বাংলাদেশে কেন মোদির বিরোধিতা ও একজন দুধ খাওয়া মজনুর গল্প
মো.আবু রায়হানঃ
১৭ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন। এইদিনে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তাঁর জন্মদিন আলাদা তাৎপর্য বহন করছে। কেননা ২০২০ সালে মহান নেতার শততম জন্ম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে সরকারিভাবে নানান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ১৭ মার্চের মূল অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন বিদেশি অতিথির আগমন ঘটবে। কিন্তু অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের ইসলামি , বাম ঘরানা দলগুলো ও ডাকসুর ভিপি প্রবল আপত্তি জানিয়েছে ও মোদির আগমন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।এর আগেও মোদি বাংলাদেশ সফর করেছেন। তখন এতোটা আপত্তি কেউ করেনি। আচমকা কেন এই প্রতিবাদ ও মোদি বিতর্ক। এসব ঘটনার মূলে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে বিজেপি সরকারের বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দিল্লীতে বিক্ষোভে মুসলিমদের হত্যা। এর পেছনে নতুন করে আলোচনায় আসছে ২০০২ গুজরাটে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা মোদির ইন্ধনের বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে মোদির ভূমিকা চরম সাম্প্রদায়িক ও হিন্দুত্ববাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যা সারা বিশ্বের মুসলিমদের মতো বাংলাদেশের মুসলিমদেরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। মোদির এই সফরের প্রতিবাদ নতুন করে ভারত বিরোধিতার সুর অনেকে খুঁজছেন। বাংলাদেশের জনগণের মোদির বিরোধিতা মানে পুরোনো ভারত বিরোধিতার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের ভারত তোষণ ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতিও এক্ষেত্রে কম দায়ী নয় ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন এবং শেষপর্যায়ে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ, যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অল্প সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। এ কারণে বাংলাদেশের মানুষ যেমন ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ, আবার একই কারণে কিছু মানুষ ভারতের বিরুদ্ধেও । ১৯৭১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে থাকা মানুষের সংখ্যা কম ছিল। এরপর যত সময় গেছে তা দ্রত বেড়েছে।১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এদেশে ভারত বিরোধী রাজনীতি তীব্রতর হয়েছে।যার যৌক্তিক কিছু কারণ রয়েছে।
ভারত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর উপর একটি বাঁধ নির্মাণ করে।এই বাঁধটি ফারাক্কা বাঁধ নামে পরিচিত। ১৯৬১ সালে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। ফারাক্কা বাঁধ ৪১ দিনের জন্য পরীক্ষামূলক চালু করার চুক্তি করে তাকে স্থায়ী রূপ দিয়ে ভারত বাংলাদেশর উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমি বানিয়েছে।এ অঞ্চলে খরা মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার ভারতের বিরুদ্ধে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন এবং শেষপর্যায়ে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ, যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অল্প সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। এ কারণে বাংলাদেশের মানুষ যেমন ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ, আবার একই কারণে কিছু মানুষ ভারতের বিরুদ্ধেও । ১৯৭১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে থাকা মানুষের সংখ্যা কম ছিল। এরপর যত সময় গেছে তা দ্রত বেড়েছে।১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এদেশে ভারত বিরোধী রাজনীতি তীব্রতর হয়েছে।যার যৌক্তিক কিছু কারণ রয়েছে।
ভারত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর উপর একটি বাঁধ নির্মাণ করে।এই বাঁধটি ফারাক্কা বাঁধ নামে পরিচিত। ১৯৬১ সালে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। ফারাক্কা বাঁধ ৪১ দিনের জন্য পরীক্ষামূলক চালু করার চুক্তি করে তাকে স্থায়ী রূপ দিয়ে ভারত বাংলাদেশর উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমি বানিয়েছে।এ অঞ্চলে খরা মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার ভারতের বিরুদ্ধে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
ভারত স্বনির্ভর কোনো রাষ্ট্র নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতকে বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে ট্রানজিটের জন্য। ফলে ভারতের কাছে বহু পাওনা ও প্রত্যাশা আদায়ে ট্রানজিট আমাদের সবচেয়ে বড় দর-কষাকষির শক্তি হতে পারে।বাংলাদেশ সরকার এসব পাওনা ও প্রত্যাশার প্রায় কোনো কিছু আদায় না করে ভারতকে একতরফাভাবে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, করিডোর সুবিধা দিয়ে রেখেছে এতে করে দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি।ট্রানজিটের বিনিময়ে ভারতের শুল্ক দিতে গড়িমসি আচরণ, শুরুতে ট্রানজিটের যে গুরুত্বের কথা বলা হয়েছিল পরবর্তী সময়ে তা না থাকা সরকারের পদক্ষেপ জনগণের মধ্যে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪ টি আন্তর্জাতিক নদী রয়েছে। ৫৪টি যৌথ নদীর মধ্যে একমাত্র গঙ্গা নদীর পানি ব্যবহারে দুই দেশ চুক্তিতে উপনীত হতে পেরেছিল ১৯৯৬ সালে ১২ডিসেম্বর। ভারত তার এক ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর চীনের একটা বাঁধকে সহ্য করতে পারছে না, বাংলাদেশের মানুষ কি করে তাদের ৫৪টি নদীর উপর ভারতের বাঁধ ও পানি নিয়ন্ত্রণ সহ্য করবে?বিভিন্ন নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতকে সর্বাত্মক সহায়তা করার পরও তিস্তা চুক্তি না হওয়াটা দুঃখজনক।এদিকে হঠাৎ করে ফেনী নদী থেকে পানি দিয়ে দেয়া ইত্যাদি কারণে মানুষের মাঝে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে।তিস্তা নদী নিয়ে স্বাধীনতার পরপর আলোচনা শুরু হলেও ১৯৮৩ সালে প্রথম একটি সমঝোতা হয়। এই সমঝোতা অনুসারে তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারত ও ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিল। বাকি ২৫ শতাংশের কতটুকু বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত তিস্তার গতিপথকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন এবং এটি কীভাবে ভাগাভাগি হবে তা নিয়ে পরে আরও আলোচনার কথা ছিল। এই আলোচনার এখনো সুরাহা হয়নি। বারবার বাংলাদেশকে ক্রমান্বয়ে আরও কম পানি নিতে রাজি হতে বলা হয়েছে, বারবার সমঝোতার শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।তিস্তার পানি বণ্টনের কোনো সুরাহা না করে ভারতকে তার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক চলাচল করিডর দেওয়া হয়েছে, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়।
বাংলাদেশের ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন সম্ভব হয়েছে ভারতের ভূমিকার কারণে,এতে ভারত বিরোধিতা বাড়তে থাকে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন এবং এর পক্ষে ভারতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বহু মানুষের কাছে এই বার্তা দেয় যে জনগণের সম্মতি শুধু নয়, ভারতের আশীর্বাদ ও সম্মতিও এ দেশে ক্ষমতায় আরোহণের বড় একটি শর্ত।
অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে বাংলাদেশে এখন ভারত বিরোধিতা বেশি। ধর্মীয় কারণে ভারতবিরোধী এবং পাকিস্তানপ্রেমী মানুষের সংখ্যাও বাংলাদেশে কম নয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার কারণেও তারা ভারতকে অপছন্দ করে।ভারত যদি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধুই হয়, তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের কতটা করণীয়, তারা কতোটা করছে, বাংলাদেশ সরকার কতটা প্রত্যাশা করে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাবে চীন-রাশিয়া ভোট দিয়েছে মিয়ানমারের পক্ষে, বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে। ভারত সরাসরি মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দেয়নি, নীরব থেকেছে। দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা নীরবতা পালন করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমারে গিয়ে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন।
যেসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভেতরে ভারত বিরোধিতা তীব্র, তার মধ্যে অন্যতম সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা। ভারত এই বিষয়টি গুরুত্বের মধ্যেই আনতে চায় না বরং বারংবার এড়িয়ে গেছে। ভারত সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করছে, ভারত ইচ্ছে করলেই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারে।ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে গত ১০ বছরে মোট ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে সংসদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২০০৯ সালে কমপক্ষে ৬৬ বাংলাদেশি বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হন। ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে তিনজন নিহত হন।
ভারতের পণ্য আর চাকরিজীবীদের জন্য প্রায় একতরফাভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার।ভারতের ভোগ্য পণ্যে বাংলাদেশের বড় নির্ভরশীলতা রয়েছে। যেমন সম্প্রতি ভারত সাময়িক পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বি হয় । এক ধাক্কায় ৪০-৫০ টাকা দাম বেড়ে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ গিয়ে দাঁড়ায় ২০০-২৫০ টাকায়।ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৭৭৫ কোটি ডলার। ভারত থেকে বছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ৮৬২ কোটি ডলারের পণ্য। অন্যদিকে, ভারতে বাংলাদেশ রপ্তানি করে মাত্র ৮৭ কোটি ডলারের পণ্য।সে হিসেবে বাংলাদেশ এখন ভারতের নবম বৃহৎ রফতানি বাজার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাব মতে, দেশে কর্মক্ষম ৫ কোটি ৬৭ লাখ লোকের মধ্যে কাজ করছে ৫ কোটি ৫১ লাখ। তার অর্থ, বেকারের সংখ্যা মাত্র ২৬ লাখ। এ হিসাব কি কখনো গ্রহণযোগ্য? আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি।বাংলাদেশে কম করে হলেও পাঁচ লাখ ভারতীয় কাজ করে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশেরই কোনো ওয়ার্ক পারমিট নেই। তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় আসেন। আর তাদের বেতন অনেক বেশি। ট্যুরিস্ট ভিসায় যারা কাজ করেন তাদের আয়করা পুরো অর্থই অবৈধ পথে বাংলাদেশের বাইরে চলে যায়।২০১৭ সালে ১০ বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগে বাংলাদেশ ভারতীয়দের জন্য চতুর্থ বৃহৎ রেমিট্যান্স আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়ায়।
ভারতের সাথে আমাদের আকাশচুম্বি বাণিজ্যিক অসমতার সহসা নিরসন হচ্ছে না। আমাদের যেসব পণ্য ভারতে যেতে পারে, ভারতে বাজার পেতে সে পণ্যকে বিভিন্ন অজুহাতে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে অবাধে চলছে, কিন্তু বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেলগুলো ভারতে ঢুকতে পারে না কেন? এসব বললে কি ভারত বিরোধিতা হয়? বরং দেশের কথা ভাবাও তো দেশপ্রেম।
ইরানের জালাল উদ্দিন রুমী (রহ)তাঁর
মসনবী গন্থে একটি ভালবাসার গল্প বর্ণনা করেন।এই গল্প দিয়ে দুই কিসিমের ভালবাসা বোঝা খুব সহজতর হতে পারে। লাইলির প্রেমে পাগল মজনু।সারাদিন 'লাইলি, লাইলি, লাইলি ' নাম নিয়ে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। কখনো বালিতে লাইলির নাম লিখে মিশে ফেলে। ব্যাপারটা লাইলি জানতে পেরে ভাবলো -একটা মানুষ আমার প্রেমে পাগল হয়ে এ ভাবে লাইলি লাইলি করে মারা যাবে তা হয় না। তাই সে তার ভৃত্যকে
বলে -তুমি এক পেয়ালা দুধ নিয়ে জঙ্গলে যাও দেখবে মজনু নামের একটা লোক না খেয়ে সারাদিন আমার নাম নিয়ে ঘুরাফেরা করে তাকে বেচেঁ থাকার জন্য এই এক পেয়ালা দুধ প্রতিদিন দিয়ে আসবে। এই কথা কান পেতে শুনেছিল অন্য একজন। যখন ভৃত্য লাইলির পাঠানো দুধ নিয়ে জঙ্গলে যেতে লাগলো সেই লোকটি নকল মজনু সেজে জঙ্গলের কাছাকাছি ভৃত্যের সামনে 'লাইলি, লাইলি 'করা শুরু করে। ভৃত্যও তাকে মজনু ভেবে দুধ খাইয়ে চলে যায়। এ ভাবে চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। হঠাৎ একদিন লাইলির সন্দেহ হলো ভৃত্য দুধ আসল
মজনুকে খাওয়ায় কিনা এটা পরীক্ষা করার জন্য লাইলি সেদিন দুধ না দিয়ে ভৃত্যকে
বলে, খালি পেয়ালাতে ছুরি নিয়ে যাও। আর মজনুকে বলবে 'তার ভালবাসার লাইলি খুবই অসুস্থ তাকে বাঁচানোর জন্য এক পেয়ালা রক্ত প্রয়োজন। আজ নকল মজনু জানে না যে –দুধের পরিবর্তে ভৃত্য লাইলির কথা মতো পেয়ালাতে ছুরি নিয়ে আসছে! ভৃত্য যখন বললো আপনি তো লাইলিকে খুব ভালবাসেন তাই না?লাইলি মরণ পথে তার জন্য জরুরি এক পেয়ালা রক্ত দরকার। এ কথা শোনে ছদ্মবেশী মজনু বলে উঠলো 'আমি কেন রক্ত দেব? রক্ত দিবে আসল মজনু যাও জঙ্গলের ভেতরে খুঁজে পাবা। 'আমি হচ্ছি দুধ খাওয়া মজনু '! ভৃত্য তো ভয় পেল হায় হায় এতোদিন তো আমি নকল মজনুকে দুধ খাইয়েছি।ভৃত্য চট জলদি ছুরি আর পেয়ালা নিয়ে আসল মজনুকে খুঁজে বের করে বললো 'তোমার ভালবাসার লাইলিকে বাঁচাতে এক পেয়ালা রক্ত প্রয়োজন এ কথা শোনে না খাওয়া দুর্বল মজনু নিজের শরীর কেটে রক্ত পেয়ালা দিয়ে অস্থির হয়ে ভৃত্যকে বলল জলদি নিয়ে লাইলির জীবন বাঁচাও। একথা বলে সে কাদতেঁ লাগলো।প্রিয় পাঠকেরা সমাজে এমন দুই ধরনের মজনুর অভাব নেই। ভারত হলো গল্পের দুধ খাওয়া মজনুর মতো। ভারত কখনো বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হতে পারেনি। ভারতের বন্ধুত্বের ভেতরে ছিল স্বার্থের গন্ধ।ভারত আজীবন করিডোর, ট্রানজিট, বন্দর নামকাওয়াস্তে শুল্কে ব্যবহার করে নিজেদের ষোলোআনা চরিতার্থ করেছে। তিস্তা নদীর ন্যায্য হিসসা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করেছে। ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল সাহারা মরূভূমি বানিয়েছে। এই দুধ খাওয়া মজনুর চরিত্রের মতো ভারতের চরিত্রের বদল না হলে বাংলাদেশের রক্ত দাতা মজনুদের ভারত বিরোধিতার অবসান হবে না।ভারত দুধ খাওয়া মজনু ছিল আছে ভবিষ্যতে থাকবে।তবে ভারত বাংলাদেশের প্রকৃত মজনু কখনো ছিল না ভবিষ্যতেও হবে না।
ভারতের সাথে আমাদের আকাশচুম্বি বাণিজ্যিক অসমতার সহসা নিরসন হচ্ছে না। আমাদের যেসব পণ্য ভারতে যেতে পারে, ভারতে বাজার পেতে সে পণ্যকে বিভিন্ন অজুহাতে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে অবাধে চলছে, কিন্তু বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেলগুলো ভারতে ঢুকতে পারে না কেন? এসব বললে কি ভারত বিরোধিতা হয়? বরং দেশের কথা ভাবাও তো দেশপ্রেম।
ইরানের জালাল উদ্দিন রুমী (রহ)তাঁর
মসনবী গন্থে একটি ভালবাসার গল্প বর্ণনা করেন।এই গল্প দিয়ে দুই কিসিমের ভালবাসা বোঝা খুব সহজতর হতে পারে। লাইলির প্রেমে পাগল মজনু।সারাদিন 'লাইলি, লাইলি, লাইলি ' নাম নিয়ে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। কখনো বালিতে লাইলির নাম লিখে মিশে ফেলে। ব্যাপারটা লাইলি জানতে পেরে ভাবলো -একটা মানুষ আমার প্রেমে পাগল হয়ে এ ভাবে লাইলি লাইলি করে মারা যাবে তা হয় না। তাই সে তার ভৃত্যকে
বলে -তুমি এক পেয়ালা দুধ নিয়ে জঙ্গলে যাও দেখবে মজনু নামের একটা লোক না খেয়ে সারাদিন আমার নাম নিয়ে ঘুরাফেরা করে তাকে বেচেঁ থাকার জন্য এই এক পেয়ালা দুধ প্রতিদিন দিয়ে আসবে। এই কথা কান পেতে শুনেছিল অন্য একজন। যখন ভৃত্য লাইলির পাঠানো দুধ নিয়ে জঙ্গলে যেতে লাগলো সেই লোকটি নকল মজনু সেজে জঙ্গলের কাছাকাছি ভৃত্যের সামনে 'লাইলি, লাইলি 'করা শুরু করে। ভৃত্যও তাকে মজনু ভেবে দুধ খাইয়ে চলে যায়। এ ভাবে চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। হঠাৎ একদিন লাইলির সন্দেহ হলো ভৃত্য দুধ আসল
মজনুকে খাওয়ায় কিনা এটা পরীক্ষা করার জন্য লাইলি সেদিন দুধ না দিয়ে ভৃত্যকে
বলে, খালি পেয়ালাতে ছুরি নিয়ে যাও। আর মজনুকে বলবে 'তার ভালবাসার লাইলি খুবই অসুস্থ তাকে বাঁচানোর জন্য এক পেয়ালা রক্ত প্রয়োজন। আজ নকল মজনু জানে না যে –দুধের পরিবর্তে ভৃত্য লাইলির কথা মতো পেয়ালাতে ছুরি নিয়ে আসছে! ভৃত্য যখন বললো আপনি তো লাইলিকে খুব ভালবাসেন তাই না?লাইলি মরণ পথে তার জন্য জরুরি এক পেয়ালা রক্ত দরকার। এ কথা শোনে ছদ্মবেশী মজনু বলে উঠলো 'আমি কেন রক্ত দেব? রক্ত দিবে আসল মজনু যাও জঙ্গলের ভেতরে খুঁজে পাবা। 'আমি হচ্ছি দুধ খাওয়া মজনু '! ভৃত্য তো ভয় পেল হায় হায় এতোদিন তো আমি নকল মজনুকে দুধ খাইয়েছি।ভৃত্য চট জলদি ছুরি আর পেয়ালা নিয়ে আসল মজনুকে খুঁজে বের করে বললো 'তোমার ভালবাসার লাইলিকে বাঁচাতে এক পেয়ালা রক্ত প্রয়োজন এ কথা শোনে না খাওয়া দুর্বল মজনু নিজের শরীর কেটে রক্ত পেয়ালা দিয়ে অস্থির হয়ে ভৃত্যকে বলল জলদি নিয়ে লাইলির জীবন বাঁচাও। একথা বলে সে কাদতেঁ লাগলো।প্রিয় পাঠকেরা সমাজে এমন দুই ধরনের মজনুর অভাব নেই। ভারত হলো গল্পের দুধ খাওয়া মজনুর মতো। ভারত কখনো বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হতে পারেনি। ভারতের বন্ধুত্বের ভেতরে ছিল স্বার্থের গন্ধ।ভারত আজীবন করিডোর, ট্রানজিট, বন্দর নামকাওয়াস্তে শুল্কে ব্যবহার করে নিজেদের ষোলোআনা চরিতার্থ করেছে। তিস্তা নদীর ন্যায্য হিসসা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করেছে। ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল সাহারা মরূভূমি বানিয়েছে। এই দুধ খাওয়া মজনুর চরিত্রের মতো ভারতের চরিত্রের বদল না হলে বাংলাদেশের রক্ত দাতা মজনুদের ভারত বিরোধিতার অবসান হবে না।ভারত দুধ খাওয়া মজনু ছিল আছে ভবিষ্যতে থাকবে।তবে ভারত বাংলাদেশের প্রকৃত মজনু কখনো ছিল না ভবিষ্যতেও হবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন