সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটার




#মো আবু রায়হান

বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে জনগণনা ২০১১ অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৯ কোটি ১২ লক্ষ। ধর্ম ভিত্তিতে হিন্দু রয়েছে ৬ কোটি ৪ লক্ষ। মোট জনসংখ্যার ৭০.৫৩ শতাংশ হিন্দু রয়েছে। মুসলিম জনসংখ্যা ২ কোটি ৪ লক্ষ।যারা এই রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২৭.০১%।জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে তিন জেলায় এগিয়ে রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। মুর্শিদাবাদে মুসলিম জনসংখ্যা ৪৭ লক্ষ, হিন্দু ২৩ লক্ষ। মালদায় ২০ লক্ষ মুসলিম, হিন্দু ১৯ লক্ষ। উত্তর দিনাজপুরে ১৫ লক্ষ মুসলিম, ১৪ লক্ষ হিন্দুপশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম। তাই রাজ্য রাজনীতিতে মুসলমানদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমানদের দলে ভেড়ানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাটানিও অব্যাহত। ভোটের রাজনীতির অঙ্ক সম্পর্কে যাঁরা মোটামুটি ওয়াকিবহাল, তাঁরা জানেন যে মুসলমানদের সমর্থন পেলে পশ্চিমবঙ্গে ভোটযুদ্ধে জেতা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। বামফ্রন্টের আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের একটা বড় অংশের সমর্থন তাদের দিকে ছিল। কিন্তু ২০০৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে সংখ্যালঘুরা বামফ্রন্টের দিক থেকে যেই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তূণমূল কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকে পড়ল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পরপর জয় পেতে শুরু করলেন।

এবারের নির্বাচনে বামেদের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চায় আছে কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি সম্প্রতি তার দল গঠন করেছেন। ভারতের মুসলিমদের প্রভাবশালী নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএময়ের রাজ্য আহ্বায়ক জামিরুল হাসান নন্দীগ্রামে মমতার হয়ে প্রচার করছেন। তার সঙ্গে তার অনুসারীরাও তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজয়ী করতে মাঠে লড়াই করছে। নন্দীগ্রামে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট মুসলমানসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের। এর মধ্যে শুধু মুসলমানদের ভোটই ৩১ শতাংশের বেশি।পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মোট ২৯৪ আসনের মধ্যে গতকাল ২৯১ আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এদের মধ্যে ৪২ জন মুসলিমকে প্রার্থী করা হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে একসময় মুসলিম ভোট ভাগ হতো বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় তৃণমূল করার পর পরিস্থিতির বদলায়। বিজেপি-র দিকে মুসলিম ভোট বিশেষ যায় না। সে কথা মাথায় রাখলে মুসলিম ভোটদাতার কাছে বিকল্প তৃণমূল ও বাম জোট। দুই মুসলিম প্রধান জেলা মুর্শিদাবাদ ও মালদহ হলো কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। তাদের জয় নির্ভর করছে, মুসলিমরা কতটা পাশে থাকবেন তার উপর। বাকি জেলাতে মুসলিম ভোট পাওয়ার ব্যাপারে তৃণমূল আশাবাদী।পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই কমবেশি মুসলিম ভোটার আছেন। তবে সব চেয়ে বেশি মুর্শিদাবাদে। সেখানে প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোটদাতা মুসলিম। তারপরেই রয়েছে মালদহ। ৫১ শতাংশ। উত্তর দিনাজপুরে ৪৯ শতাংশ। কলকাতায় ২০ শতাংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩৫ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনায় ২৬ শতাংশের মতো মুসলিম ভোটার আছেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...