টিপু সুলতান প্রথম রকেট আবিষ্কারক

 


টিপু সুলতান ছিলেন ভারতের প্রথম অন্যায়ের বিরুদ্ধে শহিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী শাসক। অষ্টাদশ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে শের-ই-মহীশূর বা মহীশূরের বাঘ নামে আখ্যায়িত হোন কেননা তিনি ইংরেজদের কাছে স্বাধীনতার মূর্তিমান প্রতীক ছিলেন যা কিনা তাদের আতংকের বড়ো একটি কারণ ছিলো।

টিপু সুলতানকে আধুনিক রকেটের স্থপতি বলা যায়। সেসময়ের পৃথিবীতে রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ইউরোপে নয়, ছিল আমাদের ভারতবর্ষে, দক্ষিণ ভারতের মহীশুরে। ১৭৯৯ সালে তুরুখানাল্লির যুদ্ধে নিহত হন টিপু সুলতান। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি লড়ে গেছেন সত্যিকারের বীরের মতো। আত্মসমর্পণ না করে তিনি বেছে নিয়েছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদি মৃত্যুকেই। সার্থক করেছেন তার সেই বিখ্যাত উক্তিকে
“শিয়ালের মতো শত বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের ন্যায় একদিনের জীবন উত্তম”
এ যুদ্ধে মহীশুরের হারের পর ব্রিটিশরা হাতে পেয়ে যায় প্রায় ৭০০ রকেট এবং ৯০০ রকেটের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ। টিপুর এ রকেট নিয়ে ইংরেজদের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এ রকেটগুলোকে উইলিয়াম কনগ্রেভ ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিঙের মাধ্যমে এর কৌশল আয়ত্ত করে তারা। পরবর্তীতে আরো গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেন কনগ্রেভ রকেট। যার উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে আজকের আধুনিকতম রকেট এবং কৃত্রিম উপগ্রহ নিক্ষেপণ ব্যবস্থা।
টিপু সুলতানের সময়কার ১০০০ যুদ্ধ রকেট উদ্ধার হয় কর্নাটকে। কর্নাটকের শিবামগ্গা জেলার বিদানুরু দুর্গ থেকে এই রকেট উদ্ধার হয়।
পুরাতত্ত্ববিদেরা জানায়, কর্নাটকের ওই দুর্গে ২০০২ সালে ১৬০টি অব্যবহৃত রকেট উদ্ধার হয়। ৫ বছর পর ২০০৭ সালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, সেগুলো টিপু সুলতানের রাজত্বকালের। তার পরই তাঁরা অনুমান করেন, ওই দুর্গে আরও রকেট থাকতে পারে। দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করার পর পুরাতত্ত্ববিদদের ১৫ জনের একটি দল খোঁড়াখুড়ি শুরু করে। দুর্গের ভিতর একটি পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে তাঁরা ১০০০টি রকেট উদ্ধার করেন।
ইতিহাসবিদরা জানান, ১৭৫০-৯৯ সাল এই সময়ে শিবমগ্গা জেলার ওই দুর্গ টিপু সুলতানের মহীশুর রাজ্যের অধীনে ছিল। তাই ইতিহাসবিদদের অনুমান, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধের সময় টিপু সুলতানই ওই রকেট ব্যবহার করেছেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল