সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইতিকাফের ফযিলত ও কিভাবে আদায় করতে হয়


ইতিকাফ একটি বিশেষ ইবাদত ।ইতিকাফের মাধ্যমে দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আল্লাহর সন্নিধানে চলে যাওয়া যায়।‘ইতিকাফ আরবি শব্দ অর্থ হলো অবস্থান করা, স্থির, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন তাঁকে মুতাকিফ বলে। মহান আল্লাহ পাক হযরত ইবরাহিম (আ.) এবং হজরত ঈসমাইল (আ.) এর কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেন ‘আর আমি ইবরাহিম ও ঈসমাইলকে আদেশ করলাম’ তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ। (সুরা বাকারা আয়াত- ১২৫)।

ইতিকাফের সময়-
ইতিকাফের সময় হলো রমজানের ২০ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত।কেউ যদি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে চায়, তাহলে সে যেন ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগেই ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করবে।(বুখারি, হাদিস)।এই ইতিকাফ মহিলারাও ঘরের কোলাহল মুক্ত নামাজের স্থানে করতে পরবে। আর বিবাহিতা নারীরা স্বামীর অনুমতি নিয়ে ইতিকাফে বসবে। হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) আজীবন রমজানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তাঁর ওফাতের পরও তাঁর বিবিরা ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৪৬, পৃষ্ঠা: ১২৯)। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান।(বুখারি)।হযরত ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন।’ (মুসলিম)।

ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য-
ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শবে কদর প্রাপ্তি। ইতিকাফের মাধ্যমে শবে কদর পাওয়ার এক অপূর্ব ও নিশ্চিত সুযোগ রয়েছে। কারণ হাদিসের ভাষ্যমতে রমজানের শেষ দশকে ‘শবে কদর’ হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। আর ইতিকাফ এটাও রমজানের শেষ দশকে হয়ে থাকে বিধায়. এ কথা জোরালোভাবেই বলা যায়, যে ইতিকাফ করলো সে যেন নিশ্চিত শবে কদর পেয়ে গেলো!রাসুল (সা.) বলেন, আমি কদরের রাতের তালাশে প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম, এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন, অতপর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হলো যে, তা শেষ ১০ দিনে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইতিকাফ পছন্দ করে, সে যেন ইতিকাফে বসে। (মুসলিম)।

ইতিকাফের জন্য স্থান-
ইতিকাফের জন্য সর্বোত্তম স্থান হলো বায়তুল্লাহ শরিফ। বাইতুল্লাহ শরিফের পর মসজিদে নববী। এরপর বাইতুল মুকাদ্দাস। তারপর জুমা আদায় করা হয় এমন মসজিদ। এরপর মহল্লার যে মসজিদে নামাজির সংখ্যা বেশি হয়।জামে মসজিদে ইতিকাফ উত্তম। কারণ জুমার জন্য অন্যত্র যেতে হবে না। কিন্তু জামে মসজিদে ইতিকাফ করা জরুরি নয়। বরং যেসব শরয়ী মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়, সে মসজিদে ইতিকাফ করতে পারে। (ফতোয়ায়ে শামী, ২/১২৯)।পুরুষরা শুধু মসজিদেই ইতিকাফ করতে পারে।


ইতিকাফ কে করতে পারবে-
ইতেকাফের জন্য জরুরি হলো, মুসলমান হওয়া, সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া। সুতরাং কাফের এবং মাতাল লোকের ইতিকাফ জায়েজ নেই। নাবালেগ তবে বোধশক্তি হয়েছে—  এমন বাচ্চা যেরূপ নামাজ, রোজা পালন করতে পারে, তেমনি ইতিকাফও করতে পারে। (বাদায়েউস সানায়ে)।সুতরাং ইতিকাফকারী যদি বেহুঁশ বা পাগল হয়ে যায়, জিন-ভূতের আছরের কারণে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে এবং এ অবস্থা যদি এক দিন এক রাত বিদ্যমান থাকে তবে ধারাবাহিকতা খতম হয়ে যাওয়ার কারণে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। যদি এক দিন এক রাত পূর্ণ হওয়ার আগেই হুঁশ বা বুদ্ধি ফিরে আসে, তবে ইতিকাফ নষ্ট হবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগীরি)।নারীরাও ঘরে কোনো স্থান নির্দিষ্ট করে ইতিকাফ করতে পারে। তবে তার জন্য স্বামীর অনুমতি আবশ্যক। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হায়েজ ও নেফাস থেকে পাক থাকতে হবে।
ইতিকাফের শর্ত-
ইতিকাফ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ। গ্রাম বা শহরের প্রত্যেকটা মহল্লা এবং ছোট গ্রাম-এলাকার পূর্ণ বসতিতে কেউ বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হবেন। আর কেউই আদায় না করলে সবাই দায়ী থাকবেন। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যাঁরা আদায় করবেন, শুধু তিনি বা তাঁরাই সওয়াবের অধিকারী হবেন। ইতিকাফের অন্যতম শর্ত যথা- ১. যে কোনো মসজিদে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা হয়, এরূপ কোনো মসজিদে পুরুষদের অবস্থান করতে হবে। মহিলারা আপন ঘরে পর্দার সঙ্গে ইতিকাফ করবে। ২. ইতিকাফের নিয়তে ইতিকাফ করতে হবে। কারণ বিনা নিয়তে ইতিকাফ হয় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, 'প্রত্যেক কাজের নির্ভরতা নিয়তের ওপর, যে যা নিয়ত করবে সে কেবল তাই পাবে।' (বুখারি : ১)। ৩. ইতিকাফকারীকে সর্বদা পাক-পবিত্র থাকতে হবে।প্রাকৃতিক প্রয়োজন ও একান্ত ঠেকা ছাড়া ওই ঘর বা কক্ষ থেকে বের হবেন না। অজু ইস্তিঞ্জা বা পাক পবিত্রতার জন্য বাইরে বের হলে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন না বা সালাম বিনিময় করবেন না। তবে দরকার হলে ওই কক্ষের ভেতর থেকে বাইরের কাউকে ডাকতে পারবেন এবং কেউ ভেতরে এলে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে পারবেন।

