সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আজাব/গজব / মহামারি কেন আসে?

  হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। এক.যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব রোগের উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। দুই. যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে, তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বালা-মুসিবত। তিন. যখন কোনো জাতি যাকাত আদায় করে না, তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো, তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। চার. যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। পাঁচ. যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব (কুরআন) মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।' (ইবনে মাজাহ)

রমজানে আসলে কী শয়তানকে বন্দি করা হয়?

রমজান মাস এলেই শুনি শয়তানকে বন্দি করা হয়। তাহলে রমজান মাসে তারপরও এতো পাপ কাজ কেমনে সংঘটিত হয়। এই প্রশ্নের সূত্র ধরেই আজকের আলোচনা। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন রমজান উপস্থিত হয়, জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুষ্ট শয়তানদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়।’ (মুসলিম, হাদিস -১০৭৯) এবার একটি ঘটনা বলি, মির্জা গালিব ছিলেন ভারতবর্ষে মোঘল-সম্রাজ্যের শেষ ও ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকের একজন উর্দু এবং ফার্সি ভাষার কবি । সাহিত্যে তার অনন্য অবদানের জন্য তাকে দাবির-উল-মালিক ও নাজিম-উদ-দৌলা উপাধি দেওয়া হয়। গালিব মদ্য পান করতেন এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে তার নিষ্ঠা ছিল না৷ সেজন্যেও তাকে তীব্রভাবে সমালোচিত হতে হয়েছে৷ সুরার প্রতি আসক্তিকে গালিব মনে করতেন আশির্বাদ৷ তিনি লিখেছেন, "ও আসাদ, সুরা পান করতে অস্বীকারকারী পুরোপুরিই অজ্ঞ; তার বেহেশতের সাকীর ভালোবাসা ছাড়া সুরা নিষিদ্ধ৷" যাই হোক অনেক অপ্রাস‌ঙ্গিক কথার অবতারণা করলাম। কোনো এক রমজানে একজন হাদিস বিশারদ মুহাদ্দিস বন্ধু গালিবের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি মনে করলেন, গালিবকে একটু...

করোনায় ভারতীয়দের মৃত্যুতে খুশির কিছু নেই

করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় ভারত আজ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। তাদের এ দুর্দশা দেখে আমাদের উচ্ছ্বসিত হবার কিছু নেই। ভারত মুসলমানদের সঙ্গে দুশমনি আচরণ করেছে সেহিসেবে আজকে দুর্দিনে তাদের নিয়ে উপহাস বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য কাম্য হতে পারে না। ইসলামের শিক্ষাও এটি নয়। নগরে আগুন লাগলে মসজিদ-মন্দির কিছুই অক্ষত থাকে না। আজ চিতায় গোলাপী ও লাল রংয়ের আলো দেখে প্রশান্তির কিছু নেই।আমাদের কষ্ট পাওয়া উচিত এজন্য যে তাদের আলোর পথে আনতে, হেদায়েতের পথে আনতে আমরা যথেষ্ট মেহনত করতে পারিনি। আমাদের ব্যর্থতা এজন্য যে তারা কালেমা মুখে না নিয়ে মৃত্যু বরণ করছেন।ইসলামের বাণী তাদের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি বলে । এজন্য তাদের মৃত্যুতে অনুতপ্ত হওয়া উচিত। ইসলামে সব মানুষের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ ও মানবীয় আচরণ প্রদর্শন অন্যতম শিক্ষা। কারণ মানুষ হিসেবে সবাই সমান। আল্লাহ সব মানুষকে সম্মানিত করেছেন।রাসুলুল্লাহ (সা) মানুষকে সৃষ্টির সেরাজীব হিসেবে সম্মান করেছেন। হোক সে মুসলিম কিংবা অমুসলিম, কাফির, ইয়াহুদি কিংবা খ্রিস্টান হাদিসে এসেছে, একদিন সাহল ইবনে হুনাইফ (রা.) ও কায়েস ইবনে সাদ (রা.) কাদেসিয়াতে বসা ছিলেন। তখন তাঁদের পাশ দিয়...

শুধু অক্সিজেনের জন্য আমরা আল্লাহর কাছে কতটা ঋণী

#মো.আবু রায়হান মুমূর্ষু প্রিয়জনদের বাঁচানোর প্রয়োজনে অনেক মানুষ এখন হন্যে হয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের খোঁজ করছে। সিলিন্ডার বাসায় বা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে মহামারি পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। প্রতিদিনই ভাঙছে মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট ক্রমেই প্রকট আকার ধারণ করছে। কোভিড রোগীদের সেবায় অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে হাসপাতাল গুলোতে।অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে দেশটিতে রোগীদের করুণ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।করোনার এই মহামারিতে মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যে প্রতিদিন তারা মহান আল্লাহর কত অমূল্য নিয়ামত ভোগ করে। ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত ৯৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ সুস্থ হয়েছিলেন। সুস্থ হওয়ার পর তাকে বলা হলো হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে যেখানে ১ দিনের ভেন্টিলেটর বিল ছিল ৫০০০ ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় ৫ লক্ষ টাকার উপরে! বৃদ্ধ বিলের কথা শুনে কাঁদতে লাগলেন, ডাক্তাররা তাকে আস্বস্ত করলেন যেন বিল পরিশোধের জন্য কান্না না করেন ! তিনি বললেন, আমার কান্না বিলের জন্য নয়, আমি সম্পুর্ণ বিল পরিশ...

