সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো

 ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। রোনালদো পাঁচটি ব্যালন ডি’অর এবং চারটি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু অর্জন করেছেন, যা কোন ইউরোপীয় খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড সংখ্যক জয়। কর্মজীবনে তিনি ৩২টি প্রধান সারির শিরোপা জয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে সাতটি লিগ শিরোপা, পাঁচটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, এবং একটি উয়েফা নেশনস লিগ শিরোপা। রোনালদোর চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বাধিক ১৩৪টি গোল এবং ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বাধিক ১২টি গোলের রেকর্ড রয়েছে। তিনি অল্পসংখ্যক খেলোয়াড়দের একজন যিনি ১,১০০টির উপর পেশাদার খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং তার ক্লাব ও দেশের হয়ে ৭৯০টির বেশি গোল করেছেন। তিনি ১০০টি আন্তর্জাতিক গোল করা দ্বিতীয় পুরুষ ফুটবলার এবং প্রথম ইউরোপীয়।

ব্যক্তিগত জীবনে রোনালদো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড়। রোনালদো তার দানশীলতা এবং বিশ্বব্যাপী অসহায় মুসলমানদের সাহায্য করার জন্য বহুল প্রশংসিত। সম্প্রতি এক জরিপে তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দানশীল খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ফিলিস্তিনের একটি সংস্থা তাকে পার্সন অফ দ্য ইয়ার ২০১৬ প্রদান করে।রোনালদো ২০১১ সালে জয় করা সোনার বুট ফিলিস্তিনের দরিদ্র শিশুদের জন্য নিলামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন।তিনি সিরিয়াতে শরণার্থীদের ৫০০০ ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন।রোনালদো ইসরায়েলি ফুটবলারদের সাথে জার্সি বদল এবং করমর্দন করেননি কারণ তিনি অত্যাচারীদের অপছন্দ করেন।
বিশ্বকাপে রোনালদো রাজনীতির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তুরস্কে একটি যুব ইভেন্টে বক্তৃতাকালে তিনি এসব অভিযোগ করেন। এরদোগান বলেন, ‘ওরা রোনালদোকে কাজে লাগায়নি। দুর্ভাগ্যবশত, তারা তার ওপর রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ম্যাচের মাত্র ৩০ মিনিট বাকি থাকতে রোনাল্ডোর মতো একজন ফুটবলারকে মাঠে পাঠানো হয়েছে। এটি তার মনস্তত্ত্বকে নষ্ট করেছে এবং তার তেজোদীপ্ততা কেড়ে নিয়েছে।রোনালদো এমন একজন ব্যক্তি, যিনি ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। 'তিনি আরও বলেন, পর্তুগিজ ফুটবলারকে লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা করায় রোনালদোকে বিশ্বকাপে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নেয় পর্তুগাল। ওটিই ছিল বিশ্বকাপে রোনাল্ডোর শেষ ম্যাচ। টুর্নামেন্টে কয়েকটি ম্যাচে শুরুর একাদশে রাখা হয়নি তাকে। মরক্কোর বিপক্ষে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বিকল্প হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছিল রোনালদোকে। এর আগে শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও বেঞ্চে বিকল্প হিসেবে দেখা গিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই তারকা ফুটবলারকে।রোনালদোর এমন অবস্থায় মন খারাপ রোনালদো-ভক্তদের। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রোনালদোর কড়া ভক্ত। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক কারণেই রোনালদোর এমন পরিণতি। পর্তুগিজ তারকা রাজনীতির শিকার।
বিশ্বকাপ চলাকালেই গুঞ্জন ওঠে, সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসের আকর্ষণীয় চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। তখন পর্তুগিজ সুপারস্টার অস্বীকার করলেও বিশ্বের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী রোনালদো। পিএসজিতে খেলে বছরে ৭৫ মিলিয়ন ইউরো পান লিওনেল মেসি, আর নেইমার পান ৭০ মিলিয়ন ইউরো। কিন্তু রোনালদো সৌদি ক্লাবে যোগ দিলে মেসি ও নেইমার দুজনই পর্তুগিজ সুপারস্টারের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়বেন। আল নাসের তাকে বছরে দেবে ২০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...