পোস্টগুলি

খয়বারের যুদ্ধ

ছবি
#মো আবু রায়হান খায়বারের যুদ্ধ ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে খয়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। মদীনা হতে ৬০ অথবা ৮০ মাইল উত্তরে খায়বর একটি বড় শহরের নাম। শহরটি অনেকগুলি দুর্গবেষ্টিত এবং চাষাবাদ যোগ্য জমি সমৃদ্ধ। খয়বরের জনবসতি দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। প্রথম অঞ্চলটিতে ৫টি দুর্গ এবং দ্বিতীয় অঞ্চলটিতে ৩টি দুর্গ ছিল। প্রথম অঞ্চলটি দু’ভাগে বিভক্ত। এক ভাগের নাম নাত্বাত । এ ভাগে ছিল সবচেয়ে বড় নায়েম সহ তিনটি দুর্গ এবং আরেক ভাগের নাম শাক্ব। এভাগে ছিল বাকী দু’টি দুর্গ। অন্য অঞ্চলটির নাম কাতীবাহ । এ অঞ্চলে ছিল প্রসিদ্ধ ‘ক্বামূছ’ দুর্গসহ মোট ৩টি দুর্গ। দুই অঞ্চলের বড় বড় ৮টি দুর্গ ছাড়াও ছোট-বড় আরও কিছু দুর্গ ও কেল্লা ছিল। তবে সেগুলি শক্তি ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে উপরোক্ত দুর্গগুলির সমপর্যায়ের ছিল না। খায়বরের যুদ্ধ মূলতঃ প্রথম অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। হোদায়বিয়ার সন্ধি শেষে মদীনায় ফিরে রাসূলুল্লাহ (সা) পূরা যিলহাজ্জ ও মুহাররম মাসের অর্ধাংশ এখানে অবস্থান করেন। অতঃপর মুহাররম মাসের শেষভাগে কোন একদিন খয়বর অভিমুখে যাত্রা করেন। মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধরত তিনটি শক্তি- কুরায়েশ, বনু গাতফান

মরুভূমির জাহাজ উট

ছবি
সুরা গাশিয়ার ১৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি উটের প্রতি লক্ষ করে না যে তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে?’উটকে বলা হয় 'মরুভূমির জাহাজ'। আরবিতে একে বলা হয় ‘সাফিনাতুস সাহরা’।কারণ, উট মরুভূমিতে ৬ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত কোন খাবার, এমনকি পানিও গ্রহণ না করে বেঁচে থাকতে পারে! এদের নাক, কান ও চোখ এমনভাবে গঠিত যে মরূভূমির ধূলিকণা কর্তৃক এরা খুব সহজে আক্রান্ত হয় না! মরুযাত্রীদের কাছে তাই উট খুবই উপকারী আর প্রয়োজনীয় একটা প্রাণী!উট ২০০-৩০০ কেজি পর্যন্ত বোঝা নিয়েও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে। তৎকালীন সময় আরবের বণিকদের ব্যাবসায়িক পণ্য নেওয়ার মাধ্যম ছিল উট। উটের পিঠে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে সে যুগের লাক্সারি ভ্রমণ করা হতো। মরুভূমির প্রচণ্ড তাপমাত্রায় নির্বিঘ্নে পথ চলার এক অসাধারণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মরুজাহাজ নামে খ্যাত উটকে। ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও পানিবিহীন বাঁচতে পারে লাগাতার ১০ দিন। এর শরীরে আল্লাহ এমন অসাধারণ ক্ষমতা দিয়েছেন যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম, যা অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে নেই। মরুভূমির ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমেও উটের শরীর থেকে ঘাম নির্গত হয় না। (হায়াতুল হায়ওয়ান)এ

আরব উপদ্বীপ বা জাজিরাতুল আরব

ছবি
  আরব উপদ্বীপ যা জাজিরাতুল আরব নামেও পরিচিত।জাজিরা আরবি শব্দ যার অর্থ উপদ্বীপ।আরব উপদ্বীপটি তিন দিক সাগর এবং এক দিক স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় আরববাসীরা একে জাজিরাতুল আরব বলে। এটি পশ্চিম এশিয়ার একটি উপদ্বীপ, যা আফ্রিকার উত্তর পূর্বে অবস্থিত। এটি এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত এবং এটি অঢেল খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ। আরব উপদ্বীপের জল সীমান্তের পশ্চিমে রয়েছে লোহিত সাগর, উত্তর-পূর্বে রয়ছে পারস্য উপসাগর ও দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ভারত মহাসাগর।এই উপদ্বীপে অবস্থিত দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ওমান, কুয়েত, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার ও ইয়েমেন ।

ওকাজ মেলা

ছবি
#মো. আবু রায়হান জাহেলি যুগের একটি ঐতিহ্যবাহী মেলার নাম ছিল ওকাজ মেলা।ওকাজ মেলা যদিও প্রাক ইসলামি যুগে নৈতিকতা ও সামাজিক কুসংস্কারের চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল। তথাপিও সে সময় ওকাজ মেলায় বসত কবি-সাহিত্যিকদের আসর। সে সাহিত্য পরিষদে প্রকাশ পেতো অনেক প্রশংসনীয় চারিত্রিক গুণ। সে সময় সাহিত্য পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, বাগ্মিতা এবং কাব্যপ্রেম ছিল অনত্যম। মূলত এ কবিতা আবৃত্তি ও বাগ্মিতাকে কেন্দ্র করেই মক্কার অদূরে অবস্থিত ওকাজ নামক স্থানে এ মেলার সূচনা হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে তা ওকাজ মেলা নামে পরিচিত হয়েছিল। উকাজ মেলার এই সাহিত্যসভায় কবিতা-প্রতিযোগিতায় মূল বিচারকের ভূমিকায় থাকতেন কবি নাবিগা জুবিয়ানি। কথিত আছে, উকাজ মেলার কাব্যপ্রতিযোগিতার শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলোকে দামি মিসরীয় কাপড়ে সোনালি অক্ষরে লিখে বর্তমান সময়ের দেয়ালিকার মতো পবিত্র কাবা ঘরে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হতো।এই কবিতাগুলোকে তাই মুয়াল্লাকাত বা ঝুলন্ত কবিতা বলা হতো। এই কবিতাগুলো কবি হাম্মাদ আর রাবিয়া আব্বাসি যুগ এ সংকলন করেন। এ মুয়াল্লাকাত বা ঝুলন্ত কবিতার মধ্যে -ইমরুল কায়েস ,ত্বরফা বিন আল আবদ ,যুহায়ের বিন আবি সুলমা ,লাবিদ বিন রাবিয়া, আমর বিন ক

মজলিস উস শুরা / পরামর্শ সভা

ছবি
#মো.আবু রায়হান ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় শুরার গুরুত্ব অনেক বেশি। শুরা আরবি শব্দ ।এর আভিধানিক অর্থ পরামর্শ, consultation ।মজলিস অর্থ আসর; সভা; সমিতি, council or legislature. মজলিস উস শুরার সম্মিলিত অর্থ পরামর্শ সভা, উপদেষ্টা পরিষদ । আধুনিক যুগের পার্লামেন্টের সঙ্গে মজলিস উস শুরার তুলনা চলে।মুসলিম দেশগুলোতে শুরা বর্তমানে খুব স্বাভাবিক একটি নিয়ম হিসেবে চালু আছে। যেসব মুসলিম দেশে একনায়কতন্ত্র, রাজতন্ত্র বা সামরিক স্বৈরশাসন চলছে, সেখানেও ‘শুরা কমিটি’, ‘শুরা কাউন্সিল’ বা ‘মজলিসে শুরা’ নামমাত্র চালু আছে।রাসুল (সা) প্রাক ইসলামি যুগের দারুন নাদওয়ার আদলে মজলিসে শুরা’গঠন করেন।খেলাফত বা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শ নেওয়ার জন্য খলিফারা নির্দিষ্টসংখ্যক লোকের সমন্বয়ে ‘মজলিসে শুরা’ গঠন করতেন। কেননা আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের গুণাবলির কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘এবং তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের ভিত্তিতে কর্ম সম্পাদন করে।’ (সুরা শুরা, আয়াত ৩৮) সূরা আলে ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে : ‘আল্লাহর দয়ায় তুমি তাদের প্রতি কোমলহৃদয় হয়েছিলে, যদি তুমি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতে তবে তারা তোমার আশপাশ থেক

বায়তুল মাল ইসলামি কোষাগার

ছবি
  #মো.আবু রায়হান বায়তুল মাল একটি আরবি শব্দ যার অর্থ- অর্থের ঘর , ধন ভাণ্ডার, কোষাগার,ধনাগার House of money, House of Wealth ।ইসলামি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে বলা হয় বায়তুল মাল। কিন্তু এর দ্বারা শুধু সে ইমরাতকেই বোঝায় না, যেখানে সরকারি ধনসম্পত্তির কাজকারবার পরিচালনা করা হয়; বরং ইসলামী রাষ্ট্রের যে বিভাগটি রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের খাতগুলোর নির্বাহ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে, ব্যাপক অর্থে তাকে ‘বায়তুল মাল’ বলা হয়। বায়তুলমাল বলতে সরকারের অর্থ সম্বন্ধীয় কর্মকাণ্ড বুঝায় না। বরং বিভিন্ন উৎস হতে অর্জিত ও রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত ধন-সম্পদকেই বায়তুল মাল বলা হয়। মদিনা নগরীতে মহানবী সা:-এর পবিত্র হাতে প্রথম যেদিন ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়, মূলত সেদিন থেকেই বায়তুল মালের সূচনা হয়। এর মূল নাম ছিল ‘বাইতু মালিল মুসলিমিন’ বা ‘বাইতু মালিল্লাহ’। পরবর্তীতে মুসলিমিন শব্দটি বাদ দিয়ে এটিকে কেবল ‘বায়তুল মাল’ নাম রাখা হয়। তখন এই কোষাগারে কোনোরূপ ধনসম্পদ সঞ্চয় করে রাখা হতো না। তার সুযোগও তখন ছিল না। কারণ তখন সাধারণ নাগরিক ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আয় ছিল অতি সামান্য। ফলে রাসূলুল্লাহ সা:-এর হাতে কো

হিলফুল ফুজুল পৃথিবীর প্রথম শান্তি সংঘ

ছবি
#মো আবু রায়হান মহানবী (সা.)-এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে 'হিলফুল ফুজুল' প্রতিষ্ঠা। 'হিলফুল ফুজুল' অর্থ শান্তিসংঘ। নবুয়তপ্রাপ্তির ১৫ বছর আগে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি আরব সমাজের সব অন্যায়, অবিচার, শোষণ ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে তাঁর সমবয়সী কিছু যুবককে নিয়ে এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহানবী (সা.) এমন একটি সময় আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যখন আরব সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বিরাজ করছিল। এ সমাজে ছিল না কোনো নিয়মনীতি ও আইনের শাসন। গোত্রীয় কলহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, সামাজিক শ্রেণিভেদ, নারী নির্যাতন, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া প্রভৃতি সমাজকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করেছিল। ঐতিহাসিকরা আরবের এই সময়কে 'আইয়ামে জাহেলিয়া' বা 'অন্ধকার যুগ' বলে অভিহিত করেছেন। জাহেলিয়া যুগের এই রক্তপাত, অন্যায় ও অনাচার বালক মুহাম্মদ (সা.)-এর মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি সমাজের সব অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার জন্য সর্বদা চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। অবশেষে তাঁর মনে একটি অভিনব চিন্তার উদয় হলো। তিনি তাঁর সমবয়সী কতিপয় যুবককে নিয়ে 'হিলফুল ফুজুল' নামে একটি সংঘ গড়

হাজরে আসওয়াদ

ছবি
#মো. আবু রায়হান হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর । আরবি হাজর শব্দের অর্থ পাথর আর আসওয়াদ শব্দের অর্থ কালো। অর্থাৎ কালো পাথর। ‘হাজরে আসওয়াদ’ বেহেশতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর।এটি আদম ও হাওয়ার সময় বেহেশত থেকে পৃথিবীতে এসে পড়ে। এটিকে একটি উল্কা বলা হলেও এর সত্যতা নিশ্চিত না।হাদিসের গ্রন্থগুলোতে হাজরে আসওয়াদের সম্পর্কে প্রচুর আলোচনা এসেছে। হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন, ‘হাজরে আসওয়াদ’ প্রথমে দুধ বা বরফের চেয়েও সাদা ও মসৃণ অবস্থায় জান্নাত থেকে অবতীর্ণ করা হয়। অতঃপর আদম সন্তানের পাপে তা কলো হয়ে যায়।’ (তিরমিজি, মিশকাত)।অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাতেরই একটি অংশ। ’ (ইবনে খুজায়মা, খণ্ড: ০৪, পৃষ্ঠা: ২২০)হাজরে আসওয়াদ কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ থেকে দেড় মিটার(চার ফুট) উঁচুতে অবস্থিত।এই পবিত্র পাথরের দৈর্ঘ্য ৮ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৭ ইঞ্চি। বর্তমানে এটি আট টুকরো। আগে হাজরে আসওয়াদ ছিল আস্ত একটি পাথর। হযরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে আগুন লাগলে হাজরে আসওয়াদ কয়েক টুকরা হয়ে যায়। আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের পরে ভাঙা টুকরাগুলো

