পোস্টগুলি

নিঃসন্তান ও তালাক

ছবি
#মো.আবু রায়হান অর্থবৈভব ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা-আভা। সঠিক ও যথাযথ এগুলোর ব্যবহার হলে পরকালে কল্যাণ ও পুরস্কার লাভ হবে। না হয় এগুলোই ডেকে নিয়ে আসবে চূড়ান্ত বিপদ।আল্লাহ তায়ালা বলেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের রূপ-সৌন্দর্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। ‘স্থায়ী সৎকর্ম’ তোমার রবের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত - ৪৬) হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১. সদকায়ে জারিয়া, ২. এমন জ্ঞান (ইলম)- যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ও ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দোয়া করে। – সহিহ মুসলিম - ৪৩১০) সন্তান আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে খুশি তাকে সন্তান দান করেন এবং যাকে খুশি দান করেন না। সন্তান হওয়া একধরনের পরীক্ষা এবং সন্তান না হওয়া একধরনের পরীক্ষা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দেন। আবা...
  শ হিদ আরবি শব্দ। শ হিদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে শাহাদত শব্দ থেকে। ‘শাহাদত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে- সনদ , সাক্ষ্য , প্রত্যয়নপত্র , সার্টিফিকেট ইত্যাদি।   শ হিদ   শব্দটির ভাবার্থ হলো- ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে জীবন কোরবানীর মাধ্যমে ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য , সনদ , সার্টিফিকেট বা প্রত্যয়ন প্রদান।’ আরবি ডিকশনারীতে ‘মু’জাম আল-অসীত’-এ ‘শহীদ’ শব্দের অর্থ দেয়া আছে: ‘যিনি আল্লাহর পথে নিহত হওয়ার জন্য নিজকে পেশ করলেন।’   মানব জাতিকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহর ইবাদত করা , সেই ‘ইবাদত’ প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যে মৃত্যুবরণ করলো , ইসলামী পরিভাষায় তাকে ‘শহীদ’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। শহীদি মৃত্যু দুই প্রকার। এক প্রকার হলো প্রকৃত শহীদ। তা হলো , দ্বিন কায়েমের জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন দেওয়া। এ ধরনের শহীদের মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন , ‘ আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয় , তাদের মৃত বলো না ; বরং তারা জীবিত , কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’ (সুরা আল-বাকারা : ১৫৪) আরেক প্রকারের শহীদ হলো , হুকুমি। অর্থাৎ তারা...

মহাবিস্ফোরণে পৃথিবীর সৃষ্টি ও কুরআনের বর্ণনা

ছবি
খুব বেশি দিনের কথা নয় যে মানুষ জানতে পেরেছে মহাবিশ্বের সূচনা এক মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ঘটেছে। সৌরজগৎ সৃষ্টির মোটামুটি ১০০ মিলিয়ন বছর পর একগুচ্ছ সংঘর্ষের ফল হলো পৃথিবী। আজ থেকে ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী নামের এই গ্রহটি আকার আকৃতি পায়। আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ থেকে ফ্রিদমান সমীকরণ।তার পর বিশ্বতত্ত্ব নীতি এবং হোবল নীতি। ষ্টিফেন হকিং এর বিগ ব্যাং থিওরী আজ সর্বময় স্বীকৃত। এ থিওরী অনুযায়ী মহাবিশ্বের সকল দৃশ্য অদৃশ্য গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টির শুরুতে একটি বিন্দুতে পুঞ্জিভুত ছিল। এবং একটা বিশাল বিষ্ফোরণের মাধ্যমে এরা চারিদেকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। আজ থেকে প্রায় এক হাজার ৫০০ বছর আগেই বিশ্বস্রষ্টা তাঁর মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে সপ্তাকাশ ও পৃথিবী পুঞ্জীভূত হয়ে ছিল। অতঃপর আমি উভয়টি এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে সূচনা করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত -৩০)তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী; তিনি যখন কিছু করতে চান তখন সেটিকে বলেন: ’হও’, অমনি তা হয়ে যায়।" (সূরা ইমরান, আয়াতঃ ১১৭)।এই আয়াতদ্বয় দ্বারা মহাবিশ্ব সৃষ্টির সাধারণ...

পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটার

ছবি
#মো আবু রায়হান বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে জনগণনা ২০১১ অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৯ কোটি ১২ লক্ষ। ধর্ম ভিত্তিতে হিন্দু রয়েছে ৬ কোটি ৪ লক্ষ। মোট জনসংখ্যার ৭০.৫৩ শতাংশ হিন্দু রয়েছে। মুসলিম জনসংখ্যা ২ কোটি ৪ লক্ষ।যারা এই রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২৭.০১%।জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে তিন জেলায় এগিয়ে রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। মুর্শিদাবাদে মুসলিম জনসংখ্যা ৪৭ লক্ষ, হিন্দু ২৩ লক্ষ। মালদায় ২০ লক্ষ মুসলিম, হিন্দু ১৯ লক্ষ। উত্তর দিনাজপুরে ১৫ লক্ষ মুসলিম, ১৪ লক্ষ হিন্দুপশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম। তাই রাজ্য রাজনীতিতে মুসলমানদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমানদের দলে ভেড়ানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাটানিও অব্যাহত। ভোটের রাজনীতির অঙ্ক সম্পর্কে যাঁরা মোটামুটি ওয়াকিবহাল, তাঁরা জানেন যে মুসলমানদের সমর্থন পেলে পশ্চিমবঙ্গে ভোটযুদ্ধে জেতা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। বামফ্রন্টের আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের একটা বড় অংশের সমর্থন তাদের দিকে ছিল। কিন্তু ২০০৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে সংখ্যালঘুরা বামফ্রন্টের দিক থেকে যেই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তূণমূল কংগ্রেসের দিকে ...

ব্যক্তি বন্দনা ও ইসলাম

ছবি
ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলিম সমাজ হবে ব্যক্তিত্ববান মানুষ দ্বারা ভরপুর আলোকিত একটি সমাজ। যে সমাজে থাকবে না কোনো শঠতা, মোসাহেবি , তেলবাজি বা বাড়াবাড়িমূলক স্বভাব; যাতে সমাজে শ্রেণিবৈষম্য ও প্রতারণার দ্বার উন্মুক্ত হয়। মুসলিম সমাজে মানুষের চরিত্র হবে অত্যন্ত খোলামেলা, হৃদ্যতাপূর্ণ ও সুস্পষ্ট। তাদের কথা ও কাজের মধ্যে থাকবে না কোনো অমিল। আর না তারা একে অন্যের তোষামোদি বা তেলবাজি করে যে যার যার সুবিধা লুফে নিবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে আমোদের মুসলিম সমাজ এমনই এক ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত যে, তা আজ এক তোষামোদের সমাজে পরিণত হয়েছে। কেউ সুবিধা আদায়ের জন্য, কেউ পরিস্থিতির শিকার হয়ে অথবা অসুবিধায় পড়ে একে অন্যের অযাচিত প্রশংসায় লিপ্ত হয়। এক দিকে চলে পেছনে পেছনে চরম পরচর্চা অন্য দিকে চলে মুখোমুখি অতি প্রশংসা। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলেন, ‘বাস্তবিক তৈল সর্বশক্তিমান, যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যায় অসাধ্য, যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্য— তাহা কেবল তৈল দ্বারা সিদ্ধ হইতে পারে।’ তিনি আরও বলেন— ‘যে তৈল দিতে পারিবে তাহার বিদ্যা না থাকিলেও প্রফেসর হইতে পারে। আহাম্মক হইলেও ম্যাজিস্ট্রেট হইতে পারে, সাহ...

ব্যক্তি বন্দনা থেকে শিরকের সূচনা

ছবি
ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ। শিরককারীকে বলা হয় মুশরিক। তাওবা ছাড়া মৃত্যুবরণ করলে শিরককারীর ক্ষমা নেই।সে অনন্তকাল জাহান্নামের আজাব ভোগ করবে। শিরক ছাড়া অন্য গুনাহ আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্য যত পাপ-তাপ আছে, তা যাকে ইচ্ছা (বিনা শাস্তিতেই) ক্ষমা করে দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করে, সে মহা অপরাধে অপরাধী হয়ে যায়।’ (সুরা নিসা, আয়াত -৪৮) শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ / পাপ হওয়ার কারণ হলো, এটি মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও শক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই আল্লাহ কিছুতেই এই অপরাধ সহ্য করেন না। এ পৃথিবীতে যত নবী-রাসুল এসেছেন, তাঁদের প্রধান কাজ ছিল শিরক উত্খাত করে তাওহিদ প্রতিষ্ঠা করা। সর্বপ্রথম হজরত নূহ (আ.)-এর সম্প্রদায় পৃথিবীতে শিরক শুরু করে।এর আগের সম্প্রদায়গুলো আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিল। সর্বক্ষণ আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন ছিল। এই পার্থিবজগতে শিরকের কোনো নাম-নিশানা ছিল না। নূহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ে পাঁচজন বড় আলেম ছিলেন; যাঁরা সর্বক্ষণ মহান বিধাতার ইবাদতে...
ছবি
#মো. আবু রায়হান ১৯৮৬ সাল থেকে মালয়েশিয়ার খ্রিস্টানরা আল্লাহ নাম মুখে নিতে পারতো না। ঈশ্বরকে তারা আল্লাহ নামে ডাকতে পারতো না। ভাইরে আল্লাহ তো আল্লাহ। আল্লাহর নাম উচ্চারণে কাউকে কী বাঁধা দেয়া যায়। যদি আল্লাহর নাম বিকৃত করে কিছু করতো তাহলে ভিন্ন কথা ছিল।আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাকবে। আর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদের বর্জন করবে। শিগগিরই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের ফল দেওয়া হবে। (সুরা : আরাফ, আয়াত - ১৮০) আল্লাহ' ওই সত্তাকে বলা হয়, যিনি স্বয়ম্ভু, সদা বিরাজমান, পূর্ণতা ও মহত্ত্বের যত গুণ হতে পারে, তিনি সেসব গুণের অধিকারী। 'আল্লাহ' শব্দটি পৃথিবীর সব ভাষায় ব্যবহৃত হয়। এর ভাষান্তর চলে না, চলে না লিঙ্গান্তর। দেহে কেবল শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা থাকলে, জিহ্বা হেলানোর শক্তি থাকলেই এ নাম উচ্চারণ করা যায়। সর্বশেষ মালয়েশিয়ার আদালত রায় দিয়েছে এখন থেকে খ্রিস্টানরাও ঈশ্বরকে আল্লাহ বলে ডাকতে পারবে। খ্রিস্টানরা যদি তাদের ঈশ্বরকে আল্লাহ বলে ডাকে এতে আমার আল্লাহ শান, মর্যাদা গরীমা একটুও কমবে না। আরবের খ্রিস্টানরাও প্রাচীনকাল থেকে আল্লাহ শব্দটি...