সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলিম হলে কেউ কি ভারতে সংস্কৃত পড়তে বা পড়াতে পারবেন না ?



বর্তমান ভারত জুড়ে চলছে নানা বিষয়ে বিতর্ক। কাশ্মীর ইস্যু ও বাবরি মসজিদের রায় নিয়ে  মুসলিমদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ না হতেই প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিতর্কিত ইস্যু।  ভারতের বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে সংস্কৃত বিভাগে সংস্কৃতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ফিরোজ খান নামের একজন মুসলিমকে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।বারো দিন আগে বেনারসের ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিদ্যা ধর্ম বিজ্ঞান (এসভিডিভি)-এ যোগদান করেন ফিরোজ খান নামের মুসলিম শিক্ষক। সংস্কৃত বিভাগে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হিন্দু শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে জোর প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। হিন্দু শিক্ষার্থীরা ফিরোজ খানকে ক্লাসেই ঢুকতে দিতে রাজি নয়।তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনেও অবস্থান নিয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি ফিরোজ খানের চেয়ে  যোগ্যতর আর কোনো প্রার্থী ওই পদে ছিলেন না বলে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন।ফিরোজ খান নিজে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে জানিয়েছেন, তাদের পরিবারে সংস্কৃতের চর্চা আছে বহুকাল ধরে।তার বাবা রমজান খান ভজন গান করেন - এমন কী গোশালা রক্ষায় প্রচার পর্যন্ত চালান।ফলে তার বিরুদ্ধে এই ধরনের আন্দোলনে ফিরোজ খান স্বভাবতই অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছেন। ফিরোজ আরো বলেন, সারা জীবন ধরে আমি সংস্কৃত পড়ে এসেছি। কোথাও মনে হয়নি, আমি মুসলিম বলে সংস্কৃত আমি পড়তে পারব না। এখন যখন সংস্কৃত পড়াতে গেলাম তখন বিষয়টিতে ধর্মে নিয়ে আসা হলো। ভারতের জয়পুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাস্ত্রী (স্নাতক), শিক্ষাশাস্ত্রী (বি.এড), আচার্য (স্নাতকোত্তর) এবং ২০১৮ সালে পিএইচডিও সম্পূর্ণ করেছেন ফিরোজ খান। এমনকি ফিরোজ নেট এবং জেআরএফ-ও সম্পূর্ণ করেন ।এই প্রতিষ্ঠানির একটি প্রবেশপথে প্রতিষ্ঠাতা মদনমোহন মালব্যজির যে বাণী শিলাতে লিপিবদ্ধ আছে তাতে স্পষ্ট লেখা আছে হিন্দুদের চেয়ে ইতর এমন কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না।সংস্কৃতকে অনেকে 'দেবভাষা' বলে বর্ণনা করেন। হিন্দুদের দেবদেবীরা এই সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন বলে তাদের বিশ্বাস।কিন্তু সমস্যা বাঁধছে তখনই, যখন সেই 'দেবভাষা' পড়বার বা পড়ানোর অধিকারও অনেকে হিন্দু নন এমন ব্যক্তিকে দিতে নারাজ। সংস্কৃত ভাষা হচ্ছে ভারতবর্ষের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ভাষা। প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে এ ভাষার চর্চা অব্যাহত রয়েছে। ঋগ্বেদে সংস্কৃত ভাষার প্রাচীন রূপটি দেখা যায়। ঋগ্বেদ থেকে উপনিষদের কাল পর্যন্ত এ ভাষা বৈদিক ভাষা নামে পরিচিত। প্রাচীনকালে সাধারণ্যে যে ভাষা প্রচলিত ছিল তাকে কেবল ‘ভাষা’ বলা হতো। পরে সংস্কারের মাধ্যমে গৃহীত হওয়ায় এর নাম হয় সংস্কৃত ভাষা।হিন্দুদের কাছে এই ভাষাটিকে সংস্কৃত বা পরিমার্জিত ভাষা মনে করা হয় এই কারণে যে সংস্কৃত  ভাষা একটি পবিত্র ও অভিজাত  ভাষা।  এই ভাষাকে  দেবভাষা বলা হত কারণ প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই ভাষা ছিল দেবগণ ও উপদেবতাগণের ভাষা।সংস্কৃত প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা নামেও পরিচিত। ভাষা অর্থে সংস্কৃত শব্দের প্রথম ব্যবহার দেখা যায় পৃথিবীর প্রাচীনতম মহাকাব্য রামায়ণে।  ভারতীয় প্রাচীন সকল ধর্মগ্রন্থ ও সাহিত্যরাজি রচিত হয়েছে এই সংস্কৃত ভাষাতে। মূলত সংস্কৃত একটি মৃত ভাষা।অনির্ভরযোগ্য সূত্রমতে ভারতে সংস্কৃত ভাষাভাষীর সংখ্যা প্রায় এক লাখের কাছাকাছি।সংস্কৃত ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। যে অঞ্চলে এর চর্চা হয়েছে সেই অঞ্চলে প্রচলিত বর্ণমালাই এতে গৃহীত হয়েছে। তবে নাগরী বা দেবনাগরী বর্ণমালা সংস্কৃতের জন্য  গৃহীত।ফিরোজ খানকে নিয়োগ করা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত হলো, যদি কেউ আমাদের ধর্মের না হয়, তাহলে সে কীভাবে আমাদের সংস্কৃতি বুঝবে? কীভাবে তিনি আমাদের ধর্মকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন?যদিও এই মন্তব্য মানতে নারাজ ফিরোজ। তিনি বলেন, যারা বলেছেন আমি মুসলমান হয়ে হিন্দুত্ববাদ পড়াতে পারব না, তাদের আমি বলব, আমি সংস্কৃত ভাষা সাহিত্যের খুঁটিনাটি ছাত্রছাত্রীদের কাছে তুলে ধরি। যেমন অভিজ্ঞান শকুন্তলম, উত্তর রামচরিতম্ ইত্যাদি। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্কই নেই। এখন সবার মধ্যে প্রশ্ন, মুসলিম হলে কেউ কি ভারতে সংস্কৃত পড়তে বা পড়াতে পারবেন না? অবশ্যই ফিরোজ এরকম প্রথম শিকার তা কিন্তু নয়।ভারতে এই নিয়ে বিতর্ক অবশ্য বেশ পুরনো।এর আগে বহু ভাষাবিদ ও জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এমন সমস্যায় পড়েছিলেন।ড.শহীদুল্লাহর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি ছিল এমন। শহীদুল্লাহর পরিবারের আরবি ছিল প্রিয় ভাষা। অথচ এই আরবি ত্যাগ করে তিনি সংস্কৃতে এনট্রানস পরীক্ষা দেন। এর কারণ তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলতেন, শিক্ষকের প্রহারের ভয়ে। হুগলি জেলা স্কুলের তখনকার আরবি শিক্ষক নাকি কারণে-অকারণে ছাত্রদের বেদম প্রহার করতেন। শহীদুল্লাহর এটা পছন্দ হতো না। তাই তিনি আরবির পরিবর্তে সংস্কৃত পণ্ডিতের কাছে এসে সংস্কৃতের শিক্ষার্থী হলেন।এমনিভাবে তিনি সংস্কৃত শিক্ষায় উৎসাহিত হলেন। ১৯০৪ সালে শহীদুল্লাহ সংস্কৃতকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে নিয়ে এনট্রাস পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯০৬ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পরীক্ষায় পাস করার পর তিনি হুগলি কলেজে ভর্তি হন সংস্কৃতে অনার্স পড়ার জন্য। এ সময় তিনি বেশ কিছুকাল ম্যালেরিয়া রোগে ভোগেন।তিনি বছর দুয়েক পড়াশোনা  জগতের বাহিরে ছিলেন। কিন্তু তাতে তিনি হতোদ্যম হয়ে পড়েননি। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে ১৯১০ সালে তিনি সংস্কৃতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। তাঁর আমলে একজন মুসলমান ছাত্রের পক্ষে সংস্কৃতে অনার্স পাস করাটা ছিল বড়ই বিস্ময়ের।আজ থেকে একশ বছর আগে ১৯১০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে বিএ পাশ করে এমএ-তে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি বাধার মুখে পড়েছিলেন। পন্ডিত সত্যব্রত সামশ্রমী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জেদ ধরে বসেন,  ব্রাহ্মণ পণ্ডিত এই শিক্ষক  আপত্তি তুললেন যে, বেদ বেদাভগ ব্রাহ্মণদের ছাড়া আর কারো পড়ার অধিকার নেই। হিন্দু নন এমন কাউকে তিনি বেদ পড়াবেন না।এই বিতর্ক শেষ অবধি আদালত পর্যন্ত গড়ায়, সেই সময় দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতত্ত্ব নামে নতুন বিভাগ চালু করে সেখানে শহীদুল্লাহকে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন তখনকার উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। এই ঘটনা সমসাময়িক চিন্তানায়কদের তুমুলভাবে আলোড়িত করে। বেঙ্গলী পত্রিকার সম্পাদক সুরেন ব্যানার্জির মতো লোক লিখলেন ‘টু ডে দিস অর্থডক্স পণ্ডিটস শুড বিথ্রোন ইন টু দ্য গাঙ্গেজ। মওলানা মুহম্মদ আলী কমরেড পত্রিকার ‘দি লিংগুয়া ফ্রাঙ্কা অব ইন্ডিয়া’ প্রবন্ধে লিখলেন-সংস্কৃত ও আরবিতে রচিত সাহিত্য ও দর্শনের অফুরন্ত খনি শ্রেষ্ঠ প্রত্নসাহিত্যের শিক্ষার্থীকে যে আকৃষ্ট করত তাতে সন্দেহ নেই এবং বর্তমানের চেয়ে অধিক সংখ্যায় মুসলিম বিদ্যার্থীরা সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা করুক- এই আশা পোষণ করে, আমরা বিশ্বাস করি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পণ্ডিত জনৈক মুসলমান ছাত্রকে সংস্কৃত পড়াতে অস্বীকার করে শহীদুল্লাহ ঘটিত ব্যাপারের ন্যায় যে ঘটনার সৃষ্টি করে, আর তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্যই তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব বিভাগটি খুলতে বাধ্য হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই বিভাগের প্রথম এবং একক ছাত্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯১২ সালে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এমএ পাস করেন। যদিও তিনি সংস্কৃতে এমএ পড়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তবুও তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন সংস্কৃতে উচ্চ শিক্ষালাভ করবেন। ড.শহীদুল্লাহ  এই উপমহাদেশের সংস্কৃত ভাষার একজন  শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত ছিলেন। সংস্কৃতে এমএ পড়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলে নতুন নতুন ভাষা শিক্ষার এক সম্ভাবনার নব দিগন্ত তাঁর সামনে উন্মুক্ত হয়েছিল।ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮টি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। বাংলা, ইংরেজি তো রয়েছেই, সংস্কৃত, আরবি, ফার্সি, উর্দু, হিন্দিতে যথেষ্ট জ্ঞান ছিল তার। এ ছাড়া তিনি রপ্ত করেছিলেন গ্রিক, তামিল, আর ল্যাটিন ভাষাও। আসামি, পাঞ্চাবি, গুজরাটি, মারাঠি, ওড়িয়া, কাশ্মীরী, নেপালি, তিব্বতি ইত্যাদি ভাষা তিনি শিখেছিলেন। 
সেই ঘটনার শত বছর পর বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি বা বিএইচইউতে ফিরোজ খান অনেকটা একই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। ধর্মীয় গোঁড়ামি বাদ দিয়ে হিন্দু পন্ডিত ও সংস্কারকদের উচিত সংস্কৃত ভাষা পড়ার ও পড়ানোর পথ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া। যাতে হিন্দু - মুসলিম আন্তঃধর্মীয় সহাবস্থান ও সুসম্পর্ক জোরালো হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...