দেশটা আল্লাহর রহমতে ভরপুর

দেশটা আল্লাহর রহমতে ভরপুর। রানা প্লাজায় রেশমাকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার এবং  লঞ্চ ডুবিতে একজনের ১৩ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধার সবই অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার।এক্ষেত্রে যারা বিজ্ঞানকে মানেন না তাদের ধর্মকে মানতে হবে আবার যারা ধর্ম মানেন না তাদের বিজ্ঞান মানতেই হবে।২০১০ সালের ঘটনা আপনারা জানেন। চিলিতে ৭০০ মিটার নীচে একটানা ৬৯ দিন ৩৩ জন খনি শ্রমিক আটকে ছিলেন। ৬৯ দিন পর তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়। ২০১৪ সালের ঘটনা ভোলার কথা নয়। খোদ রাজধানী ঢাকার শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পরিত্যক্ত পানির পাম্পের ৩০০ ফুট গভীর পাইপে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ।আমরা তাকে জীবিত  উদ্ধার করতে পারিনি। ৩০০ ফুট গভীর পাইপে শিশু জিহাদের অবস্থান জানতে
উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা পাঠান। তারা শেষমেশ জানিয়েছিলেন ক্যামেরা নামানোর পর একেবারে শেষ প্রান্তে তেলাপোকা, টিকিটিকি দেখা গেছে। কিন্তু শিশুটির কোনো শরীর দেখা যায়নি। শেষে  সাধারণ জনগণ জিহাদকে মৃত অবস্থায় পাইপ থেকে উদ্ধার করে আনে। 
জলমানব খ্যাত রাজশাহীর নওশের আলীর একনাগাড়ে ৭২ ঘণ্টা পানির নীচে ডুবে থাকার বিরল রেকর্ড আছে।কিন্তু আমাদের কি সেই সাধ্য আছে? ধর্মে বিশ্বাসীরা বলতে পারেন হযরত ইউনুছ (আ.) যদি মাছের পেটে কয়েক দিন জীবিত থাকতে পারেন তাহলে ১৩ ঘন্টা পর কাউকে পানি থেকে জীবিত উদ্ধার করা তো আহামরি কোনো  ব্যাপার নয়।রাখে আল্লাহ মারে কে? সুতরাং লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘন্টার পর কাউকে উদ্ধার ও রেশমার ১৭ দিন পর উদ্ধারের ঘটনা মিথ কিংবা গুজব নয়।আসলে বাঙালির রক্ত মাংসে গুজব, অবিশ্বাস শব্দদ্বয় মিশে গেছে। এর নেপথ্যে কাহিনীও আছে। ওই যে মানুষকে এখন  বিশ্বাস করা যেন পাপ। আর যেখানে আয়োজন করে গুজব, অবিশ্বাস ছড়ানো হয়। সেখানে এসব ঘটনা রটনা বলেই জনগণ বিশ্বাস করবে। 
টাইটানিক মুভির  ভক্তদের  সবচেয়ে কষ্টদায়ক দৃশ্য ছিল নায়ক জ্যাকের ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার মুহূর্তটি। এ নিয়ে নায়ক ভক্তদের মাঝে চলে ব্যাপক অংক কষাকষি। কেন মরতে হলো জ্যাককে?নায়িকা রোজ চাইলেই তো পারতো তাকে দরজার ভাঙা অংশে ঠাঁই দিতে। তাতে দুজনকে ধরেও যে যেত সেই সূত্র মিলিয়েছেন দর্শকেরা।  ২০২০ সালে টাইটানিক মুভি বয়স পার করেছে ২৩ বছর। আজকের প্রজন্মও কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি ‘টাইটানিক’-এর ট্র্যাজিক সমাপ্তি। বারবার যুক্তি দেখিয়েছেন তাঁরা— জ্যাক বেঁচেই যেতো। তাঁরা অঙ্ক কষেছেন। কারিগরি যুক্তি দিয়েছেন। সব মিলিয়ে একটাই কথা বলেছেন— জ্যাকের মৃত্যুর কোনো কারণ ছিল না।সেই হিমেল রাতে সমুদ্রের কালো জলে ভাঙা দরজার ভেলা ঠেলতে ঠেলতে ঠান্ডায় জমে যাওয়া জ্যাকের শরীর তলিয়ে গেল— এ মেনে নেওয়া যায় না। রোজ কেন জ্যাককে তুলে নেয়নি সেই ভেলায়? অনেকে অঙ্ক কষে দেখিয়েছেন, দরজার মাপ যা ছিল, তাতে জ্যাক ও রোজ দু’জনেই বেঁচে যেত— এমন তর্কও করে গিয়েছেন ‘টাইটানিক’-ভক্তরা। টাইটানিকের নায়ক রোজের মৃত্যুকে যেমন অনেকে মেনে নিতে পারেনি তেমনি লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘন্টা পর জীবিত হয়ে বেঁচে থাকাটাও কেউ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। সন্দেহ বাতিক বাঙালির এই অবিশ্বাসের শেকড় গভীরে প্রোথিত ও মজবুত ভিত্তির ওপর দন্ডায়মান। তারা মনে করেন তাদেরও বাঁচা মরার বিষয়টা টাইটানিক সিনেমার পরিচালকের মতো তাদের ভাগ্য নিয়ন্তাদের অধীন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল