুর, লাহোর, কাবুল, শেখপুরে মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে।৩.২ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এসময় সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ১৫০ মিলিয়নের বেশি যা তৎকালীন পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ এবং জিডিপি ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এই রাজবংশের ১৯তম এবং শেষ সম্রাট ছিলেন মির্জা আবু জাফর সিরাজ-উদ-দীন মুহাম্মদ (২৪ অক্টোবর ১৭৭৫–৭ নভেম্বর ১৮৬২)। যিনি দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবরের ২য় সন্তান। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সমর্থনে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ একটি ফরমান জারি করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহীতার অভিযোগ এনে কারাবন্দী করেছিল। শেষে তি

মুসলমানদের স্বর্ণালী অতীত

  ঘটনা -১ কলকাতার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সোমবার কালীপুজো ছিল। আর সেই উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির পুজোয় গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল লা গণেশন। সেই সময় রাজ্যপালকে নিজের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখান মুখ্যমন্ত্রী। নিজে যে ঘরে থাকেন, সেই ঘরটিও দেখাতে নিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মুখ্যমন্ত্রীর থাকার ঘর দেখে খানিক অবাক রাজ্যপাল লা গণেশন। এত ছোট্ট ঘর! কীভাবে থাকেন? এমন প্রশ্নও বেরিয়ে আসে তাঁর মুখ থেকে। সোমবার সন্ধে সাতটা নাগাদ কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসে পৌঁছান রাজ্যপাল লা গণেশন। রাজ্যপালকে নিয়ে নিজের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ৩৫ মিনিট কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ছিলেন লা গণেশন। এর আগে কখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে আসা হয়ে ওঠেনি রাজ্যপাল লা গণেশনের। মমতার বাড়ির কালীপুজো উপলক্ষ্যেই গতকাল প্রথমবার কালীঘাটের বাড়িতে আসেন তিনি। সেখান বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান পশ্চিমবঙ্গের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যপাল লা গণেশন। তাঁকে নিজের বাড়ি ঘুরে দেখান মমতা। আর তা দেখেই তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল।

নবীজির জীবদ্দশায় শেষ অভিযান

  নবম হিজরি, ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে তাবুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তাবুক মদিনা ও দামেস্কের (সিরিয়া) মধ্যবর্তী একটি স্থানের নাম। মদিনা থেকে এটি ৬৯০ কিলোমিটার দূরে এবং সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে ৬৯২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে আরবের কাফের ও মুনাফিকদের শেষ চেষ্টা। রোমানদের দ্বারা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দূত হারেস বিন উমায়ের (রা.)-কে হত্যার মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এ যুদ্ধে নবী করিম (সা.) ৩০ হাজার যোদ্ধা সাহাবির এক বাহিনী নিয়ে তাবুক অভিমুখে রওনা হন। এটাই ছিল নবী করিম (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে বড় ও শেষ সেনা অভিযান। আল্লাহ তাআলা এ যুদ্ধের প্রক্কালে কুরআনে উল্লেখ করেন, ‘যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদের কঠিন শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের স্থলে অন্য কোনো জাতিকে নিয়ে আসবেন। আর তোমরা কিন্তু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। (সুরা তাওবা, আয়াত ৩৯) নবী করিম (সা.) মক্কা বিজয় ও হুনায়েনের যুদ্ধ শেষে যখন মদিনায় ফিরে এলেন, এর কিছুদিন পর শাম (সিরিয়া) থেকে ফিরে আসা কতিপয় বণিক দলের কাছ থেকে খবর পেলেন, রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস মদিনা আক্রমণ করার জন্য প

ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে কে এই অ্যান্ড্রু টেট?

ছবি
এমরি অ্যান্ড্রু টেট তৃতীয় হলেন একজন বিখ্যাত আমেরিকান-ব্রিটিশ অনলাইন ব্যক্তিত্ব এবং প্রাক্তন পেশাদার কিকবক্সার।টেট ১৯৮৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ইংল্যান্ডের লুটনে বেড়ে ওঠেন।তার আফ্রিকান-আমেরিকান বাবা এমরি টেট ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক দাবাড়ু। তার মা ক্যাটারিং তার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ২০০৫ সালে টেট বক্সিং এবং মার্শাল আর্ট অনুশীলন শুরু করেন। ২০০৮ সালের নভেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্ট কিকবক্সিং অ্যাসোসিয়েশন (ISKA) কর্তৃক টেটকে ব্রিটেনের সপ্তম সেরা লাইট-হেভিওয়েট কিকবক্সার হিসেবে স্থান দেওয়া হয়।২০০৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ডার্বিতে ব্রিটিশ ISKA ফুল কন্টাক্ট ক্রুজারওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন এবং ইউরোপে নিজ বিভাগে এক নম্বরে ছিলেন। তিনি তার ১৯টি লড়াইয়ের মধ্যে ১৭টি জিতেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, এটি তার প্রথম বেল্ট ও শিরোপা।২০১১ সালে টেট নকআউটের মাধ্যমে জিন লুক বেনয়টের বিরুদ্ধে তার প্রথম আইএসকেএ বিশ্ব শিরোপা জিতেছিলেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে টেট এনফিউশন চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে ফ্রান্সি গ্রাজের কাছে হেরে যান। তবে পরাজয়ের আগে নকআউটের মাধ্যমে ১৮ টি লড়া

কোরআনে মাস ও বছর

কোরআন শরিফে ‘মাস’ শব্দটা এসেছে ১২ বার, দিবস শব্দ এসেছে ৩৬৫ বার। সৌর সনের হিসাবে মোটামুটি ৩৬৫ দিনে বছর হয় । কিন্তু উভয় বর্ষ গণনায় মাস হচ্ছে ১২টি। কুরআন মজীদে চান্দ্র সন ও সৌর সনের গুরুত্ব তুলে ধরে ইরশাদ হয়েছে : তিনিই (আল্লাহ) সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং ওর মঞ্জিল নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা বছরের গণনা ও সময়ের হিসাব জানতে পার। আল্লাহ্ এটা অনর্থক সৃষ্টি করেননি। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এ সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন। (সূরা ইউনুস : আয়াত ৫)।

পবিত্র ভূমিতে অপবিত্র হ্যালোইন উৎসব

ছবি
কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের পবিত্র ভূমিতে পালিত হচ্ছে হ্যালোইন উৎসব। প্রতি বছরের ৩১ অক্টোবর পালিত হয় হ্যালোইন উৎসব। পশ্চিমা বিশ্বে জাঁকজমকতার সঙ্গে পালন করা হয় হ্যালোইন।এই ভুতুড়ে উৎসবের ইতিহাস ২০০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। অনেকেই ভাবেন, এ দিনটি হয়তো ভূতের মতো সাজতেই পালন করা হয়। আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণে পালন করা হয় দিনটি। হ্যালোইন শব্দের উৎপত্তি ১৭৪৫ সালের দিকে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে এর উৎপত্তি। হ্যালোইন’ বা ‘হ্যালোউইন’ শব্দটি এসেছে স্কটিশ ভাষার শব্দ ‘অল হ্যালোজ’ ইভ থেকে। Halloween শব্দের অর্থ হল ‘Hallowed evening’, ‘Holly evening’ (পবিত্র সন্ধ্যা) সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে ‘হ্যালোজ’ ইভ’ শব্দটি এক সময় ‘হ্যালোইন’এ রূপান্তরিত হয়। হ্যালোইন উৎসবের মূল থিম হলো, ‘হাস্যরস ও উপহাসের মাধ্যমে মৃত্যুর ক্ষমতার মুখোমুখি হওয়া’। এই উৎসবে হ্যালোইন পোশাক পরে পার্টিতে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে কুমড়ো খোদাই করা, মুখোশ পরা, ভয় দেখানো, ভুতুড়ে গল্প বলা, ভৌতিক সিনেমা দেখা ও ভুতুড়ে সাজসজ্জায় সবাই ব্যস্ত থাকে। এই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের একটা কথা মনে পড়ে গেল, তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই

খলিফা হারুনুর রশিদ ও প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের পুত্রের শিক্ষকের নিকট লেখা পত্র

