পোস্টগুলি

জালিমের কারাগারে আলেম ওলামা

ছবি
#মো. আবু রায়হান পৃথিবীতে বহু ক্ষণজন্মা ব্যক্তি ইসলামের সেবা করে ইসলামের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা(রহ.) ছিলেন তাদেরই একজন। তিনি ইসলামের জ্ঞান ভান্ডারে যে অবদান রেখে গেছেন, কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ তার কাছে চিরঋণী হয়ে থাকবে।ইমাম আজমের পূর্ব পুরুষরা আদিতে কাবুলের অধিবাসী হলেও ব্যবসায়িক সূত্রে তারা কুফাতে নিবাস গড়েন। তার পিতা সাবিত ছিলেন একজন তাবেয়ি। প্রসিদ্ধ মতানুসারে তিনি ৬৯৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মোতাবেক ৮০ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম ছিল নোমান। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আবু হানিফা উপনামে সুখ্যাতি লাভ করেন। ইসলামী ফিকহের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও পরিচিত চারটি সুন্নি মাযহাবের একটি “হানাফি মাযহাব”-এর প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। ৭৬৩ আব্বাসীয় খলিফা আল-মনসুর আবু হানিফাকে রাজ্যের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেন কিন্তু স্বাধীনভাবে থাকার জন্য তিনি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তার পরীবর্তে তার ছাত্র আবু ইউসুফকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব   দেওয়া হয়। প্রস্তাব প্রত্যাখানের ব্যাপারে আবু ইউসুফ আল মনসুরকে ব্যাখা দেন তিনি নিজেকে এই পদের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না। আল-

মুজাদ্দিদে আলফেসানির সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছে ৭ দফা

ছবি
#মো. আবু রায়হান সম্রাট আকবর ইসলাম ত্যাগ করে ১৫৮২ সালে দ্বীনে-এলাহি নামে একটি নতুন ধর্ম প্রচার করেন। যদিও প্রচার করা হয়, এই নতুন ধর্মে সব ধর্মের ভালো দিকগুলো সংযোজন করা হয়েছে। দ্বীনে এলাহির মূল উপাদান ছিল অগ্নিপূজা, সূর্যপূজা, দরবারে প্রবেশ করতে তাঁকে সম্মানি সিজদা করা, নামাজ পড়তে নিষেধাজ্ঞা, পর্দা রহিতকরণ, সুদ-ঘুষ এবং জুয়ার বৈধতা, গরু জবাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা, অনৈসলামিক দিবসের প্রচলন, শূকর হালাল বলে ঘোষণা, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ব্যাপারে প্রবল আপত্তি, ব্যভিচারের সাধারণ অনুমতি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহর পরিবর্তে কালেমা হিসেবে আকবর খলিফাতুল্লাহর ব্যাপকহারে প্রচলন। এগুলোই ছিল দ্বীনে এলাহির মৌলিক উপাদান। এটাকে হিন্দুধর্মের নতুন সংস্করণ ছাড়া আর কীই বা বলা যায়? মুসলিম উম্মাহ তখন অত্যন্ত নাজুক মুহূর্তে অতিক্রম করছিল। উম্মাহর এমন ক্রান্তিকালে ধর্মদ্রোহিতার প্রতিরোধে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়লেন টগবগে যুবক আহমদ সিরহিন্দী। ইতিহাসের এ মহান কিংবদন্তি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের সিরহিন্দে ১৫৬৪ সালে শুক্রবার রাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাখদুম শায়খ আবদুল আহাদ (রহ.) ছিলেন প্রখ্যাত সুফি শায়খ আবদুল

মহানবীর সমর নীতি

ছবি
#মো. আবু রায়হান মহানবী (সা.) যখন ইসলামের বাণী প্রচার আরম্ভ করেন তখন যুদ্ধবিগ্রহ ছিল সমাজের সাধারণ নিয়ম। যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত থাকা দিনগুলোকে ‘আইয়াম আল-আরব’ (আরবের যুগ) বলা হতো। (History of Arabs, P. 87-89; সিরাতে মুস্তফা, পৃষ্ঠা ৫৬; সিরাতুন্নবী : ৪/২৬৮)তাগলিক গোত্র ও বকর গোত্রের দাহিস নামে এক ঘোড়া যুবিয়ান গোত্রের আল-গাব্বা নামক এক উটের মধ্যে প্রতিযোগিতায় যুবিয়ানদের অনিয়মের আশ্রয়কে কেন্দ্র করে কয়েক দশক ধরে এ যুদ্ধ চলতে থাকে। বিখ্যাত মুয়াল্লাকা কবি আনতারা বিন শাদদাদ আল-আবশির হস্তক্ষেপের ফলে এ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। (সিরাতে মুস্তফা, পৃষ্ঠা ৫৭ ও ৫৮; কিতাব আল আগানি : ৪/১৪০-১৫২; History of Arabs, P. 82.)কুরাইশ ও হাওয়জিন গোত্রের মধ্যে এক যুদ্ধ পাঁচ বছর স্থায়ী ছিল। যুদ্ধটি হারাম মাসে শুরু হয়েছিল বলে একে ফুজ্জার(গর্হিত) যুদ্ধ নামে অভিহিত করা হয়। আর একটি যুদ্ধ হয়েছিল মদিনার আউস এবং খাজরাজ গোত্রের মধ্যে। মহানবী(সা.)-এর মদিনা সনদের ফলে এ যুদ্ধের অবসান ঘটে। ঐতিহাসিকদের মতে, মুহাম্মদ(সা.) তাঁর জীবদ্দশায় ২৭টি বড় ধরনের যুদ্ধ(গাজওয়া), ৬০টি ছোটখাটো দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ (সারিয়া) সরাসরি পরিচালনা করেছেন। (ইসলামী

মুহাম্মদ (সা.) এর পরিবার পরিজন

ছবি
#মো আবু রায়হান বংশ ধারা : মুহাম্মদ (সা.) বিন আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম বিন আবদে মানাফ বিন কুসাই বিন কিলাব বিন মোররা বিন কাআব বিন লুয়াই বিন গালেব বিন ফেহের (তাঁর উপাধি ছিল কোরাইশ। এখান থেকে কোরাইশ বংশের প্রচলন) বিন মালেক বিন নজর বিন কানানা বিন খোজাইমা বিন মোদরাকা বিন ইলিয়াস বিন মুজার বিন নেজার বিন মাআদ বিন আদনান। (এ পর্যন্ত সব ঐতিহাসিকের ঐক্য আছে। এ বংশলতিকা হযরত ইসমাইল ও ইব্রাহিম (আ.) হয়ে হযরত আদম (আ.) পর্যন্ত পৌঁছেছে।) নাম : মুহাম্মদ (সা.)। উপনাম : আবুল কাসেম। পিতা : আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব (আবদুল মুত্তালিবের দশ সন্তানের সর্বকনিষ্ঠ)। মাতা : আমেনা বিনতে ওহ্হাব। দাদা : আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম। দাদি : ফাতেমা বিনতে আমর। নানা : ওয়াহাব বিন আবদে মানাফ। নানি : বোররা বিনতে ওমজা। জন্মস্থান : মক্কা (বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত)। জন্ম সাল- ৫৭০ খ্রি.। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর জন্ম তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকগণের মাঝে অনেক মতভেদ রয়েছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত মুফাসসির ও মুফতি জনাব শফি সাহেব (রহমতুল্লাহি আলাইহি) সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া গ্রন্থে লিখেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর জন্ম রবিউল আউয়াল মাসের ১

সংগ্রামী নারী নুসাইবা বিনতে কাব

ছবি
#মো আবু রায়হান ইসলামের সোনালি ইতিহাস রচনায় যেসব নারীর আত্মত্যাগ সবচেয়ে বেশি, তাঁদের একজন উম্মে আম্মারা নুসাইবা বিনতে কাব (রা.)। তিনি একজন বিশিষ্ট আনসারি নারী সাহাবি। মদিনার প্রসিদ্ধ আনসার গোত্র বনু নাজ্জারে তাঁর জন্ম। নুসাইবা বিনতে কাব ছিলেন আব্দুল্লাহ্ ইবনে কাব এর বোন। তিনিই প্রথম নারী যিনি ইসলামের জন্য যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে যুদ্ধ করেছেন। উম্মে আম্মারা (রা.)-এর পুরো নাম ছিল নুসাইবা বিনতে কাব বিন আমর বিন নাজ্জার। নুসাইবা বিনতে কাব যিনি উম্মে উমর বা উম্মে আম্মারা নামে অধিক পরিচিত। স্বামী জায়েদ ইবনে আসেম ইবনে কাব (রা.)। দুই ছেলে আব্দুল্লাহ্ ও হাবিব ইবনে জায়েদ আল-আনসারী। উম্মে আম্মারা (রা.), তাঁর স্বামী ও দুই ছেলে উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।তিনি পরে বিন আমর কে বিবাহ করেন এবং আরো এক পুত্র তামীম ও এক কন্যা সন্তান খাওলাহ্কে জন্ম দেন।হিজরতপূর্ব মদিনায় যেসব নারী প্রথমে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম। উম্মে আম্মারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে উহুদ, খাইবার, মক্কা অভিযান, হুনাইন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হিজরতের আগে বাইয়াতে আকাবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। এ ছাড়া আবু বকর (র

খয়বারের যুদ্ধ

ছবি
#মো আবু রায়হান খায়বারের যুদ্ধ ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে খয়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। মদীনা হতে ৬০ অথবা ৮০ মাইল উত্তরে খায়বর একটি বড় শহরের নাম। শহরটি অনেকগুলি দুর্গবেষ্টিত এবং চাষাবাদ যোগ্য জমি সমৃদ্ধ। খয়বরের জনবসতি দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। প্রথম অঞ্চলটিতে ৫টি দুর্গ এবং দ্বিতীয় অঞ্চলটিতে ৩টি দুর্গ ছিল। প্রথম অঞ্চলটি দু’ভাগে বিভক্ত। এক ভাগের নাম নাত্বাত । এ ভাগে ছিল সবচেয়ে বড় নায়েম সহ তিনটি দুর্গ এবং আরেক ভাগের নাম শাক্ব। এভাগে ছিল বাকী দু’টি দুর্গ। অন্য অঞ্চলটির নাম কাতীবাহ । এ অঞ্চলে ছিল প্রসিদ্ধ ‘ক্বামূছ’ দুর্গসহ মোট ৩টি দুর্গ। দুই অঞ্চলের বড় বড় ৮টি দুর্গ ছাড়াও ছোট-বড় আরও কিছু দুর্গ ও কেল্লা ছিল। তবে সেগুলি শক্তি ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে উপরোক্ত দুর্গগুলির সমপর্যায়ের ছিল না। খায়বরের যুদ্ধ মূলতঃ প্রথম অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। হোদায়বিয়ার সন্ধি শেষে মদীনায় ফিরে রাসূলুল্লাহ (সা) পূরা যিলহাজ্জ ও মুহাররম মাসের অর্ধাংশ এখানে অবস্থান করেন। অতঃপর মুহাররম মাসের শেষভাগে কোন একদিন খয়বর অভিমুখে যাত্রা করেন। মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধরত তিনটি শক্তি- কুরায়েশ, বনু গাতফান