পোস্টগুলি

ইসলামে ন্যায় বিচারের অনুপম দৃষ্টান্ত

ছবি
মো. আবু রায়হান মানবজীবনে ন্যায়বিচারের গুরুত্ব অত্যধিক।সভ্য সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের কোনো বিকল্প নেই। সুবিচারপ্রাপ্তি সব নাগরিকের অধিকার এবং ন্যায়বিচার আল্লাহর হুকুম। এটি ফরজ ইবাদত। ন্যায়বিচার ব্যতীত কোনো সমাজ মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে টিকে থাকতে পারে না। একটি সমাজকে সত্যিকারার্থে মানব সমাজ বলা যায় না, যদি না তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকে। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান- এগুলো আমরা মৌলিক অধিকার বলি। কিন্তু ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি এসব অধিকারকে মূল্যহীন করে তোলে। আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়া না গেলে অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা মানুষকে স্বস্তি দিতে পারে না। অর্থাৎ মানুষকে মানুষের মতো বেঁচে থাকতে হলে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হচ্ছে ন্যায়বিচার। কোনো একটি মামলায় একটি অন্যায় বিচার মানে এক বা একাধিক নিরপরাধ ব্যক্তির ফেঁসে যাওয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে এক বা একাধিক অপরাধীর অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়া! এর কুফল হচ্ছে, সমাজে অপরাধ ও অপরাধীর সংখ্যা বাড়তে থাকা এবং ভালো লোকের সংখ্যা কমে যাওয়া। এ রকম অপরাধপ্রবণ সমাজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এখানে কেউ নিরাপদ ...

মুফতি ইব্রাহিমের তুঘলকি বক্তব্য ও বাস্তবতা

ছবি
মো. আবু রায়হান হঠাৎ নতুন করে আলোচনায় মুফতি কাজী ইব্রাহিম। নতুন মহাদেশ, করোনা ভাইরাস, ভ্যাকসিন কিংবা রক্তের গ্রুপ- ইতালির মামুনের স্বপ্নসহ নানা বিষয়ে এই ইসলামি বক্তার দেয়া অভিনব তত্ত্ব ও তথ্য নিয়ে বিগত এক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলেছে আলোচনা, সমালোচনা ও হাস্যরস। হাদিসবিদ্যায় গভীর পান্ডিত্যের কারণে কাজী ইব্রাহীমকে বিজ্ঞ হিসেবে গণ্য করেন বিশিষ্ট আলেমরা। কিন্তু তার বিতর্কিত বক্তব্যে বিব্রত হয়েছিলেন তারা। কেউ-কেউ মনে করেন, ব্যক্তিজীবনে নানা সমস্যার কারণে হয়তো অসংলগ্ন কথা বলছেন তিনি। কিন্তু, নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন মুফতি ইব্রাহীম। গত বছর ইতালি প্রবাসী মামুন মারুফ নামের এক বাংলাদেশীর স্বপ্ন তিনি ব্যাখ্যা করেন। করোনা ভাইরাস নিয়ে মুফতি কাজী ইব্রাহিম মামুনের কাছে যা শুনেছেন সেই স্বপ্নটি কাজী ইব্রাহিম সাহেবের কাছে গ্রহণ যোগ্য বলে মনে হয়েছিল।সেই সময় এই স্বপ্ন অনেক হেসে উড়ে দিলেও স্বপ্নের কিছু দিক বর্তমানে মিলে যাওয়ায় অনেকে তার বক্তব্য গুরুত্ব দিতে শুরু করছেন। স্বপ্নের অংশ বিশেষ। তোমরা কতদিন অবস্থান করবে ? করোনা উত্তর দিলো : আমরা আসছি আবার চলে যাবো এমন না আমরা এখান থেকে নর্থ ও সাউথ আমের...

হারেম / উপপত্নী / রক্ষিতা

ছবি
  মো. আবু রায়হান হারেম, হারিম, হেরেম একটি আরবি শব্দ যার অর্থ অন্তঃপুর, অন্দরমহল,অলঙ্ঘনীয় সীমারেখা, জেনানামহল, নিষিদ্ধ বা পবিত্র স্থান। হারেম হচ্ছে নারীদের জন্য নির্ধারিত পবিত্র স্থান যেখানে রাজা বা রাজপুত্র ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। Properly refers to domestic spaces that are reserved for the women of the house in a Muslim family.হারেমে অবস্থান করতেন রাজা, সুলতান বা সম্রাটের স্ত্রীরা, উপপত্নীরা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্র, অবিবাহিত কন্যা, মহিলা আত্মীয় এবং দাসীরা। এছাড়া হারেমে রাজা বা রাজপুত্রদের বিনোদনের জন্য থাকত শত শত, হাজার হাজার যুবতী নারীরা। যে রাজা যত বেশি অভিজাত, ক্ষমতাশালী ও অর্থবিত্তের অধিকারী তার হারেমে নারীর সংখ্যাও তত বেশি থাকত।হারেম প্রথা সব আমলেই ছিল এমনকি প্রাচীন আমলেও। তবে মুঘল আমলে ও অটোমান আমলে তা বিকশিত হয়। মুঘল হারেমে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার নারীর অবস্থান ছিল। সুলতানি আমলেও এর সংখ্যা কম ছিল না। কথিত আছে, বাংলার সুলতান সিকান্দার শাহের হারেমে ১০ হাজার নারী ছিল। রাজা বা সুলতানের মা ছিলেন হারেমের প্রধান। তাকে বলা হতো ভালিদা সুলতান (সুলতানের মা)। তারপ...

ধর্মকে ঢাল হিসেবে আর কত ব্যবহার করবেন ?

  মো. আবু রায়হান চুরি, ডাকাতি, ঘুষ খেয়ে ধরা পড়লে সাফাই গাই লোকটা ভালো ছিল। লোকটা তাহাজ্জুদ গুজারি ছিল। এসব ভন্ডামি বাদ দেন। মানুষের সহমর্মিতা পাবার অনেক উপায় আছে ধর্মের মোড়কে অসৎ কে সৎ বানাবেন না। যে প্রকৃত নামাজি সে কখনো বেগানা নারী পুরুষের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারে না। যেনা ব্যাভিচার চুরি ডাকাতি করতে পারে না।নামাজ বান্দাকে সকল প্রকার অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তিপূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগ-বিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পূত-পবিত্র ও উন্নত এক আদর্শ জীবনের অধিকারী বানিয়ে দেয়। বিকশিত করে তোলে তার ভেতরের সকল সুকুমারবৃত্তি। তার জন্য খুলে দেয় চিরস্থায়ী জান্নাতের সুপ্রশস্ত দুয়ার।আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই নামাজ অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। (সূরা আনকাবুত আয়াত -৪৫)। যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়েন তারা আল্লাহর অনেক কাছাকাছি অবস্থান করেন। নামাজ আর অপকর্ম এক সঙ্গে চলতে পারে না। নামাজ পড়েন অসৎ কাজও করেন তাহলে মনে করতে হবে আপনার জীবনে নামাজের মূল চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নামাজ লোক দেখানো বা বলে বেড়ানোর জিনিস নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতএব দুর্ভোগ সে সব নামাজিদের জন্য; যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে ব...

রোজার শারীরিক উপকার

  রমজানের রোজার ধর্মীয় গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। ধর্মীয় গুরুত্ব বাদেও শারীরিক ক্ষেত্রে রোজার রয়েছে বেশ প্রভাব ও উপকার। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, দীর্ঘজীবন লাভের জন্য খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন বেশি নয়; বরং পরিমিত খাওয়াটাই দীর্ঘজীবন লাভের চাবিকাঠি।বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি ও গবেষণার যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলেছেন, মানুষের সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে রোজার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।বছরে এক মাস রোজা রাখার ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। এটা অনেকটা শিল্পকারখানার মতো। আধুনিক পৃথিবীতে রোজার প্রতি চেতনা সৃষ্টি করার পেছনে ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত একটি বই অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। বিখ্যাত জার্মান চিকিৎসাবিদ Hellmut Luetzner এর The secret of successful fasting অর্থাৎ ‘উপবাসের গোপন রহস্য’ বইটি। বইটিতে লেখক মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন ও কার্যপ্রণালি বিশ্লেষণ করে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে বছরে কতিপয় দিন উপবাসের অভ্যাসের কথা বলেছেন। তার মতে, উপবাস খাবারের উপাদান থেকে সারা বছর শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন), চর্বি ও আবর্জনা থেকে মুক্তি দান করে।শরীরের জমে থাকা বিষগুলো রমজানে নির্গ...

হিজরি সন থেকে যেভাবে বাংলা সনের উৎপত্তি হলো এবং কিভাবে ইংরেজি থেকে বাংলা সন বের করবেন?

  সন আরবি শব্দ। অর্থ হলো অব্দ বা বর্ষ বা বর্ষপুঞ্জ। আবার সনকে সাল বলা হয়। সাল ফার্সি শব্দ। ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট ছিলেন আকবর। তিনি প্রায় অর্ধ শতাব্দী ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেন।উল্লেখ্য, আকবরের রাজত্বকাল ছিল ১৫৫৬-১৬০৫ সাল পর্যন্ত। সম্রাট আকবর বাংলাসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশ থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে কতিপয় ‘ফসলি সাল’ প্রবর্তন করেন। বাংলা বর্ষ সম্রাট আকবর প্রবর্তিত সেই সব ফসলি সালের একটি। সেই সময় থেকে এ দেশের মানুষ চাষাবাদ, খাজনা পরিশোধ, সংবছরের হিসাব-নিকাশ সব কিছুতেই বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে থাকে, যেটা মুঘল শাসন আমল সম্রাট বাবর থেকে শুরু করে বাহাদুর শাহ জাফর তারপর ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তান শাসনামল পার হয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে বাংলা সন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:)-এর ইন্তেকালের পর ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা:)-এর সময়কালে হজরত আলী (রা:)-এর প্রস্তাবে মহানবী (সা:)-এর হিজরতের দিন থেকে হিজরি সন গণনা শুরু হয়। সেটি ছিল ৬২২ সালের ১৬ জুলাই। হজরত ওমর (রা) ৬৩৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজরি সনের প্রবর্তন করেন। বছরটি ছিল ১৭ হিজরি।হিজরি সন থেকেই সূচনা হয় বাংলা সনের। এ...

সেদিন অনুশোচনা কোনো কাজে দেবে না!

  হায়! আমরা যদি আরেকবার (দুনিয়ায়) ফিরে যেতে পারতাম এবং মুমিনদের অন্তর্ভূক্ত হতাম! (সুরা শুআরা আয়াত -১০২) কিয়ামতের দিন জাহান্নামবাসী ব্যক্তিরা এই পৃথিবীতে গোনাহগার ও অপরাধী ব্যক্তিদের অনুসরণের জন্য অনুতাপ করবে এবং জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করবে। জাহান্নামীরা প্রচণ্ড অনুশোচনায় আরেকবার পৃথিবীতে ফিরে আসার আকুতি জানাবে। তারা বলবে, আরেকবার দুনিয়ায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হলে তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। তারা বলবে, আজ আমরা উপলব্ধি করছি যে, দুনিয়াতে আমরা ভুল করেছিলাম যার কারণে আজ এই দুর্বিষহ পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেদিন এই অনুশোচনা কোনো কাজে আসবে না। কারণ, মৃত্যুর পর আর এই দুনিয়ায় ফিরে আসার কোনো সুযোগ থাকবে না। পবিত্র কুরআনে তাদের এই আকুতির জবাবে বলা হচ্ছে: পৃথিবীতে তাদের সৎপথে ফিরে আসার জন্য বহু নিদর্শন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে হেদায়েত পাওয়ার চেষ্টা করেনি। মহান আল্লাহ তাদেরকে ভ্রান্ত পথ থেকে সিরাতুল মুস্তাকিমে আসার জন্য গোটা জীবন সময় দিয়েছেন। কিন্তু সেই সুযোগ ও সময়ের অপব্যবহার করে তারা তাদের ভ্রান্ত পথে চলা অব্যাহত রেখেছে। কাজেই তারা আজ অনুতাপ...