পোস্টগুলি

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ও ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

ছবি
মো আবু রায়হানঃমুসলিম আলেম ওলামাদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক বহু দিনের। এ নিয়ে তাদের মধ্যে  বিভেদও বিস্তর। তবে শর্তাসাপেক্ষে কিছু আলেম ওলামা কুরআন হাদিসের দলিলের ভিত্তিতে জন্মনিয়ন্ত্রণের বৈধতা দিয়ে থাকেন।  কুরআন হাদিসে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা, না করার পক্ষে যথেষ্ট দলিলাদি রয়েছে যা তারা প্রমাণ হিসাবে পেশ করে থাকেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ বলতে সন্তান সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রত্যাশিত সময়ে গর্ভধারন কে বোঝানো হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের সমার্থক শব্দ হিসেবে  গর্ভবিরতিকরণ,  গর্ভনিরোধ,  প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।জন্মনিয়ন্ত্রণের ইংরেজি হলো Birth control।উইকিপিডিয়া মতে Birth control, also known as contraception and fertility control, is a method or device used to prevent pregnancy.গর্ভধারণ প্রতিরোধের এক বা একাধিক কর্মপ্রক্রিয়া, পদ্ধতি, সংযমিত যৌনচর্চা অথবা ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে ঐচ্ছিকভাবে গর্ভধারণ বা সন্তান প্রসব থেকে বিরত থাকার স্বাস্থ্যবিধিই হলো জন্ম নিয়ন্ত্রণ। ইতিহাস ঘেটে পাওয়া যায় সর্বপ্রথম   ৫০০০ -৩২০০ খ্রি.পূর্বে মিসরীয় সভ্যতায় জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ছবি
মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যাগ কর

প্রাথমিক শিক্ষকদের সুখ-দুঃখ

ছবি
মো আবু রায়হানঃমানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজ। জাতি গড়ার কারিগরদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে আমাদের বিদ্যা অর্জনের হাতেখড়ি। ছোট বেলায় আমরা পিতামাতার পর যাদের সংস্পর্শে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি তারা হলেন আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী।কথায় বলে পিতামাতা জন্মদাতা আর শিক্ষক হলেন জ্ঞানদাতা ।এদেশে একসময় মক্তব মাদরাসায় ছোট বাচ্চারা পড়াশোনা করত। এখন এসব নেই বললেই চলে। যদিও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। ১৯৯০ সালে জাতীয় সংসদে ‘প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক আইন’পাস হয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামোকে শক্তিশালী করা, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ১৯৯২ সালের আগস্টে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ নামে একটি নতুন বিভাগও গঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ৮০,৪০১ টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৩,৬০১ টি। শহর, গ্রাম,চরাঞ্চল, হাওড়,বাওড়, দুর্গম পাহাড়ী এলাকাসহ সব খানেই প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ।দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্

শহিদ বুদ্ধিজীবী ও বর্তমানের মেরুদন্ডহীন বুদ্ধিজীবী সমাজ

১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময় জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়।ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অবদান ছিল অগ্রগন্য। বুদ্ধিজীবীর বিভিন্ন সমার্থক শব্দ প্রচলিত রয়েছে। পণ্ডিত, বিদ্বান টাইপের মানুষ। কার্ল মার্কসের তত্ত্ব এবং গোষ্ঠীভিত্তিক যে শ্রেণিবিশ্লেষণ তা সম্ভবত বুর্জোয়ার সঙ্গে এই intelligentsia-কে এক করে দিয়েছেন।উইকিপিডিয়া মতে, বুদ্ধিজীবীর ইংরেজি প্রতিশব্দ Intellectual. বুদ্ধিজীবী হলেন এমন ব্যক্তি যিনি সমাজ সম্পর্কিত জটিল চিন্তা, গবেষণা ও প্রভাব-বিস্তারে জড়িত থাকেন, সমাজের মূল সমস্যাগুলোর সমাধান ও সমাধানের পদ্ধতির প্রস্তাব দেন, এবং একজন জনপ্রিয় ব্যক্তির স্বীকৃতি অর্জন করেন।বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থে বুদ্ধিজীবীদের যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা হলো, বুদ্ধিজীবী অর্থ লেখক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, কন্ঠশিল্পী, সকল পর্যায়ের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, চলচ্চিত্র ও নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সমাজসেবী ও সংস্কৃতিসেবী। Oxford English

হযরত ইলিয়াস (আ.) এর কাওমের বাআল দেবতার পূজা

ছবি
ইলিয়াস (আ.) একজন নবি ছিলেন । আল্লাহ বলেন, আর নিশ্চয় ইলিয়াস ছিলেন রাসূলদের একজন। (সুরা সাফফাত১২৩)। হযরত ইলিয়াস (আ.) ফিলিস্তীনের পার্শ্ববর্তী জর্ডানের আল আদ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ইলিয়াস (আ.) হারূন (আ.)-এর বংশোদ্ভূত বনি ইসরাইলের প্রতি প্রেরিত একজন নবী ছিলেন। কাতাদা বলেন, ইল্‌ইয়াস ও ইদ্‌রীস একই ব্যক্তি। (তাবারী) অন্যদের নিকট তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সে মতে তিনি ছিলেন, ইলিয়াস ইবনে ফিনহাস ইবনে আইযার ইবনে হারূন ইবনে ইমরান।( ইবন কাসীর)।কুরআনে ইলিয়াস (আ.)এর কথা সুরা আনামের ৮৫ আয়াত ও সুরা সাফফাতের ১৩১,১৪৩ আয়াতে বলা হয়েছে। (সুরা সাফফাতের ১৩০ নং আয়াতে তাকে ইলয়াসীন বলা হয়েছে, অধিকাংশ মুফাস্‌সির বলেন, এটি ইলিয়াসের দ্বিতীয় নাম । যেমন ইবরাহীমের দ্বিতীয় নাম ছিল আব্রাহাম। আর অন্য কোন কোন মুফাসসিরের মতে আরববাসীদের মধ্যে ইবরানী (হিব্রু) ভাষায় শব্দাবলীর বিভিন্ন উচ্চারণের প্রচলন ছিল। যেমন মীকাল ও মীকাইল এবং মীকাইন একই ফেরেশতাকে বলা হতো। এ ই কই ঘটনা ঘটেছে ইলিয়াসের নামের ব্যাপারেও। স্বয়ং কুরআন মজীদে একই পাহাড়কে একবার “তুরে সাইনা” বলা হচ্ছে এবং অন্যত্র বলা হচ্ছে, “তুরে সীনীন” (তাবা

লুত (আ.) এর সমকামী জাতির ওপর আল্লাহর গজব

ছবি
লুত (আ.) আল্লাহ প্রেরিত একজন নবী যাকে সদোম ও গোমোরাহ নামক শহরদ্বয়ের অধিবাসীদের নিকট নবী হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছিল । লুত (আ.) জাতির বসবাস ছিল বর্তমানে যে এলাকাটিকে ট্রান্স জর্দান বলা হয় সেখানেই । ইরাক ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী স্থানে এ এলাকাটি অবস্থিত।কিন্তু আজ এ জাতির নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এমনকি তাদের জনপদগুলো কোথায় কোথায় অবস্থিত ছিল তাও আজ সঠিকভাবে জানা যায় না। মৃত সাগরই তাদের একমাত্র স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে টিকে আছে। এই অঞ্চলটি জর্ডান ও (প্যালেষ্টাইনের) বায়তুল মুক্বাদ্দাসের মধ্যস্থলে অবস্থিত ছিল যাকে সাদুম বলা হয়। বাইবেলেও এ জাতির কেন্দ্রীয় স্থান সাদুম বলা হয়েছে । এ ভূখন্ড ছিল শস্য-শ্যামল। এখানে সর্বপ্রকার শস্যাদি এবং ফল-মূলের প্রাচুর্য ছিল। কুরআনুল করীম বিভিন্ন স্থানে এদের সমষ্টিকে মুতাফিকা ও মুতাফিকাত শব্দে বর্ণনা করেছে। আল্লাহ বলেন, তিনি উৎপাটিত (মুতাফিকা) আবাস ভূমিকে উল্টিয়ে দিয়েছিলেন। (আন নাজম আয়াত- ৫৩)। মুতাফিকাতবাসী (বিধ্বস্ত জনপদের অধিবাসী) লুত (আ.) -এর সম্প্রদায় যাদের জনপদের নাম ছিল সাদুম। মুতাফিকাত এর অর্থ হল, উল্টো-পাল্টাকৃত। এদের উপরে প্রথমতঃ

কুরআনে বর্ণিত আদ জাতির ওপর আল্লাহর গজব

ছবি
আদ আরবের প্রাথমিক যুগের একটি জাতি।আদ গোত্রকে আমালিকা গোত্রও বলা হয়। । আদ জাতি ও সামুদ জাতি ছিল নূহ-এর পরবর্তী বংশধর এবং নূহের পঞ্চম অথবা অষ্টম অধস্তন পুরুষ।আদ ছিল আরবের প্রাচীনতম জাতি। আদ প্রকৃতপক্ষে নূহ (আ) এর পুত্র সামের বংশধরের এক ব্যক্তির নাম। তার বংশধর ও গোটা সম্প্রদায় আদ নামে পরিচিত। কুরআনুল কারীমে আদের সাথে কোথাও আদে উলা বা প্রথম আদ এবং কোথাও আদ ইরাম শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, আদ সম্প্রদায়কে ইরামও বলা হয় এবং প্রথম আদের বিপরীতে কোন আদে ছানি বা দ্বিতীয় আদও রয়েছে। এ সম্পর্কে তাফসীরবিদ ও ইতিহাসবিদদের উক্তি বিভিন্ন রূপ। অধিক প্রসিদ্ধ উক্তি এই যে, দ্বিতীয় আদ হলো সামুদ জাতি। এ বক্তব্যের সারমর্ম এই যে, আদ ও সামুদ উভয়ই ইরামের দুশাখা। এক শাখাকে প্রথম আদ এবং অপর শাখাকে সামুদ অথবা দ্বিতীয় আদ বলা হয়। ইরাম শব্দটি আদ ও সামুদ উভয়ের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। (তাফসীর ইবন কাসীর; আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া)। খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক দুই হাজার বছর আগে ইয়েমেনের হাজরামাউত অঞ্চলে তাদের বসবাস ছিল বলে অনুমান করা হয়ে থাকে। কুরআনের বর্ণনা মতে এ জাতিটির আবাসস্থল ছিল আহকাফ এলাকা। এ এলা