ছবি
আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাঁর পুত্রের শিক্ষকের প্রতি লেখা পত্র সম্পর্কে জানি। কিন্তু তারও কয়েক'শ পূর্বে ইসলামি খিলাফতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক খলিফা হারুনুর রশিদ (শাসনকাল- ৭৮৬-৮০৯ খ্রি.) তাঁর পুত্র আমিনের শিক্ষক আহমারের উদ্দেশ্যে একটি পত্র লিখেছিলেন সে সম্পর্কে আজ আমরা জানবো। হে আহমার, আমিরুল মুমিনুন তাঁর হৃদয়ের নির্যাস ও প্রাণের স্পন্দনকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। আপনি তার জন্য আপনার হাত প্রসারিত করুন। আপনাকে মেনে চলা তার জন্য আবশ্যক। তাকে কুরআন পড়ান, ইতিহাস শেখান, কবিতা আবৃত্তি করান, হাদিস শিক্ষা দিন। তাকে শেখান কোথায় কখন কোন যুক্তি দিতে হবে। তাকে নিষেধ করুন অসময়ে হাসতে। শেখান কিভাবে মুরুব্বীদের সম্মান করতে হয়। আপনি চেষ্টা করুন কষ্ট দেওয়া ছাড়া কিভাবে তাকে শিক্ষা দেওয়া যায়। প্রথমে চেষ্টা করুন তাকে কোমলভাবে সবকিছু শেখাতে, যদি সে মানতে না চায় তাহলে কঠোর হোন। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাহার পুত্রের স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে লেখা পত্র মাননীয় মহাশয়, আমার পুত্রকে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনার কাছে প্রেরণ করলাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন-এটাই আপনার কাছে আমা

সূর্য নিয়ে আল কুরআনের বিস্ময়কর তথ্য

ছবি
সূর্যের তাপে মহান আল্লাহ সতেজ আর সজীব রেখেছেন পৃথিবীর সব কিছু। উদ্ভিদ এই সূর্যালোক থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। যদি পৃথিবীতে সূর্যের তাপ ও আলো না আসত, তাহলে বিপন্ন হতো প্রাণিকুলের জীবন। পুরো পৃথিবী পরিণত হতো একখণ্ড বরফে। অন্যদিকে সূর্য যদি তার ভেতরকার সব তাপ পৃথিবীর ওপর উগড়ে দিত, তাহলেও পৃথিবী পরিণত হতো শ্মশানে।পবিত্র কোরআনে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে সূর্য ও চন্দ্র প্রসঙ্গ। সূর্য নিয়ে কুরআনের প্রথমদিকের আয়াত হলো -"তুমি কি সে ব্যক্তিকে দেখনি, যে ইবরাহীমের সাথে তার রবের ব্যাপারে বিতর্ক করেছে যে, আল্লাহ তাকে রাজত্ব দিয়েছেন? যখন ইবরাহীম বলল, ‘আমার রব তিনিই’ যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমিই জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটাই। ইবরাহীম বলল, নিশ্চয় আল্লাহ পূর্বদিক থেকে সূর্য আনেন। অতএব তুমি তা পশ্চিম দিক থেকে আন। ফলে কাফির ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।" (সুরা বাকারাহ আয়াত ২৫৮) সূর্য নিয়ে কুরআনের শেষের দিকে আয়াত সুরা শামস এর ১ নং আয়াত। দুই আয়াতের ব্যবধানের আয়াত ৫৭৭৮। এদিকে সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ কেলভিন বা ৫৫০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দক্ষিণ কোরিয়ার শিনদোর এক রহস্যময় দ্বীপ

ছবি
আল্লাহ তায়ালার এই দুনিয়ায় রহস্য আর বিস্ময়ের অন্ত নেই। তেমনি একটি বিস্ময় মোজেস মিরাকল’। মহান আল্লাহর আদেশে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি হওয়ার ঘটনার সঙ্গে মোজেস মিরাকলের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ঘটনাটি দক্ষিণ কোরিয়ার শিনদোর এক রহস্যময় দ্বীপ নিয়ে আবর্তিত। এ বিস্ময়কর দ্বীপ স্মরণ করিয়ে দেয় মহান আল্লাহর বাণী, ‘জ্ঞানের অতি সামান্যই তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছে...’ (সুরা বানি ইসরাইল: ৮৫)। কবি বলেছেন, বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি। দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী— মানুষের কত কীর্তি, কত নদী গিরি সিন্ধু মরু, কত না অজানা জীব, কত না অপরিচিত তরু। দক্ষিণ কোরিয়ার শিনদো আইল্যান্ড এক রহস্যঘেরা স্থান। পাশেই মোদো নামের দ্বীপ। জায়গা দুটির অবস্থান পাশাপাশি হলেও দূরত্ব একেবারে কম নয়, মাঝখানে অথৈ সাগর। বসন্ত ও গ্রীষ্মের মাঝামাঝিতে দুইবার শিনদো ও মোদো দ্বীপের মধ্যবর্তী পানি সরে প্রাকৃতিক নিয়মে রাস্তা সৃষ্টি হয়। দৈর্ঘ্য ২.৮ কিলোমিটার, প্রস্থ ৪০ মিটার। যেন সংযোগ সড়ক অথচ স্থায়িত্বকাল মাত্র এক ঘণ্টা! ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। শিনদো আইল্যান্ডের ‘মোজেস মিরাকল’ ১৯৭৫ সালের পর ব্যাপক পরিচিতি পায়। একজন ফরাসি কূটনীতিক শিনদো ঘুর

