সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জীবনের চেয়ে কী ফ্ল্যাট ভাড়া বেশি


মুনিয়া লোভী, উচ্চাভিলাষী, রক্ষিতা আর যাই বলেন না কেন মানলাম। কিন্তু সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। হয়তো তার পজিশনের চেয়ে বেশি কিছু পাবার স্বপ্নে সে বিভোর ছিল। আচ্ছা লোভ বিষয়টা কার নেই বলুন তো? কারো কম কারো আবার খুব বেশি। মুনিয়ার না হয় একটু বেশিই ছিল। বামন হয়ে চাঁদ ছুঁতে চেয়েছে। ছেঁড়া বিছানায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখেছে। বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার যুগ মেধা, বুদ্ধি চেহারা নিয়ে চারিদিকে একটি অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মুনিয়া তার চেহারা সৌন্দর্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছে। এটা কি তার অপরাধ? নৈতিকতার দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য হলেও জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য হয়তো তার কাছে এটা ভুল পথ নয়। তবে প্রশ্ন হলো সৌন্দর্যের আভা দিয়েই কি সব অর্জন হয়? এককথায় উত্তর না। সুন্দর চেহারা আর অবয়ব ওরা তো শোপিসে সাজিয়ে রাখবে না।সুযোগ সুবিধা দেবে গাড়ী ফ্ল্যাট দেবে। কিন্তু অভিসারে আপনার সৌন্দর্যের তারা পোস্টমর্টেম করবে না তা কি হয়? কিন্তু কেউ সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে মেয়েটাকে ব্লাকহোলে ফেলে দেবে তা কি মেনে নেয়া যায়? মুনিয়া কেমন ছিল, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো কি না, তাহাজ্জুদ পড়তো কি না? কত দামি ফ্ল্যাটে থাকতো, ভাড়া কত দিত আপাতত এসব গৌণ ম্যাটার। সে লোভী, অপরাধী স্বীকার করছি তাই বলে আত্মহননের পথে ধাবিত হবার দায়ভার আপনি এড়াবেন কেমন করে? খারাপ হলে আইন আদালত আছে কিন্তু একজনকে আপনি জীবন নাশে প্ররোচনা দিতে পারেন না। দশ খুনের আসামিকেও আপনি হাতেনাতে ধরে মেরে ফেলতে পারেন না, তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে আইন এবং আদালত। মুনিয়ার ক্ষেত্রেও একই পথ খোলা ছিল! কিন্তু তাকে লোভী রক্ষিতা বলে তার চরিত্র হনন করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে। জেনে রাখবেন ফ্ল্যাটের চেয়ে জীবনের মুল্য অনেক বেশি। সুতরাং তার অকালে চলে যাওয়া নিয়ে যেখানে প্রশ্ন তোলার কথা, বিচার চাওয়ার কথা। সেখানে ফ্ল্যাট প্রসঙ্গ টেনে মুনিয়ার জীবনটাকে তুচ্ছ বানিয়ে দিলেন। অপরাধীর পক্ষাবলম্বন করলেন। হোক না সে লোভী রক্ষিতা, বারবণিতা। কোটি ভালো মানুষের মধ্যে সে না হয় চরিত্রহীনা । ওপর মহলের পোষা খদ্দের । কিন্তু তার স্বাভাবিক মৃত্যু কি কাম্য ছিল না? আমাদের উচিত ছিল তার বিলাসবহুল জীবন নিয়ে প্রশ্ন না তোলে তার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলা, জড়িতদের শাস্তি দাবি করা। এরকম সুযোগ পেলে কত মুনিয়া এই অফার লুফে নেবে! তা বলে শেষ করা যাবে না। শেষে বলি মুনিয়াদের অতি লোভী মন আর অভিজাতদের রক্ষিতা পোষ মানার সিস্টেম থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মুনিয়ার মৃত্যুর
সুষ্ঠু বিচার হতে হবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...