তিউনিসিয়া
তিউনিসিয়া আফ্রিকার উত্তর উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত রাষ্ট্র। এর পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে আলজেরিয়া, দক্ষিণ-পূর্বে লিবিয়া এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। মাউন্ট অ্যাটলাসের পূর্ব পাশে দেশটির অবস্থান। এর উত্তর প্রান্তে সাহারা মরুভূমি অবস্থিত।দেশটির বাকি অংশের জমি উর্বর। এর উপকূলরেখা ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ।
রাজধানীতিউনিস সবচেয়ে বড় শহর
আয়তন : এক লাখ ৬৩ হাজার ৬১০
বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ৯১ তম।
জনসংখ্যা : এক কোটি ১৩ লাখ ৪ হাজার ৪৮২
জন। জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের ৭৯ তম বৃহত্তম দেশ।
জাতিগোষ্ঠী : আরব, বারবার , ইউরোপীয়,
তুর্কি, ইহুদি।
রাষ্ট্রধর্ম : ইসলাম।শতকরা ৯১ জন মুসলমান
। বাকিরা ইহুদি অ খ্রিস্টান ।
ভাষা : রাষ্ট্রআরবি ও সরকারি ভাষা ফরাসি
মুদ্রা : তিউনিসীয় দিনার।
জাতিসংঘে যোগদান : ১৯৫৬ সালে।
ইতিহাস
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্দশ শতকে বারবারদের আগমন
ঘটে। তখন তিউনিসিয়া বারবার জাতির আবাসস্থল ছিল। খ্রিস্টপূর্ব দ্বাদশ শতাব্দীতে
অঞ্চলটিতে ফিনিসিয়ানদেরঅভিবাসন শুরু হয়। একপর্যায়ে অঞ্চলটি তারাই শাসন করতে শুরু
করে। ৪১৪ খ্রিষ্টপূর্বেকার্থেজ নগরী প্রতিষ্ঠা হয়।
১৪৬ খ্রিস্টপূর্বে তৃতীয় পুনিক যুদ্ধে
রোমানদের কাছে তারা পরাজিত হয় ও কার্থেজের পতন ঘটে। প্রায় ৮০০ বছর ওই অঞ্চল রোমান
শাসনের অধীনে ছিল।৬৯৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানরা তিউনিসিয়া জয় করেন।উমাইয়া ,আগলাবি ,ফাতিমিয় ,আল মোহাহিদ
,হাবশি রাজবংশের শাসকেরা তিউনিসিয়া শাসন করে। ( ১৫৭৪-১৭০৫) পর্যন্ত ওসমানীয়
সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল তিউনিসিয়া। দেশটিতে ফরাসি উপনিবেশ শুরু হয় ১৮৮১ সালে।
স্বাধীনতা লাভ
১৯২০খ্রিস্টাব্দে শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনের
মাধ্যমে ফরাসিদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন শক্তিশালী করা হয় । তখন এই
আন্দোলনের নেতা ছিলেন শেখ আল ছালিবিকিন্তু ১৯২৩খ্রিস্টাব্দে ছালিবিকেনির্বাসিত করা
হয়এবং ফরাসিদের চরম দমন নীতির মুখে শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন ভেঙে পড়ে। .১৯৩৪
খ্রিস্টাব্দে নতুন দেস্তর পার্টি গঠনকরে হাবিব আবু বরগুইবারনেতৃত্বেব্যাপক আন্দোলন
শুরু হয় এবং দীর্ঘ ২২বছরের কঠোর আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৫৬সালের ২০মার্চ
তিউনিসিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে।
স্বাধীনতা উত্তরতিউনিসিয়া
আধুনিক তিউনিসিয়ার স্থপতি হাবিব বোরগুইবা
৩০ বছর ধরে দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তিউনিসিয়া
উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে স্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আরব বিশ্বের একমাত্র
গণতান্ত্রিক দেশ তিউনিসিয়া। ১৯৮৬ ও১৯৮৭সালে সরকার ইসলামপন্থীদের ওপর চড়াও হয়
১৯৮৬সালে চারজন ইসলামপন্থী কে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় অন্য ২২জনকে বিভিন্ন মেয়াদে
দণ্ড দেওয়া হয় ।১৯৮৭সালে তিউনিস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামপন্থী ওবামপন্থীদের
সংঘর্ষেবহু ইসলামপন্থী কে গ্রেফতার করা হয়।মার্চ মাসে তিউনিশিয়ায় ইরানের সাথে
কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে । ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে ইরানইরান তিউনিসিয়া
হাবিবুরকে উৎখাত করে একটি ইসলামপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এর সাথে
জড়িত থাকার অভিযোগে তিন হাজারেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। আগস্ট মাসে পর্যটন
কেন্দ্রে কিছু বোমাবাজির পর আরও কিছু ইসলামপন্থী কে গ্রেফতার করা হয়। সেপ্টেম্বর
মাসে ৯০ জন ইসলামপন্থী বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বিচার শুরু হয় এদের মধ্যে ৭ জনকে
মৃত্যুদণ্ড ও অন্যান্য ৬৯জনকেবিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়। অক্টোবর মাসে তিনি
জয়নাল আবেদীন আলীকে প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারি দলের মহাসচিব নিয়োগ করেন।নভেম্বরে
প্রধানমন্ত্রী বেন আলীর সাথে বরগুইবার মতানৈক্য দেখা দেয়। বরগুইবা৯০জন ইসলামপন্থীর সবাইকে মৃত্যুদণ্ড
দেয়ার পক্ষপাতি ছিলেন। ৭ নভেম্বর ১৯৮৭ জন ডাক্তারবরগুইবাকেকি পরীক্ষা করে ঘোষণা
করেন যে বাধ্যক্য অসুস্থতার জন্য তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে অক্ষম বা
অযোগ্য। সংবিধান অনুযায়ী বেনআলীকে প্রেসিডেন্টের শপথ পড়ানো হয়।স্বাধীনতার প্রথম
দুইজন প্রেসিডেন্ট একজন আধুনিক তিউনিসিয়ার জনক হাবিব বুরগুইবা এবং আরেকজন তার
উত্তরসূরী জাইন আল আবেদিন বেন আলী দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।।দুই জনই পরবর্তীতে
পরিণত হন অজনপ্রিয় স্বৈরশাসকে। ১৯৯০সালের আগস্ট মাসে ইরাক-কুয়েত আক্রমণ করলে
তিউনিসিয়া ইরাকের নিন্দা করে কিন্তু ইরাকের উপর বহুজাতিক বাহিনী আক্রমণ করলেও
নিন্দা কএও। তবে ইরাকের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে সম্মতহয় ।নভেম্বর
মাসে ইসলামপন্থী আন নাহদা দলেরকয়েকজন নেতাকর্মীকে বিস্ফোরক রাখার দায়ে গ্রেফতার
করা হয়। ডিসেম্বরে আরো .১০০ কর্মীকে ইসলামী রাষ্ট্র স্থাপনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে
গ্রেফতার করা হয় । ১৯৯১সালের মে মাসে সরকার ঘোষণা করে যে নাহদার বিরুদ্ধেক্ষমতা
দখলের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সশস্ত্রবাহিনীর ১০০ জন সদস্য সহ ৩০০ জনকে
গ্রেফতার করা হয় । জুন মাসে আন নাহদার৫ জন নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।নভেম্বর
মাসে এক ঘোষণায় ১০৭০জন বন্দির মুক্তি দেওয়া হয়। বাকিদের সাজাকমানো হয়
।১৯৯২সালের ফেব্রুয়ারি মাসেআন নাহদার ২জন নেতাকর্মীকে সরকার উৎখাতের প্রচেষ্টার
সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় । মার্চ মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালএকটি
রিপোর্ট প্রকাশ করে। যাতে দেখা যায় যে ১৮মাসে ৪ হাজার লোককে নাহদারসদস্য সন্দেহে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা .২০০ জনকে বন্দি অবস্থায় যন্ত্রণা ও দুর্ব্যবহারের
শিকার বলেও উল্লেখ করে । আরও বলা হয় যে অন্তত ৭ জন সদস্য
বন্দী অবস্থায় মারা যায়। সরকার প্রথম অভিযোগ অস্বীকার করে কিন্তু পরে স্বীকার
করে যে কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। তিউনিসিয়ায় বেন আলী সরকারেরপতনের পর
সেখানে ২০১১ সালে গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়,
যাতে
ইসলামপন্থী দল আন-নাহাদা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। আন-নাহাদা
বেন আলীর শাসনামলে ছিল নিষিদ্ধ সংগঠন। ২১৭ আসনের ৮৯টিতে বিজয়ী আন-নাহাদার নেতা
হামাদি জেবালি প্রধানমন্ত্রী ও মানবাধিকারকর্মী মোনসেফ মারজুকি প্রেসিডেন্ট হিসেবে
দায়িত্ব নেন। গণপরিষদের ওপরে দায়িত্ব বর্তায় একটাই, তা হলো সংবিধান রচনা। এই প্রক্রিয়ায় বিতর্ক দেখা দেয় নারীদের সমতার
অধিকার, রাষ্ট্র ও ধর্মের সম্পর্ক, প্রেসিডেন্টের যোগ্যতা এবং সংবিধান পাস হওয়ার পরে ক্ষমতার হাতবদলের
প্রক্রিয়া নিয়ে। বেন আলী পরবর্তী তিউনিসিয়ার জনগণ আজ বিভক্ত ইসলামপন্থী এবং
স্যেকুলার দুইভাগে। আবার অনেক বিশ্লেষকের চোখে এ নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে দেশটির বুর্জোয়া
এলিট শ্রেণীর মসনদে ফেরার প্রচেষ্টার সঙ্গে আরব বসন্ত পরবর্তী রাজনীতি সচেতন নতুন
প্রজন্মের রাজনৈতিকদের লড়াই হিসেবে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিরোধীদলীয় একজন
নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আন-নাহাদার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিরোধ দেখা দেয় এবং
তিনি পদত্যাগ করেন। অক্টোবর মাসে একজন মানবাধিকারকর্মী আততায়ীর হাতে মারা গেলে
সরকার এর সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ তোলা হয়। এসব চাপ সত্ত্বেও আন-নাহাদা সংবিধান
তৈরির কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্যই চেষ্টা চালাতে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়
যে সংবিধান তৈরি হওয়া এবং পরবর্তী নির্বাচনের আগে কে ক্ষমতায় থাকবেন। সেই বিষয়ে
ঐকমত্য তৈরি হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে—সংবিধান রচনার পরে আন-নাহাদা একটি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে,
যারা
নির্বাচনের আয়োজন করবে। প্রণীত সংবিধান ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি এক সাধারণ
নির্বাচনে অনুমোদন লাভ করে। সেই সংবিধানের আওতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে
সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৬ অক্টোবর ২০১৪ সালে
হাবিব বরগুইবা
তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার স্থপতি ও প্রথম
প্রেসিডেন্ট হাবিব বরগুইবার জন্ম ১৯০২ সালের ২ আগস্ট। দেশটির ছোট্ট একটি গ্রাম
আল-মুনাসতিরে জন্ম হলেও হাবিব ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়া করেছেন রাজধানী তিউনিসে।
তিউনিসের পর আইন বিষয়ে পড়তে তিনি প্যারিস যান। সেখান থেকেই হাবিব জড়িয়ে পড়েন
তিউনিসিয়া স্বাধীন করার প্রত্যক্ষ আন্দোলনে। এসব চলাকালেই তিনি দেশবাসীকে
স্বাধীনতার বিষয়ে সচেতন করে তোলার জন্য বের করলেন একটি পত্রিকা।
তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি
আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন দেশ। হাবিবের নেতৃত্বে চলমান
আন্দোলনের মুখে ১৯৫৫ সালে তিউনিসিয়াকে স্বায়ত্তশাসন দানের ঘোষণা দেয় ফ্রান্স। তবে
শর্ত রাখে, স্বরাষ্ট্র ও বৈদেশিক মুদ্রা সম্পর্কিত
বিষয়গুলো ফ্রান্সের হাতেই থাকবে। তবে এর কিছুদিন পরই ১৯৫৬ সালের ২০ মার্চ
তিউনিসিয়াকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয় ফ্রান্স। তিনি তিউনিসিয়ার, ফ্রান্সের ৭৫ বছরের অভিভাবকত্ব থেকে স্বাধীনতা অর্জনে প্রধান ভূমিকা পালন
করেন। এজন্য তিনি মহত্তম যোদ্ধা উপাধি লাভ করেন। স্বাধীনতার পর তিনিই হন
তিউনিসিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি।
আরব বসন্তের সুতিকাগার
২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর নিজের গায়ে আগুন
জ্বেলে বিপ্লবের মশাল জ্বেলে দেন তিউনিসিয়ার মোহাম্মদ বোয়াজিজি নামে এক ফল
বিক্রেতা। ঘুষ, দুর্নীতি,
বেকারত্ব, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তা ছিল এক জ্বলন্ত বিদ্রোহ।এটি
তিউনিসিয়ায় জেসমিন বিপ্লব নামে আরব বিশ্বে আরব বসন্তের সূচনা করেছিল, এই বিদ্রোহের আগুন আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত
আলজেরিয়া, ইয়েমেন,
বাহরাইন, মিশর, ইরান,
জর্ডান, লিবিয়া, মরক্কো,
তিউনিসিয়ায়
বড় ধরনের বিদ্রোহ হয়েছে এবং ইরাক,
কুয়েত, মৌরিতানিয়া, ওমান,
সৌদি-আরব, সোমালিয়া, সুদান,
সিরিয়াতে
ছোট আকারের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহের সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তিউনিসিয়ার
স্বৈরশাসক জয়নাল আবেদিন বেন আলীর ক্ষমতার আসন।১৪ জানুয়ারি শাসক জেন এল আবেদিন বেন
আলির পতন ঘটে এবং তিনি সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ২৫ জানুয়ারি থেকে মিশরে বিদ্রোহ
শুরু হয় এবং ১৮ দিনব্যাপী বিদ্রোহ ৮৫০ জন মানুষের রক্ত ঝরিয়ে ৩০ বছর ধরে শাসন করা
প্রেসিডেন্ট মুবারক ১১ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন। একই সাথে জর্ডানের বাদশাহ
আব্দুল্লাহ নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেন;
ইয়েমেনের
রাষ্ট্রপতি আলি আব্দুল্লাহ সালেহ ঘোষণা দেন যে তিনি ২০১৩ সালের পর আর রাষ্ট্রপতি
থাকবেন না । যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের মদদ ও তাদের সহযোগিতায় লিবিয়ার নেতা
মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ঘটায় বিদ্রোহীরা। এই বিদ্রোহীদের মধ্যে ছিল বিভিন্ন
গোষ্ঠীর সশস্ত্র মিলিশিয়া। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি
তাঁর পুত্রসহ নিহত হওয়ার পর থেকে লিবিয়ায় ক্ষমতা নিয়ে রীতিমতো রশি টানাটানি শুরু
হয়। আরব বসন্ত আসা অন্য দেশগুলোর মধ্যে সিরিয়া,
ইয়েমেন
সিরিয়া ও বাহরাইন এখন গোলযোগপূর্ণ দেশ।
বেন আলী
তিউনিসিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জয়নাল
আবেদিন বেন আলী ১৯৮৭ সালের ৭ নভেম্বর তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার অগ্রদূত হাবিব
বোর্গুইবাকে ক্ষমতাচ্যুত করেক্ষমতায় আরোহন করেন। ২০১১ সালের শুরুর দিকে অর্থনৈতিক
সঙ্কটে তিউনিসিয়ায় তীব্র গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে সপারিবারে সৌদি আরবে পালিয়ে
যান।
আগে ফরাসী সরকার তাকে আশ্রয় দিতে
অস্বীকৃতি জানায়। ফ্রান্সে তারবিমান অবতরণেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে বিমানটি
ইটালির একটি দ্বীপ থেকে তেল নিয়ে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবের জেদ্দায় অবতরণ
করে।তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২৩ বছর ক্ষমতায় ছিলেন বেন আলী। সাবেক প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন বেন আলী ২০১৯ সালে
আগস্ট মাসেসৌদি আরবে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।মোহাম্মদ
বোয়াজিজির আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে তিউনিসিয়া থেকেই প্রথম শুরু হয়েছিলো আরব বসন্ত
।আর জাগরণের ধাক্কায় টালমাটাল হয় আরব বিশ্বের দেশগুলোতে যুগ যুগ ধরে চলে আসা
স্বেচ্ছাচারী শাসনের ভিত্তিমূল।
প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
তিউনিসিয়া ২৪টি গভর্নরেট (উইলায়েত)-এ
বিভক্ত। দেশটিতে মোট ২৬৪টি জেলা (মুতামাদিয়াত) রয়েছে যেগুলো আবার বিভিন্ন পৌরসভা
(বালাদিয়াত) এবং সেক্টরে (ইমাদাত) বিভক্ত।
ভূগোল
তিউনিসিয়া উত্তর আফ্রিকা, আটলান্টিক মহাসাগরের নীল নদের বদ্বীপ এবং ভূমধ্য উপকূলের মধ্যে অবস্থিত।
জলবায়ু এখানকার উত্তর অংশের জলবায়ু
নাতিশীতোষ্ণ। শীতকালে হালকা বৃষ্টি এবং গরমকাল শুষ্ক। দেশটির দক্ষিণে মরুভূমি।
বিশ্বকাপ ফুটবলে
আফ্রিকান দেশ তিউনিশিয়া ষষ্ঠবারের মতো অংশ নিচ্ছে বিশ্বকাপে। নেশন্স কাপের অন্যতম সেরা নাম হলেও বিশ্বকাপের প্রতি আসরেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। ইরানের মতো তিউনিশিয়াতেও দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। শুধু ফুটবলে ভালোবাসার কারণে এবারও বিশ্বকাপে আছে দেশটি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন