পোস্টগুলি

কামাল পাশা

ছবি
"আমি কামাল পাশাকে পূর্ব আনাতোলিয়ায় পাঠিয়েছিলাম (ঔপনিবেশিক বিরোধী প্রতিরোধের নেতৃত্ব দিতে) কিন্তু সে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।"" I sent Kemal Pasha to Eastern Anatolia (to lead anti-colonial resistance). But he betrayed us." -সুলতান মেহমেত বাহদেত্তিন ( ৩৬তম অটোমান সুলতান এবং ১১৫তম খলিফা) ( Murat Bardakcı, Shahbaba, Inkallap Library, Istanbul, 2013, 5th edition) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তুরস্কে মোস্তফা কামাল পাশা নামক একজন জাতীয়তাবাদী নেতা ও সেনানায়কের আবির্ভাব ঘটে যিনি পতনোন্মুখ তুরস্ককে বৈদেশিক আগ্রাসন থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তার সামরিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন পদক্ষেপ তুরস্ককে ধ্বংস থেকে রক্ষা করে। তুরস্কের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পরবর্তীতে তাকে আতাতুর্ক (তুর্কী জাতির পিতা) উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯২০ সালের ঘৃণিত সেভ্রেস চুক্তির পর থেকে ১৯২৩ সালের ল্যুজান চুক্তির মধ্যবর্তী সময়ে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ পার করেছে। বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্ক যখন মিত্রপক্ষের ঘৃণিত চক্রান্তের মুখোমুখি হয় আতাতুর্ক তখন আনাতোলিয়ায় তুরস্ককে রক্...

খালিদ বিন ওয়ালিদ

ছবি
খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) ছোটো-বড়ো প্রায় ১০০ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও আজীবন অপরাজিত ছিলেন, তাই ইতিহাসবিদেরা খালিদ বিন ওয়ালিদকে সমর-ইতিহাসের অন্যতম সেরা সেনাপতি বলে অনেক আগেই মেনে নিয়েছেন। খালিদ বিন ওয়ালিদের আগে, পারস্য সাম্রাজ্য এবং রোমান সাম্রাজ্যের মধ্যে ৭০০ বছর ধরে যুদ্ধ চলছিল। এই সময়ে তারা ১০০০ টিরও বেশি যুদ্ধ করেছিল। অতঃপর সাইফুল্লাহ বা আল্লাহর তরবারি খ্যাত খালিদ বিন ওয়ালিদ এসে মাত্র ৪ বছরে সাম্রাজ্য দুটোকে নির্মূল করে দেন! খালিদ পারসিকদের পতন না হওয়া পর্যন্ত ১৫ টি যুদ্ধে পারসিকদের পরাজিত করেন। খালিদ ৯ টি যুদ্ধে রোমানদের পরাজিত করে এক হাজার বছর ধরে অব্যাহত থাকা রোমানদের অস্তিত্বের অবসান ঘটান। তারপর, যখন পারস্য ও রোমানরা সম্বলিতভাবে দুই লক্ষ যোদ্ধা নিয়ে আল-ফিরাদের যুদ্ধে (১২ হিজরি) খালিদ বিন ওয়ালিদের সাথে লড়াই করার জন্য একত্রিত হয়েছিল, তখন খালিদ মাত্র ১৫০০০ মুসলিম সেনা নিয়ে তাদের পরাজিত করেছিলেন! "আমি শাহাদাতের ইচ্ছা নিয়ে এত বেশি যুদ্ধে লড়াই করেছি যে আমার শরীরে এমন কোনো ক্ষতচিহ্ন নেই যা বর্শা বা তলোয়ারের আঘাতের কারণে হয়নি। এর পরেও আমি এখানে, বিছানায় পড়ে একটি বৃদ্ধ উ...

হাফেজ আইয়ুবা সুলাইমান দিয়ালো

ছবি
  তিনি ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, ছিলেন কুরআনে হাফেজ, তিনি ছিলেন একজন দাস। তিনি হলেন সেনেগালের হাফেজ আইয়ুবা সুলাইমান দিয়ালো। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তিনি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করে ফেলেন এবং মালিকি মাযহাব অনুযায়ী ধর্মীয় বিধি-নিষেধ অনুশীলন করতে শুরু করেন। কিন্তু পরিহাসের বিষয়, ১৭৩০ সালে দিয়ালো নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বী গোত্রদের হাতে বন্দী হয়ে যান এবং দাস হিসেবে বিক্রি হয়ে যান। একাধিকবার হাত বদলের পর দিয়ালোর স্থান হয় মিস্টার টলসি নামে ম্যারিল্যান্ডের এক তামাক ক্ষেতের মালিকের বাড়িতে। সে সময় দাসদের নিজস্ব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা ছিল না। ফলে তাদেরকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে ধর্ম পালন করতে হতো। দিয়ালো তার কাজের ফাঁকে ফাঁকে গোপনে নামায আদায় করতেন এবং কুরআন তিলাওয়াত করতেন। প্রায় এক বছর পর্যন্ত দিয়ালো তার ধর্ম গোপন রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু এরপর একদিন গোপনে নামায পড়ার সময় তিনি ধরা পড়ে যান। নিজের ধর্ম পালনের জন্য দিয়ালোকে প্রচুর অপমান এবং নির্যাতন সহ্য করতে হয়। নামায পড়া অবস্থাতেই মালিকের ছেলেরা তার শরীরে কাদা নিক্ষেপ করতে থাকে। পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠলে ১৭৩১ সালে দিয়ালো তার মালি...

ইয়ারমুকের যুদ্ধ ও খালিদ বিন ওয়ালিদ

ছবি
৬৩৬ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে ইয়ারমুকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।ইয়ারমুক সিরিয়ার এক নদীর নাম। বর্তমানে এই নদী সিরিয়া, জর্দান এবং ইসরাইলের মধ্যে প্রবাহিত। ইয়ারমুকের যুদ্ধ খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী এবং খুলাফায়ে রাশেদুনের বাহিনীর মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ। হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা:-এর খেলাফতের শেষ এবং হজরত ওমর রা:-এর খেলাফতের শুরুতে। রাসূল সা:-এর ইন্তেকালের পর ইয়ারমুকের যুদ্ধই ছিল মুসলমানদের জন্য বড় বিজয়। এই যুদ্ধে মুসলমানদের নেতৃত্বে ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ এবং বাইজেন্টাইনদের পক্ষে সম্রাট হেরাক্লিয়াস। আনুমানিক ২৪,০০০-৪০,০০০ সৈন্য নিয়ে খালিদ ইয়ারমুকের প্রান্তরে হাজির হন।প্রাথমিক মুসলিম সূত্রানুযায়ী, বাইজান্টাইন সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লাখ। প্রাথমিক রোমান সূত্রানুযায়ী সেই সংখ্যা প্রায় ১,৪০,০০০ জন। কিন্তু আধুনিক হিসাব অনুযায়ী বাইজান্টাইনরা প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ সৈন্য নিয়ে ইয়ারমুক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। সে যা-ই হোক, বাইজান্টাইনদের সৈন্যসংখ্যা মুসলিম বাহিনীর থেকে যে অনেক বেশি ছিল তাতে সকল সূত্রই একমত। ইয়ারমুকের যুদ্ধ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক যুদ্ধ। ছয় দিনের এই ...

হোসাইনের কুফা গমন

ছবি
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) ২০ বছর খলিফা হিসাবে রাষ্ট্র পরিচালনার পর হিজরি ৬০ সালে ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের পর ইয়াজিদ অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। ইয়াজিদ ছিল নিষ্ঠুর, মদ্যপ ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক। এ কারণে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ তাকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। মদিনা ও কুফার জনগণ ইমাম হোসাইন (রা.)-কে খলিফা হিসাবে দেখতে চেয়েছে। এরই মধ্যে এক সময় কুফার লক্ষাধিক মানুষ ইমাম হোসাইন (রা.)-কে প্রায় দেড়শো পত্র প্রেরণ করেন। এ পত্রে তারা দাবি জানান, সুন্নাহ পুনর্জীবিত এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে অবিলম্বে তার দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রয়োজন। কুফাবাসীর ডাকে সাড়া দিয়ে হজরত হোসাইন (রা.) তার চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকিলকে ইরাকের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠান। আর বলে দেন, যদি সে পরিস্থিতি অনুকূল দেখে এবং ইরাকবাসীর অন্তর সুদৃঢ় ও সুসংহত মনে হয়, তাহলে যেন তার কাছে দূত প্রেরণ করে। মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে ১৮ হাজার কুফাবাসী তার কাছে এসে ইমাম হোসাইনের পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ করে এবং তারা শপথ করে বলে, অবশ্যই আমরা জানমাল দিয়ে ইমাম হোসাইনকে সাহায্য করব। তখন মুসলিম ইবনে আকিল ইমাম হ...

আল্লাহর ওলির দু-পা কবরের বাইরে

ছবি
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে একজন শায়খকে দাফন করা হয়। তাঁর নাম শায়খ মুহাম্মাদ আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ)। তাঁর পা তাঁর কবরের বাইরে রয়েছে এবং এটি ভালভাবে সংরক্ষিত।দামেস্কে দুই দল লোকের মধ্যে আউলিয়া নিয়ে বিরোধের কারণে তার পা কবরের বাইরে বের হয়ে আসে। একবার দুদল লোক শায়খের কাছে গেল জিজ্ঞেস করতে তাদের মধ্যে কোন দল সঠিক আর কোন দল ভুল পথে। কিন্তু শায়খ একদিন সময় নিয়ে তাদের পরের দিন আসতে বলেন। পরের দিন গিয়ে তারা জানতে পারলেন শায়খ মারা গেছেন। তারা শায়খের কবরের কাছে গেল এবং বলল: "শায়খ, আপনি বলেছিলেন যে আপনি এই সমস্যাটি সমাধান করবেন" তারা এই কথা বলার সাথে সাথেই শায়খের পা তার কবর থেকে বেরিয়ে আসে। তখন কেউ একজন বলল- “আমরা জানি না কুর্দিদের মধ্যে আল্লাহর কোন ওলি (আল্লাহর বন্ধু) হয়েছে কি না”, যখন তিনি এ কথা বললেন, তখন কবর থেকে আওয়াজ এলো: “আমি কুর্দি, আমি একজন ওলি। আল্লাহর জন্য এবং আমি আমার কবর থেকে আমার পা বের করে নিয়েছি; এটাই অবশ্যই যথেষ্ট প্রমাণ হবে যে আমি আল্লাহর একজন ওলি।" হাজার হাজার মানুষ দামেস্কে এই কেরামতি প্রত্যক্ষ করেছিল । তাঁর ইন্তেকালের ৮০০ বছর হয়ে গে...

টিপু সুলতান প্রথম রকেট আবিষ্কারক

ছবি
  টিপু সুলতান ছিলেন ভারতের প্রথম অন্যায়ের বিরুদ্ধে শহিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী শাসক। অষ্টাদশ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে শের-ই-মহীশূর বা মহীশূরের বাঘ নামে আখ্যায়িত হোন কেননা তিনি ইংরেজদের কাছে স্বাধীনতার মূর্তিমান প্রতীক ছিলেন যা কিনা তাদের আতংকের বড়ো একটি কারণ ছিলো। টিপু সুলতানকে আধুনিক রকেটের স্থপতি বলা যায়। সেসময়ের পৃথিবীতে রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ইউরোপে নয়, ছিল আমাদের ভারতবর্ষে, দক্ষিণ ভারতের মহীশুরে। ১৭৯৯ সালে তুরুখানাল্লির যুদ্ধে নিহত হন টিপু সুলতান। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি লড়ে গেছেন সত্যিকারের বীরের মতো। আত্মসমর্পণ না করে তিনি বেছে নিয়েছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদি মৃত্যুকেই। সার্থক করেছেন তার সেই বিখ্যাত উক্তিকে “শিয়ালের মতো শত বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের ন্যায় একদিনের জীবন উত্তম” এ যুদ্ধে মহীশুরের হারের পর ব্রিটিশরা হাতে পেয়ে যায় প্রায় ৭০০ রকেট এবং ৯০০ রকেটের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ। টিপুর এ রকেট নিয়ে ইংরেজদের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এ রকেটগুলোকে উইলিয়াম কনগ্রেভ ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিঙের মাধ্যমে এর কৌশল আয়ত্ত করে তারা। পর...