পোস্টগুলি

ব্যবহারে বংশের পরিচয়

ছবি
ব্যবহারে বংশের পরিচয়। কথাটি আমরা বেমালুম ভুলে যাই। নম্রতা ভদ্রতা পরিবার থেকে শেখার বিষয়। এসব শিষ্টাচারের অন্তুর্ভুক্ত। আরবি 'আদাবুন' শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- শিষ্টাচার, ভদ্রতা, লৌকিকতা। আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ.) বলেন- 'আদব বা শিষ্টাচার হচ্ছে উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ অনুসরণ করা।'মিরকাত গ্রন্থাকার উল্লেখ করেন- 'কথায় ও কাজে এমন আচরণ প্রকাশ করা, যার দ্বারা প্রশংসা লাভ করা যায়। মানব জীবনে শিষ্টাচারের গুরুত্ব অপরিসীম। শিষ্টাচার হচ্ছে ভদ্র, মার্জিত ও রুচিসম্মত আচরণ। শিষ্টাচার মানুষকে সংযমী ও বিনয়ী করে তোলে। শিষ্টাচারের গুরুত্ব সম্পর্কে রসুল (স) বলেন, ‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুওতের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ’। (আবু দাউদ, হা-৪৭৭৬) পৃথিবীতে যারা মানুষ হিসাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন, তারা কেবল শিষ্টাচার ও নম্র-ভদ্র ব্যবহারের মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। প্রত্যেক ধর্মে শিষ্টাচারের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহানবি (স) ছিলেন শিষ্টাচারের মূর্ত প্রতীক। উন্নত ব্যবহারের জন্য তিনি ছোট-বড় সবার কাছে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। সংয

তাহনিক ও চিকিৎসা শাস্ত্র

ছবি
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে নবজাতক শিশুদেরকে পেশ করা হতো। তিনি তাদের জন্য বরকতের দোয়া করতেন এবং তাদেরকে মিষ্টি মুখ করাতেন।’ (মুসলিম) আবু মুসা (রা.) বলেন, আমার একটি পুত্রসন্তান জন্মালে আমি তাকে নিয়ে নবী (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইবরাহিম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দোয়া করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। সে ছিল আবু মুসার সবচেয়ে বড় ছেলে। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৬৭) আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরকে মক্কায় গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেন, গর্ভকাল পূর্ণ হওয়া অবস্থায় আমি বেরিয়ে মদিনায় এলাম এবং কুবায় অবতরণ করলাম। কুবাতেই আমি তাকে প্রসব করি। তারপর তাকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে তাকে তাঁর রাখলাম। তিনি একটি খেজুর আনতে বলেন। তা চিবিয়ে তিনি তার মুখে দিলেন। রাসুল (সা.)-এর এই লালাই সর্বপ্রথম তার পেটে প্রবেশ করেছিল। তারপর তিনি খেজুর চিবিয়ে তাহনিক করলেন এবং তার জন্য বরকতের দোয়া করলেন। (হিজরতের পরে) ইসলামে জন্মলাভকারী সেই ছিল প্রথম সন্তান। তাই তার জন্য মুসলিমরা মহা আনন্দে আনন্

গাজি হাসান পাশা যিনি আমেরিকাকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করেছিলেন

ছবি
  গাজি হাসান পাশা (১৭১৩ – ১৯ মার্চ ১৭৯০) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের গ্র্যান্ড অ্যাডমিরাল (কাপুদন পাশা) (১৭৭০-৯০), গ্র্যান্ড ভিজিয়ার (১৭৯০) এবং ১৮ শতকের শেষদিকে উসমানী খেলাফতের সর্বশেষ সিংহ যিনি আমেরিকাকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করেছিলেন। আমেরিকাও একসময় উসমানী খেলাফতকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য ছিলো। Imposed a tax on the US. (The Ottomans were the first and the only Empire which imposed a tax on the US after their Independence).১৭০০ সালের মধ্যবর্তি সময়ের কথা। আমেরিকা সবে মাত্র রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । তখন উসমানী খেলাফতের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন এডমিরাল গাজি হাসান পাশা। যার নাম শুনামাত্র বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। তিনি সব সময় সাথে সিংহ নিয়ে চলাফেরা করতেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে তখনও উসমানী খেলাফতের নৌ বাহিনী বিপুল বিক্রমে রাজত্ব করতো আটলান্টিক মহাসাগর, কৃষ্ণ সাগর, এবং ভূমধ্যসাগরে। এই তিনটি সাগর ছিলো উসমানীদের বাড়ীর পুকুর। খেলাফতের অনুমতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের জাহাজ প্রবেশ করতে পারতোনা। সেই সময় আমেরিকা মস্তানি করে তাদের পাঁচটি জাহাজ সৈন্য সহ ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। সাথে সাথে খে

