সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সম্পদ পাগল কারুন ও তার করুণ পরিণতি


ফেরআউন মিসরে বসবাসকারী কিবতিদের বাদশাহ ছিল। বড় অত্যাচারী ও যালেম এবং সর্বোচ্চ রব হওয়ার দাবীদার ছিল। সে মূসা (আ)-এর সম্প্রদায় বনি-ইসরায়েলকে দাস বানিয়ে রেখেছিল এবং তাদের উপর নানানভাবে নির্মম নির্যাতন চালাত। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এর বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। কারূন ছিল তার সভাসদ ও তার যুগের বিরাট বিত্তশালী ব্যক্তি । ফেরআউন, হামান ও কারূন পূর্বের লোকদের মত মূসা (আ)-কে মিথ্যাজ্ঞান করল এবং তাঁকে যাদুকর ও মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করল।আল্লাহ বলেন,আমি আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণ সহ মূসাকে প্রেরণ করেছিলাম।ফিরআউন, হামান ও কারূনের নিকট। কিন্তু ওরা বলেছিল, ‘এ তো এক ভন্ড যাদুকর।’(সুরা গাফির আয়াত ২৩- ২৪) অন্যত্র বলা হয়েছে, এমনিভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোন রসূল আগমন করেছে, তখনই তারা বলেছে, যাদুকর, না হয় উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এই উপদেশই দিয়ে গেছে? বস্তুত ওরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। (সূরা যারিয়াত আয়াত- ৫২-৫৩)।
কারুন ছিল মুসা (আ) এর চাচাতেো ভাই ৷অনুরুপভাবে ইবরাহীম নাখয়ী আবদুল্লাহ ইবন হাবিস ইবন নওফল (র) সিমাক ইবন হরব (র) কাতাদা (র) মালিক ইবন দীনার (র) ও ইবন জুরাইজ (র) বলেছেন। তবে তারা মুসা (আ) ও কারুনের বংশপরম্পর নিম্নরুপ বর্ণনা করেন ৷কারুন ইবন ইয়াসহড়ার ইবন কাহিস, মুসা (আ) ইবন ইমরান ইবন হাফি৷ইবন জুরইিজ ও অধিকাৎশ উলামায়ে কিরামের মতে কারুন ছিল মুসা (আ) এর চাচাতে৷ ভাই ৷ ইবন ইসহাক (র) তাকে মুসা (আ)-এর চাচা বলে মনে করেন। কিন্তু জুরাইজ (র) তা প্রত্যাখ্যান করেন ৷কাতাদা (র) বলেছেন, সুমধুর কণ্ঠে তাওরাত পাঠের জন্যে তাকে নুর বলে আখ্যায়িত করা হতো ৷ কিন্তু আল্লাহর শত্রু মুনাফিক হয়ে গিয়েছিল, যেমনি সামিরী হয়েছিল ৷অতঃপর তার ধন দৌলতের কারণে তার দাম্ভিকতা ৷তাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।শাহর ইবন হাওশ(র) বলেন, নিজ সম্প্রদায়ের উপর গর্ব করার উদ্দেশ্যে কারুন তার পবিধেয় কাপড়ের দৈর্ঘ এক বিঘত লম্বা করে দিয়েছিল ৷তার নিজ সম্প্রদায় বানী ইস্রাঈলের উপর যুলুম এই ছিল যে, সে ধন-সম্পদের আধিক্য-গর্বে তাদেরকে তুচ্ছজ্ঞান করত। আবার কেউ কেউ বলেন, সে ফেরআউনের পক্ষ থেকে বানী ইস্রাঈলের উপর গভর্নর নিযুক্ত ছিল এবং সে তাদের উপর অত্যাচার করত।আল্লাহ বলেন,কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের প্রতি যুলুম করেছিল। আমি তাকে ধনভান্ডার দান করেছিলাম, যার চাবিগুলি বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ কর, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, ‘দম্ভ করো না,আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না।(সুরা আল কাসাস আয়াত-৭৬)। আল্লাহ্ তাআলা কারুনের প্রচুর সম্পদের কথা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। তার চাবিগুলো শক্তিশালী লোকদের একটি দলের জন্যে কষ্টকর বোঝা হয়ে যেতে৷কেউ কেউবলেন, এ চাবিগুলে ছিল চামড়ার তৈরি।বর্ণিত আছে, কারুনের সম্পদ রাখার গুদামঘরের চাবিগুলো আনা-নেয়ার জন্য ৬০টি খচ্চর ছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতেম -১১/৩৪৮; হাদিস - ১৭৮৩৭)।
এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা আলাই সমধিক জ্ঞাত। মুসা (আ.) এর মোমিন কওম কারুনকে চারটি নসিহত করেছিল।
এক. আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'স্মরণ করো, যখন তার কওম তাকে বলল, দম্ভ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদের ভালোবাসেন না'। (সুরা কাসাস আয়াত- ৭৬)।
দুই. 'আর আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তাতে তুমি আখেরাতের নিবাস অনুসন্ধান করো। তবে তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেও না।' (সুরা কাসাস আয়াত- ৭৭)।
তিন. 'হে কারুন শোনো! তোমার প্রতি আল্লাহ যেরূপ অনুগ্রহ করেছেন, তুমিও মানুষের প্রতি সেরূপ অনুগ্রহ করো।' (সুরা কাসাস আয়াত- ৭৭)।
চার. 'আর জমিনে ফ্যাসাদ করতে চেও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ফ্যাসাদকারীদের ভালোবাসেন না।' (সুরা কাসাস আয়াত-৭৭)।
কিন্তু কারুন কী জবাব দিয়েছিল তাদের? আল্লাহ তায়ালা হুবহু কারুনের জবাব উল্লেখ করে দিয়েছেন। সে বলেছিল, 'আমি তো এই ধনভাণ্ডারপ্রাপ্ত হয়েছি আমার কাছে থাকা জ্ঞান দ্বারা।' (সুরা কাসাস আয়াত-৭৮)।কারুনের এই ধন সম্পদ বেশী দিন স্থায়ী ছিলনা; বরং অহংকারের কারণে আল্লাহ সব সম্পদ ধ্বংস করেছিলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'সে কি জানত না যে, আল্লাহ তার আগে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। যারা ছিল তার থেকে শক্তিমত্তায় প্রবলতর এবং জনসংখ্যায় অধিক। আর অপরাধীদের তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।' (সুরা কাসাস আয়াত-৭৮)। তার সম্পদ ধংসের অনেক কারণ ও কাহিনী তাফসিরকারকগণ উল্লেখ করেছেন । অভিশপ্ত কারুন এক নারীকে বহু সম্পদ দিয়ে এই কাজে উত্তেজিত করে যে, যখন মুসা (আ) বনী ঈসরাইলের জামাতে দাড়িয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করতে শুরু করবেন ঠিক ঐ সময়ে যেন সে জনসম্মুখে বলে , হে মুসা; তুমি আমার সাথে এরুপ এরুপ করেছ । কারুনের এই কথা মত ঐ মহিলা তাই করল। অর্থাৎ কারুনের সেখান কথা বলল । তার এ কথা শ্রবণে মুসা (আঃ) কেপে উঠলেন এবং তৎক্ষনাত দু রাকআত সালাত আদায় করে ঐ স্ত্রী লোকটির দিকে মুখ করে বললেন, আমি তোমাকে ঐ আল্লাহর কসম দিচ্ছি , যিনি সমুদ্রের মাঝে রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছিলেন, তোমার কউমকে ফিরাউনের অত্যাচার থেকে রক্ষা করে ছিলেন এবং বহু অনুগ্রহ করেছেন। সত্য ঘটনা খুলে বল । স্ত্রী লোকটি তখন বলল, হে মুসা (আ); আপনি যখন আল্লাহর কসমই দিলেন তখন আমি সত্য কথা বলছি । কারুন আমাকে বহু টাকা পয়সা দিয়েছে এই শর্তে যে , আমি যেন বলি আপনি আমার সাথে এরুপ এরুপ করেছেন । আমিও আপনাকে তাই বলেছি । এজন্য আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার কাছে তাওবা করছি । তার বক্তব্য শুনে মুসা (আ) পুনরায় সেজদায় পড়ে যান এবং কারুনের শাস্তি প্রার্থনা করেন । তখন আল্লাহর নিকট হতে তার কাছে ওহী আসে ,‘আমি যমিনকে তোমার বাধ্য করে দিলাম। হযরত মুসা (আ) তখন যমিন কে বলল ,তুমি কারুন ও তার প্রাসাদকে গিলে ফেল। জমিন তাই করল ।তারা অহংকারের পথ পরিহার করল না। অর্থাৎ, ঈমান ও তাকওয়ার রাস্তা হতে মুখ ফিরিয়ে রইল। অর্থাৎ, আমার পাকড়াও হতে বাঁচতে সক্ষম হয়নি; বরং তারা আমার আযাবে পতিত হয়েছে। এর অন্য এক অনুবাদ হল, তাঁরা কুফরীতে অগ্রগামী ছিল না; বরং এর পূর্বে অনেক এমন জাতি পৃথিবীতে এসেছিল যারা অনুরূপ কুফরীর রাস্তা অবলম্বন করেছিল।এবং আমি ধ্বংস করেছিলাম কারূন, ফিরআউন ও হামানকে; মূসা ওদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন সহ এসেছিল;তখন তারা দেশে অহংকার প্রদর্শন করল; কিন্তু ওরা আমার শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারেনি। (আনকাবুত ৩৯)।

একদা কারুনের সওয়ারী অতি যাকজমকের সাথে চলতে শুরু করে। সে অতি মুল্যবান পোশাক পরিহিত হয়ে অতি মুল্যবান সাদা খচ্চরের উপর আরোহন করে চলছিল । তার সাথে তার গোলাম গুলিও ছিল যারা ,সবাই রেশমি কাপড় পরিহিত ছিল। তখন মুসা ( আ ) বনি ঈসরাইলের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন । যখন কারুন দলবল সহ সমাবেশের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিল , তখন মুসা (আ) তাকে জিজ্ঞেস করেন ‘ হে কারুন আজ এত শান–শওকতের সাথে পথ চলার কারণ কি ? সে উত্তরে বলল , ব্যাপার এই যে , আল্লাহ আমাকে একটি একটি ফযিলত দান করেছেন । যদি তিনি তোমাকে নবুওয়াত দান করে থাকেন , তবে তিনি আমাকে দান করেছেন ধন দৌলত ও মান মর্যাদা । যদি আমার মর্যাদা সম্পর্কে তুমি সন্দেহ পোষণ কর ,তবে আমি প্রস্তুত আছি চল আমরা দুজন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি । দেখা যাক আল্লাহ কার প্রার্থনা কবুল করেন ? হযরত মুসা (আঃ) কারুনের এই প্রস্তাবে সম্মত হয়ে যান । অতঃপর তিনি কারুণকে বললেন ,’ হে কারুন আমি প্রথমে না তুমি প্রথমে প্রার্থনা করবে ?’ সে বলল আমি প্রথমে ।এরপর সে দোয়া করল কিন্তু দোয়া কবুল হলনা । হযরত মুসা (আঃ) তখন তাকে বললেন তাহলে আমি এখন দোয়া করি । মুসা (আঃ) আল্লাহর নিকট দোয়া করেন ,’ হে আল্লাহ , আপনি যমিন কে নির্দেশ দিন যে , আমি তাকে যে নির্দেশ দিব সে যেন তাই পালন করে । আল্লাহ দয়া কবুল করলেন এবং তার নিকট ওহী অবতীর্ণ করেন । ‘ হে মুসা ; যমিনকে আমি তোমার হুকুম পালনের নির্দেশ দিলাম । হযরত মুসা (আঃ) তখন জমিনকে বললেন , হে যমিন তুমি কারুন ও তার লোকদের ধরে ফেল । তার একথা বলা মাত্রই তাদের পাগুলি যমিনে প্রথিত হয়ে গেল । তারপর তিনি বললেন, আরও ধর । তারপর তাদের হাটু পর্যন্ত প্রোথিত হয় । তারপর তিনি যমিনকে বলেন ,তার মাল ও কোষাগার ও পুতে ফেল। তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত ধন সম্পদ এসে গেল । কারুন সবই সচক্ষে দেখে নিল । অতঃপর তিনি জমিনকে ইঙ্গিত করলেন , এগুলি সহ তাদেরকে তোমার ভিতর গিলে নাও। সাথে সাথে কারুন তার দল, প্রাসাদ ধন সম্পদ সহ জমিনে প্রোথিত হয়ে গেল ।এভাবে তার ধ্বংস সাধিত হল । যমিন যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেল । ( ইবনে কাসীর )।আল্লাহ বলেন, অতঃপর আমি কারুন ও তার প্রাসাদকে মাটিতে দাবিয়ে দিলাম। তখন তার জন্য এমন কোনো দল ছিল না, যে আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে সক্ষম ছিল না।' (সূরা কাসাস আয়াত-৮১)।কাতাদা (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন কারুন ও তার সম্প্রদায় কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিদিন একটি মানব দেহের পরিমাণ তলিয়ে যেতে থাকবে৷আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত ৷তিনি বলেন, সপ্ত যমীন পর্যন্ত ভুমি তাদেরকে ভুগর্ভস্থ করেছিল ৷ ওই চারটি নসিহত আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করে দিয়েছেন, যেন আমরা সতর্ক হতে পারি, নসিহত গ্রহণ করতে পারি।

গ্রন্থনায়-মো. আবু রায়হান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...