সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুইডেনে ইসলাম



সুইডেন ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র।রাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বদিকে রয়েছে ফিনল্যান্ড, পশ্চিমদিকে নরওয়ে ও দক্ষিণ-পশ্চিমদিকে ওরেসুন্দ সেতু যেটা দিয়ে ডেনমার্ক যাওয়া যায়। সুইডেন স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশেগুলোর বৃহত্তম রাষ্ট্র।ঊনবিংশ শতক থেকেই সুইডেন একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান বজায় রেখেছে এবং কোন প্রকার যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত থেকেছে।

সুইডেনের সর্ববৃহৎ শহর এবং রাজধানী হল স্টকহোম।'ভেনিস অব দ্য নর্থ' বলা হয় সুইডেনের স্টকহোমকে। ইউরোপের স'মিল বলা হয় সুইডেনকে। পৃথিবীর প্রথম কল্যাণমূলক রাষ্ট্র সুইডেন।সুইডেনের আয়তন ৪,৫০,২৯৫ বর্গকিলোমিটার। এটি ইউরোপের তৃতীয় সর্ববৃহৎ দেশ। মাত্র ৯৫ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে সুইডেন ইউরোপের অন্যতম কম জনসংখ্যার ঘনত্বপূর্ণ অঞ্চল। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ২১ জন মানুষ বসবাস করে। সুইডেনের জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% শহরকেন্দ্রিক এবং দেশের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত শহরসমূহে বসবাস করে।সুইডেন একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ রাষ্ট্রপ্রধান। তবে বহুদিন ধরেই রাজার ক্ষমতা কেবল আনুষ্ঠানিক কাজ-কর্মেই সীমাবদ্ধ।ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট তাদের গণতন্ত্র সূচকে সুইডেনকে ১৬৭টি দেশের মধ্যে সবার উপরে রেখেছে।[১১] সুইডেনের আইনসভার নাম রিক্সদাগ, যার সদস্যসংখ্যা ৩৪৯। আইনসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন। প্রতি চার বছর অন্তর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় রবিবারে আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে সপ্তম-দশম শতাব্দীর মধ্যযুগীয় ইসলামী বিশ্বের সাথে ভাইকিং যোগাযোগ ছিল, যখন ভাইকিংরা মধ্যযুগীয় ইসলামিক বিশ্বের সাথে বাণিজ্য করছিল। মধ্যপ্রাচ্য থেকে উৎপন্ন প্রাক-ইসলামিক আরবি মুদ্রাগুলি লৌহ যুগের সমাধিস্থলে পাওয়া গেছে।মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সঙ্গে সুইডেনের বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক অনেক দিনের। ১৭ ও ১৮ শতকে ওসমানীয় শাসকদের সঙ্গে সুইডেনের সম্পর্ক ছিল গভীর। ইউরোপে ওসমানী রাজ্য অনেক শক্তিশালী ছিল। সুইডিস রাজারা তাদের আনুকূল্য লাভের জন্য সে সময় তুরস্কে তাদের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে। তখন থেকে মুসলিম সংস্কৃতির সঙ্গে সুইডেনের পরিচয় হতে থাকে। তবে সুইডেনে মুসলিমদের উপস্থিতি সাম্প্রতিক কয়েক দশকের। ১৯৩০ সালে সুইডিশ আদমশুমারি অনুসারে ১৫ মুসলিমকে "মুসলিম এবং অন্যান্য এশিয়ান ধর্মীয়" গোষ্ঠীভুক্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যদিও খোদ মুসলমানদের সংখ্যা জানা যায়নি, একটি অনুমান অনুসারে সর্বাধিক ১১ জন প্রস্তাবিত হলেও এটি ২ এর চেয়ে কম হতে পারে ।আধুনিক সুইডেনে, প্রথম নিবন্ধিত মুসলিম গোষ্ঠী ছিল ফিনিশ তাতার যারা ১৯৪০ এর দশকে ফিনল্যান্ড এবং এস্তোনিয়া থেকে অভিবাসিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অভিবাসনের সাথে সুইডেনে ইসলামের লক্ষণীয় উপস্থিতি শুরু হয় । সম্প্রতি, মুসলিম প্রধান দেশগুলি থেকে অভিবাসন সুইডেনের জনবিন্যাসকে প্রভাবিত করেছে।