নরবলি ও হযরত শাহ মখদুম (রহ.)

ছবি
নরবলি হলো দেবতাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে বা ঐশ্বরিক অনুগ্রহ প্রাপ্তির আশায় কিংবা ক্রুদ্ধ দেবতাকে শান্ত করার লক্ষ্যে মানুষ হত্যা। এটি একটি প্রাচীন ধর্মীয় সংস্কার যা বিভিন্ন সভ্যতায় অঙ্গীভূত ছিল কিন্তু আধুনিক সভ্যতায় অবসিত হয়েছে।পৃথিবীর প্রধান ধর্মসমূহে নরহত্যা তথা নরবলির বিধান নেই, বরং নরহত্যা নিষিদ্ধ। নরহত্যার সঙ্গে নরবলি'র পার্থক্য হলো নরবলি সামাজিকভাবে অনুমোদিত মানুষ হত্যা যার উদ্দেশ্য দেবতাদের সন্তুষ্টি অর্জ্জন। এই নরবলি প্রথা শুধু ভারতীয় উপমহাদেশে নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই ছিল৷ তবে অতীতে৷ প্রাচীন গ্রিসে দেবতা জিউসের সামনে শিশুবলি দেবার প্রমাণ পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা৷ খরস্রোতা নদীর ওপর বাঁধ ও সেতু নির্মাণের আগে কিংবা ঘরবাড়ি তৈরির আগে অশুভশক্তিকে তুষ্ট করতে নরবলি দেওয়ার প্রথা ছিল জাপানে৷মিশরে ফারাওদের কবরের সঙ্গে বেশ কিছু ক্রীতদাসকে জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হতো৷ দক্ষিণ এশিয়াতেও বড় বড় রাজা-মহারাজা বা জমিদারেরা বিশেষ কামনা পূরণের জন্য নরবলি দিত৷ নরমুণ্ড মালিনী, জিবে রক্তধারা, হাতে খাঁড়া নিয়ে দেবি কালীর বা দেবি চামুন্ডার বিগ্রহে অথবা বেদীতে নরবলি ছিল মর্যাদার প্রতীক৷ কালক্রমে এ প
ছবি
বিবি খানম মসজিদ একটি ঐতিহাসিক জামে মসজিদ। এই মসজিদটি উজবেকিস্তানের সামরখান্দে অবস্থিত।বিবি খানম মসজিদ মূলত স্থাপিত হয়েছে তৈমুরের স্ত্রী ‘বিবি খানম’-এর কবরের ওপরেই। অনেকটা প্রচলিত অর্থে একে মাজার সংলগ্ন মসজিদ বলা চলে। ১৩৯৯ হতে ১৪০৪ এর মধ্যে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৈমুর ১৩৯৯ সালে ভারত থেকে ফিরে এসে তার নতুন রাজধানী সমরখন্দে এই বিশাল মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন।১৪০৪ সালে একটি অভিযান থেকে ফিরে এসে মসজিদ প্রায় তৈরি অবস্থায় দেখতে পান তৈমুর। বর্তমানে মূল মসজিদের বলতে গেলে কিছুই অবশিষ্ট নেই। যা আছে তা সোভিয়েত শাসনের সময় মসজিদের পুনঃসংস্কার করা অংশ। তবুও এই মসজিদ এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে নান্দনিক এক মসজিদের নাম। পুনর্নির্মাণ করা হলেও সোভিয়েত সরকার এই মসজিদে তৈমুর লংয়ের সেই মূল মসজিদের কাঠামো আর ছাপ দুটোই ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। ১৩৯৯ সালের ভারতীয় সমর যুদ্ধের পরে তৈমুর সিদ্ধান্ত নেন যে, তার নব্য রাজধানী সামরকান্দে একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণ করবেন। মসজিদটি নির্মাণ হয় অত্যন্ত দামী পাথর দিয়ে যা ভারতীয়দের বিপক্ষে যুদ্ধে জয়ের বৈশিষ্ট্য বহন করে। ৯০ টি অধিগ্রহণকৃত হাতী এই দামী পাথরগুলো বহনের

মর্সিয়া মাতম নয়

ছবি
হিজরি ৬১ সনে ১০ মহররম কারবালায় শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের অনেক সদস্য চক্রান্তকারী ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে মর্মান্তিকভাবে শহীদ হন। এছাড়া আদি মানব হযরত আদম (আ.) এই দিনে পৃথিবীতে আগমন করেন, তাঁর তওবা কবুল হয় এই দিনেই। এই দিনে হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পায়।ফেরাউনের জুলুম থেকে হযরত মুসা (আ.) পরিত্রাণ লাভ করেছিলেন ১০ মহররম। তাঁর অনুসারীদের নিয়ে নীল নদ পার হয়েছিলেন এই দিনে। আর নীল নদে ডুবে যায় ফেরাউন ও তার অনুসারীরা।ইসলামের আরও অনেক তাৎপর্যময় ঘটনা ঘটেছিল এই দিনে। ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে কারবালা প্রান্তরে। অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার এবং অনুসারীরা যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদত বরণ করেন। হযরত ইমাম হোসাইন সেদিন ন্যায় ও সত্যের জন্য চরম আত্মত্যাগের যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা অনুকরণীয়। কিন্তু শিয়ারা বর্তমানে হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদতের শোকে যে মাতম করে তা আবেগ তাড়িত এক বেদাত ছাড়া কিছুই নয়। মুসনাদে আহমদে এসেছে, ইবনে আ

মুর্শিদাবাদ নামটি বিলুপ্তির পথে

ছবি
নবাবের রাজধানী মুর্শিদাবাদ। নবাবের দেশ মুর্শিদাবাদ। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে গৌড় অঞ্চলের রাজা শশাঙ্কের রাজধানী মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসূবর্ণ অঞ্চলে ছিল। বাংলার অন্যতম পাল রাজা মহিপালের রাজধানী শহরও সম্ভবত এই জেলায় ছিল।বর্তমানে মুর্শিদাবাদ পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা বিভাগের একটি জেলা। পশ্চিমবঙ্গের মধ ‍ ্যভাগে অবস্থিত এই জেলাটি অনেকটা ত্রিভূজের অনুরূপ আকৃতিবিশিষ্ট।এই জেলার উত্তরে মালদহ জেলা ও বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা, দক্ষিণে নদীয়া জেলা, দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্ব বর্ধমান জেলা, পশ্চিমে বীরভূম জেলা এবং উত্তর-পশ্চিমে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলা অবস্থিত ৷১৭১৭ থেকে ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার একচ্ছত্র রাজধানী ছিল এই শহর; দেওয়ান নবাব মুর্শিদকুলি খানের নামে নামাঙ্কিত হয়ে পরিচিত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ নামে। ৫.৩১৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মুর্শিদাবাদে জনসংখ্যা প্রায় ৭১.০২ লক্ষ । মুর্শিদাবাদ নামের সঙ্গে জড়িত আছে নবাব মুর্শিদ আলী খাঁ, নবাব আলীবর্দী খাঁ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও মোঘল আমলের আরো অন্যান্য নবাব দের নাম ৷নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরু

রাসুলের (সা) শাফায়াত

ছবি
আল্লাহর প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম সুপারিশ করার আদেশ দিবেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আমি আদম সন্তানের নেতা হব। সর্ব প্রথম আমাকেই কবর থেকে ওঠানো হবে। কেয়ামতের দিন আমিই সর্ব প্রথম সুপারিশ করবো এবং আমার সুপারিশই সর্ব প্রথম গ্রহণ করা হবে।’ (সহীহ মুসলিম: হাদিস: )।শাফায়াত আরবী শব্দ। শাফায়াত-এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, সুপারিশ, মাধ্যম ও দোয়া বা প্রার্থনা। পরিভাষায় পরকালীন জীবনের হিসাব নিকাশের প্রাক্কালে কিয়ামত ময়দানে বিভীষিকাময় মুহুর্তে আল্লাহর ইচ্ছায় আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক উম্মতদের মুক্তির লক্ষ্যে আল্লাহর নিকট সুপারিশকে ‘শাফায়াত’ বলে। রাসুল (সা.) কর্তৃক শাফায়াত লাভ পরম সৌভাগ্যের। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কেবলমাত্র তাঁর প্রিয়তম রাসুল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘মাক্বামে মাহমুদ’ দান করবেন। উল্লেখ্য যে, মাক্বামে মাহমুদ হলো, যে স্থানে অবস্থান করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর হুকুমে ‘শাফায়াত’ করবেন। শাফায়াতের প্রকারভে

মহররম, আশুরা, রোজা ও কারবালা

ছবি
মহররম হলো ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস।মহররম শব্দটি আরবি যার অর্থ পবিত্র, সম্মানিত। প্রাচীনকাল থেকে মহররম মাস পবিত্র হিসাবে গণ্য। মহররমের ১০ তারিখ বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন দিন, যাকে আশুরা বলা হয়ে থাকে।পবিত্র কোরআনে যে চার মাসকে সম্মানিত বলা হয়েছে মহররম তার অন্যতম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে গণনায় মাসের সংখ্যা ১২টি, যেদিন থেকে তিনি সব আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত মাস। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ বিষয়ে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার কোরো না। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত - ৩৬) হাদিস শরিফে এসেছে, এ চারটি মাস হলো—জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। আশুরার ঘটনা ও রোজা আশুরা মানেই শুধু কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা নয়। আশুরার ঐতিহ্য আবহমানকাল থেকেই চলে আসছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে আশুরার ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ইসলামের আবির্ভাবেরও বহু আগ থেকে। আশুরা আরবি শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে দশম। হিজরী সনের প্রথম মাস মুহাররমের দশ তারিখ এই দিনটি। আল্লাহর নবী মুসা আলাইহিস সালাম ফিরাউন ও তার বাহিনীর উপর বিজয় লাভ করেছিল এই দিনে। তাই এই দিনটি হচ্ছে শিরকের উপর তাওহিদের বিজয়ের দিন, তাগুতের উপর রিসালা

হযরত ওমর (রা) রাতের বেলা...

হযরত ওমর (রা) রাতের বেলা রাজধানীর বাইরে চলতে গিয়ে একটি তাঁবুতে একজন লোককে বিষন্ন অবস্থায় বসা এবং ভিতরে একটি মেয়েলোকের কাতরানোর আওয়াজ শুনতে পেয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। লোকটি ধমকের সুরে বলল, ‘যাও যাও, নিজের কাজে যাও। আমাকে জ্বালাতন করো না।’ হযরত ওমর (রা.) পীড়াপীড়ি করাতে লোকটি বলল, তার স্ত্রী প্রবল ব্যথায় কাতরাচ্ছে। ওমর (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন ‘সাথে কোনো স্ত্রীলোক আছে কি?’ উত্তরে লোকটি বলল, ‘নেই।’ হজরত ওমর (রা.) দ্রুত নিজের ঘরে গিয়ে বিবিকে বললেন, ‘আজ পুণ্য অর্জনের এক বিরাট সুযোগ আল্লাহ দিয়েছেন। একটি অচেনা মেয়েলোক প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে, প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড় নিয়ে প্রস্তুত হও এবং আমি কিছু খাবার জিনিস নিচ্ছি।’ এই বলে উভয়ে খুব তাড়াতাড়ি সেই তাঁবুর কাছে পৌঁছে বিবিকে তাঁবুর ভিতরে পাঠিয়ে দিলেন এবং নিজে খাবার তৈরি করতে শুরু করে দিলেন। কিছুক্ষণ পরে তাঁবুর ভেতর থেকে আওয়াজ এলো, ‘আমিরুল মোমেনীন, আপনার বন্ধুকে পুত্র সন্তান হওয়ার সুখবর দিন।’ আমিরুল মোমেনিন শব্দ শুনতেই লোকটি ঘাবড়ে গেল। হজরত ওমর (রা.) তাঁকে সান্তনা দিলেন, প্রস্তুত খাবার প্রসূতিকে খাইয়ে বাকী খাবার তাদের হাতে দিয়ে বিবিকে নিয়ে চলে এলেন।

ত্যাগ চাই, মর্সিয়া-ক্রন্দন চাহি না

ছবি
হযরত হাসান ও হোসাইন (রা.) যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত কন্যা ফাতেমার (রা.) সন্তান এবং তাদের ফযীলতে বেশকিছু সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তাই প্রতিটি মুসলিমের উচিত তাদের মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা। তাই আমাদেরও হযরত হাসান ও হুসাইনকে (রা.) অন্তর থেকে ভালোবাসি।আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসায় কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি না করে তাদের সর্বোচ্চ ভালোবাসতে হবে। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে কোনো মুসলিমের মৃত্যুতে বিলাপ-উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা যাবে না। এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং একটি পাপের কাজ।মহররম আসার সঙ্গে সঙ্গে হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের ওপর মাতম-বিলাপ শুরু করা ও নিজ দেহে ছুরিকাঘাত করা গর্হিত অপরাধ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শোকে বিহ্বল হয়ে যে ব্যক্তি গাল চাপড়ায়, কাপড় ছেঁড়ে ও জাহেলি যুগের মতো আচরণ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১২৯৭) তিনি আরও বলেন, মুসিবতে পড়ে বিলাপকারী, মাথা মুণ্ডনকারী এবং কাপড় ও শরীর কর্তনকারীর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, মৃত ব্যক্তির উপর বিলাপকারী যদি তওবা না করে মারা যায়, তাকে কিয়ামতের দিন খাজলীযুক্ত বা লোহার কাঁ

আসমানী কিতাব

  আসমানী কিতাব বলতে এমন কতকগুলো গ্রন্থকে বোঝানো হয়, ইসলাম ধর্মমতে মুসলমানগণ যে গ্রন্থগুলোকে আল্লাহ্প্রদত্ত গ্রন্থ বলে বিশ্বাস করেন। ইসলাম ধর্মে যে ৭টি বিষয়ের উপর বিশেষ করে ঈমান আনতে বা বিশ্বাস স্থাপন করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে একটি বিষয় হলো এই আসমানী কিতাব, যেগুলো সরাসরি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়।সব আসমানি কিতাব ও সহিফার ওপর ঈমান রাখা আবশ্যক। ইরশাদ হয়েছে, ‘(মুত্তাকি তারাই) যারা আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার আগে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান রাখে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪)। বলা হয়, পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে সর্বমোট আসমানী কিতাব পাঠানো হয়েছে ১০৪টি। তার মধ্যে ৪টি হলো প্রধান আসমানী কিতাব ও বাকি ১০০টি সহীফা।ইবরাহিম (আ.)-এর ওপর ৩০টি সহিফা অবতীর্ণ হয়েছে। মুসা (আ.)-এর ওপর তাওরাতের আগে ১০টি সহিফা অবতীর্ণ করা হয়েছে। শিশ (আ.)-এর ওপর ৬০টি সহিফা অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর বড় বড় কিতাবগুলোর মধ্যে তাওরাত মুসা (আ.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। জাবুর দাউদ (আ.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। ইনজিল ঈসা (আ.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব কোরআন মজিদ মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্