মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক
মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক বা মিশরীয় চিত্রলিপি। ইংরেজি: Hieroglyphic বা বহুবচনে মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক্স হলো মিশরীয় লিপিবিশেষ। প্রাচীন মিশরে তিন ধরনের লিপি প্রচলিত ছিলো: হায়ারোগ্লিফিক (মিশরীয়), হায়রাটিক এবং ডেমোটিক। তিনটি লিপির নামই গ্রিকদের দেয়া। হায়ারোগ্লিফিক লিপির প্রতীককে বলা হয় "হায়ারোগ্লিফ"।গ্রিক "হায়ারোগ্লিফ" শব্দের অর্থ 'উৎকীর্ণ পবিত্র চিহ্ন'। গ্রিকরা যখন মিশর অধিকার করে তখন তাদের ধারণা হয় যে, যেহেতু পুরোহিতরা লিপিকরের দায়িত্ব পালন করেন, আর মন্দিরের গায়ে এই লিপি খোদাই করা রয়েছে,এই লিপি নিশ্চয়ই ধর্মীয়ভাবে কোনো পবিত্র লিপি।গ্রিক 'হায়ারোগ্লুফিকোস' থেকে পরবর্তি ল্যাটিন 'হায়ারোগ্লিফিকাস' হয়ে ফরাসি 'হায়রোগ্লিফিক' থেকে ইংরেজি 'হায়ারোগ্লিফিক' শব্দটি এসেছে। গ্রিক উপসর্গ 'হায়ারোস' অর্থ 'পবিত্র', আর 'গ্লুফি' অর্থ 'খোদাই করা লেখা। ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে নেপোলিয়ন মিশর আক্রমণ করেন এবং ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তার সৈন্যরা বিখ্যাত রোসেটা কৃষ্ণশিলাপট উদ্ধার করেন। রোসেটা কৃষ্ণশিলাপট আসলে একটি শিলালিপি। এতে একই সাথে রয়েছে তিনটি স্তর ও তিন স্তরে তিন লিপি: প্রথম স্তরে মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক লিপি, দ্বিতীয় স্তরে হায়রাটিক লিপি, আর তৃতীয় স্তরে গ্রিক লিপি। কিন্তু লেখার ভাষা ছিলো দুটি: মিশরীয় আর গ্রিক ভাষা। টলেমি রাজবংশের রাজা পঞ্চম টলেমি এপিফানেস ১৯৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এক ফরমান জারি করেন, যা মিশরীয় পুরোহিতদের তত্ত্বাবধানে রোসেটা কৃষ্ণশিলাপটে উৎকীর্ণ হয়। এই দ্বিভাষিক ত্রিলিপি অঙ্কিত শিলালিপিটিই খুলে দিয়েছিলো মিশরীয় লিপি ও ভাষা পঠনের দুয়ার।
পরবর্তিতে হায়ারোগ্লিফিক লিপির পাঠোদ্ধার করেন ফরাসি জাঁ ফ্রাঁসোয়া শাঁপোলিয়ঁ এবং ব্রিটিশ পদার্থবিদ টমাস ইয়ং।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন