পোস্টগুলি

একে-৪৭ যে আবিষ্কারে অনুতপ্ত কালাশনিকভ

ছবি
মিখাইল কালাশনিকভ হলেন বিশ্বের সব চাইতে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একে-৪৭ রাইফেলটির জনক। তবে বিপদজনক এই অস্ত্রটি আবিষ্কারের জন্য তিনি শেষকালে প্রচন্ড অনুতপ্ত ছিলেন নিজের প্রতি।২০১৩ সালে মৃত্যুর আগেও তিনি জানতেন, তিনি এমন এক মারণাস্ত্র আবিষ্কার করে গেলেন যা লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির কারণ। কালাশনিকভ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৯ সালের ১০ নভেম্বর, পশ্চিম সাইবেরিয়ায়। জন্মেছিলেন একেবারে সাধারণ কৃষক পরিবারে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নিত্যনতুন উদ্ভাবনের দিকে ঝোঁক ছিল তাঁর। কিশোর বয়সেই প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে। ট্যাংক থেকে গোলা নিক্ষেপের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে সেনাবাহিনীতে তরুণ উদ্ভাবকের স্বীকৃতিও পেয়েছিলেন। ১৯৪১ সালে যুদ্ধে আহত হন তিনি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি এমন একটি অটোমেটিক রাইফেলের নকশা করেছিলেন, যা সব পরিস্থিতিতে টেকসই হবে এবং আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে হবে বিধ্বংসী। প্রায় সাত বছরের পরিশ্রমে তিনি তৈরি করেন একে-৪৭। কালাশনিকভের সেই নকশা করা আগ্নেয়াস্ত্রটিই গত অর্ধশতাব্দীতে সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়ে আছে। রাইফেলটি যখন বানিয়েছিলেন তখন তিনি ভাবতেও পারেননি যে এই নির্দিষ্ট রাইফেলটিই হবে পু...

ইংরেজি নববর্ষের ইতিহাস

  আধুনিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হয় নতুন বছর। ইংরেজি নতুন বছর উদযাপনের ধারণাটি আসে খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে।আবার অনেকের মতে, রোমে নতুন বছর পালনের প্রচলন শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৫৩ সালে। পরে খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দে সম্রাট জুলিয়াস সিজার একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। এটিই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। রোমে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের অন্তর্গত বছরের প্রথম দিনটি জানুস দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। জানুস হলেন প্রবেশপথ বা সূচনার দেবতা। তার নাম অনুসারেই বছরের প্রথম মাসের নাম জানুয়ারি নামকরণ করা হয়। আমরা যাকে ইংরজি ক্যালেন্ডার বলি আদতে এর নাম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। ১৫৮২ খ্রিষ্টাব্দে রোমের পোপ এয়োদশ গ্রেগরি প্রাচীন জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটির সংস্কার সাধন করেন। এই গ্রেগরির নামে এই ক্যালেন্ডার গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত হয়। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখ লেখার শেষে যে AD (Anno Domini)লেখা হয় তা লাতিন অ্যানো ডোমিনি -এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এই অ্যানো ডোমিনির অর্থ আমাদের প্রভুর বছরে(in the year of the Lord) অর্থাৎ খ্রিষ্টাব্দ। ডাইওনিসিয়াম একমিগুয়াস নামক এক খ্রিষ...

