পোস্টগুলি

ইয়ারমুকের যুদ্ধ

ছবি
৬৩৬ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে ইয়ারমুকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।ইয়ারমুক সিরিয়ার এক নদীর নাম। বর্তমানে এই নদী সিরিয়া, জর্দান এবং ইসরাইলের মধ্যে প্রবাহিত। ইয়ারমুকের যুদ্ধ খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী এবং খুলাফায়ে রাশেদুনের বাহিনীর মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ। হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা:-এর খেলাফতের শেষ এবং হজরত ওমর রা:-এর খেলাফতের শুরুতে। রাসূল সা:-এর ইন্তেকালের পর ইয়ারমুকের যুদ্ধই ছিল মুসলমানদের জন্য বড় বিজয়। এই যুদ্ধে মুসলমানদের নেতৃত্বে ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ এবং বাইজেন্টাইনদের পক্ষে সম্রাট হেরাক্লিয়াস। আনুমানিক ২৪,০০০-৪০,০০০ সৈন্য নিয়ে খালিদ ইয়ারমুকের প্রান্তরে হাজির হন।প্রাথমিক মুসলিম সূত্রানুযায়ী, বাইজান্টাইন সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লাখ। প্রাথমিক রোমান সূত্রানুযায়ী সেই সংখ্যা প্রায় ১,৪০,০০০ জন। কিন্তু আধুনিক হিসাব অনুযায়ী বাইজান্টাইনরা প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ সৈন্য নিয়ে ইয়ারমুক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। সে যা-ই হোক, বাইজান্টাইনদের সৈন্যসংখ্যা মুসলিম বাহিনীর থেকে যে অনেক বেশি ছিল তাতে সকল সূত্রই একমত। ইয়ারমুকের যুদ্ধ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক যুদ্ধ। ছয় দিনের এই ...

নও মুসলিম তাকাজাওয়া

ছবি
তাকাজাওয়া আপনি কি জানেন যে ইসলাম অন্যান্য দেশের মত জাপানেও দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম? জাপানে গত এক দশকে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে মসজিদের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মধ্যে জাপানে ইসলাম সব থেকে দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করার খেতাবপ্রাপ্ত। জাপানের ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটির টানাডা হিরোফুমির এক জরিপ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১০ হাজার। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষের দিকে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৩০ হাজারে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তাকাজাওয়া, তিনি জাপানের সবচেয়ে বিখ্যাত ট্যাটু শিল্পীদের মধ্যে একজন ছিলেন এবং শীর্ষ অভিনেতা, সেলিব্রিটি এবং এমনকি জাপানি ইয়াকুজা মাফিয়ার কর্তাদের সাথে কাজ করছিলেন। ২০০৬ সালে, টোকিওর একটি রাস্তায় হাঁটার সময়, শায়খ নি'মাতুল্লা খলিল ইব্রাহিমের সাথে তাঁর দেখা হয়। যিনি ওসমানীয় সুলতান 'আব্দুল হামিদ' এর যুগের পণ্ডিতদের অধীনে অধ্যয়ন করেছিলেন। সেই সময় শায়খ নি'মাতুল্লা খলিল ইব্রাহিম তাঁকে ইসলাম ধর্মে আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি পত্র দেন। তাকাজাওয়া পত...

মানবদেহ ৩৬০টি অস্থিসন্ধি

ছবি
১৯৯৫ সালের পূর্বে বৈজ্ঞানিক মহলে চিন্তা করা হত, মানবদেহ মোট ৩৪০টি অস্থিসন্ধির সমন্বয়ে গঠিত। কিন্তু ১৯৯৫ সালে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রমাণ করে, মানুষের উভয় কানের প্রতিটিতেই দশটি করে অস্থিসন্ধি রয়েছে। এর মাধ্যমে পূর্বের ৩৪০টি অস্থিসন্ধির ধারণার সাথে আরো বিশটি অস্থিসন্ধি যুক্ত হয় এবং প্রমাণিত হয়, মানবদেহ মোট ৩৬০টি অস্থিসন্ধির সমন্বয়ে গঠিত। ১৪০০ বছর পূর্বে রাসূল (সা.) নির্ভুলভাবে মানুষের শরীরের অস্থিসন্ধির সংখ্যার বিবরণ দিয়েছেন। হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী (রহঃ) ..... আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক আদম সন্তানকেই ৩৬০টি গ্রন্থি বিশিষ্ট করে সৃষ্টি করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি ঐ সংখ্যা পরিমাণ আল্লা-হু আকবার বলবে, আলহামদু লিল্লাহ’ বলবে, লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলবে, সুবহা-নাল্ল-হ’ বলবে, আসতাগফিরুল্ল-হ’ বলবে, মানুষের চলার পথ থেকে একটি পাথর বা একটি কাটা বা একটি হাড় সরাবে, সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে, সে কিয়ামতের দিন এমনভাবে চলাফেরা করবে যে, সে নিজেকে ৩৬০ (গ্রন্থি) সংখ্যা পরিমাণ জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে অর্থা...

জাপানে মুসলিম

ছবি
  এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র জাপান। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে জাপান সাগর, পূর্ব চীন সাগর, চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার পূর্ব দিকে উত্তরে ও খোত্স্ক সাগর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব চীন সাগর ও তাইওয়ান পর্যন্ত প্রসারিত। যে কাঞ্জি অনুসারে জাপানের নামটি এসেছে, সেটির অর্থ ‘সূর্য উৎস। জাপানকে প্রায়ই ‘উদীয়মান সূর্যের দেশ’ বলে অভিহিত করা হয়।জাপানের বৃহত্তম চারটি দ্বীপ হল হোনশু, হোক্কাইদো, ক্যুশু ও শিকোকু। এই চারটি দ্বীপ জাপানের মোট ভূখণ্ডের ৯৭% এলাকা নিয়ে গঠিত। জাপানের জনসংখ্যা ১২৬ মিলিয়ন। জনসংখ্যার হিসেবে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৯.১ মিলিয়ন। জাপানের প্রধান দুইটি ধর্ম হলো শিন্তো ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম।অষ্টম শতকে চীনা মুসলিমদের সংস্পর্শে জাপানিরা সর্বপ্রথম ইসলামে দীক্ষিত হন। মেইজি শাসনামলে (১৮৬৮-১৮৯০) জাপানিরা অটোম্যান সাম্রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর থেকে মুসলিমরা জাপানে যাতায়াত করেন এবং জাপানিরা ইসলামের সান্নিধ্যে আসতে শুরু করেন।রুশ বিপ্লবের পর রাশিয়া থেকে কয়েকশ তুর্কি মুসলিম অভিবাসী ১৯২০-র দশকে জাপানে পাড়ি জমায়। ১৯৩০ স...

হযরত আবু বকরের (রা.) ওফাত

ছবি
রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের পর আবু বকর ( রা) ৬৩২ সালে প্রথম খলিফা নির্বাচিত হন।তিনি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন বিভিন্ন গোত্র ইসলামি আদর্শ থেকে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহগুলো ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক। হযরত আবু বকর বিদ্রোহকে প্রজ্ঞা ও কোমলতার সাথে দমন করেন এবং এভাবে মুসলিম সংহতি ও বন্ধন সুদূর করেন। তিনি বিদ্রোহীদের সামরিকভাবে মোকাবিলা করেছিলেন এবং যারা ফিরে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিশোধ নেননি। আবু বকরের খিলাফত ২৭ মাস অর্থাৎ দুই বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী ছিল। এ সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তাকে বেশ কিছু অস্থিতিশীলতার সম্মুখীন হতে হয় এবং তিনি তা সফলভাবে মোকাবিলা করেন। ভন্ডনবি দাবিকারী বিদ্রোহীদের তিনি রিদ্দার যুদ্ধে দমন করেন তাঁর শাসনামলের শেষ মাসগুলোতে সিরিয়া ও পারস্যেও অভিযান পাঠানো হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর, এই অভিযানগুলো তাঁর উত্তরসূরিদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, বিশেষ করে দ্বিতীয় খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব, যার শাসনামলে মুসলিম বাহিনী যথাক্রমে কাদেসিয়া এবং ইয়ারমুকের যুদ্ধে শক্তিশালী পারসিক এবং বাইজেন্টাইনদের পরাজিত করেছিল। এর ধারাবাহিকতায় ক...

বিসমিল্লায় গলদ

হরহামেশাই আমরা 'বিসমিল্লায় গলদ’ বাগধারাটি ব্যবহার করে থাকি। যার অর্থ হচ্ছে, শুরুতেই ভুল, সূচনাতে গন্ডগোল। বাগধারাটির অর্থ যাই হোক, পাঠক বা পাঠিকা একটু ভাবুনতো, আপনি কী বলছেন? আপনি বলছেন বিসমিল্লায় গলদ। ইসলামে বিসমিল্লাহর গুরুত্ব কতো গভীর অর্থবহ ও বরকতময় তা প্রত্যেক মুমিন জানেন। পবিত্র কোরআনে একটি মাত্র সূরা ছাড়া প্রত্যেক সূরার শুরুতে স্বয়ং আল্লাহপাক বিসমিল্লাহ ব্যবহার করেছেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবনে যতো কাজ করেছেন, সব কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ ব্যবহার করেছেন। বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করলে আল্লাহ সে কাজে বরকত দেন। কাজের জটিলতা দূর করে দেন। এই বরকতময় বিসমিল্লাহতে কেমন করে গলদ থাকতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। বিসমিল্লাহতে যদি গলদ থাকে তাহলে শুদ্ধ কোথায় পাওয়া যাবে? ‘বিসমিল্লায় গলদ’ বাগধারাটির বিকল্প বাগধারা হলো গোড়ায় গলদ। জাহেলি যুগে লোকদের অভ্যাস ছিল সব কাজ তাদের দেব-দেবীর নামে শুরু করা। এ চেতনা রহিত করার জন্যই ‘বিসমিল্লাহ’ চালু হয়। ইসলামের সূচনাকালে প্রিয় নবী (সা.) সব কাজ ‘বি-ইসমিকা আল্লাহুম্মা’ বলে শুরু করতেন এবং লেখাতেন। কিন্তু ‘বিসমিল্লাহ’ নাজিল হওয়ায় সব কা...

হযরত খুবাইব ইবনে আদি (রা.)

ছবি
  মক্কার মুশরিকদের অত্যাচার যখন বেড়েই চলেছিল তখন আল্লাহ তা'আলার নির্দেশে নবীজী (সাঃ) মদীনায় হিজরত করেন। দুনিয়া থেকে ইসলামকে চিরতরে মুছে দিতে মক্কার মুশরিকরা সব ধরনের পরিকল্পনা করেও ব্যর্থ হয়। তাদের এ প্রচেষ্টা হিজরতের পরেও চলমান ছিল। দ্বিতীয় হিজরীতে ইতিহাসের এক নজিরবিহীন অসম যুদ্ধের অবতারণা হয় বদরের প্রান্তরে। গুটিকয়েক মুসলমানদের একটি বাহিনীর হাতে নাস্তানাবুদ হয় মুশরিকদের বিশাল বাহিনী। উহুদের যুদ্ধেও তেমন সুবিধা করতে না পেরে এবার তারা চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম মক্কার উপকণ্ঠে একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করলেন মুশরিকদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম দশ বা বরোজনেরজনের একটি দল অনুসন্ধানের জন্য তৈরি করলেন। তাদের নেতৃত্বের ভার অর্পিত হয় আসেম ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর উপর। তাদের মধ্যেই একজন খুবাইব ইবনে আদি রাদিয়াল্লাহু আনহু। তারা মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং মক্কার উপকণ্ঠে রাজি নামক একটি ঝর্ণার কাছে পৌঁছানো। এমন সময়ই কিছু লোক তাদের দেখে ফেলে এবং গোপনে হুজাইন গোত্রের একটি শাখা বনু লেহি...