পোস্টগুলি

গল্প : জেসহানের আম্মু

ছবি
জেসমিন সাদাসিধে চঞ্চলা বুদ্ধিমতী মেয়ে। এইচএসসিতে পড়াশোনা অবস্থায়  প্রথম বর্ষে  ক্লাসমেট সোহানের সঙ্গে তার পরিচয় । এরপর থেকে তাদের  গভীর বন্ধুত্ব। ক্যাম্পাসের সবাই জানতো তারা প্রেমিক জুটি। কিন্তু তখনো তাদের রিলেশন সে পর্যায়ে  ছিল না । কথায় বলে আগে পরিচয় তার পর বন্ধুত্ব তারপর না হয় প্রেমিক প্রেমিকা চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে পরিণয়। ওদের দুজনের বন্ধুত্বটা যেন অন্যরকম। জেসমিনের বিপদ আপদে সোহান যেন নিবেদিত। তার কেয়ারিং পড়াশোনা সবখানে সোহানের সরব উপস্থিতি ছিল। সোহান ছোটবেলা থেকে খুবই মেধাবী এসএসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। শহরের নামিদামি স্কুলে তার ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সোহানের বাবা মা চাইতেন  এইচএসসি পর্যন্ত সে তাদের চোখে চোখে থাকুক।সোহান এবং  জেসমিনের বন্ধুত্ব এ পর্যায়ে জেসমিনের বাবা মা জেনে যায়। তার মা আলেয়া বেগম চায় না তাদের বন্ধুত্ব আরো গাঢ় ও গভীর হোক। আলেয়া বেগমের ধারণা ছেলে মেয়েদের মধ্যে কখনো বন্ধুত্ব হয় না। যা হয় সবই স্বার্থের সম্পর্ক ঠুনকো । তবে সোহানের বাবা মি.আজাদ এসব ব্যাপারে নির্লিপ্ত। যেন ছেলে সামলানোর দায়িত্ব একা মায়ের দায়িত্ব ।সরকা...

ইভিএম নিয়ে কেন এতো বিতর্ক ?

ছবি
মো.আবু রায়হান: আসন্ন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক চলছে ।এরমধ্যে  ২২ জানুয়ারি ইভিএমে ভোট গ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন একজন আইনজীবী।যেহেতু ইভিএম-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জাতীয় সংসদে এখনো পাস হয়নি। এ অবস্থায় সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানিয়ে তিনি এ রিট আবেদন করেন।তবে রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন অগ্রাহ্য করে নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট গ্রহণের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক  সুজনের  অনলাইনে পরিচালিত এক জরিপে ১,৪০০ জন অংশ নেন। যার ৯১ শতাংশই আসন্ন সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছেন।১৯৬০ এর দশকে আমেরিকায় প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হয় ।সেহিসাবে ইভিএম পদ্ধতির বয়স বেশ পুরনো বা প্রায় ৬০ বছর হতে চলছে। ছয়দশকেও  বিশ্বের কোনো দেশেই ইভিএম পুরোপুরি মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।জানা যায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪টি দেশ ইভিএম ব্যবহার বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে।কিন্তু এর মধ্যে ১৪টি দেশ ইভিএম পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। ১১টি দেশ আংশিক ব্যবহার করছে।বর্তমানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে ৫টি দেশ। ভারতের ইকোনমিক টাইমস পত্...

পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা কতটা নিরাপদ?

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশের পর গোটা ভারত জুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এই আইন পাশের পর জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। ভারতের পূর্বাঞ্চল আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গে চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দোকানপাট, বাস ও ট্রেনে।১৯৫৫ সালে ভারতের নাগরিক আইন প্রবর্তনের পর এর আগে ১৯৫৭, ১৯৬০, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৯২ এবং ২০০৩ সালে অর্থাৎ মোট ছয় বার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে।তখন সেই নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে বর্তমানের মতো এতোটা সহিংস  প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়নি। এবারেই এধরনের ঘটনা প্রথম ঘটছে।এই বিক্ষোভ প্রতিবাদের মূলে রয়েছে এবারের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে বিতর্কিত কিছু ধারা। নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশ করা বিষয়ে  বিজেপি সরকার বলছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়াই আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য। বিজেপি সরকারের যুক্তি তিন দেশে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ফলে ঐসব দেশে মুসলিমদের ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয় না।  কিন্তু অমুসলিম সংখ্যালঘুরা এসব দেশে নির্যাতনের শিকার। তাদের সুরক্ষা দিতে বিজেপি সরকার এই নাগরিকত্ব আইন সংশোধন  করেছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্...

ক্ষমতার সিঁড়ি কেন ছাত্র রাজনীতি?

ছবি
  এক সময় ছাত্র রাজনীতি পরিচ্ছন্ন, মেধাবী নেতৃত্ব উপহার দিত। ছাত্রদের দাবি আদায়ে সোচ্চার ও লড়াকু সৈনিক ছিল। মত পথ, মতবাদ আলাদা হলেও সাধারণ ছাত্রদের দাবি আদায়ে ছিল এক ও অভিন্ন প্লাটফর্মে। সেই সোনালী যুগের ঐতিহ্যের ধ্বজাধারী ছাত্র সংগঠন গুলো অধিকাংশ আজ কলুষিত ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আতংকের বিষয়। ছাত্র রাজনীতি মানেই যেন গা শিউরে উঠার মতো কোনো ব্যাপার স্যাপার। অস্ত্রের ঝনঝনী, খুন জখম মারামারি, দলাদলি, কোন্দল, ক্যানটিনে ফাও খাওয়া, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই ইত্যাদি এখন ছাত্র রাজনীতির সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, হলের টিভি রুমের নিয়ন্ত্রণ, হল দখল, রুম দখল যেন চর দখলের মতো বিষয়। অন্যকে ফাঁপর, গেস্ট রুমে ভদ্রতা আদব কায়দা শেখানোর নামে মানসিকভাবে হেনস্থা ছাত্র রাজনীতির নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ছাত্র রাজনীতির অতীত গৌরবের কথা ফলাও করে প্রচার করা হয় কিন্তু  বুঝতে হবে বর্তমানের ছাত্র রাজনীতি জাতিকে কী উপহার দিচ্ছে? লেজুড় বৃত্তি ক্ষমতা আরোহণের সিড়ি  ও টিকে থাকার খুঁটি হিসেবেইই ছাত্র রাজনীতিকে  ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণ ছাত্রদের দাবি আ...

যে সীমান্ত হত্যাকান্ড নেপালকে নাড়া দিয়েছিল কিন্তু আমরা?

ছবি
আজ থেকে বছর তিনেক আগে ২০১৭ সালের  কথা। ভারত নেপাল সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) এর গুলিতে নিহত হন নেপালি যুবক গোবিন্দ গৌতম। ভারত নেপাল ১৭৫৮ কিলোমিটার সীমান্তে গোলাগুলি ও নিহতের ঘটনা বিরল। এ ঘটনার পর গোটা নেপাল উত্তপ্ত হয়ে উঠে। নেপালি নাগরিকরা রাজধানী  কাঠমান্ডুতে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ভারত সেই হত্যাকান্ডের কথা অস্বীকার করেছিল। নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। নেপালি যুবক নিহত হবার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দোভাল। এ ঘটনা তদন্তের জন্য দোভাল নেপালের সহযোগিতাও কামনা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ - ভারতের ৪,১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমানায় এমন দৃশ্য কল্পনাতীত। প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে সীমান্ত হত্যাকান্ডের নিহতদের তালিকা। বিশ্বের পঞ্চম দীর্ঘতম এই ভূমি সীমানায় চলতি বছরের প্রথম মাসে প্রথম ২৩ দিনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ বাংলাদেশি। সর্বশেষ ২৩ জানুয়ারি নওগাঁ ও যশোর সীমান্তে চার বাংলাদেশি খুন হন। তাদের মধ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন বিএসএফ...

নীল নদ নয় লোহিত সাগর পাড়ি দিয়েছিলেন হযরত মুসা (আ.)

ছবি
মো আব রায়হানঃ  হযরত মুসা (আ.) একজন নবি ও রাসুল।বাইবেলে তিনি মোজেস নামে পরিচিত।তাঁর ওপর আসমানী কিতাব তাওরাত নাযিল হয়েছিল। আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার জন্য তাঁকে কালিমুল্লাহ বলা হয়।তিনি  ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত রাসুল বা আল্লাহর  বার্তাবাহক। কোরআনে মুসা (আ.) এর নাম অন্য নবীদের তুলনায় বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। ধারণা করা হয় যে মুসা (আ.) ১২০ বছর বেঁচে ছিলেন। হযরত মুসা (আ.) এর অসংখ্য মুজেজা ছিল। তন্মধ্যে উল্লেখ করার মতো মুজেজা হলো তাঁর হাতের লাঠি মাটিতে নিক্ষেপ করলে  বিশালাকার অজগর সাপে পরিণত হতো। হযরত মুসা (আ.) এর জাতি বা কাওমের নাম ছিল বনী-ইসরাঈল। ইসরাঈল একটি হিব্রু শব্দ।  যার অর্থ–আল্লাহর বান্দা। হযরত ইয়াকুব (আ.)এর আরেকটি নাম হলো ইসরাঈল। কুরআনে ইহুদিদেরকে ইয়াকুব (আ.) এর বংশধর’ না বলে ইসরাঈলের বংশধর বলা হয়েছে, যেন ইহুদিরা এটা ভুলে না যায় যে, তারা আল্লাহর বান্দার বংশধর। তাদেরকে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে  তারা যেন তাদের রাবাইদের উপাসনা না করে, শুধুমাত্র আল্লাহরই উপাসনা করে।আরেকটি ব্যাপার হলো বনী ইসরাঈল বলতে আজকের  ‘ইসরাঈল’ নামক দেশ...

ভারতের নতুন নাগরিকত্ব সংশোধন আইন এবংকিছু প্রাসঙ্গিক কথা

  ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিল ১০ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হলো।ইতোমধ্যে ভারতের  রাষ্ট্রপতি বিলে স্বাক্ষর করায় তা আইনে পরিণত হয়েছে । বিল পাশের পর ভারতের আসাম পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ এবং রক্তক্ষয়ী সংঘাত। বিলের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্ব ভারতে আন্দোলনে  আসাম এখন অগ্নিগর্ভ। ত্রিপুরাও চলছে প্রতিবাদ।নিহত হয়েছেন কয়েকজন আন্দোলনকারী।আসামে  ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারকে বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে শহরে আসার সময় নিরাপত্তা-বহরে হামলা চালায় নাগরিকত্ব বিলের বিরোধী উত্তেজিত জনতা। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সহকারী হাই কমিশনারের গাড়ী। রাজ্যসভায় বিল পেশের আশঙ্কায় এই বছরের শুরুতে প্রায় পুরো উত্তরপূর্ব ভারত জুড়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছিল।নতুন করে বিলটি পাশের ফলে আবারও উত্তপ্ত ভারতের রাজ্যগুলো।ভারতের নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৭, ১৯৬০, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৯২ এবং ২০০৩ সালে অর্থাৎ মোট ছয় বার সংশোধন করা হয়েছে।এবার দিয়ে সাত বারের মতো সংশোধন করা হলো।  নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশ করা বিষয়ে  বিজেপি সরকার বলছে, বাংলাদে...