ইহুদিদের প্রতারণা

আপনি কি জানেন আজ ৮০% এর বেশি ইহুদি এবং যারা প্যালেস্টাইনে বসবাস করছে তারা বংশগতভাবে সেমিটিক নয়। তারা খাজার তুর্কিদের বংশধর। যারা সপ্তম শতাব্দীতে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। এই ইহুদিদেরকে আশকেনাজি ইহুদিও বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, 'ইসরায়েল' বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী একজন পোলিশ খাজার ইহুদি। প্রকৃত সেমিটিক হলো ফিলিস্তিনি মুসলমানরা। তাই ইহুদি বর্ণনা অনুসারে প্যালেস্টাইন ("প্রতিশ্রুত ভূমি") প্রকৃতপক্ষে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের অন্তর্গত যারা প্রকৃত সেমিটিক।যারা ফিলিস্তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা এনটি সেমেটিক। বর্তমানের বেশিরভাগ ইহুদিই ( ৯৩%) ইহুদি হযরত ইব্রাহিমের (আ) বংশধর না! তাদের সাথে মধ্যপ্রাচ্যেরও কোন সম্পর্ক নেই!! তাদের পূর্বপুরুষদেরও কেউ কোন কালেই মধ্যপ্রাচ্যে ছিল না! তাদের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের কারোরই রক্তের কোন সম্পর্ক নেই! ৭০০ খৃষ্টাব্দের পর সারা পৃথিবীতে তিনটি সুপারপাওয়ার সাম্রাজ্য ছিল।১. রোমান এম্পায়ার (খৃষ্টানদের) ২. মুসলিম খিলাফত (মুসলিমদের) ও. ৩. খাজার সাম্রাজ্য (Pagan বা প্রকৃতি পূজকদের, এই খাজাররা খুবই শক্তিশালী ছ

শিক্ষক দিবসের নিবেদন

  খলীফা হারুনুর রশীদের দুই পুত্র আমীন এবং মামুন। দুজনই ইমাম কাসায়ী (রহ.) এর ছাত্র ছিল। একবার তাদের ওস্তাদ মজলিস থেকে উঠলেন। দেখেই দুই ভাই ওস্তাদের জুতা সোজা করার জন্য উদ্যত হলো। দুজনের মধ্যেই তর্ক হয়ে গেল কে জুতো সোজা করবে বলে। শেষে, দুজনেই এই সিদ্ধান্তে একমত হল যে, দুজনেই একটা করে জুতা সোজা করবে। এই ঘটনা যখন খলিফা হারুনুর রশীদের কানে গেল, তখন তিনি ইমাম কাসায়ী (রহ) –কে ডেকে পাঠালেন। উনি যখন এলেন তখন খলিফা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মানুষের মধ্যে কে সর্বাধিক সম্মানীয়?’ ইমাম সাহেব বললেন, ‘আমার মতে খলিফার থেকে বেশি সম্মানীয় ব্যক্তি আর কে হতে পারে!’ খলিফা বললেন, ‘সম্মানীয় ব্যক্তি তো তিনিই যিনি মজলিস থেকে উঠলে খলিফার দুই পুত্র তাদের ওস্তাদের জুতো সোজা করার জন্য পরস্পরের মাঝে তর্ক করে, কে জুতো সোজা করে দেবে বলে’। ইমাম কাসায়ী (রহ) ভেবেছিলেন, খলিফা হয়ত ঐ ঘটনায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন। সে জন্য তিনি চিন্তিত হয়ে চুপ থাকলেন। খলিফা বললেন, ‘শুনুন! আপনি যদি আমার পুত্রদ্বয়কে ঐ রকম আদব ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে নিষেধ করতেন, তাহলে আমি আপনার প্রতি খুব বেশি অসন্তুষ্ট হতাম। আগামীতে এই শিক্ষা অব্যাহত রাখবেন, নয়লে আপনি আমার

নমরুদের করুণ মৃত্যু

পৃথিবীতে প্রথম খোদা দাবিকারী নমরুদ প্রায় ৪০০বছর রাজত্ব করে। ইতিহাসবিদরা নমরুদকে আল-জব্বার বা চরম স্বেচ্ছাচারী হিসেবে বিবেচনা করে। যার স্বেচ্ছাচারিতা তার শক্তি, ক্ষমতা ও দম্ভের প্রকাশভঙ্গি ছিল। ইবরাহিম আ. কে নমরুদ অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল। নমরুদ আল্লাহর বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার ঘোষণা দিল। হজরত ইবরাহিম (আ.) দূরে আকাশের দিকে আঙুল দিয়ে দেখালেন। দূরে কালো রঙের একটা মেঘ দেখা যাচ্ছিল, যখন সেটা কাছে চলে এলো, লাখ লাখ মশার গুনগুন শব্দে ময়দান মুখরিত হলো। কিন্তু নমরুদ অবজ্ঞার সুরে বলল, এ তো মশা! তুচ্ছ প্রাণী, তা-ও আবার নিরস্ত্র। এ সময়ের মধ্যে প্রত্যেক সৈন্যের মাথার ওপর মশা অবস্থান নিল। অতঃপর তাদের বুঝে ওঠার আগেই মশাগুলো তাদের নাক দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশ করল। তারপর দংশন করা শুরু করল। সৈন্যদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলো। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে তীরন্দাজরা ঊর্ধ্বে তীর নিক্ষেপ আর পদাতিক সেনারা নিজেদের চারপাশে অন্ধের মতো তরবারি চালাল, যার ফলে একে অপরকে নিজেদের অজান্তেই আহত বা নিহত করে ফেলল। মশার সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে নমরুদ পালিয়ে প্রাসাদে চলে এলো। এ সময় একটি দুর্বল লেংড়া মশা তাকে তাড়া করল এবং কিছুক্ষণ মাথ

হযরত ওমর

  "অর্ধ পৃথিবী করেছ শাসন ধুলার তখতে বসি খেঁজুর পাতার প্রাসাদ তোমার বারে বারে গেছে খসি। " - কাজী নজরুল ইসলাম হযরত ওমর পরাশক্তি-প্রধান হওয়া সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত যাপন করেছেন সাধারণ মানুষের জীবন। কোনো দেহরক্ষী রাখতেন না। পোশাক-আশাক চালচলন দেখে কেউ তাকে সাধারণ থেকে আলাদা করতে পারত না। একবার বাইজেন্টাইন শাসনাধীন এলাকা থেকে এক দূত এলো। মদিনায় এসে একজনকে বলল, তুমি তোমাদের রাজার কাছে আমাকে নিয়ে চলো। রাজপ্রাসাদ কোথায় আমাকে দেখিয়ে দাও। লোকটি হেসে তাকে বলল, ঐ যে দূরে খেজুর বাগান দেখছ। ওখানে যাও। আমি ওদিক থেকেই আসছি। দেখেছি গাছের ছায়ায় তিনি ঘুমাচ্ছেন। দূত সব দেখে দেশে ফিরে গিয়ে রাজাকে বলল, যুদ্ধ করে কোনো লাভ নেই। যে রাজা কোনো দেহরক্ষী ছাড়াই গাছের ছায়ায় ঘুমাতে পারে, তার সাথে যুদ্ধ করে আমরা কোনোদিন জয়ী হতে পারব না। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুমের সঙ্গে মিশ্রণ করেনি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা এবং তারাই সুপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা : আনআন, আয়াত : ৮২)

স্যার সৈয়দ আহমদ খান

ছবি
ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও ভারতের মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার অগ্রদূত সৈয়দ আহমদ খান। তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম ভারতের মুসলিমদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দিয়েছিল। আলিগড় আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। পিছিয়ে পড়া মুসলমান সম্প্রদায়কে যুক্তিবাদী আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে যে আন্দোলনের সূচনা করেন তা আলিগড় আন্দোলন নামে খ্যাত। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহের পর অনগ্রসর মুসলিম সমাজে কিছু কিছু সংস্কারের প্রয়োজন অনুভূত হয়। হিন্দুদের তুলনায় অনগ্রসর পাশ্চাত্য শিক্ষায় উদাসীন মুসলিম সমাজের দুরবস্থার কথা সৈয়দ আহমদ অবগত ছিলেন। ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রগতির যথার্থ সোপান বলে মনে করতেন তিনি এজন্য মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রসারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ১৮৬৪ সালে গাজীপুরে একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ইংরেজি ভাষায় লেখা মূল্যবান কিছু কিছু বই উর্দু ভাষায় অনুবাদ করে তা মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করার উদ্দেশ্যে বিজ্ঞান সমিতি (Scientific Society) নামে একটি সংস্থার