হিজরি সনের হিসাব রাখা ফরজে কেফায়া

ইসলামি শরিয়তে হিজরি সনের হিসাব রাখা ফরজে কেফায়া ও প্রিয় নবি (সা) এবং সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাহ। তাই মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেকেরই উচিত, হিজরি সনের হিসাব রাখা।তারিখ পদ্ধতির গুরুত্ব আছে বলেই দুনিয়া সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মাস-বছরের হিসাব সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষনা দেন, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর (কাছে) গণনায় মাসের সংখ্যা বারটি; যা আল্লাহর কিতাব (লাওহে মাহফুজ) অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস (রজব, জিলকদ,জিলহজ ও মহররম) মর্যাদাপূর্ণ। এটাই দীনের সহজ-সরল (দাবী)। সুরা তাওবাহ আয়াত - ৩৬) ইসলামি শরিয়তের অনেক বিধানাবলী পালন হিজরি সন ও চন্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল; তাই গুরুত্বপূর্ণ এসব ইবাদত-বন্দেগির জন্য হিজরি সনের আলোকে চন্দ্র মাসের হিসাব রাখা ফরজে কেফায়া। চাঁদের হিসাব অনুযায়ী হিজরি সনের হিসাব রাখা সুন্নাতের অনুসরণ এবং অনুকরণও বটে। রাসুলুল্লাহ (সা) এর নির্দেশনাও এমনই। এ কারণেই মুমিন মুসলমানের জন্য হিজরি সনের গুরুত্ব অনেক বেশি। হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের অনেক ইবাদত-আমলের সংশ্লিষ্ট রয়েছে। যা হিসাব না রাখলে ঐ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালন...

শিক্ষায় হাজি মহসীনের অবদান

ছবি
  ৩ জানুয়ারি কিংবদন্তীতুল্য দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের ২৮৯ তম জন্ম-বার্ষিকী।উপমহাদেশের ইতিহাসের এ বিখ্যাত দানবীর মুহাম্মদ মহসিন ১৭৩২ সালের ৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন।১৮১২ সালে এ ধার্মিক দানবীর হুগলিতে ইন্তেকাল করেন। তাকে হুগলির ইমামবাড়ায় দাফন করা হয়।অঢেল সম্পত্তির মালিক ছিলেন হাজী মহসিন। এসব সম্পদ তিনি দুহাতে অকাতরে বিলিয়ে গেছেন। মহসিনের পূর্ব পুরুষরা অত্যন্ত ধনী ছিলেন। ইরান থেকে বাংলায় আসা তার বাবা হাজী ফয়জুল্লাহ ছিলেন একজন ধনী জায়গিরদার।মাতা জয়নব খানমেরও হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় বিস্তর জমি ছিল। তার বোন মন্নুজানের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী হিসেবে মহসিন বোনের সম্পত্তির মালিক হন।এতো সম্পদের মালিক হয়েও মহসিন ছিলেন খুব ধার্মিক ও নিরহঙ্কারী। তিনি সর্বদা সহজ সরল জীবনযাপন করতেন। তিনি ছিলেন চিরকুমার। তিনি তার প্রতিষ্ঠিত ইমাম বাড়া প্রাসাদে বাস করতেন না। ইমাম বাড়ির পাশে একটি ছোট কুটিরে বাস করতেন।আর কুরআন শরীফ নকল করে যা পেতেন তা দিয়েই চলতেন। নিজ হাতে রান্না করে অধিনস্তদের নিয়ে বসে খেতেন। ১৭৬৯-৭০ সালের সরকারি দলিল অনুযায়ী তৎকালীন দুর্ভিক্ষের সময় হ...

পরকীয়া ও পরিসংখ্যান

  পরকীয়া একটি সমাজ বিধ্বংসী বিকৃত মানসিকতা। পরকীয়ার জেরে স্বামী স্ত্রীকে খুন করছে। স্ত্রী স্বামীকে খুন করে খাটের নিচের মেঝেতে পুঁতে রাখছে। পরকীয়ার মোহে খুন হচ্ছে সন্তান। এমনকি পরকীয়ায় লিপ্ত মসজিদের ইমাম সাহেব খুন করে এসে ফজরের নামাজে ইমামতি করছেন।তারপরও এ সমস্যাকে যদি আপনারা শুধুই পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর খবর মনে করে এড়িয়ে যান তবে এ বিপদ আমাদের সবার জন্যই অপেক্ষা করছে। আর যদি এটাকে আমরা বড় সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন, তবে এর থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় আমাদের ব্যক্তি জীবনে ধর্মীয় তথা ইসলামিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করা। সূরা নূরের ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের দৃষ্টি সংযত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর ৩১ নম্বর আয়াতে নারীদের তাদের দৃষ্টি সংযত রাখার পাশাপাশি পরপুরুষের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন। স্ত্রীর সৌন্দর্য স্বামীকে তার প্রতি আনুরাগী করলে সংসারের শান্তিই বাড়বে। পক্ষান্তরে নারীর সৌন্দর্য তার স্বামী ছাড়া অন্যকে আকর্ষণ করলে তা কেবল অশান্তিই বাড়াবে। ইসলামে পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্ক থেকে নারী-পুরুষকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কোনো নারীর পরপুরুষের...

হজ্জ কোটা

ছবি
  হজ্জ মুসলিম উম্মাহর জন্য বার্ষিক বিশ্ব সম্মেলন ও ইসলামী ঐক্যের প্রতীক। এ ধরনের বিশ্ব সম্মেলন অন্য কোনো ধর্ম বা জাতির মধ্যে দেখা যায় না। একমাত্র ইসলামের তৌহিদবাদী মুসলমানরাই পৃথিবীর দিক-দিগন্ত থেকে ছুটে আসে কাবার দিকে।গত এক দশকে গড়ে ২৫ লক্ষ মুসলমান হজ করেছেন। হাজিদের এক তৃতীয়াংশই সৌদি আরবের বাসিন্দা। এর একটা কারণ মক্কা খুব কাছে। তাই ধর্মীয় কর্তব্য মনে করে বেশ সস্তায় হজ্জ সেরে নেন অনেকে।মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসি'র একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হজ্জের একটা কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওআইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে এক হাজার জন হজ্জে যেতে পারবেন।বাংলাদেশের জনসংখ্যা যেহেতু ১৮ কোটি, সেজন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর এক লাখ আশি হাজার মানুষের হজ পালনে যাওয়ার কথা। কিন্তু ধর্মভিত্তিক জনশুমারি না থাকায় বাংলাদেশকে তাদের প্রাপ্য কোটা থেকে কমেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। বিগত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ্জ পালনের সুযোগ পেয়ে আসছেন।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৭ সালের হিসাব মতে বাংলাদ...

মুঘল বংশধর হিসেবে লাল কেল্লার দাবী এক নারীর

ছবি
লাল কেল্লা খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে প্রাচীর-বেষ্টিত পুরনো দিল্লি শহরে মুঘল সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত একটি দুর্গ।সম্রাটের এই বাসভবনের নাম কেন লাল কেল্লা হলো তা নিয়ে নানা মত রয়েছে। সম্রাট শাহজাহান এর নাম দিয়েছিলেন কিলা-ই-মুবারক। সম্রাটের পরিবারের সদস্যরা যেহেতু এখানে বসবাস করবেন তাই সম্রাট এই নামকরণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই নামের পরিবর্তে ‘লাল কেল্লা’ বা ‘রেড ফোর্ট’ নামেই বেশি পরিচিতি লাভ করে। অনেকে মনে করে থাকেন, যেহেতু সম্পূর্ণ লাল বেলে পাথর ও ইট দিয়ে তৈরি এই কেল্লা, সেই কারণেই এর নাম দেওয়া হয়েছে লাল কেল্লা।১৮৫৭ সাল পর্যন্ত মোঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল এই কেল্লা। মূলত এই কেল্লা সম্রাট শাহজাহানের নতুন রাজধানী শাহজাহানাবাদের রাজপ্রাসাদ। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পূর্ব পর্যন্ত এটি ছিল মোঘল রাজপরিবারের বাসস্থান। ১৮৫৭ সালে এই লাল কেল্লা থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন শেষ মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর। ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে নির্বাসিত করলে ভারতের রাজধানী কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশরা এই দুর্গটিকে একটি সামরিক ...