ইতিকাফে করণীয়-
ইতিকাফ অবস্থায় করণীয় হচ্ছে- ১. বেশি বেশি আল্লাহর জিকির-আজকার করা, ২. নফল নামাজ আদায় করা, ৩. কুরআন তেলাওয়াত করা, ৪. দ্বীনি ওয়াজ-নসিহত শোনা ও ৫. ধর্মীয় গ্রন্থাবলী পাঠ করা।

ইতিকাফের প্রকারভেদ-
ইতিকাফ তিন প্রকার-সুন্নাত, নফল ও ওয়াজিব।সুন্নাত ইতিকাফ : রমজানুল মুবারকের শেষ ১০ দিনের ইতিকাফই সুন্নাত। ২১ তারিখের রাত থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত এই ইতেকাফের সময়। কারণ নবী (সা.) প্রত্যেক বছর এই দিনগুলোতেই ইতিকাফ করতেন। এ কারণে এটাকে সুন্নাত ইতিকাফ বলা হয়।ওয়াজিব ইতিকাফ : মান্নতের ইতিকাফ ওয়াজিব। সুন্নাত ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে গেলে তা কাজা করা ওয়াজিব।নফল ইতিকাফ : এ ইতিকাফ মানুষ যেকোনো সময় করতে পারে। অর্থাৎ কিছু সময়ের জন্য ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যতক্ষণ চায় করতে পারে। রোজারও প্রয়োজন নেই। এমনকি যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে নফল ইতিকাফের নিয়ত করা সুন্নাত।

ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ-
ইতিকাফ কক্ষে এমন কেউও অবস্থান করতে পারবেন, যাঁরা ইতিকাফ করছেন না। ইতিকাফ কক্ষটি যদি শয়নকক্ষ হয় এবং একই কক্ষে বা একই বিছানায় অন্য যে কেউ অবস্থান করেন, তাতেও কোনো ক্ষতি নেই; এমনকি স্বামীও পাশে থাকতে পারবেন; তবে স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ; এর দ্বারা ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ো না, যখন তোমরা ইতিকাফরত থাকবে মসজিদে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত- ১৮৭)।ইতিকাফ অবস্থায় এমন সব কথা বলা ও কাজ করা বৈধ, যাতে কোনো গুনাহ নেই। প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথাবার্তা বলতেও নিষেধ নেই; তবে অহেতুক অযথা বেহুদা অনর্থক কথাবার্তা দ্বারা ইবাদতের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। ইতিকাফকারী মসজিদের মধ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবেন এবং মাথায়, দাড়িতে ও চুলে তেল লাগাতে পারবেন। মাথার চুলে ও দাড়িতে চিরুনি করতে পারবেন। যাঁরা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত, তাঁরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদের ভেতরে তালিম দিতে পারবেন।

ইতিকাফের ফজিলত-
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ইতিকাফকারী যাবতীয় গোনাহ থেকে মুক্ত থাকে এবং তার জন্য ওই পরিমাণ নেকি লেখা হয়, যে পরিমাণ আমলকারীর জন্য লেখা হয়ে থাকে। (মিশকাত, হাদিস নং: ২০০৪)আল্লামা শারানি (রহ.) রাসুল (সা.) এর ইরশাদ নকল করেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে ১০ দিন ইতিকাফ করবে, সে দুই হজ ও দুই ওমরার সওয়াব পাবে। (কাশফুল গুম্মাহ ও বায়হাকি)হযরত সাঈদ ইবন জুবাইর (রা.), হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইতিকাফকারী সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, যে ইতিকাফ ও মসজিদে আবদ্ধ থাকার কারণে সব পাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং তার নেকির হিসাবের মধ্যে সর্বপ্রকার নেকি সম্পাদনকারীর ন্যায় নেকী অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।’(ইবন মাজা)।ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, রাসুল (সা.) অনেক নফল কাজ কখনো করতেন, কখনো ছেড়ে দিতেন। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পর থেকে ওফাত পর্যন্ত কখনো রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের ইতিকাফ ছেড়ে দেননি। আফসোসের বিষয় হলো, বর্তমানে মানুষ এর পুরোপুরি পাবন্দি করে না।

গ্রন্থনায়-মো.আবু রায়হান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...