পোস্টগুলি

কুরআনে বর্ণিত আসহাবুল উখদুদের কাহিনি

ছবি
কুরআনের সূরা বুরুজের ৪ নং আয়াত হতে ৮ নং আয়াত পর্যন্ত আসহাবুল উখদুদের ঘটনা আলোচনা করা হয়েছে । আল্লাহ বলেন,  অভিশপ্ত হয়েছিল কুণ্ডের অধিপতিরা। যে কুণ্ডে ছিল ইন্ধনপূর্ণ আগুন । যখন তারা এর পাশে উপবিষ্ট ছিল এবং তারা মুমিনদের সাথে যা করছিল তা প্ৰত্যক্ষ করছিল। আর তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধু এ কারণে যে , তারা ঈমান এনেছিল পরাক্রমশালী ও প্রশংসার যোগ্য আল্লাহর উপর। ( সুরা আল বুরুজ আয়াত ,  ৪ -৮ )। যারা বড় বড় গর্তের মধ্যে আগুন জ্বলিয়ে ঈমানদারদেরকে তার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল এবং তাদের জ্বলে পুড়ে মরার বীভৎস দৃশ্য নিজেদের চোখে দেখেছিল তাদেরকে এখানে গর্তওয়ালা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে , তাদের ওপর আল্লাহর লা ' নত পড়েছিল এবং তারা আল্লাহর আযাবের অধিকারী হয়েছিল।(ইবন কাসীর ; ফাতহুল কাদীর) এর আরেক অর্থ ধ্বংস হয়েছিল।(সা ' দী)। জমিনে গর্ত করে এবং তাতে আগুন জ্বালিয়ে ঈমানদার লোকদের তার মধ্যে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মারার ঘটনার কথা আল কুরআন ও হাদিসে রাসূল-এ পাওয়া যায়।   মুসলিম ও তিরমিযী শরিফে বর্ণিত হয়েছে ঘটনাটি।গর্তে আগুন জ্বলিয়ে ঈমানদারদেরকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করার ঘটনা।সুহাইব রুমী (রা) রাসূলুল

কুরআনে আলোচিত আসহাবে কাহফের কাহিনি

ছবি
ছবিঃ প্রতীকী আসহাবে কাহাফ অর্থ গুহাবাসী।আসহাবে কাহাফকে পাশ্চাত্যে Seven sleepers of Ephesus অর্থাৎ এফিসাসের সুপ্ত সপ্তক আখ্যায় আখ্যায়িত করা হয়। হযরত ঈসা (আ.)-এর ঊর্ধ্বলোকে গমনের পরবর্তী সময়ে আসহাবে কাহফের ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনাটি তৎকালীন রোম সাম্রাজ্যের কোনো এক স্থানে সংঘটিত হয়েছিল। রোমের ক্ষমতায় তখন অধিষ্ঠিত ছিলেন একজন অত্যাচারী শাসক। তাফসিরে ইবনে কাসিরে উল্লেখ আছে, যে অত্যাচারী শাসকের তাড়ায় যুবকরা পালিয়েছিল, তার নাম ছিল দাকিয়ুস। তাদের সঙ্গে একটি কুকুর ছিল। কুকুরের নাম ছিল কিতমির।হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)বলেছেন, গুহাবাসীর সংখ্যা ছিল সাত জন। কোনো কোনো বর্ণনা মতে, তাদের নাম ছিল—মুকসালমিনা, তামলিখা, মারতুনিস, সানুনিস, সারিনুনিস, জু-নিওয়াস, কাস্তিতিউনিস।সুরা কাহাফের ৯-২৬ নং আয়াতে আসহাবে কাহাফের ঘটনা উল্লেখ রয়েছে ।কুরআনের সুরা কাহাফ মক্কাতে অবতীর্ণ হয়, অর্থাৎ তখনও হযরত মুহাম্মাদ (সা) ও তাঁর অনুসারীরা হিজরত করে মদিনায় চলে যাননি। কিন্তু মক্কাতে তখন তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে দেখে কাফের কুরাইশরা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে। যেহেতু নবী (সা) এমন ধর্ম প্রচার করে চলেছিলেন, যেখ

হারুত মারুত ও জোহরা নামক নারীকে নিয়ে যে মুখরোচক গল্প প্রচলিত আছে

ছবি
বর্তমানে ইরাকের ফোরাত নদীর তীরের ধ্বংস হয়ে যাওয়া তৎকালীন সময়ের উন্নত এক শহরের নাম বাবেল। যার অবস্থান প্রাচীন মেসোপটেমিয়া বর্তমানের মধ্য ইরাক।সারা দুনিয়া যেটিকে ব্যাবিলন নামে চেনে।বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুটি নাম জড়িয়ে আছে। যাঁদের নিয়ে রচিত হয়েছে নানা কল্পকাহিনি। গদ্য-পদ্য আর সাহিত্যরসে ভরপুর সেসব ঘটনাবলি কমবেশি সবাই জানেন।ঘটনাটি এমন- হারুত এবং মারুত দুজন ফেরেশতার নাম। যাদেরকে বিশেষ কারণে পৃথিবীর কিছু বিষয় নিরীক্ষণের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তারা তাদের নিরীক্ষায় অপরিণামদর্শিতার পরিচয় দেয় এবং শাস্তির মুখোমুখি হয়। ঘটনাটি এরকম- হজরত আদম (আ.) এবং বেশ কিছু নবি-রাসুলের পরলোক গমনের পর ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে যখন পাপাচার এবং অবাধ্যতা ছড়িয়ে পড়ে তখন ফেরেশতারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলো, দেখো, মানুষগুলো কেমন অবাধ্য। তারা আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে পাপাচার এবং বিশৃংখলায় লিপ্ত হয়ে গেছে। আমরা যদি হতাম তবে কখনোই এমনটি করতাম না। আল্লাহ তাআলা তাদের কথা শুনে বললেন, ঠিক আছে, তবে তোমাদের মধ্য থেকে দুজনকে পৃথিবীতে পাঠাও পরীক্ষার জন্য। দেখা যাক তারা পৃথিবীতে কীভাবে নিজে

জুলকারনাইন ও কুরআনে বর্ণিত ইয়াজুজ-মাজুজের কাহিনি

ছবি
জুলকারনাইন কুরআনে উল্লিখিত একজন ব্যক্তি। কুরআনের সুরা কাহাফে জুলকারনাইন নামটি উল্লিখিত আছে।জুলকারনাইন কে ছিলেন, কোন যুগে ও কোন দেশে ছিলেন এবং তার নাম জুলকারনাইন হল কেন? জুলকারনাইন নামকরণের হেতু সম্পর্কে বহু উক্তি ও তীব্র মতভেদ পরিদৃষ্ট হয়। কেউ বলেন,তার মাথার চুলে দুটি গুচ্ছ ছিল। তাই জুলকারনাইন (দুই গুচ্ছওয়ালা) আখ্যায়িত হয়েছেন। কেউ বলেন,পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যদেশসমূহ জয় করার কারণে জুলকারনাইন খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। কেউ এমনও বলেছেন যে, তার মাথায় শিং-এর অনুরূপ দুটি চিহ্ন ছিল। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, তার মাথার দুই দিকে দুটি ক্ষতচিহ্ন ছিল।(ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর) ‘তাফহিমুল কোরআন’ গ্রন্থে এসেছে, জুলকারনাইন সম্পর্কে কোরআন থেকে চারটি কথা জানা যায়। এক. তাঁর ‘শিংওয়ালা’ উপাধি সম্পর্কে ইহুদিরা জানত। দুই. তাঁর বিজয়াভিযান পূর্ব থেকে পশ্চিমে পরিচালিত হয়েছিল এবং উত্তর-দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত হয়েছিল। তিন. তিনি ইয়াজুজ মাজুজের হাত থেকে রক্ষার জন্য কোনো পার্বত্য গিরিপথে একটি মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করেন। চার. তিনি আল্লাহর আনুগত্যশীল ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন। আধুনিক যুগের গবেষক ও পন্ডিতদের ম

ইতিকাফের ফযিলত ও কিভাবে আদায় করতে হয়

ছবি
ইতিকাফ একটি বিশেষ ইবাদত ।ইতিকাফের মাধ্যমে দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আল্লাহর সন্নিধানে চলে যাওয়া যায়।‘ইতিকাফ আরবি শব্দ অর্থ হলো অবস্থান করা, স্থির, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন তাঁকে মুতাকিফ বলে। মহান আল্লাহ পাক হযরত ইবরাহিম (আ.) এবং হজরত ঈসমাইল (আ.) এর কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেন ‘আর আমি ইবরাহিম ও ঈসমাইলকে আদেশ করলাম’ তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ। (সুরা বাকারা আয়াত- ১২৫)। ইতিকাফের সময়- ইতিকাফের সময় হলো রমজানের ২০ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত।কেউ যদি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে চায়, তাহলে সে যেন ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগেই ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করবে।(বুখারি, হাদিস)।এই ইতিকাফ মহিলারাও ঘরের কোলাহল মুক্ত নামাজের স্থানে করতে পরবে। আর বিবাহিতা নারীরা স্বামীর অনুমতি নিয়ে ইতিকাফে বসবে। হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) আজীবন রমজানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তাঁর ওফাতের পরও

ইফতারের সময় ,ফযিলত ও ইফতারের দোয়া

ছবি
ইফতার  হচ্ছে   রমযান   মাসে   মুসলিমগণ   সারাদিন   রোজা   রাখার পর   সূর্যাস্তের   সময় যে খাবার গ্রহণ করে । ইফতার  আরবি শব্দ , যার অর্থ রোজা ভঙ্গ করা বা সমাপ্ত করা।ইসলামি পরিভাষায় , সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার , কামাচার ও পাপাচার থেকে বিরত থেকে সূর্যাস্তের পর কিছু খেয়ে বা পান করে রোজা সমাপ্ত করার নামই ইফতার। রাসূল (সা.) বলেছেন, ' রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ- একটি হলো তার ইফতারের সময় , অপরটি হলো আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়। ' ( বোখারি ও মুসলিম)। রোজা রেখে ইফতারের ওপর অশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।সময়মতো ইফতার করার মধ্যেও রয়েছে অশেষ সওয়াব ও ফযিলত। রাসুল (সা .)   এরশাদ করেন , তোমরা ইফতারের সময় হওয়ামাত্র ইফতার করে নাও। এতটুকু বিলম্ব করো না।তিরমিজি শরীফে বর্ণিত আছে যে , আমি ওই ব্যক্তিকে সর্বাধিক ভালোবাসি যে ইফতারের সময় হওয়ামাত্র ইফতার করে নেয়। সূর্যাস্তের পর ইফতারে বিলম্ব করা অনুচিত। কিন্তু আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে সাবধানতার জন্য কিছু সময় বিলম্ব করা উত্তম। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করা সুন্নত এবং সূর্যাস্তের আগে ইফতারির সামগ্রী সামনে নিয়ে বসে