ব্যবহারে বংশের পরিচয়
ব্যবহারে বংশের পরিচয়। কথাটি আমরা বেমালুম ভুলে যাই। নম্রতা ভদ্রতা পরিবার থেকে শেখার বিষয়।
এসব শিষ্টাচারের অন্তুর্ভুক্ত। আরবি 'আদাবুন' শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- শিষ্টাচার, ভদ্রতা, লৌকিকতা।
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ.) বলেন- 'আদব বা শিষ্টাচার হচ্ছে উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ অনুসরণ করা।'মিরকাত গ্রন্থাকার উল্লেখ করেন- 'কথায় ও কাজে এমন আচরণ প্রকাশ করা, যার দ্বারা প্রশংসা লাভ করা যায়।
মানব জীবনে শিষ্টাচারের গুরুত্ব অপরিসীম। শিষ্টাচার হচ্ছে ভদ্র, মার্জিত ও রুচিসম্মত আচরণ। শিষ্টাচার মানুষকে সংযমী ও বিনয়ী করে তোলে। শিষ্টাচারের গুরুত্ব সম্পর্কে রসুল (স) বলেন, ‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুওতের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ’। (আবু দাউদ, হা-৪৭৭৬)
পৃথিবীতে যারা মানুষ হিসাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন, তারা কেবল শিষ্টাচার ও নম্র-ভদ্র ব্যবহারের মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। প্রত্যেক ধর্মে শিষ্টাচারের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহানবি (স) ছিলেন শিষ্টাচারের মূর্ত প্রতীক। উন্নত ব্যবহারের জন্য তিনি ছোট-বড় সবার কাছে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। সংযম, বিনয়, ভদ্রতা তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কখনো তিনি কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি, উদ্ধত আচরণ করেননি। এ কারণেই যুগে যুগে মানুষের কাছে তিনি এত শ্রদ্ধার পাত্র।
শিষ্টাচারহীন উদ্ধত মানুষ কেবল আকৃতির দিক থেকেই মানুষ, তাদের মনুষ্যত্বের কোনো বিকাশ ঘটে না। ফলে তারা সমাজের চোখে হয়ে থাকে ক্ষুদ্র কীট-পতঙ্গ সদৃশ। সমাজ এদের কোনো মর্যাদায় ভূষিত করে না, কুরুচিপূর্ণ এসব মানুষকে ফেলে রাখে আঁস্তাকুড়ে।
শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে আমরা অনেকের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয়ে অনধিকার চর্চা করি। অবান্তর বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করি যা অনভিপ্রেত।
একবার এক ইংরেজ লর্ড বার্নার্ড শ’কে হেয় করার উদ্দেশ্যে বললেন,
-- আচ্ছা মি. শ’ আপনার বাবা নাকি দর্জি ছিলেন?
বার্নার্ড শ’--হ্যাঁ।
লর্ড -- তাহলে আপনি কেন দর্জি হলেন না?
বার্নার্ড শ’--আপনার পিতা নাকি ভদ্রলোক ছিলেন?
লর্ড --নিশ্চয়ই!
বার্নার্ড শ’--তাহলে আপনি কেন তার মতো হলেন না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন