মাদরাসাতুল মুসতানসিরিয়া বাগদাদ
মাদরাসাতুল মুসতানসিরিয়া হলো বাগদাদের অবস্থিত মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মাদ্রাসা । আব্বাসি খলিফা আল মুস্তানসির ১২২৭ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন। বাগদাদ শহরে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতার প্রতি খিলাফতের অঙ্গীকারের প্রতীক ছিল এটি। এটি দজলা নদীর বাম তীরে অবস্থিত। মোঙ্গলদের বাগদাদ অবরোধের সময় মাদ্রাসাটি টিকে যায়। এর অন্তর্ভুক্ত দালানের মধ্যে আছে সরাই সুক, বাগদাদের জাদুঘর, মুসতানাব্বি স্ট্রিট, আব্বাসীয় প্রাসাদ এবং খলিফার সড়ক।
মাদরাসাতুল মুসতানসিরিয়া র গ্রন্থাগারে প্রাথমিকভাবে ৮০,০০০ গ্রন্থ ছিল। খলিফা এগুলো দান করেন। বলা হয় যে সংগ্রহের পরিমাণ ৪,০০,০০০ এ পৌছায়। মোঙ্গল আক্রমণের সময় গ্রন্থাগারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ১৩৯৩ সালে এটি নিজামিয়া মাদ্রাসার সাথে একীভূত হয়। ১৫৩৪ সালে উসমানীয়রা বাগদাদ দখল করলে প্রাসাদ ও গ্রন্থাগারের বইগুলো যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হিসেবে নিয়ে যায়। এগুলো ইস্তানবুলের রাজকীয় গ্রন্থাগারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠে এবং মুসতানসিরিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
১২৩৫ সালে পানির শক্তি ব্যবহার করে দিনে ও রাতে নামাজের সময় জানানোর জন্য একটি এলার্ম ঘড়ি তৈরী হয়। এটি মাদ্রাসার প্রবেশ কক্ষে স্থাপিত ছিল।
বর্তমানে নতুন ভবনে মুসতানসিরিয়া মাদ্রাসার কার্যক্রম চালু আছে। ১৯২৭ সালে আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে মূল মাদ্রাসা পুনর্নির্মাণের সময় এটি মুসতানসিরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশে পরিণত হয়।শতাব্দীর রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও, আল-মুস্তানসিরিয়া মাদ্রাসার উত্তরাধিকার বাগদাদের শিক্ষার স্বর্ণযুগের প্রমাণ হিসাবে টিকে আছে। এটি জ্ঞানের সঞ্চারকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে এবং ইসলামী বিশ্বের স্থায়ী সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত আদর্শের একটি স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন