পোস্টগুলি

আসামে মুসলমানদের রাজনীতি

ছবি
আসাম বা অসম ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত একটি রাজ্য। উত্তর-পূর্ব ভারতের এ রাজ্যটি হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত এবং এর অভ্যন্তরে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ, বরাক উপত্যকা এবং উত্তর কাছাড় পর্বতমালা। উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও ছয়টি রাজ্য, যথা অরুণাচল , নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মেঘালয় প্রদেশ দ্বারা আসাম পরিবেষ্টিত এবং আসামসহ প্রতিটি রাজ্যই উত্তরবঙ্গের একটি সঙ্কীর্ণ অংশ দ্বারা ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত। এছাড়াও আসামের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে। আসাম, বাংলাদেশের সাথে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। আসামের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসী বাঙালী। আয়তন ৭৮ হাজার ৪৩৮ বর্গ কিলোমিটার।মুসলমানদের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের সামান্য কম। সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় তিন কোটি বিশ লাখ।যা ভোটার সংখ্যার নিরিখে ৩৪ শতাংশ।আসামের প্রধান ধর্মগুলো হল হিন্দুধর্ম ৬২.৯% এবং ইসলাম ৩৪.৯%। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্ট ধর্ম ৩.৭%, শিখ ধর্ম ১%, বৌদ্ধ ধর্ম, ইত্যাদি। আসামের ৩২ জেলার মধ্যে ৯টি জেলা হলো মুসলিমপ্রধান। এগুলো হলো : ধুবড়ি, গোয়ালপাড়া, বড়পেটা, মর...

ন্যায় বিচার — খলিফা হারুন অর রশিদের গল্প

ছবি
  আব্বাসীয় খলিফা হারুন অর রশীদ। ইসলামী স্বর্ণযুগের খলিফা। রাতে ঘুরে ঘুরে প্রজাদের অবস্থা দেখতেন। ছদ্মবেশে শহরে ঘুরতেন। নিজের শাসন অধিভুক্ত রাজ্যে কেউ অপরাধ করলে তিনি খতিয়ে দেখতেন নিজের কর্তব্যপরায়নতার জায়গা থেকে। অপরাধের জন্য নিজের ও রাজ্য অব্যবস্থার দায় খুঁজে পেলে সাজা মাথা পেতে নিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। প্রতিষ্ঠা করেছেন ইসলামের আইনে ন্যায়বিচার। এমনই একটি ন্যায়বিচারের গল্প উপস্থাপন করছি। সিরিয়ার রাকা শহর থেকে খলিফা হারুনুর-রশিদের নিকট চিঠি আসলো। চিঠিতে লেখা ছিল শহরের বিচারক এক মাস যাবত অসুস্থ,বিচার কাজ স্থবির হয়ে আছে । খলিফা যেন দ্রুত ব্যবস্থা করেন । খলিফা চিঠির জবাব পাঠালেন । আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিচারক আসবেন । এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিচারক এসে যোগ দিলেন । বিচার কাজ শুরু হয়েছে । স্থানীয় প্রহরীরা একজন বৃদ্ধা মহিলাকে আসামী হিসেবে দরবারে হাজির করলেন । তার অপরাধ ছিল তিনি শহরের এক রেস্তারাঁ থেকে কিছু রুটি আর মধু চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পরেন । বিচারক: আপনি চুরি করেছেন? – জ্বি । – আপনি কি জানেন চুরি করা কতো বড় অপরাধ ও পাপ ? – জ্বি । – জেনেও কেন চুরি করলেন ? – কারণ আমি গত এক স...

গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের আইনের প্রতি শ্রদ

ছবি
  গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ (১৩৮৯-১৪১০) বাংলার প্রথম ইলিয়াস শাহী বংশের তৃতীয় সুলতান। তাঁর প্রকৃত নাম আজম শাহ। সিংহাসন আরোহণের পর তিনি গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ নাম ধারণ করেন। তিনি নিজে বিদ্বান ও কবি ছিলেন এবং বিদ্বান লোকদের খুব সমাদর করতেন। মাঝে মাঝে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ আরবি ও ফারসি ভাষায় কবিতা লিখতেন। পারস্যের বিখ্যাত কবি হাফিজের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ ছিল। একবার তিনি হাফিজের নিকট কবিতার একটি চরণ লিখে পাঠান এবং কবিতাটিকে পূর্ণ করার জন্য কবিকে অনুরোধ জানান।গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ তাঁকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণও জানান। হাফিজ দ্বিতীয় চরণটি রচনা করে কবিতাটি পূর্ণ করে পাঠান। তিনি সুলতানের নিকট একটি গজলও লিখে পাঠান। নিমন্ত্রণ করার জবাবে হাফিজ সুলতানকে যে গজল রচনা করে পাঠান। "শক্কর শিকন শওন্দ হমাঃ তূতিয়ানে হিন্দ। যী কন্দে ফারসী কেঃ ব-বঙ্গালাঃ মী রওদ॥ হাফিয যে শওকে মজ্‌লিসে সুলতানে গিয়াস্‌দীন। গাফিল ম-শও কেঃ কারে তূ আয নালাঃ মী রওদ॥" ভারতের তোতা হবে মিষ্টি-মুখো সকল-ই, ফারসীর মিছরী যবে বাঙ্গালায় চলিছে। হে হাফিয! গিয়াসউদ্দিন শাহের সভার বাসনা ছেড়ো না, কাজ তোমারি কাঁদা-কাটায় চলিছে। " গি...

উপমহাদেশের কারবালা ঐতিহাসিক বালাকোট দিবস আজ

ছবি
  ১৮৩১ সালের ৬ মে আজকের দিনে ইংরেজ ও শিখ ধর্মের অনুসরণকারীরা যৌথভাবে আক্রমণ করে মুসলমানদের হত্যা করে বালাকোট যুদ্ধে। বালাকোট শহর পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খাইবার-পাখতুনখাওয়ার মানসেহরা জেলা থেকে ৩৮ কি: মি: পূর্ব-উত্তরে অবস্থিত। বালাকোট ময়দানে মর্দে মুজাহিদ সাইয়েদ আহমাদ ব্রেলভী তার তিন শতাধিক মুজাহিদ সঙ্গী সাথীসহ শাহাদাত বরণ করেন। মুজাদ্দিদে আলফে সানীর সূচিত সংস্কার ও সংগ্রামের ধারার সুযোগ্য উত্তরাধিকারী ছিলেন তিনি।তিনি ছিলেন আরেক সংগ্রামী সংস্কারক শাহ ওয়ালীউল্লাহ(রহ) এর ছেলে শাহ আব্দুল আজীজ (রহ) এর ছাত্র,যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম জিহাদের ফতোয়া দিয়েছিলেন।শাহ আব্দুল আজীজ (রহ) এর আদেশেই সৈয়দ আহমাদ ব্রেলভী (রহ.) জিহাদে নেমেছিলেন। ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের মাধ্যমে ইংরেজ বণিকরা এ অঞ্চলে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রাজদণ্ডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের উপর এক জোরজবরদস্তি মূলক আধিপত্যবাদী শাসন কায়েম করে। একদিকে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, অন্যদিকে স্বয়ং মুসলিম সমাজের ইসলামী জীবনাচরণে দীর্ঘকাল যাবৎ বিপুল অনৈসলামিক আক্বীদা-বিশ্বাসের শক্ত অবস্থান স্বাভাবিকভাবেই এ অ...

ভারতের সাত রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু

ছবি
সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারত একটি বহুধর্মীয়, বহুভাষিক, ও বহুজাতিক রাষ্ট্র।ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার। ভারতে ৮০ কোটিরও বেশি ৮০.৫% হিন্দু, অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়গুলির মধ্যে রয়েছে মুসলমান ১৩.৪%, খ্রিস্টান ২.৩%, শিখ ১.৯%, বৌদ্ধ ০.৮%, জৈন ০.৪%, ইহুদি, পারসি ও বাহাই ধর্মাবলম্বী মানুষ।বর্তমানে ভারত ২৮টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত । ভারতে মোট ৮০.৫% মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও সংখ্যার বিচারে ভারতের সাতটি রাজ্যে কিন্তু তারাই সংখ্যালঘু।জম্মু ও কাশ্মীর ও লাক্ষাদ্বীপ মুসলিম-প্র...

সাদকাতুল ফিতর

ফিতরা বা সাদকাতুল ফিতর হলো সেই নির্ধারিত সাদকা, যা ঈদের নামাজের আগে অসহায় গরিব-দুঃখীদের দিতে হয়। এটিকে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়।ইসলামি শরিয়াহমতে, গম, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর, পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যেকোনো একটির দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়। উন্নত মানের গম বা আটা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৭০ টাকা দিতে হবে। যব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৮০ টাকা, কিশমিশ দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৩২০ টাকা, খেজুর দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৬৫০ টাকা, পনির দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৩১০ টাকা ফিতরা দিতে হবে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা) বর্ণনা করেন নবি (সা)'র জামানায় এর জমানায় আমরা সাদকাতুল ফিতর দিতাম এক সা (সাড়ে তিন কেজি প্রায়) খাদ্যবস্তু, তিনি বলেন, তখন আমাদের খাদ্য ছিল: যব, কিশমিশ, পনির ও খেজুর। (বুখারি)তিনি আরও বলেন, আমরা সাদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা খাদ্যবস্তু। যেমন- এক সা যব, এক সা খেজুর, এক সা পনির, এক সা কিশমিশ। (বুখারি)মুসলমানেরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যগুলোর যেকোনো...

জীবনের চেয়ে কী ফ্ল্যাট ভাড়া বেশি

মুনিয়া লোভী, উচ্চাভিলাষী, রক্ষিতা আর যাই বলেন না কেন মানলাম। কিন্তু সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। হয়তো তার পজিশনের চেয়ে বেশি কিছু পাবার স্বপ্নে সে বিভোর ছিল। আচ্ছা লোভ বিষয়টা কার নেই বলুন তো? কারো কম কারো আবার খুব বেশি। মুনিয়ার না হয় একটু বেশিই ছিল। বামন হয়ে চাঁদ ছুঁতে চেয়েছে। ছেঁড়া বিছানায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখেছে। বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার যুগ মেধা, বুদ্ধি চেহারা নিয়ে চারিদিকে একটি অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মুনিয়া তার চেহারা সৌন্দর্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছে। এটা কি তার অপরাধ? নৈতিকতার দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য হলেও জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য হয়তো তার কাছে এটা ভুল পথ নয়। তবে প্রশ্ন হলো সৌন্দর্যের আভা দিয়েই কি সব অর্জন হয়? এককথায় উত্তর না। সুন্দর চেহারা আর অবয়ব ওরা তো শোপিসে সাজিয়ে রাখবে না।সুযোগ সুবিধা দেবে গাড়ী ফ্ল্যাট দেবে। কিন্তু অভিসারে আপনার সৌন্দর্যের তারা পোস্টমর্টেম করবে না তা কি হয়? কিন্তু কেউ সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে মেয়েটাকে ব্লাকহোলে ফেলে দেবে তা কি মেনে নেয়া যায়? মুনিয়া কেমন ছিল, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো কি না, তাহাজ্জুদ পড়তো কি না? কত দামি ফ্ল্যাটে থাকতো, ভাড়া কত দি...