সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গাজি হাসান পাশা যিনি আমেরিকাকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করেছিলেন

 










গাজি হাসান পাশা (১৭১৩ – ১৯ মার্চ ১৭৯০) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের গ্র্যান্ড অ্যাডমিরাল (কাপুদন পাশা) (১৭৭০-৯০), গ্র্যান্ড ভিজিয়ার (১৭৯০) এবং ১৮ শতকের শেষদিকে উসমানী খেলাফতের সর্বশেষ সিংহ যিনি আমেরিকাকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করেছিলেন।
আমেরিকাও একসময় উসমানী খেলাফতকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য ছিলো। Imposed a tax on the US. (The Ottomans were the first and the only Empire which imposed a tax on the US after their Independence).১৭০০ সালের মধ্যবর্তি সময়ের কথা।
আমেরিকা সবে মাত্র রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । তখন উসমানী খেলাফতের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন এডমিরাল গাজি হাসান পাশা। যার নাম শুনামাত্র বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। তিনি সব সময় সাথে সিংহ নিয়ে চলাফেরা করতেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে তখনও উসমানী খেলাফতের নৌ বাহিনী বিপুল বিক্রমে রাজত্ব করতো আটলান্টিক মহাসাগর, কৃষ্ণ সাগর, এবং ভূমধ্যসাগরে। এই তিনটি সাগর ছিলো উসমানীদের বাড়ীর পুকুর। খেলাফতের অনুমতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের জাহাজ প্রবেশ করতে পারতোনা।
সেই সময় আমেরিকা মস্তানি করে তাদের পাঁচটি জাহাজ সৈন্য সহ ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। সাথে সাথে খেলাফতের নৌবাহিনীর প্রধান গাজি হাসান পাশা তাদের ধাওয়া করতে এবং আটক করতে নির্দেশ দেন। টানা পাঁচ ঘন্টা যুদ্ধের পর আমেরিকা নৌবাহিনী পরাজয় বরন করে এবং উসমানী খেলাফতের নৌবাহিনীর হাতে বন্দী হয়।
গাজি হাসান পাশা আটককৃত আমেরিকার সৈনিক এবং যুদ্ধ জাহাজ আলজেরিয়ার উপকূলে বেধে রাখেন। তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন উসমানী খলিফার কাছে তাদের সৈন্য এবং জাহাজ ফেরত চান।
তখন খলিফা জর্জ ওয়াশিংটনের কাছে বিশাল মুক্তিপণ দাবী করেন। এবং জর্জ ওয়াশিংটনকে সরাসরি নিজে এসে একটা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন। বাধ্য হয়ে জর্জ ওয়াশিংটন নিজে এসে খলিফার সাথে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।His actions caused the foundation of the treaty of Tripoli (in Turkish language) with the US which is also the first and the only treaty written in a foreign language in the US history.
এটাই আমেরিকার ইতিহাসে একমাত্র বিদেশি ভাষায় স্বাক্ষরিত চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা উসমানী খেলাফতকে টানা আঠারো বছর ট্যাক্স দেয়। The US paid 642,000 Ottoman golds for once and 12,000 golds per year.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...