বিদায় হজের ভাষণ

ছবি
#মো. আবু রায়হান পবিত্র হজ ফরজ হওয়ার পর রাসুল (সা.) দশম হিজরি সনের নবম জিলহজ -এ আরাফার ময়দানে জীবনের প্রথম ও শেষ হজে প্রায় সোয়া লাখ মানুষের সমাবেশে ভাষণ দেন।(বিদায় হজে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে গমনকারী সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা কত ছিল এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৪ হাজার, কারো মতে এক লাখ ৪৪ হাজার। ) ইসলামের ইতিহাসে তা-ই ‘হাজ্জাতুল বিদা’ বা ‘বিদায় হজ’ নামে পরিচিত। এ ছাড়া এই ভাষণকে 'হাজ্জাতুল বালাগ' ও 'হাজ্জাতুত তামাম' বা পূর্ণতার হজ নামেও অভিহিত করা হয়। মূলত বিদায় হজে রাসুল (সা.) তিনটি ভাষণ প্রদান করেছিলেন। এক. আরাফার ময়দানে। দুই. কোরবানির দিন, মিনায়। তিন. 'আয়্যাম-ই-তাশরিকে'র মধ্যবর্তী স্থানে, মিনায়।ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে এই ভাষণে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ছিলো। ভাষণটি পূর্ণাঙ্গরূপে সংরক্ষিত হয়নি। বিভিন্ন হাদিস, তাফসির, ইতিহাস ও জীবনীগ্রন্থে আংশিক এবং খণ্ড খণ্ড আকারে তা মুদ্রিত হয়েছে। সকল হাদীসে বিদায় খুৎবার উদ্ধৃতি অন্তর্ভূত আছে। বুখারী শরীফের ১৬২৩, ১৬২৬ এবং ৬৩৬১ নম্বর হাদিসে ভাষণের বিভিন্ন অংশ

হুনাইনের যুদ্ধ

ছবি
#মো. আবু রায়হান ‎‎হুনাইনের যুদ্ধ মুসলমান কর্তৃক বেদুঈন গোত্র হাওয়াজিন ও তার উপশাখা সাকিফ এর বিরুদ্ধে ( হুনাইন হচ্ছে মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তী একটি উপত্যকা ) ৬৩০ সালে সংঘঠিত একটি যুদ্ধ।বদর যুদ্ধের মতো এই যুদ্ধেও আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা পাঠিয়ে মুসলমানদের গায়েবি সাহায্য করেন। তবে ফেরেশতারা বদরের মতো এই যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেননি। সাধারণ মুসলমানরা তাদের অংশগ্রহণকে প্রত্যক্ষও করেনি। মক্কা বিজয়ের পর হাওয়াজিন গোত্র মক্কা থেকে তায়েফ পর্যন্ত বিস্তৃত তার শাখা গোত্রগুলোকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে একত্র করে। চার হাজার সৈন্যবাহিনীর পাশাপাশি সেনানায়ক মালিক বিন আউফ পূর্ণ শক্তির সঙ্গে রণাঙ্গনে তাদের সুদৃঢ় রাখার জন্য এই কৌশল অবলম্বন করে যে যুদ্ধক্ষেত্রে সবার পরিবার-পরিজনও উপস্থিত থাকবে। প্রত্যেকে নিজেদের সহায়-সম্পত্তিও সঙ্গে রাখবে। উদ্দেশ্য হলো, কেউ যেন পরিবার-পরিজন ও সহায়-সম্পদের টানে রণক্ষেত্র ত্যাগ না করে। পরিবার-পরিজনসহ তাদের মোট সংখ্যা ছিল ২৪ থেকে ২৮ হাজার। এদিকে ৮ম হিজরীর ৬ই শাওয়াল দিবস রাসূলুল্লাহ (সা) মক্কা হতে রওয়ানা হলেন। এটি ছিল মক্কা আগমনের ঊনিশতম দিবস। নাবী কারীম (সাঃ)-এর সঙ্গে ছিল বার হাজা

মুতার যুদ্ধ যেখানে শহীদ হন তিন সেনাপতি

ছবি
#মো.আবু রায়হান মহানবী (সা) এর জীবদ্দশায় মুসলমানরা যেসব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন মুতার যুদ্ধ ছিল সেসবের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী। এই যুদ্ধই খৃষ্টান অধ্যুষিত দেশসমূহ জয়ের দার খুলে দেয়। অষ্টম হিজরীর জমাদিউল আউয়াল অর্থাৎ ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দ বা সেপ্টেম্বর মাসে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুতা বর্তমানে জর্ডানের বালকা এলাকার নিকটবর্তী একটি জনপদ। এই জায়গা থেকে বায়তুল আকসা মসজিদের দূরত্ব মাত্র দুই মানযিল বা ৩২ মাইল । মুতার যুদ্ধ এখানেই সংঘটিত হয়েছিল। হজ্জ থেকে ফিরে এসে হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন গোত্রীয় নেতাদের অনুরোধে নানা স্থানে ইসলামের দূত প্রেরণ করলেন। কোনো কোনো স্থানে মুসলিম দূতের প্রতি অশোভন ও বিরোধমূলক আচরণ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী বিভিন্ন স্থানে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযান প্রেরণ করেন। ইবনে হিশাম ও ওয়াকিদীর মতে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) হোদায়বিয়া সন্ধি স্বাক্ষরের পর থেকে মক্কা বিজয় (৬৩০ খ্রি.) পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মোট ১৭টি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। রাসুল (সা) উত্তরদিকে যে তিনটি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন, মুতার যুদ্ধ তন্মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। রোমের কায়সারের গবর্ণর শরহাবিল ইবন