আছে বিশ্ব ভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনের হাফেজ

করবে কেমন করে কুরআন ধ্বংস আগুনেরও তেজ

আছে বিশ্ব ভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনের হাফেজ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয় আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর অবশ্যই আমি তার সংরক্ষক।( সুরা হিজর আয়াত ৯) প্রতি যুগেই লাখো লাখো বরং কোটি কোটি মুসলিম যুবক-বৃদ্ধ এবং বালক ও বালিকা এমন বিদ্যমান থাকা, যাদের বক্ষ-পাজরে আগাগোড়া কুরআন সংরক্ষিত রয়েছে। কোন বড় থেকে বড় আলেমের সাধ্য নেই যে, এক অক্ষর ভুল পাঠ করে। তৎক্ষনাৎ বালক-বৃদ্ধ নির্বিশেষে অনেক লোক তার ভুল ধরে ফেলবে।
প্রায় ১৪ শত বছর আগের তুলির সাহায্যে লেখা আর বর্তমান কম্পিউটার যুগের কোরআনের মধ্যে বিন্দুমাত্র ফারাক নেই। এমন উদাহরণ আর কী আছে? নিশ্চয়ই নেই।এর কারণ হচ্ছে, কোরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এর সংরক্ষক আল্লাহতায়ালা স্বয়ং। পবিত্র কোরআনের মতো এমন অলৌকিক নজির আর কোথাও খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
হাফেজ বলতে বুঝানো হয়, যার সমস্ত কোরআন মুখস্থ আছে। সারাবিশ্বে হাফেজে কোরআনদের বেশ সম্মানের চোখে দেখা হয়, সম্মান করা হয়। কোরআন ব্যাতীত পৃথিবীতে আর কোনো বই কী আছে, যার শুরু থেকে শেষ অবধি কেউ মুখস্থ করেছেন? মনে হয় নেই, কারণ তা সম্ভব নয়। কিন্তু বিশ্বে পবিত্র কোরআনের সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি সংখ্যক হাফেজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি জরিপ সংস্থা।সংস্থাটি জানিয়েছে, এটা একটি মতামতভিত্তিক জরিপ। জরিপের ফলাফল প্রকাশের সময় সংস্থাটি আরও জানিয়েছে। প্রতিদিন এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আর এমন মানুষ আছেন, যারা কোরআন মুখস্থ করেছেন, কিন্তু প্রকাশ করেননি। ৪-৫ বছর বয়সের শিশু থেকে শুরু করে, নারী, যুবক, অন্ধ এমনকি বৃদ্ধরাও ত্রিশপারার বিশাল কিতাব পুরোপুরি মুখস্থ করেছেন, অনেক অমুসলিমও কোরআন মুখস্থ করেছেন।
বেশি হাফেজের বসবাস যে গ্রামে। মুহাম্মাদাবাদ নামে ইরানে একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে ৬৩ জন হাফেজের বাস। বর্তমানে গ্রামটির নাম কোরআনাবাদ।১২০০ অধিবাসীর এই গ্রামটির অবস্থান ইরানের শিরাজ শহর থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পূর্বে।
বাংলাদেশে হাফেজে কোরআনের সংখ্যা ঠিক কত, এর সঠিক পরিসংখ্যান কারও জানা নেই। তবে অনুমান করা হয়, ২৫ লাখেরও বেশি হাফেজে কুরআন রয়েছেন বাংলাদেশে। এই সংখ্যা প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ হাজার শিক্ষার্থী হাফেজে কোরআন হিসেবে সনদ গ্রহণ করছেন।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় কোরআনের পরিবার - পটুয়াখালীর বাউফল সদরের বিলবিলাস (বাঁশবাড়িয়া) গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের পরিবারে হাফেজের সংখ্যা ৪৬ জন। আর অন্য তরফের আত্মীয়-স্বজন মিলিয়ে তার জ্ঞাতী-গোষ্ঠীদের মাঝে কোরআনে হাফেজের সংখ্যা শতাধিক।
কোরআন ব্যতীত এমন নজির আর আছে কি? এটা আল্লাহর কালাম কোরআনের অলৌকিকতা আর কী হতে পারে? পৃথিবীর সমস্ত ছাপা কোরআন, রেকর্ড, ক্যাসেট, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি ধ্বংস করে ফেললেও এর কপি হাফেজদের কাছ থেকে সহজেই পাওয়া যাবে। অন্য কোনো গ্রন্থের এমনটি অসম্ভব। কারণ মানব রচিত কোনো গ্রন্থ হুবহু কারও মুখস্থ নেই।
"যদি আগুন লেগে ধ্বংস হয় পৃথিবীর সব বইয়ের দোকান
তবু বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কুরআন
করবে কেমন করে কুরআন ধ্বংস আগুনেরও তেজ
আছে বিশ্ব ভরা লক্ষ লক্ষ কুরআনের হাফেজ। "
নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে কোরআনের ধারক-বাহকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। যারা ৩০ পারা কোরআন হেফজ করে তা ধরে রাখে, তার ওপর আমল করে, তারাও সেই সম্মানের যোগ্য। আবু মুসা আল-আশআরি (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই বৃদ্ধ মুসলিমকে সম্মান করা, কোরআনের ধারক-বাহক ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের প্রতি সম্মান দেখানো মহান আল্লাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৩)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল