সুখ কি?
সুখ কি এর সংজ্ঞা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রকমের। চাহিদা ও অর্জনের ওপর নির্ভর করে। কাউকে যদি এভাবে বলা হয় যে, তুমি জীবনে কখনো সুখী হতে পারবে না এতে তার সামান্যতম সুখের ঘাটতি পড়বে না। শকুনের দোয়ায় কি গরু মরে? হাত তুলে এবং সিজদায় পড়ে দোয়া করে কাউকে সুখী করানো যায়না আবার কারো সুখ কেড়েও নেওয়া যায়না। সুখের প্রকারভেদ আছে কেউ বলে, কেউ দেখে আবার কেউবা ভোগে চরম সুখ অনুভব করে। তবে ভোগে নয় ত্যাগেই চরম সুখ। সুখ একান্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত বিষয়। কারো বলাতে সুখের স্বাদ টক মিষটি ঝাল হয় না। কারণ কেউ অল্পে সুখ পায় কেউবা বেশিতে সুখ অনুভব করে। বিত্তশালী হলেই কাউকে সুখী মনে করার কারণ নেই। এটি আপেক্ষিক বিষয়। সুখটা বাহিিহ্যক রূপ নয় এটি ভেতরে বিষয়। বাইর থেকে সুখ অনুমান করা যায় না। গুলশান বনানী বারিধারায় আলিশান বাড়ি গাড়ি সুন্দর নারী থাকলেই যে, সে সুখের সাগর হাবুডুবু খাচ্ছে এমনটা ভাবার উপায় নেই। এদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা আর নানান ভাবনায় দিন কাটে। আপনি বলতে পারেন আঙ্গুর ফল টক। তা বটে মন্দ বলেন নি। আবার খোলা আকাশের নিচে গাছের তলায় মানবেতর জীবন যাপন কারী কাঙাল বৃদ্ধা আবাল বনিতা তারা কিন্তু দুবেলা লবণ মরিচে মাখানো ভাত খেয়েও অনেক সুখী। নেই চোর ডাকাত গাড়ি ও বাড়ি চোরের ভয়। বস্তির চার দেওয়ালে আছে পরম সুখের ফোয়ারা। নেই নিঃস্ব হওয়া, হারানোর ভয়। কথায় বলে লেংটার আবার বাটপারের ভয়। নেই পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের উঠকো ঝামেলা। ব্যাংক লোন, সরকারি টাকা পয়সা আত্মসাত করে চাকরি খোয়ানোর ভয়ও তাদের থাকে না। ঘুষ দুর্নীতি করে কাচা পয়সা উপার্জন করে ভয়ে তটস্থ থাকার কিছু নেই।কিন্তু টাকা ওয়ালাদের অবস্থা চোরের মন পুলিশ পুলিশ। গরীবদের বেলুনের মতো পেট ফোলে সামান্য ব্যারামে মাদরাজ সিঙ্গাপুর আমেরিকা যেতে হয়না। ফুটপাত থেকেই সুখ পায়, শান্তি ও খোঁজে পায়। বর্ষায় চাল চুয়ে পড়া পানি তাদের শান্তি দেয় আশির্বাদ বয়ে আনে। শত ঝড় ঝঞ্ঝায় খোদাকে ডাকে। যদিও অভিমানে বলে খোদা টাকা ওয়ালাদের পকেটে থাকে। আমাদের মতো গরীবদের কোনো খোদা নেই। একান্ত নাগরিক সুবিধা ও অবহেলা থেকে এমনটা তারা বলে। তারা সুবিধা বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষ। সুযোগ সুবিধা ব্যাংক লোন পেলে এরাও গুলশানে পাকা বাড়ির মালিক হতো। ঘুষ খেয়ে পেট ফোলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেত।তারা তা করেনা সুযোগও নেই। এতো বৈষম্যের মধ্যেও এরাই প্রকৃত সুখী। হাতের কাছে যা আছে তা নিয়েই জীবন জীবিকা। দুবেলা দুমুঠো খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে বলে বড়ই সুখ পেলাম। আহা সুখ তুই শুধুই বন্দি পাখি গরীবের ঘরে আর কারো নয়। তুই তো আমার সুখ পাখি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন