মুহাম্মদ আলি পাশা ও প্রথম সৌদি-আরব ওহাবি রাষ্ট্র দিরিয়া

উসমানীয় সেনাপতি মুহাম্মদ আলি পাশা আল-মাসউদ ইবনে আগা প্রথম সৌদি-আরব ওহাবি রাষ্ট্র, দিরিয়া আমিরাতকে ধ্বংস করেছিলেন । মুহাম্মদ আলি পাশা ছিলেন উসমানীয় সেনাবাহিনীর একজন উসমানীয় আলবেনীয় কমান্ডার। তিনি পাশা পদে পদোন্নতি লাভ করেছিলেন এবং নিজেকে মিশর ও সুদানের খেদিভ ঘোষণা করেছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি জাতীয়তাবাদি না হলেও সামরিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তার সংস্কারের ফলে তাকে আধুনিক মিশরের স্থপতি বিবেচনা করা হয়। মিশরের বাইরে তিনি লেভান্টও শাসন করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত মুহাম্মদ আলি রাজবংশ ১৯৫২ সালের বিপ্লবের আগ পর্যন্ত মিশর শাসন করেছে।

১৮০১ সালে আব্দুল্লাহ ইবনে সা'উদের সেনাবাহিনী কারবালায় হজরত হুসাইন ইবনে আলী (রাসূলের প্রিয় নাতি) এর সমাধি ধ্বংস করেছিল । যা মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। এই জঘন্য অপরাধের পর ওহাবীরা পবিত্র শহর মক্কা ও মদীনার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদ মসজিদ -ই- নববি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক মুসলমানকে হত্যা করা হয়।উসমানীয় কাফেলাকে 'আব্দুল্লাহ ইবনে সা'ঊদ ও তার সেনাবাহিনী আক্রমণ করে।
মক্কা ও মদিনা দখল করার কারণে সৌদের সাথে উসমানীয়দের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এর ফলে আবদুল্লাহকেও উসমানীয়দের মুখোমুখি হতে হয়। মিশরের ওয়ালি মুহাম্মদ আলি পাশার পুত্র ইবরাহিম পাশার নেতৃত্বে উসমানীয়-মিশরীয় সেনারা ২০১২ সালে মদিনা ও ২০১৩ সালে মক্কা পুনরুদ্ধার করেন। এর ফলে সৌদিরা নজদের দিকে পিছু হটে।ইবরাহিম পাশা অগ্রসর হয়ে সৌদিদের রাজধানী দিরিয়া দখল করে নেন। কয়েক মাস অবরোধের পর ১৮১৮ সালের শীতে আবদুল্লাহ আত্মসমর্পণ করেন। এর ফলে প্রথম সৌদি রাষ্ট্রের অবসান হয়। ইবরাহিম পাশার নির্দেশ দিরিয়া ধ্বংস করে দেয়া হয় এবং আল সৌদ বংশের অনেককে বন্দী করে মিশর ও কনস্টান্টিনোপল প্রেরণ করা হয়। কনস্টান্টিনোপলে প্রেরণের পর আবদুল্লাহকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
১৮০১ সালে সৌদি বাহিনীর হাতে কারবালায় হুসাইন বিন আলির মাজার ধ্বংস হয়েছিল।[১] অধিকন্তু পবিত্র মক্কা ও মদিনা শহরে আক্রমণের সময় অনেকে নিহত হয় এবং মসজিদে নববী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উসমানীয়রা আরবের আইনসঙ্গত শাসক ছিল এ কারণে তারা সৌদিদের দমন করা সিদ্ধান্ত দেয়।[১] আবদুল্লাহ বিন সৌদকে উৎখাত করার জন্য খলিফা দ্বিতীয় মাহমুদ মিশরীয়দের নির্দেশ দেন। ১৮১৮ সালে ইবরাহিম পাশার নেতৃত্বে আবদুল্লাহর বাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়া হয় এবং রাজধানী দিরিয়া দখল করে নেয়া হয়। পবিত্র শহর ও মসজিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য আবদুল্লাহকে কনস্টান্টিনোপলে প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ করা হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল