সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাতিসংঘের প্রবেশ দ্বারে মুসলিম কবির কবিতা

ফার্সি গদ্য সাহিত্যের জনক মহাকবি শেখ সাদি।শেখ সাদির পুরো নাম আবু মুহাম্মদ মোশাররফ উদ্দিন বিন মোসলেহ উদ্দিন আবদুল্লাহ সাদি সিরাজি।তিনি বাংলাভাষী পাঠকের কাছে শেখ সাদি নামে সমধিক পরিচিত। শুধু বাঙালিই নয় বিশ্বজুড়ে তিনি সচেতন বিবেকবান মানুষের কাছে সমভাবে সমাদৃত।জাতিসংঘের দেয়ালে সেঁটে আছে একটি কার্পেট। যেটি ইরানি জনগণের পক্ষ থেকে দেয়া একটি উপহার। নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরের প্রবেশপথের নর্থ ডেলিগেট লাউঞ্জে রয়েছে সেই মহৎ কার্পেট । কার্পেটিতে উৎকীর্ণ আছে ইরানের মহাকবি সাদির ‘গুলিস্তাঁ’ গ্রন্থে উদ্ধৃত একটি চমৎকার কবিতা। সেই কবিতাটির মূল ফার্সি পাঠ হলো—

بنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرند
چو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرار
تو کز محنت دیگران بیغمی ٭٭٭ نشاید که نامت نهند آدمیبنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرندچو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرارتو کز محنت دیگران بیغمی ٭٭٭ نشاید که نامت نهند آدمیبنى آدم اعضای یک پیکرند٭٭٭ که در آفرینش ز یک گوهرندچو عضوى به درد آورد روزگار٭٭٭ دگر عضوها را نماند قرارتو کز محنت دیگران بیغمی ٭٭٭ نشاید که نامت نهند آدمیঅর্থাৎ সব মানুষ এক দেহের অঙ্গসম যেহেতু সবার প্রথম উপাদান একই। যখন একটি অঙ্গ ব্যথায় আক্রান্ত হয়, বাকি অঙ্গও তখন স্থির থাকতে পারে না। অন্যের দুর্যোগে যদি উদ্বিগ্ন না হও, তবে তোমার নাম মানুষ হতে পারে না। এখানে সন্দেহ নেই কবিতাটি শেখ সাদি নবি মুহাম্মাদের (স.)'র একটি হাদিসের প্রেরণা থেকে রচনা করেছেন।জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট ইরান সফরকালে বলেন—আমার মনে হয়, জাতিসংঘের সবচেয়ে’ বড় কার্পেট সেটি।সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালের মার্চ মাসে ইরানের নববর্ষ (নওরোজ) উপলক্ষে ইরানের জনগণকে ভিডিও টেপের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান শেখ সাদির সেই কাব্যাংশের উদ্ধৃতি দিয়ে। তিনি বলেন— এটা ঠিক যে, আমরা নিজেদের মধ্যে কতগুলি বিভাজনের কারণে বিভক্ত হয়ে আছি। তবে আমরা সেই শব্দগুলো মনে রাখতে পারি, যা কবি সাদি লিখে রেখেছেন বহুবছর আগে— আদম সন্তান সবাই এক দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মতো, যেহেতু সবাই একই উপাদান থেকে তৈরি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...