পিতামাতা সৎ ও ধার্মিক হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আদর্শবান হয়

পিতামাতার ভালমন্দ, মন মেজাজ এবং আচার আচরণসহ সার্বিক বিষয়ের প্রভাব পড়ে সন্তানের উপর। হযরত ওমরের নিম্নোক্ত ঘটনাটি কমবেশি সকলেই জানি। কোনো এক রাতে হযরত ওমর (রা.) জনগণের অবস্থা অবগত হওয়া এবং তাদের খোঁজখবর নেওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ তিনি ক্লান্তি অনুভব করলেন। তখন নিকটবর্তী কোনো এক ঘরের প্রাচীরের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসে পড়লেন। তার কানে নারী কণ্ঠ ভেসে এলো। এক বৃদ্ধা তার কন্যাকে আদেশ দিচ্ছে যে, হে মেয়ে! ওঠ, দোহনকৃত দুধে পানি মিশ্রিত কর। কন্যা বলল, হে জননী! আপনি কি অবগত নন যে, আমিরুল মুমিনীন হযরত ওমর (রা.) দুধে পানি মেশাতে নিষেধ করেছেন? তার জননী বলল, হে মেয়ে, যাও ওঠ, দুধের মধ্যে পানি মিশ্রিত কর, হযরত ওমর (রা.) আমাদের তো দেখছেন না। কন্যা জবাব দিলেন, হে জননী! হযরত ওমর (রা.) হয়তো আমাদের দেখছেন না, তবে তাঁর রব তো আমাদের দেখছেন। হযরত ওমরের কাছে এ দীনদার নেক কন্যার কথোপকথন খুবই পছন্দনীয় হলো। ওই মেয়ের আল্লাহভীরুতা তার কাছে অত্যন্ত ভালো লাগল। স্বীয় ক্রীতদাস আসলামকে বললেন, হে আসলাম! এ দরজার চিহ্ন মনে রেখ এবং এ বাড়ির ঠিকানা স্মরণ রেখ।এরপর দুজনই অগ্রসর হলেন। চলতে চলতে হযরত ওমর (রা.) নিজের ঘরে পৌঁছে গেলেন...

কেন বিপদে হতাশ হব না!

এক হজরত আইয়ুব (আ) ছিলেন রোমের অধিবাসী এবং মহান আল্লাহর নবী হজরত ইব্রাহিম (আ) এর বংশধর। হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র হজরত ইসহাক (আ)। হজরত ইসহাক (আ.) এর পুত্রের বংশধর হজরত আইয়ুব (আ.)। হজরত আইয়ুব (আ.) যেখানে বসবাস করতেন তাওরাতে তা বোসরা নামে উল্লেখ করা আছে। হজরত আইয়ুব (আ.) ছিলেন সে সময়ে বিশাল ধন সম্পদের মালিক। যাবতীয় সকল ধরনের সম্পত্তি তার কাছে ছিল। বিশাল পরিমান জমি-জমা, গৃহ-পালিত পশু এবং দাস-দাসী ছিল। সম্পদ ছাড়াও পরিবার পরিজন ও প্রচুর সন্তান নিয়ে সুখে ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনের ৭০ বছর বয়সে এসে মহান আল্লাহর কঠিন পরীক্ষায় একে একে তিনি সব হারাতে শুরু করেন। তিনি এক কঠিন চর্মরোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে এই রোগ তাঁর সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের তীব্রতা এত প্রকট ছিল যে, তাঁর শরীরে পচন ধরে এবং পোকা জন্মায়। এ ছাড়াও পচা অংশ এবং পুঁজ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এর ফলে একে একে তাঁর ধনসম্পত্তি, জমি, টাকা-পয়সা, পশু, দাস-দাসী সবই হারিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শহরের বাইরে একটি আস্তাকুড়ের পাশে আইয়ুব (আ) কে আশ্রয় নিতে হয়। তার এই বিপদে শুধু মাত্র একজন তাকে ছেড়ে যায় নি, তিনি মহান আল্লাহর প্রিয় বান্দা হজরত আইয়ুব (আ) এর...

যুগেযুগে অপবাদ অপনোদন

  যুগেযুগে নবী রাসুল ও তাদের অনুসারীরের বিরুদ্ধে মুশরিক, মুনাফেক ও কাফেরদের অপবাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র ছিল, আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু দিনশেষে সত্যের বিজয় অত্যাসন্ন। হজরত ইউসুফ (আ) বৈমাত্রেয় ভাইদের চক্রান্তে কূপে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর মিশরগামী ব্যবসায়ী কাফেলার মাধ্যমে কূপ থেকে উদ্ধার পান। অতঃপর ভাইয়েরা কাফেলার নিকট গোলাম হিসেবে ১৮ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। উক্ত কাফেলা ইউসুফ (আ)কে মিশরের উজিরের নিকট বিক্রয় করে দেয়। মিশরের উজিরের নিকট তিনি লালিতপালিত হন ।যখন ইউসুফ (আ) যৌবনে পদার্পণ করেন, তখন তার স্ত্রী জুলেখা তাকে ফুসলাইতে থাকেন। একদিন জুলেখা ঘরের সাতটি দরজা বন্ধ করে কুপ্রস্তাব দেন। হযরত ইউসুফ (আ) জুলেখার কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দৌড় দিলে এক এক করে সাতটি বন্ধ দরজা খুলে যায়। সর্বশেষ দরজা খোলার পূর্বে জুলেখা ইউসুফ (আ)-এর পিছন থেকে তার জামা টেনে ধরলে সেই জামা ছিঁড়ে যায়। দরজা খুলেই জুলেখার স্বামীকে দণ্ডায়মান দেখতে পায়। তখন জুলেখা হযরত ইউসুফ (আ) সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ দেয়। পরবর্তী সময়ে উজির ইউসুফ (আ)কে জেলে দেন।ইউসুফ (আ.) ছিলেন ইমান ও নবুয়তের আলোয় আলোকিত। তাঁর বিবেক ছিল স্বচ্ছ। অন্তর ছি...