পোস্টগুলি

ইসলামের দৃষ্টিতে শিক্ষকের মর্যাদা

শিক্ষক সমাজ হলেন জাতির সুনাগরিক তৈরির করার সুমহান কারিগর ও সেবক। শিক্ষকদের শিক্ষা ও শ্রমের ফলেই সমগ্র বিশ্ব উদ্ভাসিত হয়েছে সভ্য সমাজ ও শিক্ষিত জাতি। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড আমরা জানি সেই মেরুদন্ডী সমাজ বিনির্মাণের কারিগর শিক্ষকরা।এপিজে আবুল কালামের কথা -"যদি একটা দেশকে সম্পূণর্রূপে দুর্নীতিমুক্ত ও একটা জাতিকে সুন্দর মনের অধিকারী করতে হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, তিনজন ব্যক্তি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন- বাবা, মা ও শিক্ষক।" বাবা মা জন্ম দিয়ে শিক্ষকের কাছে দেন। শিক্ষক তাকে সুশিক্ষা দিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। ইসলাম দিয়েছে শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা যা আমরা কুরআন হাদিস ও বিভিন্ন ঘটনাবলী দ্বারা জানতে পারি। সাহাবা ও তৎপরবর্তীতে আমরা শিক্ষকদের মর্যাদা দেখতে পাই। উমর (রা.) ও উসমান (রা.) তাদের শাসনামলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তারা শিক্ষক ও ধর্মপ্রচারকদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন। আবদুর রহমান ইবনুল জাওজি (রহ.) তার বিখ্যাত ‘সিরাতুল উমরাইন’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) হজরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (রা.)-এর যুগে মুয়াজ্জিন, ইমাম

সুখ কি?

সুখ কি এর সংজ্ঞা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রকমের। চাহিদা ও অর্জনের ওপর নির্ভর করে। কাউকে যদি এভাবে বলা হয় যে,  তুমি জীবনে কখনো সুখী হতে পারবে না এতে তার  সামান্যতম সুখের ঘাটতি পড়বে না। শকুনের দোয়ায় কি গরু মরে? হাত তুলে এবং  সিজদায় পড়ে দোয়া করে কাউকে সুখী করানো যায়না আবার কারো সুখ কেড়েও নেওয়া যায়না। সুখের প্রকারভেদ আছে কেউ বলে, কেউ  দেখে আবার কেউবা ভোগে চরম সুখ অনুভব করে। তবে ভোগে নয় ত্যাগেই চরম সুখ।  সুখ একান্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত বিষয়। কারো বলাতে সুখের স্বাদ টক মিষটি ঝাল হয় না। কারণ কেউ অল্পে সুখ পায় কেউবা বেশিতে সুখ অনুভব করে। বিত্তশালী হলেই কাউকে সুখী মনে করার কারণ নেই। এটি আপেক্ষিক বিষয়। সুখটা বাহিিহ্যক রূপ নয় এটি ভেতরে বিষয়। বাইর থেকে সুখ অনুমান করা যায় না। গুলশান বনানী বারিধারায় আলিশান বাড়ি গাড়ি সুন্দর নারী থাকলেই যে,  সে সুখের সাগর হাবুডুবু খাচ্ছে এমনটা ভাবার উপায় নেই। এদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা আর নানান ভাবনায় দিন কাটে। আপনি বলতে পারেন আঙ্গুর ফল টক। তা বটে মন্দ বলেন নি। আবার খোলা আকাশের নিচে গাছের তলায়  মানবেতর জীবন যাপন কারী কাঙাল বৃদ্ধা আবাল বনিতা তারা কিন্তু দুবেলা লবণ ম

আমার আগের লেখা একটি কবিতা

আমার জীবন তরী বাইয়া হইলাম দিশেহারা, কূল নাইরে ঘাট নাইরে,আজি দেখি সন্ধ্যা তারা। কই রাখিব সাধের তরী, কই করিব দেরী, ধুকে ধুকে বাইয়া চলে আমার জীবন তরী। আসিবে কখন ডাক যে আমার সদা তারে স্মরি, জীবন হইল আঁধার রাতি দেহিনা চোখে হরি।

তারুণ্যের বিসিএস উন্মাদনা এবং আগামীর বাংলাদেশ

ছবি
মো আবু রায়হানঃবাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে সরকারি চাকরি। সরকারির চাকরির মধ্যে এক নম্বরে পছন্দের বিসিএস ক্যাডার হওয়া।আর এ ক্যাডার হওয়ার জন্য চলে রীতিমতো পড়াশোনার যুদ্ধ। টেবিল চেয়ারে বসে নির্বিঘ্নে চার পাঁচ বছর  কেটে দিতেও  রাজি। তবু হতে হবে বিসিএস ক্যাডার। এ যেন  মনের মধ্যে প্রচন্ড এক জেদ সামনে এগিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যেয়। এ তরুণ তরুণীরা সরকারি চাকরির শুধু উপরের মোড়ক দেখেই এত ক্রজি। এর ভেতরের রয়েছে অসংখ্য তরুণের স্বপ্ন ভাঙার আর্তনাদ। সেকি সেই আর্তনাদ শুনতে পায়? দেখতে পায় কি অসংখ্য তরুণেরর স্বপ্ন ভঙ্গের নীরব কান্না ।তরুণরা কি জানে স্বাধীনতার পর কত জন এ পর্যন্ত বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। এ সংখ্যা খুবই নগণ্য। তরুণরা তো দেখছে প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষিত বেকার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে মাত্রা কয়েক পারসেন্ট শিক্ষিত বেকার বিসিএস ক্যাডার হচ্ছে। অনেকে তিন চার পাঁচ বছর বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়ে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ধরা না পেয়ে হতাশায় ভুগছে। অথবা শেষ পর্যন্ত বেসরকারী সরকারি কোনো ছোটখাটো চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর সাম্প্র

কুরআন নাযিলের মাস মাহে রমজানে আজ এক কলংকের দিন

১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল ভারতের দুইজন উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদী নাগরিক পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কোরআনের সকল আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করে। রীটে বলা হয়, কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে যেখানে কাফির ও মুশরিকদের হত্যা এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেরণা দেয়া হয়েছে, তাই এই গ্রন্থ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম দিতে পারে। মিসেস পদ্মা খাস্তগীর এই মামলা গ্রহণ করে এ বিষয়ে ৩ সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দেয়। তারা কুরআনের উল্লেখিত সূরা বাকারার ১৯১নং আয়াত ও সূরা তওবার ৩১ নং আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে মামলা দায়ের করেছিল। সুরা বাকারা ১৯১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন - " আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্ গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি

রোজার উপকারিতা, রোজাদারের করণীয় ও বর্জনীয় এবং রোজা ভঙ্গের কারণ

ছবি
মো.আবু রায়হানঃ মাহে রমজান সমাগত ।বছর ঘুরে আবার আমাদের দ্বারে হাজির হয়েছে পুণ্যময় এই মাস।রোজাদার যাবতীয় কটু বাক্য, ঝগড়া-ঝাটি, খারাপ আচরণ, মানুষ ঠকানো, ঘুষ-দূর্ণীতি, চুরি, পরনিন্দাসহ সকল প্রকার রিপুর তাড়নামুক্ত থাকার চেষ্টা করে। রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, "পাঁচটি বিষয় রোজাদারের রোজা বিনষ্ট করে দেয়- মিথ্যা বলা, কুটনামি করা, পশ্চাতে পরনিন্দা করা, মিথ্যা শপথ করা এবং খারাপ দৃষ্টিতে তাকানো।"  হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)  ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা-প্রতারণা ও গোনাহের কাজ ত্যাগ করে না আল্লাহ তায়ালার নিকট তার পানাহার থেকে বিরত থাকার কোনো মূল্য নেই।’ (বোখারি)। রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, "রোজার দিনে কেউ তোমার সঙ্গে ইচ্ছে করে ঝগড়া করতে উদ্দ্যত হলে অথবা গালমন্দ করলে তাকে দুবার বলো আমি রোজাদার"(বোখারি শরীফ)। রোজার কিছু  মর্যাদা ও উপকারিতা রয়েছে -যেমন, ১) জাহান্নাম  থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল ২) জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ ৩) গুনাহ  মোচনের অন্যতম মাধ্যম ৪)  রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্ত

রোজাদারের জন্য আল্লাহর কাছে পুরস্কার

ছবি
রোজার রাখা হয় আল্লাহর জন্য এবং এর পুরস্কার তিনি নিজে দেবেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে, যখন সে আনন্দিত হবে। এক. যখন সে ইফতার করে তখন ইফতারের কারণে আনন্দ পায়। দুই. যখন সে তার রবের সঙ্গে মিলিত হবে তখন তার রোজার কারণে আনন্দিত হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন সে আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবে, আর তিনি তাকে পুরস্কার দেবেন, তখন সে আনন্দিত হবে। (বুখারি-১৯০৪, ১৮৯৪; মুসলিম -১১৫১)    হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয় একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।’ (মুসলিম - ১১৫১; ইবনে মাজা - ১৬৩৮)। আল কুরআনের সূরা আন-আম এর ১৬০ নং আয়াতে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে , ‘কেউ কোনো সৎকাজ করলে সে তার দশগুণ পাবে।’  সূরা বাকারার ২৪৫ নং আয়াতে যেমন উল্লেখ

চীনের উইঘুর মুসলমানদের রোজা রাখতে সরকারের নিষেধাজ্ঞা।

বছর ঘুরে মুসলিম বিশ্বে এসেছে মাহে রমজান। এ রমজান মুসলমানদের জন্য বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। সারা বিশ্বের মুসলমানরা রোজা রাখতে পারলেও চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমরা রমজান মাসে রোজা রাখতে পারছে না। জিনজিয়াং চীনের একেবারে পশ্চিম প্রান্তে। এবং একই সাথে এই অঞ্চল চীনের সবচেয়ে বড় প্রদেশ। এর সীমান্তের ওপাশে আছে আরো কয়েকটি দেশ- ভারত, আফগানিস্তান এবং মঙ্গোলিয়া। মধ্য এশিয়ায় বসবাসরত তুর্কি বংশোদ্ভূত একটি জাতিগোষ্ঠী। বর্তমানে উইঘুররা মূলত চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে বসবাস করে। উইঘুররা এই অঞ্চলের সরকারিভাবে স্বীকৃত ৫৬টি নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অন্যতম। এখানকার ৮০% উইঘুর অঞ্চলের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে তারিম বেসিনে বসবাস করে।জিনজিয়াং এর বাইরে উইঘুরদের সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় দক্ষিণ মধ্য হুনান প্রদেশে রয়েছে।চীনের বাইরে মধ্য এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্র যেমন কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উইঘুর বাস করে। উইঘুরদের বেশিরভাগই মুসলিম। চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে তাদের  সংখ্যা প্রায় এক কোটি দশ লাখ। নিজেদেরকে সাংস্কৃতিক ও জাতিগতভাবে মধ্য এশীয়র লোকজনের কাছাকাছি বলে মনে