অভিবাসন ১৯৬০ এর দশকের শেষ থেকে সুইডেনে ইসলাম ছড়িয়ে দেওয়ার প্রধান চালিকাশক্তি ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইরাক, সোমালিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য দায়ী করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সুইডেন ২০১৪ আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদন মোট সুইডিশ জনসংখ্যার প্রায় ৬% (প্রায় ৬০০,০০০) সংখ্যা নির্ধারণ করেছে।সুইডিশ এজেন্সি ফর সাপোর্ট টু ফেইথ কমিউনিটিজ-এর ২০১৭ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইডেনে ১,৭০,৯১৫ জন মুসলমান ছিল যারা নিয়মিত তাদের ধর্ম পালন করত। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, বিগত কয়েক দশকে সুইডেনে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে। ১৯৫০ সালে দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০০। যা বর্তমানে আট লাখে উন্নীত হয়েছে। সুইডেনের জনসংখ্যার ৮.১ শতাংশ মুসলিম।সুইডেনের মুসলিম সম্প্রদায় অসংখ্য দেশ থেকে আগত এবং এটিকে একটি জটিল এবং ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠী করে তুলেছে। ২০১৮ সালের জুনে সুইডেনের স্টেট স্ট্যাটিস্টিকস অর্গানাইজেশন পরিচালিত এক জরিপ অনুসারে দেখা যায়, দেশের প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার ২৪ শতাংশ অভিবাসী। এদের কারণেও সুইডেনে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মতে (২০১১ সালের) সুইডেনে বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ মুসলমান বসবাস করে।
সুইডেনে ১৯৯৮ সালে ৩.২১ শতাংশ মুসলিম ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের মধ্যেই এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণে এসে দাঁড়ায়। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা যে হারে ইসলামের প্রতি ধাবিত হচ্ছে, সে ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যেই সুইডেনে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ হবে মুসলিম। আরো অন্যান্য তথ্যে দেখা গেছে, ইসলামফোবিয়াসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মুসলিমদের মুগ্ধকর আচার-আচরণে অন্যরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
ইসলামফোবিয়া বাড়লেও সুইডেনে ইসলাম ও মুসলমানদের অবস্থা দিন দিন ভালোর দিকে যাচ্ছে। এখন সুইডিশ পার্লামেন্টে ৭ জন মুসলিম পার্লামেন্ট সদস্য রয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন নারী সদস্য। সাতজনের ছয়জন কুর্দি মুসলিম, অন্যজন সোমালিয়ান বংশোদ্ভুত লায়লা আলি আলমি। ২০১৮ সালের ০৯ সেপ্টেম্বরের দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তারা বিজয়ী হন। যথাক্রমে তারা হলেন- সুইডেন ডেমোক্র্যাটসের সারা সেপ্পালা, লিবারেল পার্টির গুলান আফগি, লেফটিস্ট পার্টির আমিনাহ কাকাবাভে, রোজা গোকলো হেইদেইন, সোস্যাল ডেমোক্র্যাটসের সারকান কোসা, লাওয়েন রিদর ও কাদির কাসিরকা। পার্লামেন্টের মুসলিম সদস্যরা আশা করছেন, স্থানীয় মুসলিম কাউন্সিল ও পৌরসভা নির্বাচনেও মুসলিম প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকারিভাবে ধর্মান্তরিত মুসলিমদের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। তবে মালমো কলেজের ইতিহাসবিদ আন-সোফি রোয়ার্ল্ডের মতে ১৯৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৫০০ জন খ্রিস্টান ইসলাম গ্রহণ করেছে। মুসলিম অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ার ফলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের হার এখন আগের চেয়ে বেড়েছে। সুইডিশ ধর্মান্তরিত মুসলিমদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- প্রখ্যাত পেইন্টার ইভান আগুয়েলি; তিনি আবদুল হাদি আল মাগরিবি নামে বেশি পরিচিত। এ ছাড়া মুহাম্মদ নুত বার্নস্ট্রম; ১৯৮৮ সালে তিনি সুইডিস ভাষায় পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন।
সুইডেনে ছোট-বড় ২৫০টির বেশি মসজিদ রয়েছ। তবে অধিকাংশ মসজিদই বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে এক বা দুটি রুম নিয়ে গঠিত।১৯৮৪ সালে মালমে মসজিদ এবং পরে ১৯৯৫ সালে উপসালা মসজিদ নির্মিত হয়। ’২০-এর দশকে আরো মসজিদ নির্মিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে স্টকহোম মসজিদ (২০০০), উমিয়া মসজিদ (২০০৬) ও ফিট্টজা মসজিদ (২০০৭), স্টকহোমে বাংলাদেশ জামে মসজিদ, হ্যানিং (দক্ষিণ স্টকহোম) ব্র্যান্ডবার্গেন মসজিদ, স্কোগাস মসজিদ, গোথেনবার্গ (হিসিঙ্গেনে) তুর্কি মসজিদ ও গুরাবা মসজিদ প্রভৃতি। সৌদি আরব ও লিবিয়া সরকার সুইডেনের কয়েকটি বৃহত্তম মসজিদ নির্মাণে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে।
২০১৬ সালে গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ এসওএম জরিপে, ৫৩ শতাংশ সুইডিশের মধ্যে ইসলামের ধারণা নেতিবাচক যেখানে ৭ শতাংশ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে, ৪০ শতাংশ অমীমাংসিত। সুইডেনের বিভিন্ন স্থানে ইসলামিক কালচারাল সেন্টার, মুসলিম সোসাইটি, মহিলা সমিতি, দাওয়াহ কমিটি ধর্মপ্রচার, কুরআন শিক্ষা, কমিউনিটি উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে।
সুইডেনে ইসলামিক এসোসিয়েশন সুইডিশ ট্যাক্স এজেন্সির রেকর্ড অনুযায়ী গঠিত হয়েছিল, যা আহমেদ ঘানেম, মোস্তফা খারাকি, মাহমুদ আলদেবে, জোহেইর বেরাহমোউনেনের উপস্থিতিতে ২৭-২৮ জানুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে সুইডেনে ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফআইএস) গণসভার প্রোটোকল , মাহমুদ কালিম এবং সামি আল-সারিফ। প্রবর্তক স্টকহোম সংস্থা ইসলামিস্কা ফোরবুন্দেট আই স্টকহোম, যা স্টকহোম মসজিদ পরিচালনা করে এবং ১৯৮৭ সালে পাওয়া যায়। আইএফআইএস সদর দপ্তর স্টকহোম মসজিদে অবস্থিত। আইএফআইএস সনদ অনুযায়ী, এটি ইউরোপের মুসলিম ব্রাদারহুড-সম্পর্কিত ছাতা সংগঠন ফেডারেশন অফ ইসলামিক অর্গানাইজেশনের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য যার নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়। এটি নিম্নলিখিত সংস্থাগুলি শুরু করেছে, হয় একা অথবা অন্যদের সাথে একসাথে:
• সুইডেনে ইসলামিক ত্রাণ
• সুইডেনের মুসলিম যুব
• ইসলামিস্কা তথ্যফোরেনেনিং (আইআইএফ) (টিআর: ইসলামিক তথ্য সমাজ)
• সুইডেনে মুসলিম ছাত্রদের ইউনিয়ন (আল খাওয়ারিজমি)
• ইমাম সমিতি
• সুইডেনের ইসলামিক স্কুল (এসআইএস)
• মুসলিম ওম্যান এসোসিয়েশন
• সুইডেনের মুসলিম স্কাউটস
• নিউ মুন কালচারাল এসোসিয়েশন
• কুরআন পাঠক সোসাইটি
• ইবনে রুশদ স্টাডি এসোসিয়েশন
• মুসলিম কাউন্সিল অফ সুইডেন (এসএমআর)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...