কেমন আছেন চীনের উইঘুর মুসলিরা?
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের বন্দী ক্যাম্পে রেখে নির্যাতনের গোপন তথ্য সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে।এতোদিন ধরে যদিও চীন সরকার এধরনের ক্যাম্পে মুসলিম বন্দী রাখার কথা অস্বীকার করে আসছিল। জিনজিয়াংয়ের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ আটকে রাখা বন্দীদের ‘কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সমাজের মূল ধারায় নেয়ায় প্রক্রিয়া’র নামে সেখানে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন। যা আধুনিক ইতিহাসে মুসলমানদের ওপর সবচেয়ে নির্লজ্জ নির্মম হামলা-নির্যাতন। আজকের এই লেখা চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ভাগ্যাহত নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে।
২০১৮ সালের আগস্টে জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায় যে, প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে চীনের সন্ত্রাসবাদ কেন্দ্রগুলোতে আটক রাখা হয়েছে। ২০ লাখ মানুষকে রাজনৈতিক ও রাজনৈতিক পুনর্বিবেচনার শিবিরে অবস্থান করতে বাধ্য করা হয়েছে।জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা বিশ্ববাসীর নজরে আসে। চীন সরকার জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। উইঘুর মুসলিমদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণের নামে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। চীনের ২৩টি প্রদেশে সরকারিভাবে বিভিন্ন সেমিনার, মতবিনিময়, প্রশিক্ষণ ও আলোচনাসভার মাধ্যমে মুসলমানদের পোশাক-পরিচ্ছদ, কৃষ্টি কালচার ও জীবনাচারে চীনা হয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। এককথায় জিনজিয়াং প্রদেশের হান বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর ধর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে মুসলমানদের মিশে যেতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, যেসব লোকজনের ২৬টি তথাকথিত 'স্পর্শকাতর দেশের' আত্মীয় স্বজন আছেন তাদেরকে এসব ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে।এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান এবং তুরস্কসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ। এছাড়াও যারা মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিদেশের কারো সাথে যোগাযোগ করেছে তাদেরকেও টার্গেট করে চীনা কর্তৃপক্ষ।মানবাধিকার সংগঠনগুলো আরো জানায় এসব ক্যাম্পে যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদেরকে চীনা মান্দারিন ভাষা শেখানো হয়। উইঘুর মুসলিমদের চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর অনুগত থাকতেও বলা হয়। আরো বলা হয় তাদের নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সমালোচনা করতে অথবা সেই ধর্ম পরিত্যাগ করতে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরো জানায়,উইঘুর মুসলিমদের ওপর কড়া নজর রাখা হয়। তাদের বাড়িঘরের দরজায় লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিশেষ কোড, বসানো হয় মুখ দেখে সনাক্ত করা যায় এরকম ক্যামেরা।ফলে কোন বাড়িতে কারা যাচ্ছেন, থাকছেন বা বের হচ্ছেন তার উপর কর্তৃপক্ষ সতর্ক নজর রাখতে পেরেছিল। তাদেরকে নানা ধরনের বায়োমেট্রিক পরীক্ষাও দিতে হয়েছিল।তবে চীন সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে। এসব প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে চীন প্রতিবাদও জানায়।চীন জানায় তারা জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের অপরাধমূলক তৎপরতা' মোকাবেলা করছে।জেনেভায় ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের এক অধিবেশনে চীনা কর্মকর্তা বলেন, ১০ লাখ উইঘুরকে বন্দী শিবিরে আটকের রাখার খবর 'সম্পূর্ণ মিথ্যা।কিন্তু তারপরে চীনের একজন সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, চীন সেখানে কিছু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছে যেখানে লোকজনকে নানা ধরনের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
চিনের আসল গোমরফাঁস হয় ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে।চীনে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে বন্দিশিবিরে আটক ও নির্যাতনের বিষয়ে সরকারি একটি গোপন নথি ফাঁস হয়ে যায়। চীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে ওই নথিতে উঠে এসেছে।এ বছরের নভেম্বর মাসে নিউইয়র্ক টাইমস এই নথির বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে। এছাড়া ফাঁস হওয়া নথির কিছু অংশ পত্রিকার ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করে। ৪০৩ পৃষ্ঠার যে নথি নিউইয়র্ক টাইমস–এর হস্তগত হয় , তাতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিতর্কিত অভিযান পরিচালনার অবিশ্বাস্য সব তথ্য উঠে এসেছে। উইঘুরদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, তাদের ওপর নজরদারি এবং সি চিন পিংসহ বিভিন্ন নেতার অপ্রকাশিত বক্তব্যও রয়েছে ওই নথিতে।
