পোস্টগুলি

আসহাবে আইকাহ বা মাদইয়ানবাসীর ওপর আল্লাহর গজব

ছবি
মাদইয়ান আসলে একটি শহরের নাম। বলা হয়ে থাকে, এই শহরের গোড়াপত্তন করেছিলেন মাদিয়ান ইবনে ইব্রাহিম (আ.)।।মাদয়ান’ ইবরাহীম (আঃ)-এর পুত্র অথবা পৌত্রের নাম ছিল। অতঃপর তাদের থেকেই গঠিত এই গোত্রের নাম ‘মাদয়ান’ এবং যে গ্রামে তারা বসবাস করত তারও নাম হয়ে যায় ‘মাদয়ান’। উক্ত শহরের অধিবাসীগণকে মাদইয়ানবাসী বলার পরিবর্তে শুধু “মাদইয়ান” বলা হত।এইভাবে গোত্র ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই এটা মাদয়ান ব্যবহার হয়। এ গ্রামটা হিজাযের পথে ‘মাআন’এর সন্নিকটে অবস্থিত। এই জাতি বা শহর লূত (আঃ)-এর বসতির নিকটেই বসবাস করত। ইহুদি ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে একাধিক স্থানে মাদায়েনবাসীর কথা এসেছে। তাদের ধর্ম মতে, মাদায়েনবাসী বর্তমান দক্ষিণ ইসরায়েলের মরুভূমি অঞ্চল নেগেভে বসবাস করত। ‘মাদায়েন’ ছিলেন ইবরাহিম (আ.)-এর ছেলে। আল্লাহর নবী ইউসুফ (আ.)-কে তার ভাইয়েরা মাদায়েনের কুমে বিক্রি করেছিল। কোন কোন মুফাসসির বলেন, তারা গাছপালার পুজা করত। এজন্যই মাদইয়ানবাসীকে আসহাবে-আইকাহ বা জঙ্গলওয়ালা উপাধি দেয়া হয়েছে। আর কোন কোন মুফাসসিরের মতে তাদের বাসস্থানে গাছপালার অবিচ্ছিন্ন ছায়া বিরাজ করছিল বলে তাদেরকে “আসহাবে-আইকা বলা হয়েছে। ঐতিহাসিকদের ধারণা, আই

দাজ্জালের ফেতনা এবং তা থেকে বেঁচে থাকার দোয়া

ছবি
দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের সময় ঘনিয়ে আসার একটি আলামত হলো, দাজ্জালের ফিতনা এতো ভয়ানক এবং গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মানুষেরা তার আলোচনা পরিহার করবে এবং এই ফিতনার ব্যাপারে বেখবর হয়ে যাবে। বর্ণিত হয়েছে,“দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে না, যতক্ষণ না মানুষ তার আলোচনা বিস্মৃত হয়ে যাবে এবং ইমামগণ মিম্বারে তার আলোচনা পরিহার করবে।মহানবী (সা.) বলেন, ১০টি নিদর্শন যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা দেখতে পাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত হবে না। তা হলো—১. ধোঁয়া, ২. দাজ্জাল, ২. দাব্বাহ (জমিন থেকে একটি জন্তুর বের হওয়া), ৪. পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, (কিয়ামতের ১০০ বছর আগে মাত্র এক দিনের জন্য পশ্চিম দিক দিয়ে সূর্য উদিত হবে), ৫. হজরত ঈসা (আ.)-এর আগমন, ৬. ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন, ৭. পূর্ব দিকের তিনটি ভূমিকম্প, ৮. পশ্চিম দিকে ভূমিকম্প, ৯. আরব উপদ্বীপের ভূমিকম্প, ১০. ইয়েমেন থেকে উত্থিত আগুন, যা মানুষকে তাড়িয়ে সমাবেশের স্থানে নিয়ে যাবে। (সহিহ বুখারি)।কেয়ামতের বড় আলামতসমূহের মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব । কেয়ামতের আগে মানুষকে গোমরাহ করার জন্য পূর্ব দিক থেকে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। মক্কা-মদিনা ছাড়া সে সর্বত্র বিচরণ করবে। দাজ্জালের মাধ্যমে মানুষ

হযরত উযাইরকে মৃত্যু দিয়ে পুনরায় জীবন দান

ছবি
ইরাকে অবস্থিত রওজা   হযরত দাউদ ও ইয়াহইয়া (আ.) এর মধ্যবর্তী সময়ে আগমনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে উযাইর (আ.) ছিলেন অন্যতম। তিনি বাইবেলে ইজরা (Ezra) নামে খ্যাত। উযাইর (আঃ) কি নবী ছিলেন নাকি নবী ছিলেন না তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেকে বলেন, তিনি বনী ইসরাঈলের নবীগণের মধ্যে অন্যতম একজন নবী ছিলেন। অনেকে আবার বলেন, তিনি নবী ছিলেন না বরং একজন জ্ঞানী ও পুণ্যবান লোক ছিলেন। যদিও প্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে- তিনি নবী। ইবনে কাছীর ‘বিদায়া নিহায়া’ গ্রন্থে (২/২৮৯) এটাই ব্যক্ত করেছেন। আবু দাউদ গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“আমি জানি না- তুব্বা কি লানতপ্রাপ্ত; নাকি নয়। আমি জানি না- উযাইর কি নবী; না কি নবী নয়।” (আলবানি হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন) শাইখ আব্বাদ বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা বলেছেন তাদের (তুব্বা সম্প্রদায়) অবস্থা জানার আগে। যেহেতু এ মর্মে রেওয়ায়েত এসেছে যে, তুব্বা সম্প্রদায় ইসলাম গ্রহণ করেছে। সুতরাং তারা লানতপ্রাপ্ত নয়। পক্ষান্তরে, উযাইর নবী কিনা এ ব্যাপারে কোন রেওয়ায়েত আসেনি।(শরহে আবু দাউদ -২৬/৪৬৮) থেকে

সম্পদ পাগল কারুন ও তার করুণ পরিণতি

ছবি
ফেরআউন মিসরে বসবাসকারী কিবতিদের বাদশাহ ছিল। বড় অত্যাচারী ও যালেম এবং সর্বোচ্চ রব হওয়ার দাবীদার ছিল। সে মূসা (আ)-এর সম্প্রদায় বনি-ইসরায়েলকে দাস বানিয়ে রেখেছিল এবং তাদের উপর নানানভাবে নির্মম নির্যাতন চালাত। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এর বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। কারূন ছিল তার সভাসদ ও তার যুগের বিরাট বিত্তশালী ব্যক্তি ।  ফেরআউন, হামান ও কারূন  পূর্বের লোকদের মত মূসা (আ)-কে মিথ্যাজ্ঞান করল এবং তাঁকে যাদুকর ও মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করল।আল্লাহ বলেন , আমি আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণ সহ মূসাকে প্রেরণ করেছিলাম। ফিরআউন, হামান ও কারূনের নিকট। কিন্তু ওরা বলেছিল, ‘এ তো এক ভন্ড যাদুকর।’ (সুরা গাফির আয়াত ২৩- ২৪) অন্যত্র বলা হয়েছে, এমনিভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোন রসূল আগমন করেছে, তখনই তারা বলেছে, যাদুকর, না হয় উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এই উপদেশই দিয়ে গেছে? বস্তুত ওরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। (সূরা যারিয়াত আয়াত- ৫২-৫৩)। কারুন ছিল মুসা (আ) এর চাচাতেো ভাই ৷অনুরুপভাবে ইবরাহীম নাখয়ী আবদুল্লাহ ইবন হাবিস ইবন নওফল (র) সিমাক ইবন হরব (র) কাতাদা (র) মালিক ইবন দীনার (র) ও ইবন জুরাইজ (র)  বলেছ

হযরত আসিয়ার ওপর ফেরাউনের নির্মম নির্যাতন

ছবি
হযরত আসিয়ার জন্ম হয়েছিল মিসরের অধিবাসী মুজাহিমের ঘরে। ঈসা (আ.) এর জন্মের ১৩৬৩ বছর পূর্বে।আসিয়া আরবী যার অর্থ দুঃখী। পুরো নাম আসিয়া বিনতে মুযাহিম। তিনি আব্বাস শহরে বনী ইসরাইল বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বনী ইসরাইল বংশের একজন সম্ভ্রান্ত, ধনী, বিদ্বান ও সর্বোপরি একজন অতিশয় ধর্মপরায়ণ মানুষ। তিনি ছিলেন ইয়াকুব (আ.) এর পুত্র লেবিয়ার বংশধর।ইবনে আব্বাসের বর্ণনা মতে তিনি মুসা আ এর ফুফু ছিলেন।হযরত আসিয়া প্রাচীন মিশরের বাদশা  ফেরাউনের (দ্বিতীয় রামেসিস) স্ত্রী ছিলেন।মুজাহিম তার প্রিয় কন্যা আসিয়াকে ফেরাউন দ্বিতীয় রামেসিসের সঙ্গে বিয়ে দেন। আসিয়ার নাম কুরআনে নাই তবে ফেরাউনের  স্ত্রী হিসেবে দুবার উল্লেখ রয়েছে।ফেরাউন ছিল অত্যন্ত প্রতাপশালী। হযরত আসিয়া অনেক দয়ালু ও সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করে ন্যায়ের পথে অবিচল ছিলেন। দুনিয়ার আরাম-আয়েসকে পদাঘাত করে আল্লাহর ভালোবাসাকে প্রধান্য দিয়েছেন। হযরত আসিয়ার মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, 'দুনিয়ার সব নারীর ওপর চারজন নারীর মর্যাদা রয়েছে। তারা হলেন হজরত মরিয়ম (আ.), হ

ইসলামের ঘোর বিরোধী আবু লাহাবের পরিণতি

ছবি
আবু লাহাব ছিল কুরায়েশ নেতা আব্দুল মুত্তালিবের দশজন পুত্রের অন্যতম। আবু লাহাব মক্কায় ৫৬৩ খ্রিস্টাব্দে  লুবনা বিনতে হাজর এর ঘরে জন্মগ্রহণ করে।আসল নাম ছিল আব্দুল  ওযযাই ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম। ওযযা অর্থ দেবীর গোলাম। গৌরবর্ণের কারণে তার ডাক নাম হয়ে যায় আবু লাহাব। কারণ, লাহাব বলা হয় আগুণের লেলিহান শিখাকে।তার আসল নাম কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি। কেননা তা ছিল তাওহীদের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। আল্লাহ তার আবু লাহাব উপনামটি কুরআনে উল্লেখ করেছেন। কেননা এর মধ্যে তার চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবার দুঃসংবাদটাও লুকিয়ে রয়েছে। কারণ, জাহান্নামের অগ্নির লেলিহান শিখা তাকে পাকড়াও করবে। সে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কট্টর শত্রু ও ইসলামের ঘোর বিরোধী ছিল।সে আপন ভাতিজা মুহাম্মাদ (সা.)কে সরাসরি অত্যাচার করতে থাকে। দিনের পর দিন নানাভাবে মহানবী (সা.)কে আবু লাহাব ও তার স্ত্রী জ্বালা-যন্ত্রণা দিয়ে অতিষ্ঠ করে যাচ্ছিল। তাদের ঐ জুলুম সীমাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায়। পরিশেষে সূরা লাহাব নাযিল করে আল্লাহ তায়ালা তাদের পুরস্কার ঘোষণা করেন। মুহাম্মদ(সা) জন্মের পর থেকেই চাচা আবু লাহাবের প্রিয়পাত্র ছিলেন।কিন্তু নবুয়াত প্র

আবু লাহাবের স্ত্রীর গীবত, তোহমত,চোগলখুরী ও পরিণতি

ছবি
আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম ছিল আরওয়া বিনতে হারব ইবনে উমাইয়া। ট্যারাচক্ষু হওয়ার কারণে তাকে আরওয়া বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইবনুল ‘আরাবী তাকে ট্যারাচক্ষু সকল নষ্টের মূল বলেন (কুরতুবী)।সে ছিল আবু সুফিয়ানের বোন ও হরব ইবনে উমাইয়্যার কন্যা। তাকে উম্মে জামীল বলা হত। আবু লাহাবের ন্যায় তার স্ত্রীও রাসূলুল্লাহ(সা.) এর প্রতি বিদ্বেষী ছিল।কুরায়েশদের নেতৃস্থানীয় মহিলাদের অন্যতম এই মহিলা রাসূলুল্লাহ(সা.)-এর বিরুদ্ধে সকল প্রকার চক্রান্তে ও দুষ্কর্মে তার স্বামীর পূর্ণ সহযোগী ছিল (ইবনু কাছীর)। সর্বদা রাসূলুল্লাহ(সা.)-এর বিরুদ্ধে গীবত, তোহমত ও চোগলখুরীতে লিপ্ত থাকতো। কবি হওয়ার সুবাদে ব্যঙ্গ কবিতার মাধ্যমে তার নোংরা প্রচারণা অন্যদের চাইতে বেশী ছিল। চোগলখুরীর মাধ্যমে সংসারে ভাঙ্গন ধরানো ও সমাজে অশান্তির আগুন জ্বালানো দু’মুখো ব্যক্তিকে আরবরা ‘  হাম্মালাতাল হাতাব  বা   ইন্ধন বহনকারী বা খড়িবাহক বলত। সে হিসাবে এই মহিলাকে কুরআনে উক্ত নামেই আখ্যায়িত করা হয়েছে। নিকটতম প্রতিবেশী হওয়ার সুযোগে উক্ত মহিলা রাসূল (সা.)-এর যাতায়াতের পথে এবং ঘরের দরজার সামনে কাঁটাগাছের ডাল পালা ছড়িয়ে রেখে দিতো। এটা ছিল তার প্রতিদিন

লাত উযযা ও মানাত এদের পরিণতি

ছবি
তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে।(সুরা নাজম আয়াত-১৯-২০)। এ কথা মুশরিকদেরকে তিরস্কার করে বলা হচ্ছে যে, এই হল আল্লাহর মহিমা যা উল্লেখ হয়েছে। তিনি হলেন জিবরীল (আ)-এর মত মহান ফিরিশতার স্রষ্টা। মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষটি হল তাঁর রসূল। তাঁকে তিনি আসমানে ডেকে নিয়ে স্বীয় বড় বড় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন। তাঁর উপর অহীও অবতীর্ণ করেন। বল তো, তোমরা যেসব উপাস্যের উপাসনা কর, তাদের মধ্যেও কি এই বা এই ধরনের গুণাবলী আছে? অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের যে শিক্ষা দিচ্ছেন তোমরা তো তাকে গোমরাহী ও কুপথগামিতা বলে আখ্যায়িত করছে। অথচ এ জ্ঞান তাকে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে। আর আল্লাহ তা’আলা তাকে চাক্ষষভাবে এমন সব সত্য ও বাস্তবতা দেখিয়েছেন যার সাক্ষ্য তিনি তোমাদের সামনে পেশ করছেন। এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে মুশরিক আরবদের তিনজন দেবীর কথা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে যাদেরকে মক্কা, তায়েফ, মদীনা এবং হিজাজের আশে পাশের লোক জন বেশী বেশী পূজা করত। তফসীরে কুরতুবীর বরাতে তফসীরে মাআরেফুল কোরআনে বলা হয়েছে,