পোস্টগুলি

১১ মার্চ ছিল প্রথম ভাষা দিবস

আজ ঐতিহাসিক ১১ মার্চ।  ইতিহাসে দিনটি একটি স্মরণীয় দিন। জেনে নেই ১১ মার্চ ইতিহাসে কেন এতো বিখ্যাত। ভাষা আন্দোলন তথা এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ১১ মার্চ একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। এটাই ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তথা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এ দেশে প্রথম সফল হরতাল। ১১ মার্চ প্রতিবাদের যে ভিত রচনা হয়েছিল তারই সূত্র ধরে তৎকালীন সরকার ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় এবং এই সংগ্রামের পরিপূর্ণতা লাভ করে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের সিঁড়ি বেয়েই ৫২ 'র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন  এবং পরবর্তীকালে স্বাধীনতা আন্দোলন বিকাশ লাভ করে।যার চূড়ান্ত পরিণতি ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।  ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন করাচিতে অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তান গণপরিষদের এ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই পূর্ব বাংলায় ( বাংলাদেশ) বাংলাকে অফিস-আদালতের ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম করার জন্য ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ব্

যুগেযুগে যত মহামারি ও জীবনহানি

ছবি
মো. আবু রায়হান: করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা বিশ্ব যখন আতঙ্কিত তখন নতুন করে আলোচনায় আসছে অতীতের মহামরি ও সেগুলোর ধ্বংসাত্মক প্রভাব।গত শতাব্দীর দুটো বিশ্বযুদ্ধসহ, পারমানবিক বোমা, ইন্টারনেট,  ফরমালিন,  প্রযুক্তি, হাইব্রিড খাদ্য,  ইত্যাদি বিশ্বকে করে রেখেছে মৃত্যুপুরী। বন্যা, খরা, অগ্নুৎপাত,ভূকম্পন, সাইক্লোন,মহামারি পৃথিবীকে করছে বিপর্যস্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ২০১১-২০১৭ এই সাত বছরে বিশ্ব ব্যাপি ১৩০৭ টি মহামারির মতো ঘটনা ঘটেছে।ভূতত্ত্ববিদ বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলেছেন ১০০ বছর পর পর প্রকৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়।পৃথিবীর ভূঅভ্যন্তরে আছে বিশালাকার প্লেট, যা প্রাকৃতিক নিয়মে অবিরত নড়াচড়া করছে।বলা হচ্ছে প্রতি ১০০ বছর পর পর তাদের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করছে, গ্রামকে গ্রাম উজার হচ্ছে, নগরসভ্যতা হারিয়ে যাচ্ছে মহামারিতে। বিভিন্ন লিখিত রচনাতে আমরা এসব মহামারি ও মানব সভ্যতায় তার সুদূরপ্রসারী প্রভাবের নিদর্শন জানতে পারি।কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে অতীতে বিভিন্ন জাতির ধ্বংস ,এবং ওল্ড টেস্টামেন্টে গ্রন্থে ঈশ্বরের শাস্তি হিসেবে মহামারির বিভিন্ন নিদর্শনের বর্ণ

একাধিক প্রেসিডেন্টের দেশ

আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব ইউরোপের একটি দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে ।যে দেশটি গত শতাব্দীর শেষে নব্বইয়ের দশকে বসনীয় মুসলিম হত্যা ও নির্যাতনের পর ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনায় আসে। দেশটিতে জটিল রাজনৈতিক পদ্ধতির কারণে এখনো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বসনিয়া হার্জেগোভিনা বর্তমানে একই সঙ্গে চার জন প্রেসিডেন্ট দ্বারা পরিচালিত। ইউরোপ মহাদেশের বলকান অঞ্চলের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে ক্রোয়েশিয়া ,  পূর্বে সার্বিয়া ,  দক্ষিণ-পূর্বে মেসিডোনিয়া ,  দক্ষিণে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর।বলকান উপদ্বীপে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ত্রিভুজ আকৃতির। বসনিয়া অঞ্চলটি উত্তরে পাহাড় ও গভীর বনবেষ্টিত। বিশাল এলাকাজুড়ে অমসৃণ ও সমতল কৃষিভূমির হার্জেগোভিনা অঞ্চলটি দক্ষিণে এর সংকীর্ণ উপকূল। দেশটির আয়তন ৫১ হাজার ১২৯ বর্গকিলোমিটার (১৯৭৪১ বর্গ মাইল)।লোকসংখ্যা ৩৫ লাখ দুই হাজার ৬৩৬ জন। ইউরোপে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বিরল। তুরস্কের পরে ইউরোপে বসনিয়াই একমাত্র দেশ যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।ইউরোপের সংখ্যাগরিষ্ঠ কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও সেভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো মিলেনি। বসনিয়া

যে দেশটির প্রেসিডেন্ট খ্রিস্টান, প্রধানমন্ত্রী সুন্নি এবং স্পিকার শিয়া

ছবি
মো. আবু রায়হান: আজ পৃথিবীর এমন একটি দেশের কথা বলবো যে দেশটির ধর্মীয় সংস্কৃতির চমৎকার সমঝোতার অনুপম চর্চা বিদ্যমান।যার উদাহরণ পৃথিবীর অন্যদেশে বিরল। কারণ দেশটিতে সরকারের সর্বোচ্চ পদগুলো আনুপাতিক হারে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে থাকে। বর্তমানে যে দেশটিতে প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি নারী অভিবাসীর সংখ্যা লক্ষাধিক। পৃথিবীর ইতিহাসে যে দেশটি হিজবুল্লাহ ও গৃহযুদ্ধের জন্য ব্যাপকভাবে আলোচিত। "গতকাল হলো আজকের স্মৃতি আর আজকের স্বপ্ন হলো আগামী"- এমনও হাজার পংক্তির স্রষ্টা ম্যারোনাইট খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম কবি খলিল জিবরানের মাতৃভূমি লেবানন নিয়ে আজকের আলোচনা। খলিল জিবরান লেবাননের জাতীয় কবি ও তাঁর লিখিত দ্য প্রপেট গ্রন্থ বিশ্বের ২০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। সবার প্রিয় কার্টুন টম এন্ড জেরির নির্মাতারাও মূলত লেবানিজ নাগরিক। লেবানন এশিয়া মহাদেশের পশ্চিম এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। লেবাননের সরকারী নাম লেবানিজ রিপাবলিক। মাউন্ট লেবানন, যা লেবাননের একটি পর্বতমালা, এর গড় উচ্চতা প্রায় ২৫০০ মিটার। দেশটির নাম মূলত এই পর্বতশ্রেণি থে

বাংলাদেশে কেন মোদির বিরোধিতা ও একজন দুধ খাওয়া মজনুর গল্প

ছবি
মো.আবু রায়হানঃ ১৭ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন। এইদিনে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তাঁর জন্মদিন আলাদা তাৎপর্য বহন করছে। কেননা ২০২০ সালে মহান নেতার শততম জন্ম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে সরকারিভাবে নানান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ১৭ মার্চের মূল অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন বিদেশি অতিথির আগমন ঘটবে। কিন্তু অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের ইসলামি , বাম ঘরানা দলগুলো ও ডাকসুর ভিপি প্রবল আপত্তি জানিয়েছে ও মোদির আগমন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।এর আগেও মোদি বাংলাদেশ সফর করেছেন। তখন এতোটা আপত্তি কেউ করেনি। আচমকা কেন এই প্রতিবাদ ও মোদি বিতর্ক। এসব ঘটনার মূলে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে বিজেপি সরকারের বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দিল্লীতে বিক্ষোভে মুসলিমদের হত্যা। এর পেছনে নতুন করে আলোচনায় আসছে ২০০২ গুজরাটে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা মোদির ইন্ধনের বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে মোদির ভূমিকা চরম সাম্প্রদায়িক ও হিন্দুত্ববাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যা সারা বিশ্বের মুসলিমদের মতো বাংলাদেশের মুসলিমদেরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। মোদির এই

এক নব্য ফেরাউনের মৃত্যু

ছবি
মিশরের সামরিক নেতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারক টানা তিন দশকের বেশি সময় ধরে মিসর শাসন করে। ১৯৮১ থেকে ২০১১  সাল পর্যন্ত দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাত নিহত হবার পর মুবারক মিশরের রাষ্ট্রপতি হয়।গতকাল তার ইহলীলা সাঙ্গ হয়েছে। ২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রেক্ষাপটে তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা হোসনি মুবারক ব্যাপক জন বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনীর দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হয়। এর দুই মাস পর এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার হয়। ২০১২ সালে যাবজ্জীবন দণ্ড হয় তার।  পরে ২০১৭ সালের মার্চে মুবারক কারাগার থেকে মুক্তি পান। মিসরের স্বৈরশাসক জামাল আব্দুল নাসের, আনোয়ার সাদাত, হোসনী মুবারকের শাসনামলে সাধারণ জনগণ ও ইসলামপন্থীরা জেল জুলুম, গুম, অপহরণ, হত্যা নির্যাতন ফাঁসি ও দেশত্যাগের মতো ঘটনার সম্মুখীন হন। এই সব স্বৈরশাসকদের সময় মিসরের ইসলাম প্রিয় জনগণকে অনেক জেল যুলুম, নির্যাতন, ফাঁসি, গুম সইতে হয়েছে।জয়নব আল গাযালী, হাসান আল বান্না, সাইয়েদ কুতবসহ আরও অসংখ্য ইসলামি স্কলারদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে।ফেরাউনের মুখোশ মানুষের সামনে উন্মোচন করে দেওয়ার জন্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামী

কচুরিপানা তুলকালাম ও বঙ্গ জনপদে কচুরিপানার রাজত্ব

ছবি
 : মো আবু রায়হানঃ সারাদেশে  কচুরিপানা নিয়ে চলছে  ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। একজন মন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই সমালোচনা। যদিও মন্ত্রী তার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ করেছেন। দ্রুত বিস্তার করতে পারা এই জলজ উদ্ভিদ নিয়ে রয়েছে নানান মজার ও বিব্রতকর কাহিনী। কচুরিপানা আমাদের দেশীয় কোনো উদ্ভিদ নয়। মনে করা হয় কচুরিপানা অর্কিড-সদৃশ ফুলের সৌন্দর্যপ্রেমিক  ব্রাজিলীয় এক পর্যটক ১৮ শতকের শেষভাগে বাংলায়  নিয়ে আসেন। তারপর কচুরিপানা এতো দ্রুত বাড়তে থাকে যে ১৯২০ সালের মধ্যে বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। এরপর কচুরিপানা বাংলার প্রবাদ প্রবচন গানেও ঠাঁই করে নেয়। বাঙালি জীবনে কলহ-বিবাদ ও ঝগড়ায় প্রসঙ্গক্রমে এসে যায় কচুরিপানার কথা। প্রতিপক্ষের কথায় আক্রমণাত্মক হয়ে অপরজন বলে উঠে, ‘ভেসে আসা কচুরিপানা পেয়েছিস, ঠেলা দিলেই সরে যাব!গানেও কচুরিপানার দখল লক্ষ্য করা যায়, ‘থাকিলে ডোবাখানা হবে কচুরিপানা...’।  আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই কচুরিপানার ভুমিকা ছিল প্রশংসনীয়। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা  যখন গেরিলা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিতে খাল বিলে লুকিয়ে থাকত তখন এই সামান্য কচুরি

বাংলা ভাষা আহত না নিহত?

ছবি
আজ সারা বিশ্বে যথাযথ মর্যাদায়  পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। পৃথিবীর একমাত্র জাতি হিসেবে বাঙালিরা তাদের মায়ের ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে প্রাণ দিয়েছেন। সেই ভাষার  ওপর ভিত্তি করেই ১৯৭১ সালে ভাষা ভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে।১৮ দশকের আমেরিকার কবি রাফ এমারসন বলেছিলেন, ‘Language is a city to the building of which every human being brought a stone’। খুবই খাঁটি কথা।বাংলাদেশের বাইরেও বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিরাই প্রাণ দিয়েছেন।১৯৬১ সালে আসামের সরকার বাংলাভাষী এলাকা বরাক উপত্যকায় অসমীয়া ভাষাকে আনুষ্ঠানিক ভাষা বলে ঘোষণা করলে দলমত নির্বিশেষে বরাক উপত্যকার জনগণ আন্দোলনে নেমেছিলেন।প্রতিবাদে ১৯৬১ সালের ১৯ মে বরাকে হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেদিন হরতাল চলাকালে আসামের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মোট ১১ জনকে হত্যা করেছিল। এরপর  আন্দোলনকারীরা দমে না গিয়ে শেষমেশ সেই সরকারি ঘোষণা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিলেন।এরকম ঘটনা পাকিস্তান আমলে এদেশেও ঘটেছিল। গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা অন্যত