সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হযরত মুসার বিরুদ্ধে নারী লেলিয়ে দেয়া কারুনের করুণ পরিণতি





মো. আবু রায়হান
হযরত মুসা (আ)'র সমসাময়িক বনী ইসরাইলীদের মধ্যে কারুন নামে ধনাঢ্য ব্যাক্তি ছিল।কারুন সম্পর্কে হযরত মুসা (আ) এর চাচাতো ভাই ছিল।ইবন ইসহাক (রহ) তাকে মুসা (আ)-এর চাচা বলে মনে করেন। কিন্তু জুরাইজ (র) তা প্রত্যাখ্যান করেন ৷কাতাদা (র) বলেছেন, সুমধুর কণ্ঠে তাওরাত পাঠের জন্যে তাকে নুর বলে আখ্যায়িত করা হতো। তার কাছে প্রচুর স্বর্ণ, রৌপ্য ও হীরা ছিল। সম্পদের নেশায় সে মানুষকে, নীচ মনে করত৷ অতঃপর তার ধন সম্পদের কারণে তার দাম্ভিকতা তাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শাহর ইবন হাওশ (র) বলেন, নিজ সম্প্রদায়ের উপর গর্ব করার উদ্দেশ্যে কারুন তার পবিধেয় কাপড়ের দৈর্ঘ এক বিঘত লম্বা করে দিয়েছিল ৷তার নিজ সম্প্রদায় বানী ইসরাইলের উপর যুলুম এই ছিল যে, সে ধন-সম্পদের আধিক্য-গর্বে তাদেরকে তুচ্ছজ্ঞান করত। আবার কেউ কেউ বলেন, সে ফেরআউনের পক্ষ থেকে বানী ইসরাইলের উপর গভর্নর নিযুক্ত ছিল এবং সে তাদের উপর অত্যাচার করত। আল্লাহ্ তাআলা কারুনের প্রচুর সম্পদের কথা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। তার চাবিগুলো শক্তিশালী লোকদের একটি দলের জন্যে কষ্টকর বোঝা হয়ে যেতে৷কেউ কেউ বলেন, এ চাবিগুলে ছিল চামড়ার তৈরি।বলা হয়ে থাকে কারুনের সম্পদ রাখার গুদামঘরের চাবিগুলো আনা-নেয়ার জন্য ৬০টি খচ্চর ছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতেম -১১/৩৪৮; হাদিস - ১৭৮৩৭)।
হযরত মুসা(আ) তাকে তার সম্পদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে , যাকাত দেবার জন্য বলতেন। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে সে যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। কারুন তার সঙ্গীদের বলল দেখ, মুসার জন্য এখন আমাদের ধন-সম্পদ রাখায় দায় হয়ে পড়েছে। সে বলে কিনা মালদাররা মালের যাকাত না দিলে আল্লাহ নারাজ হবেন। সঙ্গীদের একজন বলল- গায়ে খেটে কষ্ট করে টাকা- পয়সা রোজগার করব, আবার তার থেকে বছর বছর যাকাত দিতে হবে! মুসা যতসব ঝামেলা শুরু করেছে। কারুন বলল, সত্যি বলতে কি জান? মুসা যাকাতের নাম করে আমাদের ধনে বড়লোক হতে চায়। একথা শুনে সঙ্গীরা বলে উঠে- ঠিক ঠিক। মুসার মতলব ভাল নয়। এর একটা বিহিত করতেই হবে। সঙ্গীদের একজন বলল- আমিও তাই বলতে চেয়েছিলাম।মুসার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আল্লাহর নবী বলে তাকে আর আশকারা দেওয়া ঠিক হবে না। আমার মতে মুসাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলাই উচিৎ। অন্যজন বলল- আমার মতে, খুন-খারাবীর দরকার নেই। এসব ঝামেলা করতে গেলে বিপদও হতে পারে। তার চেয়ে জন সমাজে তাকে এমন ভাবে জব্দ করতে হবে, যাতে সে লজ্জিত হয়ে দেশ ছেড়ে চলে যায়। দ্বিতীয় সঙ্গীর কথা শুনে কারুন বলল- তোমার পরামর্শটা মন্দ নয়। এখন তুমিই এর একটা ব্যবস্থা করবে- কিভাবে মুসা কে জব্দ করা যায় এবং দেশ ছাড়া করা যায় সেই বুদ্ধি খাটাও। কারুনের অভয় পেয়ে সঙ্গীটি একটি অসৎ চরিত্রের মহিলাকে লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে এল। তাকে অনেক গহনা ও অর্থ দিয়ে বলল, "ধনকুবের কারুনের জন্য তোমাকে একটা কাজ করতে হবে। মুসা যখন সভায় ওয়াজ-নসীহত করতে উঠবে, তখন আমরা তাকে চরিত্রহীন বলে ঠাট্টা বিদ্রুপ করব। সে সময় তুমি বলবে- হ্যাঁ, একথা সত্য। ব্যস, শুধু এতটুকু বললেই কাজ সমাধা হয়ে যাবে। এর জন্য দরকার হলে তুমি আরো অর্থ পাবে। মহিলাটি চুপ করে রইল। তারঃপর অনেক বলে কয়ে রাজী করালো। এদিকে কারুন ভাবল-মহিলাটি যদি প্রকাশ্যে মুসার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে , তাহলে সেই অপরাধের জন্য সমাজ তাকে ঘৃণা বরে পরিত্যাগ করবে। আর এর জন্য ক্ষোভে মুসা এদেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। তখন আমাদের উদ্দেশ্যে সফল হবে।
একদিন ওয়াজ-নসীহতের সভা বসল। দলে দলে লোকজন এল হযরত মুসা (আ)-এর ওয়াজ- নসীহত শোনার জন্য জন্য। কারুনও তার দলবল নিয়ে এল। সভাস্থল কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেল। হযরত মুসা (আ) ওয়াজ করার জন্য মঞ্চে উঠলেন। তিনি ওয়াজ শুরু করতে যাবেন, ঠিক এমন সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিথ্যাবাদী কারুনের লোকজন বলে উঠল- হে মুসা! তুমি চরিত্রহীন। উপস্থিত জনতা কে তারা বলল- আমাদের কথা বিশ্বাস না হয়, এই মহিলাকে জিজ্ঞেস করুন। এই বলে কারুন মেয়ে মহিলাকে দাঁড় করিয়ে দিল। একথা শুনে লোকজন তাজ্জব হয়ে গেল। মুসা (আ) চরিত্রহীন, এটা কি বিশ্বাস যোগ্য কথা? এ বিষয়টি নিয়ে সভাস্থলে নানা গুঞ্জনের শুরু হয়ে গেল। সবাই মহিলাটির কথা শুনার জন্য তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে রইল। হযরত মুসা (আ) মহিলাটিকে বললেন, - "আমার বিরুদ্ধে কি নালিশ আছে- বলো! তবে যা বলবে , আল্লাহকে ভয় করে বলবে। মনে রেখ আল্লাহ সবকিছু দেখেন এবং শুনেন।" হযরত মুসা (আ)-এর কথায় মহিলাটির অন্তর কেঁপে উঠল। ফলে কারুন তাকে যে কথা শিখিয়ে দিয়েছিল, আল্লাহ পাকের ভয়ে সে তা ভুলে গেল এবং তার মুখ দিয়ে আল্লাহর কুদরতে একথা বের হল- "ভাইসব! আপনারা মন দিয়ে শুনুন, কারুন আমাকে লোভ দেখিয়ে নবী মুসা (আ)-এর বিরুদ্ধে কৎসিত কথা বলতে বলেছিল।" একথা বলে মহিলাটি কারুনের দেয়া গহনা খুলে ফেলে সভা থেকে চলে গেল। হযরত মুসা (আ) কারুনের এহেন জঘন্য ষড়যন্ত্রে ভীষণ কষ্ট পেলেন। আল্লাহ পাক তাঁকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করায় তিনি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে সিজদা করলেন , অতঃপর দু'রাকাআ'ত শুকরিয়া নামায আদায় করেন। এরপর আল্লাহর দরবারে করজোড়ে ফরিয়াদ জানালেন-"হে পরওয়ার দেগার! জালিম ধনপতি কারুন থেকে আমাদেরকে রক্ষা কর। এই পাপী দুনিয়ার ধন-সম্পদের মোহে পড়ে আপনার উপর ঈমান হারিয়েছে। আপনার হুকুম -আহকাম সে মানে না। তার খপপরে পড়ে রাজ্যের অন্যরাও বেদ্বীন ও বেঈমান হয়ে যাচ্ছে। তাই আমার একান্ত ফরিয়াদ-পাপাত্মা কারুন থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন।" দয়াময় আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবির ফরিয়াদ মঞ্জুর করে ফেরেশতা জিব্রাঈলকে হযরত মুসা (আ)-এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। জিব্রাঈল হযরত মুসা (আ)-কে বললেন, হে আল্লাহুর নবী ! আল্লাহ পাক আপনার ফরিয়াদ মঞ্জুর করেছেন। এই যমীন কারুনকে ধ্বংস করার হুকুম পালন করবে। জিব্রাঈলের মুখে আল্লাহর বাণী শুনে মুসা (আ) তাঁর কওমের লোকদের ডেকে বললেন, -"তোমরা শোন, আল্লাহ পাক ফেরাউন কে যে ভাবে ধ্বংস করেছেন। পাপী কারুনকেও সেই ভাবে ধ্বংস করবেন। সুতরাং বনী ইসরাইলের মধ্যে যারা আমার অনুসারী, তারা বেদ্বীন কারুনের দল থেকে ফিরে আসবে।"হযরত মুসা (আ)-এর অনুসারীরা তাঁর কথা মত বেদ্বীনের সংগ ত্যাগ করল। এর পর হযরত মুসা (আ)-এর আরজীতে আল্লাহ তাআলার হুকুমে যমীন কারুনের হাঁটু পর্যন্ত গ্রাস করে ফেলল। তখন কারুন ব্যাপারটিকে নিছক রসিকতা ভেবে হেসে ফেলল এবং বলল- হে মুসা! এটাতো দেখছি তোমার নতুন যাদু। এ যাদু তোমাকে কে শিখিয়েছে? হযরত মুসা (আ) তার কথার কোন জবাব দিলেন না। অতঃপর তাঁর আরজীতে আল্লাহুর হুকুমে যমীন এবার কারুনের জানু থেকে কোমর পর্যন্ত গ্রাস করল। কারন তখন নিজের বিপদ বুঝতে পারল। ব্যাপারটা খেলা নয় ভেবে, সে সুর পাল্টে বলল-মুসা! তুমি কি ঠাট্টা বুঝ না।তোমার যাদুর খেলা বন্ধ কর। এখন থেকে আমি তোমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবো। হযরত মুসা (আ) এবারও তার কথার কোন জবাব দিলেন না। আল্লাহর হুকুমে পাপের প্রায়শ্চিত তাকে অবশ্যই ভোগ করতে হবে। অতঃপর হযরত মুসা (আ)-এর আরজীতে আল্লাহর হুকুমে জমিন কারুনের বুক পর্যন্ত গ্রাস করল। নাদান কারুন এত দিনে তার ভুল বুঝতে পারল। সে বুঝল মুসা সত্যি, আল্লাহর নবী। তাঁর নসীহত না শুনে সত্যি সে অনেক বড় ভুল করেছে। মরণ যন্ত্রনায় সে চিৎকার করে উঠল। কাঁদতে কাঁদতে কারুন বলতে লাগল, ভাই মুসা! আমার অপরাধ ক্ষমা করো। আমি না বুঝে তোমার উপর যুলুম করেছি। আমার ধন-দৌলত সব তুমি নাও। শুধু আমাকে প্রাণে বাঁচাও। কিন্তু কাঁদলে কি হবে, সময় ফুরিয়ে আল্লাহর হুকুম যখন এসে যায়, তখন আর কোন সুযোগ থাকে না।।আল্লাহ বলেন, অতঃপর আমি কারুন ও তার প্রাসাদকে মাটিতে দাবিয়ে দিলাম। তখন তার জন্য এমন কোনো দল ছিল না, যে আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে সক্ষম ছিল না।' (সূরা কাসাস আয়াত-৮১)।কাতাদা (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন কারুন ও তার সম্প্রদায় কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিদিন একটি মানব দেহের পরিমাণ তলিয়ে যেতে থাকবে৷ আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, সপ্ত জমিন পর্যন্ত ভুমি তাদেরকে ভুগর্ভস্থ করেছিল ৷

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...