পোস্টগুলি

হোসাইনের কুফা গমন

ছবি
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) ২০ বছর খলিফা হিসাবে রাষ্ট্র পরিচালনার পর হিজরি ৬০ সালে ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের পর ইয়াজিদ অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। ইয়াজিদ ছিল নিষ্ঠুর, মদ্যপ ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক। এ কারণে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ তাকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। মদিনা ও কুফার জনগণ ইমাম হোসাইন (রা.)-কে খলিফা হিসাবে দেখতে চেয়েছে। এরই মধ্যে এক সময় কুফার লক্ষাধিক মানুষ ইমাম হোসাইন (রা.)-কে প্রায় দেড়শো পত্র প্রেরণ করেন। এ পত্রে তারা দাবি জানান, সুন্নাহ পুনর্জীবিত এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে অবিলম্বে তার দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রয়োজন। কুফাবাসীর ডাকে সাড়া দিয়ে হজরত হোসাইন (রা.) তার চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকিলকে ইরাকের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠান। আর বলে দেন, যদি সে পরিস্থিতি অনুকূল দেখে এবং ইরাকবাসীর অন্তর সুদৃঢ় ও সুসংহত মনে হয়, তাহলে যেন তার কাছে দূত প্রেরণ করে। মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে ১৮ হাজার কুফাবাসী তার কাছে এসে ইমাম হোসাইনের পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ করে এবং তারা শপথ করে বলে, অবশ্যই আমরা জানমাল দিয়ে ইমাম হোসাইনকে সাহায্য করব। তখন মুসলিম ইবনে আকিল ইমাম হ...

আল্লাহর ওলির দু-পা কবরের বাইরে

ছবি
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে একজন শায়খকে দাফন করা হয়। তাঁর নাম শায়খ মুহাম্মাদ আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ)। তাঁর পা তাঁর কবরের বাইরে রয়েছে এবং এটি ভালভাবে সংরক্ষিত।দামেস্কে দুই দল লোকের মধ্যে আউলিয়া নিয়ে বিরোধের কারণে তার পা কবরের বাইরে বের হয়ে আসে। একবার দুদল লোক শায়খের কাছে গেল জিজ্ঞেস করতে তাদের মধ্যে কোন দল সঠিক আর কোন দল ভুল পথে। কিন্তু শায়খ একদিন সময় নিয়ে তাদের পরের দিন আসতে বলেন। পরের দিন গিয়ে তারা জানতে পারলেন শায়খ মারা গেছেন। তারা শায়খের কবরের কাছে গেল এবং বলল: "শায়খ, আপনি বলেছিলেন যে আপনি এই সমস্যাটি সমাধান করবেন" তারা এই কথা বলার সাথে সাথেই শায়খের পা তার কবর থেকে বেরিয়ে আসে। তখন কেউ একজন বলল- “আমরা জানি না কুর্দিদের মধ্যে আল্লাহর কোন ওলি (আল্লাহর বন্ধু) হয়েছে কি না”, যখন তিনি এ কথা বললেন, তখন কবর থেকে আওয়াজ এলো: “আমি কুর্দি, আমি একজন ওলি। আল্লাহর জন্য এবং আমি আমার কবর থেকে আমার পা বের করে নিয়েছি; এটাই অবশ্যই যথেষ্ট প্রমাণ হবে যে আমি আল্লাহর একজন ওলি।" হাজার হাজার মানুষ দামেস্কে এই কেরামতি প্রত্যক্ষ করেছিল । তাঁর ইন্তেকালের ৮০০ বছর হয়ে গে...

টিপু সুলতান প্রথম রকেট আবিষ্কারক

ছবি
  টিপু সুলতান ছিলেন ভারতের প্রথম অন্যায়ের বিরুদ্ধে শহিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী শাসক। অষ্টাদশ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে শের-ই-মহীশূর বা মহীশূরের বাঘ নামে আখ্যায়িত হোন কেননা তিনি ইংরেজদের কাছে স্বাধীনতার মূর্তিমান প্রতীক ছিলেন যা কিনা তাদের আতংকের বড়ো একটি কারণ ছিলো। টিপু সুলতানকে আধুনিক রকেটের স্থপতি বলা যায়। সেসময়ের পৃথিবীতে রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ইউরোপে নয়, ছিল আমাদের ভারতবর্ষে, দক্ষিণ ভারতের মহীশুরে। ১৭৯৯ সালে তুরুখানাল্লির যুদ্ধে নিহত হন টিপু সুলতান। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি লড়ে গেছেন সত্যিকারের বীরের মতো। আত্মসমর্পণ না করে তিনি বেছে নিয়েছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদি মৃত্যুকেই। সার্থক করেছেন তার সেই বিখ্যাত উক্তিকে “শিয়ালের মতো শত বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের ন্যায় একদিনের জীবন উত্তম” এ যুদ্ধে মহীশুরের হারের পর ব্রিটিশরা হাতে পেয়ে যায় প্রায় ৭০০ রকেট এবং ৯০০ রকেটের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ। টিপুর এ রকেট নিয়ে ইংরেজদের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এ রকেটগুলোকে উইলিয়াম কনগ্রেভ ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিঙের মাধ্যমে এর কৌশল আয়ত্ত করে তারা। পর...

অক্ষত দুই সাহাবির লাশ

ছবি
ছবিটি ১৯৩০ সালের। ইরাকে দুজন সাহাবি হযরত হুজাইফা ইবনে আল-ইয়ামান এবং হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ আনসারী (রা.)-এর দেহ মোবারক কবর থেকে উত্তোলনের সময়ের দৃশ্য। ইরাকের বাদশাহ ফয়সাল স্বপ্নে এক বুজুর্গকে দেখতে পান। তিনি নিজেকে হুজাইফা ইবনে ইয়ামান (রা.) বলে পরিচয় দেন এবং বলেন যে, তার মাজারে নদীর পানি এসে গেছে এবং হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ আনসারী (রা.)-এর মাজারেও আর্দ্রতা এসে গেছে। তাই তাঁদের দুজনকে সেখান থেকে সরানো হোক। বাদশাহ লাগাতার তিন রাত একই স্বপ্ন দেখেন। এতে তিনি দারুণ হতভম্ব হয়ে পড়েন। মুফতিয়ে আজম কবরদ্বয় সরানোর পক্ষে ফতোয়া দান করেন, যা শাহী ফরমান হিসেবে প্রচার করে দেওয়া হয়।লাশ উত্তোলনের দিন আগত মুসলিম-অমুসলিমের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ-ছয় লাখ। এ বিশাল জনস্রোতের উপস্থিতিতে কবর দুটি খোলা হয়। কবরদ্বয় খোলার পর দেখা যায়, দুই সাহাবির লাশ অক্ষত অবস্থায় বিদ্যমান। তাদের দেহ-কাফনে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি, মনে হচ্ছিল যেন কিছুক্ষণ আগে তাদের দাফন করা হয়েছে।আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, শতশত বছর পেরিয়ে গেলেও শুধু দেহ মোবারকই নয়, কাফন বাধার ফিতাগুলোর মধ্যেও কোন প্রকারের পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে নি। দেহ-দুটিকে দেখে ...

কুকুরের প্রভুভক্তি

ছবি
  কুকুর স্বভাবসুলভ প্রভুভক্ত। এ কথা কারও অজানা থাকার কথা নয়। কুকুরের প্রভুভক্তির অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। মালিক না থাকলে বাড়ি পাহারা দেওয়া, অচেনা কাউকে দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়া কিংবা বাড়ির প্রিয় কেউ অসুস্থ হলে ছোটাছুটি করা- কুকুরের এমন আচরণের কথা প্রায়ই শোনা যায়। এক লোক তার পোষা কুকুরকে রেখে মারা গেল।পরবর্তীতে লোকটির ছেলে কুকুরটিকে খুঁজে পেল না।কুকুরটি নিখোঁজ... কয়েকদিন পর, কবরস্থান কর্তৃপক্ষ ছেলেটিকে জানায় যে, একটি কুকুর তার বাবার কবরে গর্ত খুঁড়েছে! ছেলে কবরস্থানে গেল। সেখানে তার বাবার কবরের পাশে কুকুরটিকে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে গেল। দু'দিন পরে কুকুরটি আবার পালিয়ে গেল। বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে তার বাবার কবরের পাশে কুকুরটিকে রেখে যেতে হয়েছিল। এরপর ছেলেটি প্রতিদিন কুকুরকে খাবার এবং পানি দিয়ে আসতো। কিন্তু কুকুরটি কোনো কিছুই মুখে নিত না এমনকি কাউকে কবরের কাছে ভিড়তেও দিত না। দিনদিন না খেয়ে কুকুরটি দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।কুকুরটি তার মালিকের কবরে মারা যাওয়ার আগে এক সপ্তাহ বেঁচে ছিল... কুকুর থেকে বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে বিরত থাকতে বললেও তাকে কষ্ট দেয়ার কথা বলা হইনি বরং কুকুরের সেবা করার মাধ্যমে জান...

অনুমান পরিহার

  মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের হত্যাকারীকে বিচারক প্রশ্ন করেন, তুমি সাদাতকে কেন হত্যা করলে? হত্যাকারী বলল, "কারণ সে ধর্মনিরপেক্ষ!" বিচারক উত্তর দিলেন: "ধর্মনিরপেক্ষ মানে কি?" হত্যাকারী বললঃ আমি জানি না! প্রয়াত মিশরীয় লেখক নাগিব মাহফুজকে হত্যার চেষ্টার মামলায় বিচারক নাগিব মাহফুজকে ছুরিকাঘাতকারী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেছিল, "কেন তুমি তাঁকে ছুরিকাঘাত করলে?" অপরাধী বলল: "তার উপন্যাসের কারণে। বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করল: "তুমি কি তাঁর কোনো উপন্যাস পড়েছ?" অপরাধী বললঃ না! আরেক বিচারক মিশরীয় লেখক 'ফারাজ ফারা'কে হত্যাকারী অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসা করেছিল: "তুমি ফারাজকে কেন হত্যা করলে?" অভিযুক্ত উত্তর দিল: "কারণ সে অবিশ্বাসী!" বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: "তুমি কিভাবে জানলে যে সে অবিশ্বাসী?" অভিযুক্ত উত্তর দিল: "যে বইগুলো সে লিখেছে সে অনুযায়ী।" বিচারক বললেন: "তাঁর কোন বইতে আপনি জানেন যে তিনি অবিশ্বাসী?" অভিযুক্ত: "আমি তার বই পড়িনি!" বিচারক: "কেন?" অভিযুক্ত উত্...

রাসুলের দেহ মোবারক চুরির চেষ্টা

  তুরস্কের জেনগি রাজবংশের শেষ শাসক, বায়তুল মুকাদ্দাসের পুন:উদ্ধারের স্বপ্নদ্রষ্টা, নূরউদ্দিন আবুল কাসিম মাহমুদ ইবনে ইমাদউদ্দিন জেনগি (ফেব্রুয়ারি ১১১৮ – ১৫ মে ১১৭৪) ছিলেন তুর্কি বংশোদ্ভূত জেনগি রাজবংশীয় শাসক। ১১৪৬ থেকে ১১৭৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সেলজুক সাম্রাজ্যের সিরিয়া প্রদেশ শাসন করেছেন। তিনি ১১৪৬ থেকে ১১৭৪ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তাঁকে দ্বিতীয় ক্রুসেডের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে গণ্য করা হয়। সুলতান মাহমুদ জেনগি স্বপ্নে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছিলেন, রাসুলুল্লাহ ( সা) স্বপ্নে তাঁকে দুজন লোক দেখিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুলতানকে তাদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার নির্দেশ দিলেন। তারপর সুলতান দ্বিতীয় রাতে এবং তৃতীয় রাতে ঠিক একই স্বপ্ন দেখেন। তিনি বিচলিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে এক বাহিনীসহ দ্রুত মদীনায় পৌঁছেন। তিনি মদীনা মনোয়ারার অধিবাসীদের ডেকে পাঠান। কিন্তু মদিনাবাসিদের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় দু'জন 'ধার্মিক ব্যক্তি' অনুপস্থিত। ইবাদত ও দান-খয়রাতেই তারা দিন-রাত অতিবাহিত করেন। সুলতান তাদের বাড়িতে প্রবেশ করলেন এবং দেখ...