পোস্টগুলি

পম্পেই নগরী

ছবি
পম্পেই নগরী হল একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত রোমান ছোট নগর বা শহর; ইতালির কাম্পানিয়া অঞ্চলের আধুনিক নেপলসের (নাপোলি) কাছে পম্পেই ইউনিয়নে এর অবস্থান। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস পর্বতের আগ্নেয়গিরির দুই দিনব্যাপী সর্বনাশা অগ্নুৎপাতে পম্পেই নগরী সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি ধ্বংস করেছি কত জনপদ, যার অধিবাসীরা ছিল জালিম (পাপাচারী) এবং তাদের পরে সৃষ্টি করেছি অন্য জাতি।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ১১) সেই সব অনুল্লিখিত জাতি ও জনপদের একটি ইতালির পম্পেই নগরী। পৃথিবীর প্রাচীনতম অভিজাত জনপদগুলোর একটি ছিল এই পম্পেই নগরী। সে সময় প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি ছিল নগরটি। এটি ছিল দুই হাজার বছরের পুরনো একটি অভিজাত শহর। ইতালির তৎকালীন রাজা ওসকান খ্রিস্টপূর্ব ছয় থেকে সাত শতাব্দীর দিকে এই শহরের গোড়াপত্তন করেন। এরপর ইউরোপে সংঘটিত বিভিন্ন পর্যায়ের যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে খ্রিস্টপূর্ব ৮০ শতাব্দীর দিকে এই শহরটিতে রোমান সাম্রাজ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়। আর সেখানে গড়ে ওঠে রোমান সাম্রাজ্যের অন্যতম শিল্পবন্দর। তখন থেকেই রোমানরা সেখানে বসবাস শুরু করে। ক্রমান্বয়ে সেটি হয়ে ওঠে সমকালীন...

শুধু বাঙালিরা কী হুজুগে?

ছবি
আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন এবং আগে পরে ঘটে গেল অদ্ভুদ সব কান্ড। এসব ঘটনা ঘটাতে আমরাই কী শুধু হুজুগে? হুজুগের চেয়ে এখানে আমাদের আবেগ ছিল প্রবল ও কল্পনাতীত। ছবিতে দেখছেন গোল্ডেন গেট ব্রিজ যা সোনালি দুয়ার হিসেবে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের স্যানফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় বস্তু। এই ব্রিজকে সানফ্রান্সিস্কোতে একতা আইকন প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এটা তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত লোকজন বিশ্বাস করত না যে এরকম ব্রিজ হবে। ১৯১৬ সালে ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে এই সেতুটির প্রতি মনোযোগ দিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সেতুটি নির্মাণের অনুমতি দেয়। নানারকম সমস্যা কাটিয়ে প্রায় বাইশ বছর ধরে এর নির্মাণ কাজ চলে। সেতুটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ২৭ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৩৭ সালে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভল্টে উদ্বোধন করেন। ২৭ মে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। উদ্বোধনের দিন জনগণের উপচে পড়া ভিড়। দ্বিতীয় ছবিতে ব্রিজের ৫০ বছর পূর্তিতেও ছিল হুজুগে আমেরিকানরা। আসুন কানে কানে একটা খ...

আলোকবিজ্ঞানের জনক ইবনে আল হাইথাম

ছবি
আবু আলি আল হাসান ইবনে আল হাসান ইবনে আল হাইথাম বা সংক্ষেপে ইবনে আল হাইথাম, ৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের বসরা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।তাকে পশ্চিমারা ‘আল হাজেন’ বলে ডাকে। আবার তার জন্মভূমির নাম বসরা অনুসারে তাকে কখনো ‘আল বসরি’ নামেও ডাকা হয়। এছাড়াও আল-হায়থামকে ফরাসি ইতিহাসবিদ আবু'ল-হাসান বায়হাকি দ্বিতীয় টলেমি এবং জন পেকহ্যামের দ্য ফিজিসিস্ট নামে অভিহিত করেন। তাকে বলা হয় আলোকবিজ্ঞানের জনক। ইবনে আল-হায়থাম ছিলেন যিনি দর্শনানুভূতির ব্যাখ্যার সর্বপ্রথম প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন, যে 'আলো কোন বস্তু হইতে প্রতিফলিত হয়ে চোখে আসে বলেই সেই বস্তুটি দৃশ্যমান হয়'।এছাড়াও তিনিই প্রথম যিনি এটাও দেখিয়ে ছিলেন, দর্শনানুভূতির কেন্দ্র চোখে নয়, বরং মস্তিষ্কে। এর বাইরেও তার ছোট-বড় অবদান রয়েছে অ্যানাটমি বা অঙ্গব্যবচ্ছেদবিজ্ঞান, জোতির্বিজ্ঞান, গণিত, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশলবিদ্যা, পদার্থবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, দর্শন এবং সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক গবেষণার পদ্ধতিগত উন্নয়নে। ইবনে আল হাইথাম পিনহোল ক্যামেরা নামে একটি ক্যামেরা তৈরি করেছিলেন, যাকে পৃথিবীর প্রথম ক্যামেরা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটি ছিল আলো নি...

সম্রাট হুমায়ুন ও তাঁর লাইব্রেরি

ছবি
ছবির ঘরটি সম্রাট হুমায়ুন লাইব্রেরি এটি ছিল মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার। শত বছর পেরিয়েও আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এই গ্রন্থাগার। বলা হয়ে থাকে এটি সম্রাট হুমায়ুনের জ্ঞান চর্চার বাতিঘর। ভারতে এটি হুমায়ুন লাইব্রেরি হিসেবে পরিচিত। লাইব্রেরির নির্মাণ ও স্থাপত্যশৈলী অনেক দৃষ্টিনন্দন। এটি অষ্টভুজাকৃতির নির্মাণ শিল্প। দিন শেষে অস্তমিত যাওয়া সূর্যের রোদ লাল বেলেপাথর থেকে খুব সুন্দরভাবে অবলোকন করা যায়। ভারতের দিল্লির পুরান কেল্লার ভেতরে এই লাইব্রেরির অবস্থান। সম্রাট হুমায়ুন না থাকলেও আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তার জ্ঞান চর্চার বাতিঘর হুমায়ুন লাইব্রেরি। যদিও এর নির্মাণ আদেশ সম্রাট বাবরের সময় হয়েছিলো, কিন্তু হঠাৎ মৃত্যুর জন্য সম্রাট বাবরের জীবদ্দশায় এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। সম্রাট হুমায়ুন শের শাহের কাছে পরাজিত হলে দুর্গের দখল চলে যায় শের শাহের কাছে, ফলে এর নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে যায়। দ্বিতীয়বার হিন্দুস্তানের সম্রাট হওয়ার পর সম্রাট হুমায়ুন এর নির্মাণ কাজ শেষ করান। শের শাহের সম্মানে স্থাপনাটির নামকরণ করা হয় 'শের মণ্ডল'। সম্রাট হুমায়ুন এই স্থাপনাটি তার ব্যক্তিগত প...

মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক

ছবি
মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক বা মিশরীয় চিত্রলিপি। ইংরেজি: Hieroglyphic বা বহুবচনে মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক্স হলো মিশরীয় লিপিবিশেষ। প্রাচীন মিশরে তিন ধরনের লিপি প্রচলিত ছিলো: হায়ারোগ্লিফিক (মিশরীয়), হায়রাটিক এবং ডেমোটিক। তিনটি লিপির নামই গ্রিকদের দেয়া। হায়ারোগ্লিফিক লিপির প্রতীককে বলা হয় "হায়ারোগ্লিফ"।গ্রিক "হায়ারোগ্লিফ" শব্দের অর্থ 'উৎকীর্ণ পবিত্র চিহ্ন'। গ্রিকরা যখন মিশর অধিকার করে তখন তাদের ধারণা হয় যে, যেহেতু পুরোহিতরা লিপিকরের দায়িত্ব পালন করেন, আর মন্দিরের গায়ে এই লিপি খোদাই করা রয়েছে,এই লিপি নিশ্চয়ই ধর্মীয়ভাবে কোনো পবিত্র লিপি।গ্রিক 'হায়ারোগ্লুফিকোস' থেকে পরবর্তি ল্যাটিন 'হায়ারোগ্লিফিকাস' হয়ে ফরাসি 'হায়রোগ্লিফিক' থেকে ইংরেজি 'হায়ারোগ্লিফিক' শব্দটি এসেছে। গ্রিক উপসর্গ 'হায়ারোস' অর্থ 'পবিত্র', আর 'গ্লুফি' অর্থ 'খোদাই করা লেখা। ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে নেপোলিয়ন মিশর আক্রমণ করেন এবং ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তার সৈন্যরা বিখ্যাত রোসেটা কৃষ্ণশিলাপট উদ্ধার করেন। রোসেটা কৃষ্ণশিলাপট আসলে একটি শিলালিপ...

আহমদ শাহ দুররানি

ছবি
  আফগানিস্তানের ইতিহাসে আহমদ শাহ দুররানি আহমদ শাহ আবদালি নামে পিরিচিত। আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাকে সম্মান করা হয়। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন পারস্যরাজ (ইয়ানরাজ) নাদির শাহের সেনাপতি এবং পরবর্তীকালে প্রতিভাবলে তিনি আফগানিস্তানের রাজা হন। ১৭৪৭-১৭৭২ সালে তিনি স্বাধীন রাজা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি আটবার ভারত আক্রমণ করেন। ১৭৫৬ সালে তিনি পাঞ্জাব, কাশ্মির, সিন্ধু প্রভৃতি মুঘল এলাকা দখল করেন। পুত্র তাইমুরকে তিনি এসব এলাকার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। পরে অরাজকতা দেখা দিলে মারাঠারা তাইমুরকে বিতাড়িত করে দখল করে নেয় লাহোর। এতে নেতৃত্ব দেন রঘুনাথ রাও। পরে আহমদ শাহ আবদালি আবার ভারত আক্রমণ করেন এবং পাঞ্জাবে দখলদারিত্ব কায়েম করেন। ১৭৬১ সালে তিনি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে বিশাল মারাঠা বাহিনীকে হারিয়ে দেন। দুররানি বংশ ও দুররানি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। অনেক মুঘল এলাকা দখল করলেও তিনি দ্বিতীয় শাহ আলমকে ভারতের সম্রাট বলে গণ্য করতেন। আফগানদের কাছে এখনো তিনি স্মরণীয় ও বরণীয়। আহমদ শাহ আবদালী ১৬ আক্টোবর, ১৭৭২ সালে কান্দাহার প্রদেশে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে কান্দাহার শহরের কেন্দ...

সুলতান শাহ জাহান বেগম

ছবি
ভোপাল রাজ্য আঠার শতাব্দীর ভারতবর্ষে একটি রাষ্ট্র ছিল, ১৮১৮ সাল থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের সাথে সহায়ক রাষ্ট্র এবং ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল। রাজ্যটি ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে মোগল সেনাবাহিনীর পশতুন সৈনিক দোস্ত মোহাম্মদ খান দ্বারা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যিনি সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পরে ভাড়াটে সৈনিক হন এবং তাঁর রাজত্বকে একাধিক অঞ্চল সংযুক্ত করেছিলেন। এটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই এটি ১৭২৩ সালে হায়দরাবাদের নিজামের আধিপত্যের আওতায় আসে। ১৭৩৭ সালে, মারাঠারা মুগল ও ভোপাল নবাবদের ভোপাল যুদ্ধে পরাজিত করে এবং রাষ্ট্র থেকে রাজস্ব সংগ্রহ শুরু করে। তৃতীয় অ্যাংলো-মারাঠা যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজয়ের পরে, ভোপাল ১৮১৮ সালে একটি ব্রিটিশ দেশীয় রাজ্য হয়। ভোপাল রাজ্যটি স্বাধীনতার পূর্বে একজন মুসলিম নেতৃত্বের অধীনে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য ছিল, প্রথমটি ছিলো হায়দরাবাদ রাজ্য । রাজ্যটি ১৯৪৯ সালে ভোপাল হিসাবে ভারতীয় ইউনিয়নে একীভূত হয়। ১৮১৯ থেকে ১৯২৬ এর মধ্যে ভোপাল চারজন মহিলা দ্বারা শাসিত ছিল। এরা বেগম নামে পরিচিত ছিলো। কুদসিয়া বেগম প্রথম মহিলা শাসক ছিলেন, তাঁর উত্তরসূরি তাঁর এ...