প্রায় ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা ও চীন সরকার বন্দিদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নে জড়িত থাকার অভিযোগে চীনের ২৮ সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।তৎকালীন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ২০১৮ সালের শুরুর দিকে চীন সফরে যাওয়ার আগে জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
উইঘুর মুসলিমদের বাস চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে। প্রদেশটি চীনের অন্যতম সর্ববৃহৎ একটি অঞ্চল।জিনজিয়াং চীনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।জিনজিয়াং এর পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে আছে মুসলিম দেশ তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও কাজাখস্তান, আর দক্ষিণ-পশ্চিমে আছে আফগানিস্তান ও জম্মু-কাশ্মীর।
জিনজিয়াংয়ের আয়তনে চীনের প্রায় এক-ষষ্ঠাংশের সমান। বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় ১২ গুণ।জিনজিয়াংয়ের আয়তন পূর্ব ইউরোপের দেশ জার্মান, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও স্পেনের সমন্বিত আয়তনের প্রায় সমান। এমনকি এটি স্বাধীন দেশ হলে ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর ১৬তম বৃহৎ দেশ হতো। জিনজিয়াংয়ের আয়তন ১৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার।চীনের তিব্বতের মতো জিনজিয়াংও স্বায়ত্তশাসিত এলাকা। তার অর্থ হচ্ছে, কাগজে কলমে হলেও, বেইজিং-এর বাইরেও তারা নিজেদের মতো করে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই দুটো এলাকাই চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।চীনের মোট জনসংখ্যার ১% থেকে ৩% ইসলাম ধর্মাবলম্বী।সিআইএর ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক অনুযায়ী চীনের মোট জনসংখ্যার ১ থেকে ২ শতাংশ মুসলিম। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদনে দেখা যায়, মুসলিমরা চীনা জনসংখ্যার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। চীনে হুই মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। জিনজিয়াং প্রদেশে চীনের দমন ও নিপীড়নমূলক কার্যক্রমের শিকার হচ্ছেন উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠী। সংখ্যায় মুসলিমরা তুলনামূলকভাবে কম হলেও
জিনজিয়াং, গানচু, নিংজিয়া, ইউনান, হেনান, কুনমিং ও কিংহাই প্রদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম বাস করে। চীনের সরকারিভাবে স্বীকৃত ৫৬টি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে দশটি গোষ্ঠীই প্রধানত সুন্নি মুসলিম।জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখের মতো। এর মধ্যে মুসলমান প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ। মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৫৫ শতাংশ।জিনজিয়াং ছাড়াও
কাজাখস্তানে ২ লাখ ২৩ হাজার, উজবেকিস্তানে ৫৫ হাজার, কিরগিজস্তানে ৪৯ হাজার, তুরস্কে ১৯ হাজার, রাশিয়ায় ৪ হাজার, ইউক্রেনে ১ হাজারের মতো উইঘুর লোক বাস করে।
আত্মপরিচয়ের বেলায় তারা নিজেদেরকে সাংস্কৃতিক ও জাতিগতভাবে মধ্য এশীয় লোকজনের কাছাকাছি বলে মনে করেন। তাদের ভাষা অনেকটা তুর্কী ভাষার মতো।
ভাষাবিদ ও ইতিহাসবেত্তারা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন যে ‘উইঘুর’ শব্দটি ‘উয়্যুঘুর’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ সংঘবদ্ধ।বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেও প্রাচীন এ সম্প্রদায়ের লোকদের উইঘুর না বলে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হতো। মূলত, ১৯২১ সালে উজবেকিস্তানে এক সম্মেলনের পর উইঘুররা তাদের পুরোনো পরিচয় ফিরে পায়। উইঘুর জাতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর আগের। মূলত, এরা স্বাধীন পূর্ব তুর্কিস্তানের অধিবাসী।১৯১১ সালে মাঙ্কু সাম্রাজ্য উৎখাতের মাধ্যমে পূর্ব তুর্কিস্তানে চীনা শাসন চালু হয়। কিন্তু স্বাধীনচেতা বীর উইঘুররা এই বৈদেশিক শাসনের সামনে মাথা নোয়ায়নি। এ কারণে ১৯৩৩ ও ১৯৪৪ সালে তারা দুবার চীনাদের সঙ্গে সাহসিকতার চরম রূপ দেখিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু ভাগ্য তাদের অনুকূলে ছিল না। এ কারণে ১৯৪৯ সালে আবারও তারা চীনা কমিউনিস্টদের হাতে পরাজিত হয় আর জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ গড়ে ওঠে। তখন সেখানে কমিউনিস্ট পার্টির গভর্নর ছিলেন সাইফুদ্দিন আজিজি।১৮৮৪ সালে কিং রাজত্বের সময় জিনজিয়াং চীনের একটি প্রদেশ হয়। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর চীনা কমিউনিস্ট সেনারা জিনজিয়াংয়ে অভিযান চালায়। মুলত
চীনে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার পর থেকে জিনজিয়াং অঞ্চলে মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু হয়। এই সুযোগে চীনের হান জাতিগোষ্ঠীর সামরিক ও বেসামরিক লোকজন জিনজিয়াংয়ে বসতি স্থাপন করে। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে চীনে সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চীনের অভ্যুদয়ের সময় প্রদেশটির জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ মুসলমান ছিল। সেখানে এখন ৫৫ শতাংশ উইঘুর মুসলিমের বাস। চীনের সরকারি হিসাবে মুসলিমদের হার আরো কম। হান সাংস্কৃতিক আত্তীকরণের বিরুদ্ধে এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে বহু মানুষ নির্যাতিত হয়। বিপুল সংখ্যায় কাজাখ জনগোষ্ঠী পার্শ্ববর্তী কাজাখস্তানে পালিয়ে যান। এরপর থেকে উইঘুর মুসলমানদের সঙ্গে চীনা কর্তৃপক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। একসময় তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। গত শতাব্দীর শেষে উইঘুর মুসলমানরা স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করার ফলে গত কয়েক দশকে সংখ্যাগুরু চীনা হান জাতির বহু মানুষ জিনজিয়াং প্রদেশে গিয়ে বসতি স্থাপন করে। উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকজন মনে করছেন এর ফলে তাদের সংস্কৃতি ও জীবনযাপন হুমকির মুখে পড়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানায়, জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনের দমন-পীড়নের কারণেই সেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।চীন সরকারের দাবী, উইঘুর মুসলিমদের কেউ কেউ জঙ্গি গ্রুপ ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়েছে।জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে ২০০৯ সালের দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ২০০ জন। তারপর থেকে সেখানে আরো কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা হয়েছে পুলিশ স্টেশন এবং সরকারি ভবনেও। ২০১৪ সালে এরকম কিছু হামলায় নিহত হয়েছে ৯৬ জন।সরকারের পক্ষ থেকে এসব হামলার জন্যে উইঘুর মুসলিমদের দায়ী করা হয়। চীন সরকারের অভিযোগ শিনজিয়াং-এর উইঘুর মুসলিমরা চীনের অন্যত্রও হামলা চালিয়েছে। চীন অভিযোগ করে, ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে তারা তিয়েনানমেন স্কয়ারে গাড়ি দিয়েও হামলা করেছিল।২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিনজিয়াংয়ে ছুরি দিয়ে চালানো হামলায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পর সরকার সেখানে নতুন করে অভিযান চালাতে শুরু করে।যে ধারা দশ লক্ষ মুসলিমকে বন্দী রাখা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
চীনের এই দমন-নিপীড়নের প্রতিবাদে দুচারটে মুসলিম দেশ বাদে ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ নীরব থেকেছে। মালয়েশিয়া গত বছর এক ডজন উইঘুর শরণার্থীকে চীনে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করেছিল, কুয়েত পার্লামেন্টের চার সদস্য জানুয়ারিতে উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিল এবং তুরস্ক চীনের নির্মম আচরণের নিন্দা জানিয়েছিল।ব্যস, এটুকুই। বাকি মুসলিম দেশগুলো উইঘুরদের নির্যাতন নিয়ে কিছুই করেনি বা বলেনি। একমাত্র আল-জাজিরা ছাড়া আরব মিডিয়াগুলোতে এমনকি ইরান, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো বড় মুসলিম দেশগুলোতেও এ বিষয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য করতে শোনা যায়নি। বড়ই বিস্ময়ের ব্যাপার হলো পশ্চিমা বিশ্ব চীনের মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও মুসলিম বিশ্ব রয়েছে নিশ্চুপ। সৌদিআরব, পাকিস্তান তো উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতনের বিষয় এড়িয়ে গেছে।মুসলিম দেশগুলোর প্রয়োজন অর্থ। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো এতটা বোকা নয় তারা। তাই তারা চুপ, একইভাবে তাদের গৃহপালিত গণমাধ্যমগুলোও চুপ। সৌদি আরবের কার্যত স্বৈরশাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তার চীন সফরকালে জিনজিয়াংয়ে চীনা সরকারের নেয়া কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ এবং ‘চরমপন্থী’ পদক্ষেপের সমর্থন জানিয়েছেন।এভাবে মুসলিম বিশ্বের বিভক্তির সুযোগে অমুসলিমরা একত্রিত হয়ে মুসলিমদের হত্যা ও নির্যাতনের মতো জঘন্য কাজ করার সাহস পাচ্ছে।আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে মুসলিম জনগোষ্ঠী।
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন