পোস্টগুলি

লুজেন চুক্তি ও এরদোয়ানের নিও অটোমান নীতি

ছবি
মো.আবু রায়হানঃ তুর্কি সাম্রাজ্য বা অটোমান সম্রাজ্য ছিল একটি ইসলামি সাম্রাজ্য। সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের নাম থেকে উসমানীয় বা অটোমান নামটি এসেছে। একইভাবে রাজবংশকে উসমানীয় রাজবংশ বা অটোমান রাজবংশ বলা হয়। তুর্কি ভাষায় সাম্রাজ্যকে বলা হত দেভলেতি আলিয়া উসমানিয়া বা উসমানলি দেভলেতি বলা হত। আধুনিক তুর্কি ভাষায় উসমানলি ইম্পারাতুরলুগু বা উসমানলি দেভলেতি বলা হয়। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকায় বিস্তৃত উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা আরতুগ্রুল গাজী। ১২৯৯ সালে অঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত প্রথম উসমান উত্তরপশ্চিম আনাতোলিয়ার দ্বায়িত্ব পান সেলযুক সাম্রাজ্য কর্তৃক, প্রথম দিকে রুমের সেলযুক সাম্রাজ্যের প্রতি অনুগত থাকলেও রুমের সেলজুক সাম্রাজ্যের ক্রান্তিলগ্নে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।এবং ধীরে ধীরে একটি বৃহৎ সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন।প্রথম মুরাদ কর্তৃক বলকান জয়ের মাধ্যমে উসমানীয় সাম্রাজ্য বহুমহাদেশীয় সাম্রাজ্য হয়ে উঠে এবং খিলাফতের দাবিদার হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের কনস্টান্টিনোপল জয় করার মাধ্যমে উ সমানীয়রা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য উচ্ছেদ করে। ১৫২৬

বোরকা বিতর্ক

ছবি
বোরকা হলো মহিলাদের এক ধরনের বহিরাঙ্গিক পোশাক যা সারা শরীর ঢেকে রাখে। মুসলিম অমুসলিম দেশে বোরকা নিয়ে বিতর্ক বেশ পুরনো। সুযোগ পেলেই বাংলাদেশের এক শ্রেণীর সুশীল ও প্রগতিশীলদের বোরকা, হিজাব কিংবা নেকাব নিয়ে সরব হতে দেখা যায়।প্রতারক সাহেদের বোরকা পরে পলায়নের প্রস্তুতি নিয়ে আবার বোরকাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সাহেদই কী প্রথম পুরুষ হিসেবে বোরকা পরেছে? বাংলা সিনেমায় বোরকা পরে অভিসারে নায়িকার সঙ্গে দেখা করা তো কমন দৃশ্য। তাই বলে বোরকাকে দোষারোপ করবেন? গত বছরের জানুয়ারির ঘটনা। স্ত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকলেও সেখানে কী করছেন, কার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছেন এসব সন্দেহ হওয়ায় বাইরের দোকান থেকে বোরকা কিনে ছদ্মবেশে সেখানে প্রবেশ করেন স্বামী।কিন্তু ভুল করে বসেন তিনি! বোরকা পরে পুরুষের বাথরুম থেকে নারী বের হওয়ায় সন্দেহ হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের। ব্যাস, সোজা পুলিশে খবর। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এসে আবিষ্কার করে বোরকা পরিহিত নারী নয়, পুরুষ। ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে। বেশকিছু মুসলিম দেশ পুরো ইউরোপ জুড়ে ইসলামোফোবিয়ার জের ধরে কোথাও বোরকা আবার কোথাও নেকাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স

গির্জা কী বিক্রয় হয় ? ইতিহাস কী বলে ?

ছবি
স্পেনের কর্ডোভা মসজিদ মো.আবু রায়হানঃ আয়া সোফিয়া জাদুঘর থেকে পুনুরায় মসজিদে রুপান্তর হওয়ায় খ্রিস্টান বিশ্বের চেয়ে মুসলিম নামধারীদের চিৎকার চেঁচামেচি বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে । বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুপ সমালোচনা করছে । এসবই তাদের অজ্ঞতা হীন মনমানসিকতার পরিচায়ক। অনেকেই আয়া সোফিয়া মসজিদকে বাবরি মসজিদের সঙ্গে মিশিয়ে তালগোল পাকানোর চেষ্টায় লিপ্ত । কিন্তু দুটোর ইতিহাস ও ঘটনা যে ভিন্ন তা তারা অবগত নন ।এবার মূল আলোচনায় যাবার আগে কিছু ঐতিহাসিক সত্য আলোকপাত করি । অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের উদারতা- অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের উদারতায় শান্তির ধর্ম ইসলাম সর্বাধিক সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। প্রয়োজনে অন্য ধর্মের উপাসনালয় রক্ষায় যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে কোরআনের ভাষ্য এমন, ‘আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিস্টান সংসারবিরাগীদের উপাসনাস্থল, গির্জা, ইহুদিদের উপাসনালয় ও মসজিদসমূহ, যার মধ্যে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়।’ (সুরা হজ- আয়াত ৪০)।আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আল কোরআনে আরও বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে ল

আয়া সোফিয়া জাদুঘর থেকে পুনরায় মসজিদ

ছবি
মো. আবু রায়হানঃ তুরস্কের ভেতরে এবং বাইরে বহু গোষ্ঠীর জন্য আয়া সোফিয়ার ১৫০০ বছরের ইতিহাস ব্যাপক ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক এবং রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে।১৯৩৪ সালে করা এক আইনে এই ভবনটিতে ধর্মীয় প্রার্থনা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।আয়া সোফিয়া মধ্যযুগের রোম সাম্রাজ্যের সাবেক রাজধানী কনস্টান্টিনোপলের (ইস্তাম্বুল) বর্তমান তুরস্কের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। আয়া সোফিয়া পৃথিবীতে স্থাপত্যশিল্পের এক বিস্ময়। এখানে রোম ও তুর্কি স্থাপত্যশিল্পীরা নিজ নিজ সময়ে কীর্তির স্বাক্ষর রেখে পৃথিবীকে চমকিত করেছেন। আজও প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক স্থাপত্যশিল্পের এই বিস্ময় দেখতে আসেন।দেড় হাজার বছরের পুরনো আয়া সোফিয়া এক সময় ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা, পরে তা পরিণত হয় মসজিদে,তারও পর একে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। এই স্থাপনাটি ১৯৩৪ সালে আধুনিক তুরস্কের স্থপতি ও স্বাধীন তুরস্কের প্রথম রাষ্ট্রপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক যাদুঘরে রূপান্তর করেছিলেন। জাদুঘর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থা সম্প্রতি দেশটির আদালতে এ বিষয়ে মামলা করলে রায় দেওয়ার আগে ২ জুলাই শুনানিতে আদালত পক্ষগুলোর যুক্তি শুনেন। পিটিশনে বলা হয়েছে, আয়

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও কিছু অপ্রিয় কথন

ছবি
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া প্রায় একই রকম। সাধারণত মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।মৌখিক পরীক্ষাভিত্তিক প্রচলিত শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির পদ্ধতিতে স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্ব, কম মেধাসম্পন্ন প্রার্থীর নিয়োগ এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রভাব বিস্তারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তাই, শিক্ষক নিয়োগের মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে, বিশেষ করে, এন্ট্রি লেভেলে, শুধু মৌখিক পরীক্ষা পদ্ধতি যথার্থ বিবেচিত হলে তা মানসম্মত উচ্চশিক্ষা বিস্তারে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ভূমিকা পালনে সহায়ক হবে- এ কথা জোর দিয়ে বলা যাবে না।কয়েক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছিল, তা হুবহু এ রকম-‘শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগে শুধু মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়, এতে অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষার পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রার্থীর মেধা যাচাই করা সহজ হবে এবং অনিয়মের সুযোগ হ্রাস পাবে।’আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত। সরকার বা ইউজিসি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনো নির্

রবীন্দ্রনাথের বিসিএস

ছবি
মো.আবু রায়হানঃরবীন্দ্রনাথ বিসিএস প্রিলি দিয়ে বের হল। গলদঘর্ম অবস্থা। পঞ্চম বারের মতো প্রিলি দিয়েছে। এর আগে একবারও প্রিলিতে পাস জুটেনি। এবারও পাস করার আশা ক্ষীণ। এতোসব কঠিন প্রশ্নের উত্তর করা যায়? এডিসনের বাবার নাম কি? উগান্ডার রাজধানীর নাম কি? টাইটানিক কবে ডুবেছিল? বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত কোন কাব্যের অন্তর্গত হাবিজাবি?পরীক্ষা শেষে বাইরে চোখ পড়তেই  বিদ্যাসাগরের সঙ্গে দেখা। তারও একই অবস্থা। বাবা মায়ের স্বপ্ন বিসিএস পুলিশ অথবা এডমিন ক্যাডার।কারণ জোড়াসাঁকোর অভিজাত পরিবার ঐতিহ্য রক্ষায় ক্ষমতা চাই। জজ,  ব্যারিস্টার মুক্তার ঢের আছে।রবীন্দ্রনাথের সমস্যা হলো সন তারিখ ও কারো বাপ মায়ের নাম সহজে মনে রাখতে না পারার কষ্ট।এছাড়া বিজ্ঞান মানসিক দক্ষতা নিয়ে প্রচন্ড ফোবিয়া।  এসব তথ্য যেন তার বুকে সাত আসমান সম ভারী অনুভূত হয়। আজকাল পড়তেও ইচ্ছে করে না।পড়তে গেলে ফেসবুক, ইন্টারনেট আসক্তি তো আছেই। ভাবে সেকি সেই বীরপুরুষ মোবাইল ব্যবহার না করেই যে ক্যাডার।এদিকে দাদা- বৌদির ঘ্যানর ঘ্যানর, চেঁচামেচি  যেন তার কানে বজ্রপাতের মতো ভয়ঙ্কর শোনায়।বৌদির  তো সকাল বিকেল নেই।  সারাদিনই তার একই কথা ওরে রবি তুকে কিন্তু বিস

দেশটা আল্লাহর রহমতে ভরপুর

দেশটা আল্লাহর রহমতে ভরপুর। রানা প্লাজায় রেশমাকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার এবং  লঞ্চ ডুবিতে একজনের ১৩ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধার সবই অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার।এক্ষেত্রে যারা বিজ্ঞানকে মানেন না তাদের ধর্মকে মানতে হবে আবার যারা ধর্ম মানেন না তাদের বিজ্ঞান মানতেই হবে।২০১০ সালের ঘটনা আপনারা জানেন। চিলিতে ৭০০ মিটার নীচে একটানা ৬৯ দিন ৩৩ জন খনি শ্রমিক আটকে ছিলেন। ৬৯ দিন পর তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়। ২০১৪ সালের ঘটনা ভোলার কথা নয়। খোদ রাজধানী ঢাকার শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পরিত্যক্ত পানির পাম্পের ৩০০ ফুট গভীর পাইপে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ।আমরা তাকে জীবিত  উদ্ধার করতে পারিনি। ৩০০ ফুট গভীর পাইপে শিশু জিহাদের অবস্থান জানতে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা পাঠান। তারা শেষমেশ জানিয়েছিলেন ক্যামেরা নামানোর পর একেবারে শেষ প্রান্তে তেলাপোকা, টিকিটিকি দেখা গেছে। কিন্তু শিশুটির কোনো শরীর দেখা যায়নি। শেষে  সাধারণ জনগণ জিহাদকে মৃত অবস্থায় পাইপ থেকে উদ্ধার করে আনে।  জলমানব খ্যাত রাজশাহীর নওশের আলীর একনাগাড়ে ৭২ ঘণ্টা পানির নীচে ডুবে থাকার বিরল রেকর্ড আছে।কিন্তু আমাদের কি সেই

আর্কিমিডিস নগ্ন গায়ে ছুটছিলেন-আসিফ তা করেননি

ছবি
মো.আবু রায়হানঃকরোনায় বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি, নাকাল মানুষ।হাজার হাজার লাশের সারি। কিং কর্তব্য বিমূঢ় সারা বিশ্ব। ক্ষুদ্র আদেখা করোনা ভাইরাসের কাছে মানুষ আজ অসহায়।জানা নেই প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়। বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিলেও তা ওই পর্যন্ত। এরমধ্যে তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কোম্পানি ও বিজ্ঞানীরা করোনা রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। তারা অনেকটা সফল ও অনেক দূর এগিয়েছেন। একথা জানাতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। কেন কাঁদবেন না? এ ভাইরাস কতজনের জীবন স্বপ্ন, কর্ম, প্রেম কেড়ে নিয়েছে। বিরহ বাড়িয়েছে। অনাহার, অর্ধাহারে ভীষণ কষ্ট সইছেন। এ ভ্যাকসিন তাদের ভবিষ্যতে বেঁচে থাকার স্বপ্নটুকু জিইয়ে রাখবে। আমাদের মন খুবই নরম, আমাদের আবেগ, উচ্ছ্বাস অনেক বেশি। আমরা অল্পতে অনেক খুশি।তাইতো আনন্দটাও বেশি উপভোগ করি। আসিফ মাহমুদের কান্নায় রয়েছে দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি পরম মমতা ও ভালোবাসার স্ফুরণ। বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানীর কিছু আবিষ্কারের পর উদযাপনে তাদের পরিবেশটাই ছিল আলাদা। আমাদের উদযাপন ছিল প্রেম, ভালোবাসা ও দা