পোস্টগুলি

শুধু কি বাঙালিরাই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে?

ছবি
মো.আবু রায়হান : পৃথিবীতে বাংলাদেশের বাঙালীরাই একমাত্র জাতি নয় যারা আপন মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছে এবং বুকের রক্ত ঝরিয়েছে। এমনও জাতি রয়েছে তারাও নিজ ভাষার জন্য জীবন বিলিয়েছে। বাংলাদেশের বাঙালিরা প্রথম ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করছে এটা সত্য। তবে একমাত্র বাংলাদেশের বাঙালিই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে তা সত্য নয়। কেন সত্য নয় তা ইতিহাস ঘাটলে ভাষার জন্য অন্য জাতিগোষ্ঠীর  যারা প্রাণ দিয়েছেন এরকম আরো দু একটি জাতি গোষ্ঠী পাওয়া যায়।   ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বুকে তরুণ তাজা প্রাণের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা জানা থাকলেও ১৯৬১ সালের ১৯ মে ভারতের আসামের বরাক উপত্যকায় তৎকালীন অবিভক্ত কাছাড় জেলার শিলচরে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য যে ১১ তরুণ বাঙালি আত্মাহুতি দিয়েছিল সে ঘটনার কথা আমাদের অনেকের হয়তো জানা নেই। বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের সেই লড়াইয়ে পুরুষের পাশাপাশি একজন নারীও সেদিন আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। তার নাম কমলা ভট্টাচার্য। ১৬ বছর বয়সী এ তরুণীই হল সমগ্র বাঙালি নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী পৃথিবীর সর্বপ্রথম শহীদ নারী ভাষাসৈনিক। সেদিনের সেই সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, সর্বোপরি

জান্নাত একটি কিন্তু দরজা আটটি।

ছবি
জান্নাত একটি কিন্তু তার দরজা আটটি। জান্নাতের আটটি দরজা হলো -জান্নাতুল ফেরদাউস, জান্নাতুন নাঈম, জান্নাতুল মাওয়া, জান্নাতুল আদন, দারুস সালাম, দারুল খুলদ, দারুল মাকাম, দারুল কারার। হযরত সাহল ইবনে সা‘দ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে ‘রাইয়ান’ নামে একটি দরজা রয়েছে। সিয়াম পালনকারীগণ ছাড়া এ দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। (বুখারী ও মুসলিম)। জান্নাতে ১০০টি স্তর আছে আর প্রত্যেক স্তরের মাঝে এত দূর ত্ব আছে যতটা দূরত্ব আছে আকাশ ও জমিনের মাঝে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“জান্নাতে ১০০টি স্তর আছে। প্রত্যেক স্তরের মাঝে দূরত্ব হল আকাশ ও জমিনের দূরত্বের সমান। আর ফেরদাউস তার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে আছে। আর সেখান থেকেই জান্নাতের চারটি ঝর্ণা প্রবহমান। এর উপরে রয়েছে আরশ। তোমরা আল্লাহ্‌র নিকট জান্নাতের জন্য দু’আ করলে জান্নাতুল ফেরদাউসের জন্য দু’আ করবে’। (তিরমিযী- কিতাবুল জান্নাহ, সহীহ-আলবা নী, সহীহুত তিরমিযী, হা/২৫৩১)(তাফসীরে মুয়াসসার)

জাহান্নাম সাতটি নয় একটি

ছবি
ছোটবেলা থেকে ভুলভাবে জেনে আসলাম জাহান্নাম সাতটি। কিন্তু এ ধারণা ভুল। জাহান্নাম একটি কিন্তু তার দরজা সাতটি। জাহান্নামের সাতটি দরজার নাম গুলো হলো - ছায়ীর ,লাজা, ছাক্কার,জাহী ম,জাহান্নাম,হাবিয়া, হুতামা। দলীল- আল্লাহ বলেন, “তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম। এর সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্যে এক একটি পৃথক দল আছে।” (সূরা হিজর আয়াত - ৪৩, ৪৪) মুফাসসিরগণ বলেন, উপর নিচ করে সাতটি স্তরে জাহান্নামের দরজাগুলো অবস্থিত। ইবলিস শয়তানের অনুসারীরা তাদের আমল অনুযায়ী উক্ত দরজাগুলো দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

শহিদ জোহা দিবসকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে চাই

ছবি
  মো.আবু রায়হান : আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি। আজকের এই দিনে স্বৈরাচার আইয়ুব শাহীর সেনার গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা।বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনালগ্নে ৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে আত্মদানকারী প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী তিনি। ডাকনাম জোহা, শিক্ষকজীবনেও ছাত্র ছাত্রীর কাছে ছিলেন প্রিয় জোহা স্যার। ড. শামসুজ্জোহা ছিলেন ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৯-এরমধ্যে প্রথম শহীদ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করায়  সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমানের বাংলাদেশে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পাকিস্তানী বাহিনী ছাত্রনেতা আসাদকে হত্যা করে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিহত হন তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার  ১৭ নম্বর আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হক ‘দেশরক্ষা আইনে’ ছাড়া পেলেও সামরিক আইনের গ্যাঁড়াকলে বন্দি ছিলেন কুর্মিটোলা সেনানিবাসে। সেখানেই ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্মমভাবে নিরাপত্তা প্রহরীর গুলিতে শহীদ হন অভিযুক্ত সার্জেন্ট জহুরুল হক

কিছু দেশে নিষিদ্ধ ভালোবাসা দিবস এবং বাংলাদেশে এ দিবস এলো যেভাবে ?

ছবি
পাশ্চিমাদের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ করা হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়। ই রান, মালয়েশিয়ায়, সৌদি আরবে এ দিবস পালন নিষিদ্ধ। ২০০৭ সালে পাকিস্তানে ইসলামবিরোধী হওয়ায় ভ্যালেন্টাইন উৎসব নিষিদ্ধ করে সেদেশের আদালত। বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। পাকিস্তানে এ বছর ভালোবাসা দিবসকে বোন দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। ভালোবাসা দিবসের আমদানিকারক হিসেবে ধরা হয় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে। যদিও বলায় ১৯৮৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাবিতে ছাত্র হত্যাকাণ্ড ঘটে তা ভুলিয়ে দিতে এদেশে ভালোবাসা দিবসের আমদানি করা হয় । শফিক রেহমান ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত লন্ডনে নির্বাসিত থাকে। কেউ বলে, সে এই সময় লেখাপড়া করার জন্য সেখানে ছিল। যাহোক, এই সময়টাতে লন্ডনে ‘সেন্

তথাকথিত ভালোবাসা দিবস ও ইসলামে ভালোবাসা

ছবি
আজ মহাধুমধামের সাথে তরুণ তরুণী ,যুবক যুবতীরা পালন করছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যলেন্টাইন ডে ।চারটি অক্ষরের সংযোগে খুব ছোট একটি শব্দ ভালোবাসা যাকে আরবিতে মুহাব্বত ও ইংরেজী ভাষায় Love বলে। প্রেম বা ভালোবাসা যায় বলি না কেন ভালোবাসা মানুষের অন্তরের একটি বিশেষ অবস্থার নাম, যা কারো প্রতি আবেগ,প্রবল অনুভূতির সংমিশ্রণ সৃষ্টি করে । Merriam-Webster Dictionary তে বলা হয়েছে, a feeling of strong or constant affection for a person. : attraction that includes sexual desire : the strong affection felt by people who have a romantic relationship, বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী এইসব পরিচয় ছাপিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা আলাদা করে তাদের দিন হিসেবে পালন করছেন আজকের দিনটিকে।ভালোবাসার এই দিনে প্রত্যেক ভালোবাসাময় হৃদয় রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলে, “প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস, তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ। বর্তমানের তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস বেশ কয়েক শতাব্দীর পুরনো ।ভালোবাসা দিবসের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইতিহাসটি হলো ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন'স নামে একজন খৃ

ভ্যালেন্টাইন দিবস পর্ব - ৫

কি স্মার্ট বয় আজকে তো খুব একটা শীত নেই। তারপরও এতো কাঁপছো কেন? আজকে বুঝি ভাইব্রেশন ডে ( কম্পন দিবস )? -না রিয়া আজকেও একটা দিবস আছে কিন্তু আমার বলতে লজ্জা করছে। তা তো দেখছি। লজ্জায় চেহারাটা কেমন লালে লাল হয়ে গেছে। আরে বল, কিসের লজ্জা। লজ্জা তো নারীর ভূষণ। ছেলেদের লজ্জা থাকতে নেই। -রিয়া আজকে কোনো দিবস পালন না করলে হয়না। বরং চল দুজনে কোথাও আড্ডা দেই। না তা হবে কেন? দিবস ছাড়া কোনো আড্ডা না। আগে বল আজকে কি দিবস? -আজকে হাগ ( hug) দিবস। কি হাগু দিবস? -হাগু না হাগ দিবস। সেটা আবার কি দিবস? - ( লজ্জায় রিমন অস্পষ্ট কণ্ঠে বলল) আলিঙ্গন দিবস। কি এতো বড় স্পর্ধা। এক সপ্তাহও হয়নি রিলেশনের এর মধ্যে আলিঙ্গনের ধান্দা। তোমরা ছেলেরা বিভিন্ন দিবসের নাম দিয়ে আর কত মেয়েদের উপভোগ করতে চাও ? দাঁড়াও আলিঙ্গন দিতাছি ...এমন আলিঙ্গন দেব। বাপ মায়ের নাম ভুলে যাবি। এ পালাচ্ছিস কেন দাঁড়া .. -না রিয়া আমার আলিঙ্গন দরকার নেই। ভলো থাকিস বোন ..

জাতিসংঘের প্রবেশ দ্বারে মুসলিম কবির কবিতা

ছবি
ফার্সি গদ্য সাহিত্যের জনক মহাকবি শেখ সাদি।শেখ সাদির পুরো নাম আবু মুহাম্মদ মোশাররফ উদ্দিন বিন মোসলেহ উদ্দিন আবদুল্লাহ সাদি সিরাজি।তিনি বাংলাভাষী পাঠকের কাছে শেখ সাদি নামে সমধিক পরিচিত। শুধু বাঙালিই নয় বিশ্বজুড়ে তিনি সচেতন বিবেকবান মানুষের কাছে সমভাবে সমাদৃত।জাতিসংঘের দেয়ালে সেঁটে আছে একটি কার্পেট। যেটি ইরানি জনগণের পক্ষ থেকে দেয়া একটি উপহার। নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরের প্রবেশপথের নর্থ ডেলিগেট লাউঞ্জে রয়েছে সেই মহৎ কার্পেট ।  কার্পেটিতে উৎকীর্ণ আছে ইরানের মহাকবি সাদির ‘গুলিস্তাঁ’ গ্রন্থে উদ্ধৃত একটি চমৎকার কবিতা। সেই কবিতাটির মূল ফার্সি পাঠ হলো— بنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرند چو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرار تو کز محنت دیگران بیغمی ٭٭٭ نشاید که نامت نهند آدمی بنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرند چو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرار تو کز محنت دیگران بیغمی ٭٭٭ نشاید که نامت نهند آدمی بنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرند چو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرار تو

ভ্যালেন্টাইন দিবস পর্ব -৪

ছবি
কি তোমার মন খারাপ ? তোমাকে এরকম বিধ্বস্ত লাগছে কেন ? আজকে না প্রমিজ ডে। -রিয়া তোমার কাছে যে প্রমিজ করেছিলাম তা আর রাখতে পারছি না।  শোন আজকে প্রমিজ করার দিন, ভাঙার দিন না। আজকের দিনে তুমি আমার কাছে  প্রমিজ করবে। বুঝছো ?  বল তুমি আমাকে কবে বিয়ে করছো ?   -তা আর বুঝি হচ্ছে না রিয়া। কেন? -এই বিয়ে আমার পরিবার মেনে নিবে না। কি যাতা বলছো? তোমার পরিবারে কে কে আছে শুনি। -আমার ওয়াইফ আর দুই ছেলে মেয়ে। কী , দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা ....... ........

ভ্যালেন্টাইন দিবস পর্ব -৩

ছবি
কি মাথা চুলকাও কেন? আজকে কি কোনো দিবস নেই? আজকে বুঝি মাথা চুলকানো দিবস। -না রিয়া আজকেও একটা দিবস আছে। কিন্তু বুঝতেছিনা সেটি কি দিবস। কেন সে দিবসের নাম কি? -রিয়া সবাই তো বলছে টেডি ডে আরে এটা বুঝলে না, গতকাল কি দিবস ছিল -কেন চকলেট ডে। তাহলে অবশ্যই আজকে আইসক্রিম ডে হবে।  -রিয়া আসলেই তুমি সো জিনিয়াস। দেখতে হবে না আমার যে টেডি বয় আছে। চল এবার আইসক্রিম খেতে -ওকে  তাহলে চল।

কবিতা : বিষাদ

তুমি কি শুনেছো ?  গহীন অরণ্যের আত্মচিৎকার নিসঃঙ্গতার প্রলাপ,  ঘোর অন্ধকারে চাদরে মোড়া নির্বাক বিলাপ। তুমি কি দেখেছো ? প্রখর চৈত্রে কোমল মৃত্তিকার চিড় তৃষ্ণায় হাহাকার,  ভরা যৌবনা নদীর ছুটে চলা কচুরিপানার সাঁতার। তুমি কি কান পেতে শুনেছো ?  আহত সৈনিকের সদা আর্তনাদ গগণ বিদারী আহাজারি,  প্রসূতি জননীর গঞ্জনা কাতর কণ্ঠে রোনাজারি। তুমি কি অনুভব করেছো? ব্যথিত মনে কষ্টের আর্তি আগ্নেয়গিরির লাভা,  বিচ্ছেদের করুণ বেদনায় দগ্ধ  দহনে প্রজ্জলিত আভা।

ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাওয়া শের -ই- মহিশুর টিপু সুলতান

  অষ্টাদশ শতক ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য ছিল প্রভাব বিস্তারের শতাব্দী। এই শতকের মাঝামাঝিতে  ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের পূর্বে বাংলায় স্বাধীন নবাব, নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান  সেনাপতি মীর জাফরকে হাত করে বাংলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনা করে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পতন সমগ্র ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্ব কায়েমের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়। যার ধারাবাহিকতায় গুটিকয়েক স্বরাজ ব্যতীত সমগ্র ভারত ব্রিটিশদের পদানত হয়। এই শতকে ১৭৯৯ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বিরুদ্ধে তৃতীয় মহিশুরের যুদ্ধে টিপু সুলতান নিহত হন। ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতাসংগ্রামী বলা হয় তাঁকে। বহু যুদ্ধে জয়ী হয়ে অবশেষে শ্রীরঙ্গপত্তনমের যুদ্ধে নিজের দুর্গে তাঁর পতন হয়।সেসময় ব্রিটিশ সৈন্যরা ভেঙে ফেলে নগরের প্রাচীর। যুদ্ধ উপদেষ্টারা টিপুকে পরামর্শ দেয় গুপ্ত দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে। তিনি বলেন ‘ভেড়া বা শিয়ালের মতো দু'শ বছর বাঁচার চেয়ে বাঘের মতো দু'দিন বেঁচে থাকাও ভালো।' তিনি ভীরুর জীবন বেঁচে নেননি। বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের মতো টিপুর এক সেনাপতি

মুসলিম হলে কেউ কি ভারতে সংস্কৃত পড়তে বা পড়াতে পারবেন না ?

বর্তমান ভারত জুড়ে চলছে নানা বিষয়ে বিতর্ক। কাশ্মীর ইস্যু ও বাবরি মসজিদের রায় নিয়ে  মুসলিমদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ না হতেই প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিতর্কিত ইস্যু।  ভারতের বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে সংস্কৃত বিভাগে সংস্কৃতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ফিরোজ খান নামের একজন মুসলিমকে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।বারো দিন আগে বেনারসের ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিদ্যা ধর্ম বিজ্ঞান (এসভিডিভি)-এ যোগদান করেন ফিরোজ খান নামের মুসলিম শিক্ষক। সংস্কৃত বিভাগে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হিন্দু শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে জোর প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। হিন্দু শিক্ষার্থীরা ফিরোজ খানকে ক্লাসেই ঢুকতে দিতে রাজি নয়।তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনেও অবস্থান নিয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি ফিরোজ খানের চেয়ে  যোগ্যতর আর কোনো প্রার্থী ওই পদে ছিলেন না বলে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন।ফিরোজ খান নিজে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে জানিয়েছেন, তাদের পরিবারে সংস্কৃতের চর্চা আছে বহুকাল ধরে।তার বাবা রমজান খান ভজন গান করেন - এমন কী গোশালা রক্ষায় প্রচার পর্যন্ত চালান।ফলে তার বিরুদ্ধে এই ধরনের আন্দোলনে ফিরোজ খান স্বভাবতই অত্য

আসামে এনআরসি এবং বিজেপির মুসলিম খেদাও নাটক

ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত একটি রাজ্যের নাম আসাম। এই রাজ্যে এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে চলছে দীর্ঘদিনের বিতর্ক। সেই বিতর্কে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিককালে করা এনআরসি বাতিল করা নিয়ে।মূলত এনআরসি হলো ভারতের আসামে থাকা বাঙালিদের বিতাড়ন করার কৌশল মাত্র। তাদের মধ্যে মূল এবং নির্ভুল টার্গেট হলো বাঙালি মুসলমানরা। আসামের প্রধান ধর্মগুলো হল হিন্দুধর্ম ৬২.৯%,  ইসলাম ৩৪.৯% এছাড়া অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টান ধর্ম ৩.৭%,  শিখ ধর্ম ১%, এবং বৌদ্ধ ধর্ম ইত্যাদি। ভারতে প্রথম এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরি হয়েছিল আসামে ১৯৫১ সালে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যরাত পর্যন্ত যারা বা যাদের উত্তরসূরীদের নাম আসামের  ভোটার তালিকায় ছিল তারা এনআরসিতে স্থান পাবেন বলে বলা হয়েছিল। তাদের মতে এবারের এনআরসি-তে ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে যোগ্য ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫১ সালের এনআরসি-তে যাঁদের নামছিল তারা এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম সর্বশেষ  এনআরসিতে স্বাভাবিকভাবেই স্থান পাবেন বলে জানানো হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের রাজীব গান্ধী এবং আসাম আন্দোলনের অন্যতম শক্তিগুলোর মধ্যে আসাম চুক্তি স্বাক্ষরি

শ্রীলঙ্কার নির্বাচন : উদ্বিগ্ন মুসলিম সম্প্রদায়

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় ১৮ নভেম্বর অষ্টমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ভারত মহাসাগরের এই সর্ববৃহৎ দ্বীপ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে।এরমধ্যে দিয়ে শ্রীলঙ্কা এখন গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ভাই শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের হাতে মূল ক্ষমতা ন্যস্ত হলো। ২১ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় এক অনুষ্ঠানে বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ান শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছোটভাই গোতাবায়া রাজাপাকসে।গুরুত্বপূর্ণ দুটো পদে আপন দুই ভাইয়ের নির্বাচিত হবার ঘটনা শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে এই প্রথম ঘটল। শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। যদিও এর আগে শ্রীলঙ্কায় এদুটো গুরুত্বপূর্ণ পদে মা মেয়ের শাসন লঙ্কানরা প্রত্যক্ষ করেছেন। শ্রীলঙ্কায় এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গোতাভায়া রাজাপাকসে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তার বিরোধী সাজিথ প্রেমাদাসাকে পরাজিত করেন।৭০ বছর বয়সী সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোতাভায়া রাজাপাকসে এক সময়  প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের

শহিদ নূর হোসেন মিলনরা ফিরে আসেন জাতির প্রয়োজনে

   ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক ' এই স্লোগান বুকে ও পিঠে লিখে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকায়  বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির একটি মিছিলে অংশ নেন নূর হোসেন। মিছিলটি ঢাকার গুলিস্তানের জিপিও-র সামনে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি আসলে স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট পুলিশবাহিনীর গুলিতে নূর হোসেন নিহত হন। সেদিন মোট তিনজন আন্দোলনকারী  নিহত ও অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হন। নিহত অপর দুই ব্যক্তি হলেন যুবলীগ নেতা নুরুল হূদা বাবুল এবং আমিনুল হূদা টিটু। নূর হোসেনরা সব সময় জন্ম গ্রহণ করেন না। জাতির দুর্দিনে প্রয়োজনে দুঃসময়ে তারা অবতারের মতো অবতীর্ণ হন  জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনে যেমন দুজন বাংলার দামাল ছেলে অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তেমনি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ক্ষমতার মসনদে জেকে বসা স্বৈরশাসক এরশাদের পতনে দুজন সূর্য সন্তানের শাহাদত এরশাদের পতন ত্বরান্বিত করেছিল।আমরা ইতিহাস থেকে জানি পাকিস্তান আমলে শহিদ আসাদ তিনি আইয়ুব খানের পতনের দাবীতে মিছিল করার সময় ২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। শহীদ আসাদ হচ্ছেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে একজন পথি

আমরা জেনেশুনে সুইসাইড করছি।

বাংলার মোগল সুবাহদার ইসলাম খাঁ ১৭ শতকের শুরুতে ঢাকাকে প্রথম বাংলার রাজধানী করেন। প্রায় চারশত বছরের পুরনো এই ঢাকা শহরে দিনদিন আমাদের জীবন হয়ে পড়ছে বিকল ও বিপর্যস্ত। ১২৫ বর্গমাইল বা ৩২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ঢাকা সিটির প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫,০০০ হাজার মানুষের বাস। সেহিসাবে ঢাকা সিটির মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ ২৫ হাজার। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকা নগরীর জনসংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টের তথ্য অনুযায়ী ঢাকার জনসংখ্যা বর্তমানে এক কোটি ৭০ লাখ, যা ২০৩০ সালের মধ্যে পৌঁছে যাবে দুই কোটি ৭৪ লাখে। ঢাকা সিটিতে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকার জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে সাড়ে ৩ কোটি হবে।এমন তথ্যও উঠে এসেছে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে।যাইহোক ঢাকা এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ঘনবসতিপূর্ণ শহরের একটি। ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহর নানা প্রকারের অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনায় নাগরিক জীবনের যাপিত দিনগুলো করুণ দশায় আপতিত।বর্তমানে মানব সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে এই শহর ভারাক্রান্ত। এই শহরের মানুষগুলো জেনেশুনেই স্লো সুইসাইডের সম্মুখীন ।রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত গানের দুটো চরণ য

কেমন আছেন চীনের উইঘুর মুসলিরা?

চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের বন্দী ক্যাম্পে রেখে নির্যাতনের গোপন তথ্য সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে।এতোদিন ধরে যদিও চীন সরকার এধরনের ক্যাম্পে মুসলিম বন্দী রাখার কথা অস্বীকার করে আসছিল। জিনজিয়াংয়ের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ আটকে রাখা বন্দীদের  ‘কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সমাজের মূল ধারায় নেয়ায় প্রক্রিয়া’র নামে সেখানে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন। যা আধুনিক ইতিহাসে মুসলমানদের ওপর সবচেয়ে নির্লজ্জ নির্মম হামলা-নির্যাতন। আজকের এই লেখা চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ভাগ্যাহত নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে।  ২০১৮ সালের আগস্টে জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায় যে, প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে চীনের সন্ত্রাসবাদ কেন্দ্রগুলোতে আটক রাখা হয়েছে। ২০ লাখ মানুষকে রাজনৈতিক ও রাজনৈতিক পুনর্বিবেচনার শিবিরে অবস্থান করতে বাধ্য করা হয়েছে।জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা বিশ্ববাসীর নজরে আসে। চীন সরকার জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। উইঘুর মুসলিমদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণের নামে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। চীনের ২৩টি প্রদেশে সরকারিভাবে বিভিন্ন সেমিনার, মতবিনিময়,

যে ঘটনা ফরীদউদ্দীন আত্তারকে আতর ব্যবসায়ী থেকে সুফি সাধক বানিয়ে দিল

ছবি
ফরীদউদ্দীন আত্তার একজন মুসলিম কবি, সুফি-সাধক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সুফিবাদের ওপর ফার্সি কবিতা লিখে সমকালীন বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন আতর ব্যবসায়ী। আতর থেকেই আত্তার উপাধি। তিনি ৭৪০ হিজরিতে ১১৪৫ মতান্তরে ১১৪৬ খ্রিস্টাব্দে ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। যুবক বয়সেই সুফিসাধক ফরীদউদ্দীন আত্তার হজ পালন করেন। পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশসহ মিসর ভ্রমণ করেন। তার এ সফর ছিল জ্ঞান অন্বেষণের জন্য। তার বাবা ছিলেন একজন ওষুধ বিক্রেতা। বাবার মৃত্যুর পর তিনি ওষুধ বিক্রিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। পেশাগত কারণেই তিনি চিকিত্সা শাস্ত্রে ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করেন। কথিত আছে যে প্রতিদিন তার কাছে অন্তত ৫০০ জন রোগী আসতেন। রোগীদের তিনি তার নিজের তৈরি ওষুধ দিতেন। ফরিদ উদ্দিন আত্তার অন্তত ৩০টি বই লিখে গেছেন। তার একটি বিখ্যাত বই হচ্ছে ‘মানতিকে তাইয়ার’ বা ‘পাখির সমাবেশ’। আত্তারের কবিতা রুমিসহ বহু আধ্যাত্মিক কবির জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তিনি কিছু আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে দীর্ঘ দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। তিনি গবেষণার মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জন করেন।  ফরিদউদ্দিন আত্তার সম্