পোস্টগুলি

বিবর্তনবাদ ও আমাদের সিলেবাস

ছবি
  অন দ্য অরিজিন অফ স্পেশিস ( On the Origin of Species  ) নামে চার্লস ডারউইনের এই বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৫৯ সালে। তার এই গ্রন্থে তিনি বিবর্তনবাদকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেছেন, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে কোনো প্রাণী ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে আপন পরিবেশের জন্যে বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন একটি প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়।অর্থাৎ টিকে থাকার জন্যে খাবার সংগ্রহের লড়াইয়ে প্রাণীদের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হয়৷ অন্যের খাবার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং সন্তান জন্মদান করতেও তাদের সংগ্রাম করতে হয়৷ এসব কারণে তারা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে রূপান্তর ঘটাতে বাধ্য হয়৷ ইসলাম ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ হচ্ছেন মানুষ ও সকল প্রাণীর স্রষ্টা, এবং প্রথম মানব-মানবী হচ্ছেন আদম এবং তার পাঁজরের হাড় থেকে তৈরি হাওয়া । ডারউইনের এই মতবাদ প্রথমেই বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে পড়ে কারণ সেসময়ে জীবের পরিবর্তন বা উৎপত্তির/ এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির উদ্ভবের ধারণা ('এসব পরীক্ষণীয় ছিল না') প্রচলিত ছিল। লন্ডনের গির্জাগুলো ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে নাকচ করে দেয়৷ কিন্তু তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে প্রশংস...

দিল্লি দাঙ্গা বিশ্লেষণ

ছবি
  দিল্লি দাঙ্গার এক বছর পূর্তি হলো গতকাল। এটি দিল্লি দাঙ্গা বলতে আমি নারাজ বরং সুপরিকল্পিতভাবে মুসলিম নিধনের প্রক্রিয়া ছিল এটি। বিশ্লেষক আলী রীয়াজ বলেন, " দিল্লিতে যা ঘটছে তা ‘দাঙ্গা’ নয়, একে যারা দাঙ্গা বলছেন তাঁরা ইচ্ছায় বা অজ্ঞতাবশত ভারতের গেরুয়া বাহিনীর ভাষ্যকার হচ্ছেন। একে ‘সিএএ-বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষ’ বলতে আমি নারাজ। যা ঘটছে তা হচ্ছে রাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট গেরুয়া সন্ত্রাসী আক্রমণ— মুসলিম জনগোষ্ঠী তার প্রথম লক্ষ্যবস্তু কিন্তু একমাত্র লক্ষ্যবস্তু নয়। আগামীতে অন্যরাও আক্রান্ত হবেন। লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে বহুত্ববাদী ভারত।"ফেব্রুয়ারিতে ভারতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন জায়গার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে তা পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়।প্রায় টানা পাঁচদিন ধরে চলে এই সহিংসতা - আর দিল্লির বিস্তীর্ণ একটা অংশ কার্যত মৃত্যুপুরীর চেহারা নেয়। দাঙ্গায় অন্তত ৪০জন মুসলিম ও ১৩ জন হিন্দু নিহত হয়েছিলেন। যে অভিযুক্তদের এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে মুসলিমের সংখ্যাই ...

মাতৃভাষা চর্চায় ইসলাম

ছবি
#মো. আবু রায়হান মা মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি মানুষের অতি আবেগের তিনটি অনুসঙ্গ। ভাষা সদা প্রবাহমান ও পরিবর্তনশীল। সেহিসেবে ভাষা বৈচিত্র মহান আল্লাহর অনুপম নিদর্শন। বর্তমানে ভাষা বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে ছয় থেকে সাত হাজার ভাষা রয়েছে। শুধু এশিয়ায় প্রচলন আছে দুই হাজার ২০০ ভাষার। অবশ্য অধিকাংশ ভাষায়ই খুব অল্প সংখ্যক লোক কথা বলে। দশ লক্ষ বা ততোধিক লোক কথা বলে এমন ভাষার সংখ্যা প্রায় ২০০। আবার পাঁচ কোটি বা ততোধিক লোক কথা বলে এমন ভাষার সংখ্যা মাত্র ২৩টি। তবে দশ কোটি বা ততোধিক লোক কথা বলে এমন ভাষার সংখ্যা মাত্র বারোটি। লোক সংখ্যা বিচারে এই বারোটি ভাষা হচ্ছে (১) মান্ডারিন চীনা (২) ইংরেজি (৩) স্পেনীয় (৪) হিন্দি (৫) আরবি (৬) বাংলা (৭) রুশ (৮) পুর্তগীজ (৯) জাপানী (১০) জার্মান (১১) মালয়-ইন্দোনেশীয় ও (১২) ফরাসী। প্রথমে বহু ভাষা গড়ে উঠলেও বিভিন্ন কার্যকারণে ও প্রক্রিয়ায় বর্তমানে মাত্র স্বল্পসংখ্যক ভাষায়ই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ কথা বলে। পবিত্র কোরআনে কারিমে এরশাদ হয়েছে, ‘তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে এক নিদর্শন এই যে, নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলী ...

একজন সংবাদকর্মী কেমন হবেন?

ছবি
একজন সাংবাদিককে হতে হবে সত্য প্রকাশে নির্ভীক এবং নিঃসঙ্কোচে তা প্রকাশ করার প্রবল ইচ্ছা।সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার সৎ সাহস। কলম চলবে নির্যাতিত ও অসহায়দের পক্ষে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে হবেন আপোষহীন। দলবাজি চাটুকারিতা ও সত্য ঘটনাকে আড়াল করা, অন্যায়ভাবে ভাবে কাউকে ফাঁসানো সাংবাদিকদের কাজ নয়। ঘটনার গভীরে গিয়ে সত্য উন্মোচন ও তা জনগণের কাছে উপস্থাপন করা সাংবাদিকের অন্যতম কাজ। সত্য গোপন করে মিথ্যা ও গোঁজামিল সংবাদ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা সাংবাদিকতার এথিকসের পরিপন্থি । অসত্য সংবাদ সমাজে শুধু নৈরাজ্যই সৃষ্টি করে না বরং এর ক্ষত ও প্রভাব থেকে যায় বহুদিন। আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারার ৪২ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেন, ‘এবং তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিও না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।’ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবিরা গুনাহ।’ বুখারি, মুসলিম।কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য কথা সোজাভাবে বল। (সূরা আল আহজাব, আয়াত ৭০) সূরা সাবা’তে হুদহুদ পাখির সংবাদ প্রচারের ধরন বড় চমৎকারভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সংবাদ কেমন...

আল্লাহর ক্ষমা

ছবি
দুনিয়ায় অপরাধীদের ধরার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে। কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার পাপী, অপরাধী বান্দাদের ক্ষমা করতে খুঁজতে থাকেন। আল্লাহ তায়ালার হাজারো গুণের একটি গুণ হলো ক্ষমা। ক্ষমার গুণে তিনি গুণান্বিত।আল্লাহ সেই গুণের কথা কোরআনে বহুবার উল্লেখ করেছেন। যে শব্দে তিনি তাঁর ক্ষমার গুণ উল্লেখ করেছেন তা হলো গফুর আরবি গফুর শব্দের অর্থ হলো- অধিক পরিমাণে ক্ষমা প্রদর্শন করা, বান্দার দোষ গোপন করা । এই গফুর শব্দটি স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ৪৮টি আয়াতে। এছাড়াও আরো বহুস্থানে ভিন্ন শব্দে অন্য বয়ানে আল্লাহর ক্ষমাশীলতা বর্ণনা করা হয়েছে।। আল্লাহ বলেন : ‘হে নবী লোকদের বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।’ (আল ইমরান : ৩১) কারা ক্ষমা পাবেন - আল্লাহ বান্দার এমন ১০টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন, যা তাঁর ক্ষমা ও পুরস্কার লাভে সহায়ক। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আত্মসমর্পণকারী পুরুষ ও আত্মসমর্পণকারী নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী ...

অন্যায়ের প্রতিবাদ

ছবি
শুক্রবারে জুমার নামাজে মসজিদে মুসল্লির জায়গা সংকুলান হয় না। নিজেদের মুসলিম দাবি করি অথচ সামনে পেছনে অন্যায় অপকর্ম হলেও না দেখার ভান করি। নীরব থাকি। একজন মুসলিম হিসেবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। সেই ঈমানকে আমরা কোথায় রেখেছি।মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির কল্যাণে তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে এবং নিষেধ করবে মন্দ কাজ থেকে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১১০) সাধ্যমতো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রতিটি মানুষের ঈমানি দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যেকোনো অন্যায়কারীকে দমনে সে যেন হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে, যদি তা করতে না পারে তবে সে যেন মুখ দিয়ে প্রতিহত করে। যদি সে মুখ দিয়েও না পারে তাহলে যেন অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণ করে; আর এটাই দুর্বল ঈমানের পরিচয়।’ (বুখারি) কোনো অত্যাচারীকে দেখেও অন্যায় থেকে তার হাতকে প্রতিরোধ করবে না, শিগগিরই আল্লাহ তাদের সবার ওপর ব্যাপক আজাব নাজিল করবেন।’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ) সময় মতো যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা না হয়, তাহলে এর ফল গোটা জাতিকে ভোগ করতে হয়। তাই সমাজে কোনো অন্যায়-অনাচার দেখ...

করোনার সময়ে মুসাফা বা করমর্দন

ছবি
দেখা হলে মুসাফা বা করমর্দন করা একটি ইসলামী রীতি নীতি। এটি মুসাফাকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মাঝে ভালবাসা ও হৃদ্যতার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে এটি মুসলমানদের পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ দূর করে দেয়। কিন্তু করোনা এসে অনেক কিছু পালটে দিয়েছে। পালটে দিয়েছে হাত করমর্দনের দীর্ঘ ইতিহাস ঐতিহ্যের। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে করমর্দন শুরু হয়েছিল শান্তি স্থাপনের সংকেত হিসেবে—এর মাধ্যমে বোঝানো হতো, দুজনের কারও হাতেই কোনো অস্ত্র নেই। রোমান সভ্যতায় হাত মেলানোর পরিসর ছিল আরেকটু বড়। পরস্পরের সঙ্গে বাহু মিলিয়ে সম্ভাষণ করত তারা। উদ্দেশ্য একই—জামার আস্তিনের নিচে কোনো অস্ত্র লুকানো নেই, তা জানান দেওয়া। করমর্দনের রীতি বহুল প্রচলিত হলেও সব দেশে যে একই নিয়ম, তা নয়। নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনগোষ্ঠী যেমন নাকে নাক ছুঁইয়ে পরস্পরকে সম্ভাষণ জানান। ইথিওপিয়ার মানুষ কাঁধে কাঁধ ছোঁয়ান। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পুরুষেরা একে অপরের কপালে কপাল ছুঁয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তবে জাপানের মতো এশিয়ার কিছু কিছু দেশের সম্ভাষণরীতি আগে থেকেই বেশ ‘স্বাস্থ্যসম্মত’—হালকা মাথা নুইয়ে অভিবাদন জানান তাঁরা। ইউরোপের কিছু কিছু দেশে গালে চুমু খাওয়াও ...